রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বাংলাদেশ কি জিএসপি সুবিধা পাবে

বাংলাদেশ কি শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাচ্ছে? বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ ব্যাপারে আশাবাদী। ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে ১৬টি শর্ত আরোপ করেছিল, তার মাঝে ১৩টি শর্ত আগেই পূরণ করা হয়েছে। বাকি তিনটি শর্ত পূরণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই তিনটি শর্ত হচ্ছে- ১. গার্মেন্ট শিল্প পরিদর্শনে ২ জন কারখানা পরিদর্শক নিয়োগ, ২. ১৯টি কারখানায় শ্রমিক নির্যাতনের তদন্ত এবং ৩. ইপিজেডে শ্রমিক ইউনিয়ন করার অধিকার। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা-সম্পর্কিত জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে। তবে বাংলাদেশ শেষ তিনটি শর্ত পূরণ করলেও আদৌ এ সুবিধা পাবে, তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কেননা ১১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে তৃতীয়বারের মতো 'বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সমঝোতা ও শ্রমিক অধিকার পরিস্থিতি' নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে দ্রুত একটি সংলাপ ও সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ সংসদের নির্বাচন। কিন্তু এর কোনো লক্ষণ নেই। ফলে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। গত বেশ কিছুদিন ধরে নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক বারবার আলোচিত হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির আলোকে বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা গুরুত্ব দেয়। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকেন্দ্রিক যুক্তরাষ্ট্রের যে নীতি, তাতে বাংলাদেশের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়া তথা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র তার উপস্থিতি বাড়াতে চায়। যেহেতু এ অঞ্চলে ভারত একটি শক্তি, সেহেতু ভারতকে সঙ্গে নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে তার প্রভাব বৃদ্ধি করছে। বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থানের কারণে মার্কিন নীতিনির্ধারক, বিশেষ করে সামরিক নীতিনির্ধারকদের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ কৌশলগত সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় মার্কিন নীতিনির্ধারকদের আগ্রহটা আরও বেড়েছে। যে কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ-ভারত-যুক্তরাষ্ট্র একটি অক্ষ গড়ে উঠেছে। একদিকে চলতি ২০১৪ সালে আফগানিসান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে সেখানে যে 'শূন্যতার' সৃষ্টি হবে, মার্কিন নীতিনির্ধারকরা মনে করেন সেই 'শূন্যতা' পূরণ হতে পারে ভারতকে দিয়ে, যা চূড়ান্ত বিচারে তার স্বার্থকে রক্ষা করবে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আফগানিসান সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে ভারত, যার পরিমাণ কয়েক মিলিয়ন ডলার। ভারত সেখানে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করছে। প্রচুর হাইওয়ে তৈরি করছে ভারত। এখানে সীমান্তবর্তী পাকিসান বরাবরই উপেক্ষিত থেকেছে। আর ভারতের এই বিনিয়োগ সম্ভব হয়েছে মার্কিন নীতিনির্ধারকের সম্মতি দেয়ার পরই। ধারণা করছি, ২০১৪ সালে মার্কিন বাহিনী সেখান থেকে প্রত্যাহার করা হলে, ভারতের তথাকথিত একটি 'শান্তিরক্ষী' বাহিনী সেখানে অবস্থান নেবে। অথবা ন্যাটোর একটি এশীয় সংস্করণ দেখতে পাব আমরা ওই সময়, যেখানে ভারতের একটি অংশগ্রহণ থাকবে। সালে ন্যাটো যখন গঠিত হয়েছিল, তার প্রথম এবং একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল এ বাহিনী শুধু ইউরোপেই নিয়োজিত থাকবে। ন্যাটোর উদ্দেশ্য ছিল সম্ভাব্য সোভিয়েত আগ্রাসন থেকে 'ইউরোপের গণতন্ত্রকে' রক্ষা করা। ন্যাটোর সেই ধ্যানধারণায় পরিবর্তন এসেছে। প্রথমবারের মতো আফগান যুদ্ধে ন্যাটো বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যেহেতু ন্যাটোর ইউরোপীয় মিত্ররা আর আফগানিসানে 'ঝুঁকি' নিতে চাচ্ছে না, সেহেতু এ অঞ্চলকে ঘিরে ন্যাটোর এশীয় সংস্করণ (সেটা ভিন্ন নামেও হতে পারে) হবে এবং ভারত তাতে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। এই 'প্রক্রিয়ায়' বাংলাদেশও জড়িত হবে। মার্কিন নীতিনির্ধারকদের সুবিধা এখানেই যে, বাংলাদেশ সরকার 'ভারতের এই ভূমিকাকে', যা যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, সমর্থন করছে। সূক্ষ্মভাবে লক্ষ্য করলে আরও দেখা যাবে, সম্প্রতি ভারত পারমাণবিক অস্ত্র বহনযোগ্য যে মিসাইল ক্ষেপণাস্ত্র (অগি্ন-৫) সাফল্যের সঙ্গে উৎক্ষেপণ করেছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নীতির ব্যাপারে যে নীতি গ্রহণ করেছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র নীতির ব্যাপারে তার সেই নীতি পরস্পরবিরোধী। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র যেখানে তার মিত্র দেশগুলোকে ব্যবহার করছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বিরুদ্ধে এ কাজটি করছে না। বরং ভারতকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা করেছে এই কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যেতে। অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের যে পারমাণবিক চুক্তি রয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে অত্যাধুনিক পারমাণবিক প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটাই- আর তা হচ্ছে, চীনের বিরুদ্ধে ভারতকে একটি শক্তি হিসেবে দাঁড় করান। এ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের একজন ভূ-কৌশলবিদ রবার্ট কাপলান গেল বছর প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে (STRATFOR, 25 April)  মন্তব্য করেছেন এভাবে,‘The growth of Indian military and economic power, benefits the USA since its acts as a Counter balance to a rising Chinese Power, the USA never wants to see a power as dominant in the Eastern Hemisphere as it itself is in the western Hemisphere. That is the silver lining of the India-China rivalry. India, balancing against China and thus relieving, USA of some of the burden of being the worlds dominant power ওটাই হচ্ছে মোদ্দাকথা। চীন যাতে শক্তিশালী হয়ে উঠতে না পারে, সেজন্য ভারতকে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা।চীন এরই মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা ভারত মহাসাগরে অন্যতম নৌশক্তিরূপে আবির্ভূত হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে আঘাত করছে। এটাকে বিবেচনায় নিয়েই গড়ে উঠছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অক্ষ, যে অক্ষে বাংলাদেশও একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের এই স্ট্রাটেজি বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে গড়ে ওঠা Containment theory কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঘিরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এই নীতি অবলম্বন করেছিল। এ কারণে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন। বাংলাদেশের সীমান্তে রয়েছে মিয়ানমার, যে দেশটির সঙ্গে চীনের কৌশলগত সামরিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। চীনের সীমান্তবর্তী দেশ হচ্ছে মিয়ানমার। মিয়ানমারে গণতন্ত্রের হাওয়া বইছে। সুচি এখন সংসদ সদস্য। অনেক পশ্চিমা দেশ এখন মিয়ানমারের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। জেনারেল সেইন এখন তার সরকারকে একটি 'বেসামরিক অবয়ব' দিczযুক্তরাষ্ট্র চাইবে বাংলাদেশ ও ভারতকে সঙ্গে নিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে। এমনকি ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে মার্কিন সেনাবাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৩ সালের পুরোটা সময় বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বাংলাদেশ সফর করেছেন। ফেব্রুয়ারিতে এসেছিলেন মারিয়া ওটেরো (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়-সম্পর্কিত ডেস্ক), রবার্ট ও'ফ্লেক (সহকারী পররাষ্ট্র সচিব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ডেস্ক), ভেন্ডি শেরম্যান (আন্ডার সেক্রেটারি রাজনৈতিক বিষয়াদি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়)।১৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে নিরাপত্তা শীর্ষক একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেন সহকারী পররাষ্ট্র সচিব (রাজনৈতিক বিষয়াদি) আন্দ্রে শাপিরো। অত্যন্ত গোপনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কিংবা কী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা সংবাদপত্রে জানানো হয়নি। নিরাপত্তা বিষয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দু'দেশ আলোচনা করল; কিন্তু জাতি তা জানল না। গোপনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত গোপনেই রাখা হলো। এ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের কোনো মন্তব্য আমার চোখে পড়েনি। তবে বাংলাদেশে মার্কিন সেনা মোতায়েনের একটি সম্ভাবনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে! অনেকেরই মনে থাকার কথা, গত ২ মার্চ (২০১৩) সিনেটের এক অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক ফ্লিটের (বাংলাদেশ এর অন্তর্ভুক্ত) কমান্ডার অ্যাডমিরাল রবার্ট উইলার্ড বলেছিলেন, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচটি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের 'বিশেষ বাহিনী' মোতায়েন রয়েছে। এটা নিয়ে বাংলাদেশে গুঞ্জনের সৃষ্টি হলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মজিনা এর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কিছু সেনা রয়েছে, যারা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য আসে, আবার চলেও যায়। পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, 'তথাকথিত সন্ত্রাসীদের মোকাবিলার' জন্য(?) ভিন্ন নামে ও ভিন্ন পরিচয়ে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর লোকজন বাংলাদেশে রয়েছে। এর একটা আইনি কাঠামো দেয়ার জন্যই ওই নিরাপত্তা শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সরকারিভাবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও স্বীকার করে না যে, বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উৎকণ্ঠা কম। যুক্তরাষ্ট্র যা চায় তা হচ্ছে, গণতন্ত্র এখানে শক্তিশালী হোক। একটি মুসলমান অধ্যুষিত দেশেও যে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে, বাংলাদেশ তার প্রমাণ রেখেছে। কিন্তু গণতন্ত্রের যে মূল কথা, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ, তা হয়নি। দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয়েছে; কিন্তু ওই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক। তাই তোফায়েল আহমেদ যখন জিএসপি সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশা করেন, তখন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আবারও বলেন, গণতান্ত্রিক সমঝোতার জন্য সংলাপের কথা। এটা অনেকটা এখন স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে দ্রুত একাদশ সংসদের নির্বাচন করা, যেখানে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। কিন্তু একাদশ সংসদ নিয়ে সরকারি মহলে কোনো আলোচনা নেই। উপরন্তু একজন নয়া মন্ত্রী ও ডেপুটি স্পিকার ১০ ফেব্রুয়ারি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, পাঁচ বছরের আগে কোনো নির্বাচন নয়। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী কিংবা স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বলেছেন, নয়া নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে। বিএনপি আপাতত নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছে। মে-জুনের দিকে, যখন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে, তখন নতুন করে আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে। এতে বিএনপি কতটুকু সফল হবে বলা মুশকিল। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না থাকলে তা মার্কিন নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করতে পারে। বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধাটি প্রয়োজন। আর মার্কিন আস্থা ফিরে পেতে হলে বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে সংলাপ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। Alokito Bangladesh 13.02.14

0 comments:

Post a Comment