রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সন্ত্রাসের নতুন মাত্রা

গত ১৩ নভেম্বর রাতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যে ঘটনা ঘটেছিল তাতে সন্ত্রাসের নতুন একটি মাত্রা যোগ হয়েছে। এই ঘটনার রেশ ধরে গত ১৯ নভেম্বর মূল পরিকল্পনাকারী আবদেল হামিদ আবাউদ পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ‘নিহত’ হয়েছেন সত্য, কিন্তু প্যারিসের ঘটনাবলি রেখে গেছে নানা প্রশ্ন। সন্ত্রাসীরা প্যারিসের সমাজজীবনের কত গভীরে প্রবেশ করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায়। গোয়েন্দাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে একাধিক স্থানে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। খোদ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ যখন স্টেডিয়ামে একটি ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করছিলেন, ওই স্টেডিয়ামের বাইরে তখন তিন আত্মঘাতী বোমারু নিজেদের বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছিল। গোয়েন্দারা এটা আঁচ করতে পারেননি। চিন্তা করা যায়, সন্ত্রাসীরা কালাশনিকভ রাইফেল ব্যবহার করে ‘পাখির মতো’ নির্বিচারে একটি কনসার্ট হলে মানুষ হত্যা করেছিল। এই রাইফেল সিরিয়া থেকে আসেনি। সংগ্রহ করা হয়েছিল ফ্রান্সের ভেতর থেকেই। ফ্রান্সে যে এ রকম একটি হামলা হতে পারে তা ইসলামিক স্টেটের প্রোপাগান্ডা ম্যাগাজিন দাবিক-এ (উধনরয়) ফেব্রুয়ারি মাসে সপ্তম সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছিল। ফ্রান্স কেন, পুরো ইউরোপীয় রাষ্ট্র তথা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা এখানেই যে দাবিক-এ অভিযুক্ত আবাউদের (ফ্রান্সে তার পরিচিতি ছিল আবু উমর আল বালঝিকি নামে) সাক্ষাৎকার ছাপা হলেও তা প্রতিরোধে তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যেমনটি তারা নিতে পারেনি নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারের ক্ষেত্রেও। টুইন টাওয়ারের হামলার ১৪ বছর পর প্যারিসে বড় ধরনের একটি সন্ত্রাসী কর্মকা- সংঘটিত হলো। এই সন্ত্রাসী কর্মকা- আমাদের অনেক চিন্তার খোরাক জোগায়। কাকতালীয়ভাবে ২০০১ সালের টুইন টাওয়ার হামলার সঙ্গে প্যারিসে সংঘটিত হত্যাকা-ের অনেক মিল আছে। দীর্ঘ ১৪ বছর পরও টুইন টাওয়ার হত্যাকা-ের প্রকৃত রহস্য আজও উদ্ঘাটিত হয়নি। কেন টুইন টাওয়ার হামলায় একজন ইহুদিও মারা গেল না, কারা অভিযুক্ত সৌদি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল, এর পেছনে কাদের আর্থিক স্বার্থ বেশি ছিল, একটা ‘মুসলমান বিদ্বেষী’ মনোভাব তৈরি করে কারা লাভবান হয়েছে, কেন সৌদি আরব রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না, এসব প্রশ্নের কোনো জবাব আমাদের জানা নেই। আমি ইতোমধ্যে আমাদের সময়ে ৯/১১ নিয়ে একাধিক লেখা প্রকাশ করেছি। তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বলার চেষ্টা করেছি, ৯/১১-এর ঘটনাবলি ছিল একটি বড় ধরনের ‘ষড়যন্ত্রেরই’ ফল। আজ যখন ভিন্ন আঙ্গিকে প্যারিস ট্র্যাজেডি সংঘটিত হতে দেখি, তখন স্পষ্টতই আবারও সেই ‘ষড়যন্ত্র’-এর কথাই মনে পড়ে যায়। আল কায়েদার চ্যাপ্টার এখন ‘শেষ’। ওবামা বিন লাদেন এখন ইতিহাস। রাজনীতির মঞ্চে এখন আছেন বাগদাদি আর ইসলামিক স্টেট। কে এই বাগদাদি, কারা আইএস তৈরি করলÑ এ নিয়ে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যারা গবেষণা করেন, তারাই বলেন এটা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সৃষ্টি। টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ঢ়ৎড়ভবংংড়ৎ গরপযবষ ঈযড়ংংঁফড়াংশু তো স্পষ্টই ইঙ্গিত করেছেন, প্যারিস ট্র্যাজেডি হচ্ছে ৯/১১ ফ্রেন্স স্ট্রাইল (খব ১১ ঝবঢ়ঃবসনবৎ ধ ষধ ভৎধহপধষংব) যারা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির কিছুটা খোঁজখবর রাখেন তারা নিশ্চয়ই এৎবধঃবৎ সরফফষব ঊধংঃ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখেন। কয়েক বছর আগে একজন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ওয়েসলি কার্ক সাতটি দেশের পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন। এই সাতটি দেশ হচ্ছেÑ ইরান, সিরিয়া, লেবানন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইরাক। ইতোমধ্যে লিবিয়া ও ইরাকে পরিবর্তন হয়েছে। সিরিয়া পরিবর্তনের পথে। ২০২০-পরবর্তী মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে মানচিত্র আঁকতে হবে। সৌদি আরব ভেঙে যাওয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া ও ইরাক একাধিক রাষ্ট্রে বিভক্ত হওয়াÑ এসবই এখন ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। আজ সূক্ষ্মভাবে দেখলে দেখা যাবে এর থেকে উপকৃত হচ্ছে একমাত্র ইসরায়েল। আজ তাই কোনো কোনো পক্ষের কাছে যেমনি প্রয়োজন ছিল ৯/১১-এর জন্ম দেওয়ার, ঠিক তেমনি প্রয়োজন ছিল প্যারিস ট্র্যাজেডি সৃষ্টি করার! আরও একটা কারণে তাদের কাছে প্যারিস ট্র্যাজেডির প্রয়োজন ছিল। সামনে অর্থাৎ ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। একজন কনজারভেটিভ, কট্টর, ইমিগ্রেশনবিরোধী রোনাল্ড ট্রাম্পের মতো প্রেসিডেন্ট সেখানে দরকার। হিলারির জনপ্রিয়তায় ধস নামানো প্রয়োজন! তাই প্যারিস ট্র্যাজেডি নিয়ে অনেক ‘প্রশ্ন’ ও অনেক ‘জিজ্ঞাসা’ থাকবেই। ৯/১১-এর ঘটনার রোগ এখন স্তিমিত হয়ে আসছে। তাই প্যারিস ট্র্যাজেডির প্রয়োজন ছিল। এর রেশ সারা বিশ্বকে টানতে হবে। নতুন করে ‘মুসলমানবিরোধী’ একটা জনমত আবার ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে। যে প্রশ্নটি এখন অনেকেই করার চেষ্টা করেন, তা হচ্ছে এর শেষ কোথায়? প্যারিস ট্র্যাজেডিই কী শেষ? যেভাবে প্যারিসে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে তাতে করে কি এ ধরনের হামলা আগামীতেও রোধ করা সম্ভব হবে? এর জবাব সম্ভবত নাবাচক। কেননা ইউরোপে বিশাল এক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে আইএস। একটি ‘শক্তি’ তাদের উৎসাহ জোগাচ্ছে। সম্ভবত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে এই আন্দোলনের পেছনে। সুদূরপ্রসারী একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- চালানো হচ্ছে। এবং আগামীতেও হবে বলে আশঙ্কা করছি। কতগুলো উদ্দেশ্য পরিষ্কার। এক. ৯/১১-এর পর যেভাবে একটি ‘মুসলমান বিদ্বেষী’ মনোভাব সারা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে গিয়েছিল, আজ প্যারিস ঘটনাবলির পর সারা ইউরোপে একটি ‘মুসলমান বিদ্বেষী’ মনোভাব ছড়িয়ে যাবে। মুসলমানরা (যেসব শরণার্থীকে ইতোমধ্যে ইউরোপে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে) সব সময় থাকবেন এক ধরনের ‘নিরাপত্তা বলয়ের’ ভেতর। তাদের সব কর্মকা- ‘মনিটর’ করা হবে। তারা ইউরোপে আশ্রয় পেয়েছেন বটে, কিন্তু তাদের এক ধরনের ‘বস্তি’ জীবনযাপনে বাধ্য করা হবে। তাদের জন্য তৈরি করা হবে ‘কংক্রিকেটর বস্তি’ এবং সেখানেই তাদের বসবাসে বাধ্য করা হবে। ইউরোপের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হবে। জার্মানিতে হিটলার যেভাবে ইহুদিদের ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ রাখত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী যুগে যেভাবে হোমল্যান্ড সৃষ্টি করে কৃষাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা করে রাখা হতো, অনেকটা সেভাবেই সিরীয় অভিবাসীদের এখন এক ধরনের ‘ঘোটো’ জীবনযাপনে বাধ্য করা হবে। দুই. উগ্রপন্থীরা তথা কনজারভেটিভরা প্যারিস ঘটনায় ‘উপকৃত’ হবেন। ফ্রান্সে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন আগামীতে। তারা নির্বাচনে ‘বিজয়ী’ হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নিয়ে আসা হবে। এবং তাদের দিয়ে এক ধরনের ‘নোংরা রাজনীতি’ করানো হবে। অর্থাৎ ইউরোপ হবে মুসলমানমুক্ত- এ ধরনের একটি সেøাগান ইউরোপের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। ইতোমধ্যে পোল্যান্ডসহ বেশ কটি দেশ মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বাদ দিয়ে খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের গ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিন. ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রার্থীরা এখনো দলীয়ভাবে মনোনীত হননি। একজন কট্টরপন্থী রিপাবলিকান প্রার্থী যাতে দলীয় মনোনয়ন পান, এই ঘটনা তাতে প্রভাব ফেলবে। চার. আইএসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ন্যূনতম ‘ঐক্যে’ উপনীত হলেও অচিরেই এতে ফাটল দেখা দেবে। পশ্চিমা শক্তিগুলোর মাঝে যদি ফাটল থাকে, তাতে লাভ ইসলামিক স্ট্রেট জঙ্গিদের। ঢ়ৎড়ভবংংড়ৎ গরপযবষ ঈযড়ংংঁফড়াংশু তার বহুল আলোচিত গ্রন্থ ঞযব এষড়নধষরুধঃরড়হ ড়ভ ধিৎ : অসবৎরপধ'ং ষড়হম ধিৎ ধমধরহংঃ ঐঁসধহরঃু-তে উল্লেখ করেছেন বিশ্বের সর্বত্র জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন ‘হাত’ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নামে যে অভিযান পরিচালনা করে আসছে তাতে মূলত তিনটি উদ্দেশ্য কাজ করে। এক. গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা। দুই. অর্থনৈতিক অবরোধ, তিন. সরকার পরিবর্তন। ইরাক ও লিবিয়ার ক্ষেত্রে এই স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হয়েছে। সিরিয়ার ক্ষেত্রে এই স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হলেও তা সফল হয়নি। এই স্ট্র্যাটেজি কোনো পরিবর্তন ডেকে আনতে পারেনি। যেসব দেশে এই স্ট্র্যাটেজি প্রয়োগ করা হয়েছে, সেখানে দরিদ্রতা বেড়েছে। অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে এবং এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে (ইরাক, লিবিয়া ও সিরয়া)। মানবাধিকার রক্ষা ও পশ্চিমা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা কোনো সুফল বয়ে আনেনি। সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের উত্থানের আগেই মার্কিনিদের কাছে আসাদ ছিলেন পরবর্তী টার্গেট। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সিরিয়ায় সাধারণ মানুষ হত্যার, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার। তাই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল আসাদকে উৎখাতের। একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত হয়েছিল জবংঢ়ড়হংরনরষরঃু ঃড় ঢ়ৎড়ঃবপঃ তত্ত্ব। তবে এ ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি। ফলে এই তত্ত্ব কোনো আন্তর্জাতিক আইন হিসেবেও গ্রহণযোগ্য নয়। সাধারণত কোনো দেশে সামরিক আগ্রাসন চালাতে হলে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। ইরাকের (২০০৩) ক্ষেত্রে কিংবা সিরিয়ার ক্ষেত্রে (২০১১) এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে জন্ম হয়েছিল ইসলামিক স্টেট জঙ্গিগোষ্ঠীর, যারা এখন সিরিয়া ও ইরাকের একটি বিশাল অংশ দখল করে একটি তথাকথিত জিহাদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। একসময় আসাদবিরোধী ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সিরিয়ান রেভ্যুলেশনারি অ্যান্ড অপজিশন ফোর্সেস’ গঠিত হয়েছিল ২০১২ সালের নভেম্বরে দোহায়। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে আহমেদ জারবা এ সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাদের কর্মসূচির মধ্যে ছিল প্রধান একটি গণতান্ত্রিক সিরিয়া প্রতিষ্ঠার। কিন্তু দেখা গেল ইসলামিক স্টেটের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে ন্যাশনাল কাউন্সিলের ভূমিকা সীমিত হয়ে গেছে। রাজনীতির দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয় ইসলামিক স্টেটের জাঙ্গিরা। তাদের নৃশংস কর্মকা- সারা বিশ্বের শুভবুদ্ধির মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। প্রশ্ন হচ্ছে কারা ইসলামিক স্টেটকে সংগঠিত করেছে? এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, সিরিয়ায় আইএস বা ইসলামিক স্টেটের নাম প্রথম শোনা যায় ২০১৩ সালে। তখন সংগঠনটির নাম ছিল ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট। এই এলাকার ঐতিহাসিক নাম লেভান্ট। প্যারিস হত্যাকা-ের পর ফ্রান্সে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ চলতি সপ্তাহে মস্কো যাচ্ছেন। পুতিনের সঙ্গে মতবিনিময় করার জন্য। তিনি ওয়াশিংটনেও যাবেন। ওলাঁদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা থাকা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু নির্মম সন্ত্রাসবাদ কীভাবে বন্ধ হবে? সেটা একটা বড় প্রশ্ন এখন। ৯/১১-এর পর সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। ১৪ বছর পর প্যারিস হত্যাকা- এর নতুন একটি মাত্রা পেল। এটা স্পষ্ট এসব বড় ঘটনার পেছনে যদি কোনো শক্তির মদদ না থেকে থাকে তাহলে এসব ‘ঘটনা’ সংঘটিত হতে পারে না। দুর্ভাগ্য আমাদেরÑ টুইন টাওয়ারে হত্যাকা-ের মূল হোতাদের চিহ্নিত করা যায়নি। তারা পর্দার আড়ালে থেকে গেছে। আল কায়েদার কথা আমরা জেনেছি বটে। কিন্তু কারা আল কায়েদার জন্ম দিল, কারা সুবিধা নিল, সে ‘ইতিহাস’ রয়ে গেছে পর্দার অন্তরালে। আজ প্যারিস হত্যাকা-ের মূল হোতা আবাউদের ‘মৃত্যু’ হয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা এবারও রয়ে যাবে পর্দার অন্তরালে। তাই প্যারিসের ঘটনাবলি থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক কিছু। Daily Amader Somoy 22.11.15

0 comments:

Post a Comment