রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

পরিবহন ধর্মঘট আমাদের কী বার্তা দিয়ে গেল

টানা ৩৩ ঘণ্টার একটি পরিবহন ধর্মঘট শেষ হয়েছে ১ মার্চ বিকালে। হাইকোর্টের একটি রুল, বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর ‘তৎপরতার’ পর পরিবহন সেক্টরে স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে বটে; কিন্তু রেখে গেছে নানা প্রশ্ন। এসব প্রশ্ন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, কিছু ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছা সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়ে সরকারকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মাঝে ফেলে দেয়া ইত্যাদি নানা বিষয়ের সঙ্গে জড়িত। সরকারের নীতিনির্ধারকদের এ পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখার বিষয় রয়েছে। কেননা এ ধরনের ঘটনা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। প্রথমত, এ ধর্মঘটটি ডাকা হয়েছিল দু’জন গাড়িচালকের শাস্তিকে কেন্দ্র করে। মানিকগঞ্জে গুণী চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ আর সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজনকে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে ‘হত্যা’ করার ঘটনায় গাড়িচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। দ্বিতীয় ঘটনায় গৃহবধূ খোদেজা বেগমকে ‘পরিকল্পিত’ভাবে হত্যা করেছিল চালক মীর হোসেন। গৃহবধূকে হত্যা করা ছিল পরিকল্পিত এবং আইনে হত্যাকাণ্ডের অপরাধে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। প্রশ্ন হচ্ছে, আদালতের রায়ে যে কোনো ব্যক্তি যদি মনে করেন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তিনি উচ্চ আদালতে এর প্রতিকার চাইতে পারেন। এটাই আইনের বিধান। কিন্তু পরিবহন শ্রমিকরা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শুধু আদালত অবমাননাই করেনি, বরং আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছিল। দেশে একটি নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। দেশের প্রচলিত আইনকে তারা চ্যালেঞ্জ করেছিল। এটা একটা ‘অশনিসংকেত’ রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য, প্রচলিত সমাজ কাঠামোর জন্য। রাষ্ট্র ব্যবস্থা এভাবে একটি ‘চক্রের’ কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে পারে না। দ্বিতীয়ত, এ ধর্মঘটের সঙ্গে দু’জন মন্ত্রীর (একজন প্রতিমন্ত্রী) জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। একজন মন্ত্রীর বাসায় সভা করে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এমন একটি খবর সংবাদপত্রে ছাপাও হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে মন্ত্রীরা নিজ সরকারের বিরুদ্ধে ‘কোনো ধরনের তৎপরতায়’ জড়িত থাকতে পারেন কিনা? তারা কি মন্ত্রী পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারাননি? মন্ত্রীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড যে কোনো বিবেচনায় সরকারকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল! তৃতীয়ত, যারা ট্রেড ইউনিয়ন নেতা কিংবা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি, একইসঙ্গে আবার মন্ত্রীও, তারা কি নিজ নিজ পদে থেকে মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে পারেন? এতে করে কি তাদের শপথ ভঙ্গ হয়নি? এ বিষয়টি এতদিনে কেউ দেখলেন না কেন? একজন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা মন্ত্রী হতেই পারেন। ভারতে এ ধরনের দৃষ্টান্ত ভূরি ভূরি আছে; কিন্তু তারা যখন মন্ত্রিসভায় যোগ দেন, তখন তারা ট্রেড ইউনিয়নের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এটাই নিয়ম। বাংলাদেশে এর ব্যতিক্রম হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নের নেতার পদ রেখেও তিনি মন্ত্রী! চতুর্থত, ঢাকার গাবতলীতে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছিল, যাতে পুলিশের রেকার ও জিপে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছিল, এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক; কিন্তু তাতে কি কাউকে ‘হুকুমের আসামি’ করা হয়েছে? আসামি করা হয়েছে ৪০ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১ হাজার ১০০ জনকে। তাদের নামে মামলা হয়েছে; কিন্তু কে তাদের নির্দেশ দিয়েছিল? কে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল সহিংস পথে যেতে? একজন পরিবহন শ্রমিকের শিক্ষা-দীক্ষা কম। তারা হঠাৎ করে উত্তেজিত হয় না। পেছন থেকে কেউ না কেউ নিশ্চয়ই তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল। এরা কারা? অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি যখন বিএনপির তিন মাসব্যাপী সহিংস আন্দোলনে বাসে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছিল, তখন ‘হুকুমের আসামি’ হয়েছিলেন খালেদা জিয়াসহ ঊর্ধ্বতন বিএনপি নেতারা। সেসব মামলার বোঝা নিয়ে বিএনপি নেতাদেরকে আজও আদালতে যেতে হয়। আজ পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে যে ঘটনা ঘটল, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও সড়ক পরিবহন সমিতির নেতারা এর দায়ভার এড়ান কী করে? পুলিশের কাজে বাধা দেয়া, পুলিশের যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা একটি মহাঅপরাধ। এটাকে হালকাভাবে নেয়া যায় না। উচ্ছৃংখল পরিবহন শ্রমিকরা আইন নিজের হাতে তুলে নেবে, দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করবে এবং দেশে যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে, তা বিনষ্ট করবে, এটা কোনো শুভবুদ্ধির মানুষ সমর্থন করে না। সুতরাং এ ঘটনার যদি দৃষ্টান্তমূলক ‘বিচার’ না হয়, তাহলে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে। অশুভ শক্তি এটা থেকে ফায়দা উঠাতে চাইবে। রাষ্ট্রকে যারা চ্যালেঞ্জ করে, আইন যারা নিজের হাতে তুলে নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল, তারা ‘অপরাধ’ করেছে। আর ‘অপরাধের’ শাস্তি সবার জন্যই এক। পঞ্চমত, এভাবে একটি বিশেষ শ্রেণী (পরিবহন শ্রমিক) যদি ‘অবৈধ ধর্মঘট’ ডেকে সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে ফেলে, এ ঘটনা কি অন্যান্য পেশাজীবীদেরও এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করবে না? শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী, প্রতিটি পেশার লোকদের নিজস্ব পেশাজীবী সংগঠন রয়েছে। সবারই নিজস্ব দাবি-দাওয়া রয়েছে। তাহলে কী সবাই দাবি আদায়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়োজিত হবে? ষষ্ঠত, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে জনভোগান্তির জন্য নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, শ্রমিকরা ধর্মঘটে যাননি, তারা অবসরে গেছেন। যদি শ্রমিকরা অবসরে গিয়ে থাকেন, তাহলে কি তারা লাঠিসোটা হাতে নিয়ে গাড়ি ভাংচুর করতে পারে? রাস্তা অবরোধ করতে পারে? শ্রমিকরা যে ধর্মঘটে ছিলেন, তা তো তিনি সংবাদ সম্মেলনে প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তিনি মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিলেন। এজন্যও তার ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। সপ্তমত, পরিবহন শ্রমিক সেক্টরে ৩০ লাখ শ্রমিক কাজ করে। এদের সবাইকে দোষী করা যাবে না। গুটিকয়েক শ্রমিক ও এর নেতারা ওই ঘটনায় দায়ী। তাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। সাধারণ শ্রমিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। অষ্টমত, মানিকগঞ্জ ও হেমায়েতপুরের ঘটনা দুটি বিচ্ছিন্ন। মানিকগঞ্জে বাসচালক জামির হোসেনের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় যেমনি সব বাসচালকে আমরা দায়ী করব না, ঠিক তেমনি একজন মীর হোসেনের জন্য সব বাসচালকে আমরা দোষী করব না। এজন্যই জামির হোসেনের শাস্তি বহাল থাকা উচিত, যাতে করে অন্য বাসচালকরা সতর্ক হয়। এক্ষেত্রে জামির হোসেন যদি শাস্তি ভোগ না করেন, তাহলে মহাসড়কে মৃত্যুর হার আমরা কমাতে পারব না। অন্যদিকে হেমায়েতপুরে খোদেজা বেগমকে পিষে মেরে ফেলার ঘটনায় ট্রাকচালক মীর হোসেনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পূর্ব শত্রুতাবশত এ হত্যাকাণ্ড। মীর হোসেন হুমকি দিয়েই খোদেজা বেগমকে হত্যা করেছিলেন। তিনি হতে পারেন একজন ট্রাকচালক; কিন্তু অন্য ঘাতকদের মতো তিনিও একজন খুনি। এটা কোনো ‘দুর্ঘটনা’ ছিল না। আইন সাক্ষী-সাবুদ, বিচার বিশ্লেষণ করে তাকে সাজা দিয়েছে। এখানে অনুকম্পা দেখানোর সুযোগ নেই। একজন ট্রাকচালক বলেই তিনি মাফ পেতে পারেন না। তাহলে অন্য হত্যাকারীরাও তো মাফ পেতে পারেন! মাফ পাওয়ার দাবি করতে পারেন। দু’জন মন্ত্রী ও পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা হত্যাকারীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে অন্যায় করেছেন। তারা এটা করতে পারেন না। নবম, পরিবহন ধর্মঘট ও ধর্মঘট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও টিভিতে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে কিছু প্রস্তাবও এসেছে। এ ঘটনা যদি মহাসড়কে চালকদের সতর্ক করে, এটা হবে আমাদের বড় পাওয়া। দুঃখজনক হলেও সত্য, চালকদের মাঝে সচেতনতা আসেনি। তাদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো কমেনি। এক্ষেত্রে অবিশ্যি মহাসড়কে নজরদারি কম। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি কৈ? প্রয়োজনে মহাসড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি কোনো সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হোক। এ রুটে প্রয়োজনে আনসার কিংবা ভিডিপি মোতায়েন করা হোক। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্যামেরা বসানো হোক। জরিমানার ব্যবস্থা করা হোক, যা হতে হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। সেখানে ট্রাফিক পুলিশের কোনো ভূমিকা থাকবে না। উল্টো পথে গাড়ি চালানো আজও বন্ধ হয়নি। ঢাকা-আরিচা রুটে রিকশা চলছে। ভ্যান চলছে। থ্রি হুইলার গাড়ি চলছে মন্ত্রীর ‘নির্দেশ’ উপেক্ষা করে। দেখার যেন কেউ নেই। প্রয়োজনে হাইওয়ে পুলিশের জনবল বাড়ানো হোক। এ রুটে সাভারে ট্রাফিক পুলিশদের অসহায়ভাবে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। অবাধ্য গাড়িচালকরা তাদের কথা শোনে না। সুতরাং আইনের প্রয়োগটা আরও কঠোর হওয়া উচিত। দশম, মানিকগঞ্জের ঘটনায় অভিযুক্ত বাসচালক জামির হোসেনের গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের মেয়াদ ৩ বছর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার আগে লাইসেন্স ছাড়া (২০১১) তিনি ৩ বছর অবৈধভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তিনি ৩ বছর অবৈধভাবে গাড়ি চালালেন। তিনি অপরাধ করেছেন। একই অপরাধ করেছেন গাড়ির মালিক এবং ওই এলাকার প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও। যারা ওই এলাকায় মহাসড়কে যান চলাচলের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, তাদের কি আমরা বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছি? জামির হোসেনের মতো তারাও অপরাধী। এগার. অবৈধ ধর্মঘটের কারণে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর দায়ভার কে নেবে? সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং সড়ক পরিবহন সমিতিকে (মালিক পক্ষ) এর দায়ভার নিতে হবে। তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বারো. ১ মার্চ থেকে পুরনো বাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল। ঢাকা শহরে যারা নিত্য চলাচল করেন, তারা দেখেছেন শতকরা ৯০টি বাসের কোনো ফিটনেস নেই। মাঝে মধ্যে সেতুমন্ত্রী টিভি ক্যামেরাম্যানদের সঙ্গে নিয়ে ফিটনেস পরীক্ষার জন্য রাস্তায় নেমে যান। টিভিতে সেই দৃশ্য দেখানো হয়। পরিবহন ধর্মঘটের পর এ ফিটনেস পরীক্ষার কথা কেউ আর বলে না এখন। তাহলে কি পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে ফিটনেস পরীক্ষা বন্ধ করার কোনো ‘অদৃশ্য’ যোগাযোগ রয়েছে? তের. একজন পরিবহন শ্রমিক মারা গেল; কিন্তু শাজাহান খান কিংবা মসিউর রহমান রাঙ্গার মুখ থেকে একবারও দুঃখ প্রকাশের কথা আমরা শুনলাম না। তাহলে কেমন তাদের নেতৃত্ব? তারা কাদের স্বার্থ রক্ষা করেন?

‘আপাতত’ পরিবহন ধর্মঘট শেষ হয়েছে। সরকারপ্রধানের ‘শক্ত’ অবস্থানের কারণেই নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটাতে পারেনি। ওই ঘটনা আমাদের অনেক ‘শিক্ষা’ দিয়ে গেছে। এ থেকে আমরা যদি কিছু না শিখে থাকি, আমরা বড় ভুল করব। উচ্ছৃংখলার নাম আর যাই হোক, ট্রেড ইউনিয়নের রাজনীতি হতে পারে না। যারা রাষ্ট্রের নির্বাহী কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। ‘হুকুমের আসামিদের’ চিহ্নিত করাও দরকার।
Daily Jugantor
06.03.2017

0 comments:

Post a Comment