রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সাবমেরিন ক্রয় নিয়ে এত হৈচৈ কেন?



বাংলাদেশের নৌবাহিনীতে দুটি সাবমেরিন সংযোজিত হয়েছে। ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামে এ দুটি সাবমেরিন সংযোজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হল। এ সাবমেরিন সংযোজন শুধু নৌবাহিনীর জন্যই নয়, বরং আমাদের সবার জন্য একটি গর্বের প্রতীক। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নৌবাহিনী বিশ্বের সেরা নৌশক্তির মাঝে নিজেদের নাম সংযোজন করল। বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের এ ধরনের একটি সিদ্ধান্তে তিনি যে শুধু দূরদর্শিতারই পরিচয় দিয়েছিলেন তেমনটি নয়, বরং তিনি যে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে চান এবং এই বাহিনীকে আরও অনেক দূরে নিয়ে যেতে চান, এটাও প্রমাণ করলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে; কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সাবমেরিন সংযোজনের বিষয়টি ভারতীয় নেতৃত্ব তথা ভারতের বুদ্ধিজীবী শ্রেণী খুব ভালো চোখে দেখেনি। বাংলাদেশ তার সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে। অন্য দেশের মুখাপেক্ষী হয়ে বাংলাদেশ কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, নেবেও না। ফলে সাবমেরিন সংযোজনের বিষয়টি একান্তভাবেই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। ভারত কেন, চীন বা যুক্তরাষ্ট্রেরও এ ক্ষেত্রে বলার কিছু নেই। আমি ভারতের অনেক বিশ্লেষকের মন্তব্য দেখেছি। ওইসব মন্তব্য একপেশে এবং যার সঙ্গে সত্যের এতটুকু মিল নেই। তারা যেসব আশংকা করছেন, তা সত্য বলে ধরে নেয়া যায় না। ভিভেক রসুভানসি ‘ডিফেন্স নিউজ’-এ একটি প্রবন্ধে (২৩ নভেম্বর, ২০১৬) মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ চীন থেকে যে সাবমেরিন সংগ্রহ করেছে, এর মধ্য দিয়ে চীন বাংলাদেশের মাটিতে শক্ত অবস্থান নেবে এবং বাংলাদেশে তার প্রভাব বাড়াবে। তিনি এমন একটি সম্ভাবনাও দেখছেন যে, এটা ভারতকে ‘ঘিরে ফেলার’ চীনের এক ধরনের পরিকল্পনাও (?) হতে পারে। একজন অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় অ্যাডমিরাল অরুণ প্রকাশ এই সাবমেরিন সংগ্রহকে ‘Act of Provocation’ বা প্ররোচনা বলে অভিহিত করেছেন। এটা ভারতের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে এটা তার মত। চীন ভারতকে ঘিরে ফেলার যে স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছে, এটা তারই অংশ বলে অ্যাডমিরাল অরুণ বিশ্বাস করেন। ভারতের ন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের পরিচালক নেভির ক্যাপ্টেন গুরপ্রিত খুরানা প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ কেন এ সাবমেরিন সংগ্রহ করল। অন্যদিকে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরণ সিং আশংকা করছেন, বাংলাদেশের সাবমেরিন সংগ্রহের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় এক ধরনের ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতা’ শুরু হতে পারে। সেন্টার ফর পলিসি রিসার্সের অধ্যাপক ভারত কনরাড এ ধরনের মন্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি একমত না হলেও তিনি বলেছেন, মোদি সরকারকে এখন নিশ্চিত করতে হবে চীন এ থেকে কোনো কৌশলগত সুবিধা নেবে না। বিশ্লেষকদের পাশাপাশি আমি ভারতীয় মিডিয়াতেও নেতিবাচক মন্তব্য দেখেছি। সেখানে যেসব প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, তার একটির সঙ্গেও বাস্তবতার কোনো মিল নেই। প্রথমত, ভারতকে ‘ঘিরে ফেলার’ তথাকথিত চীনের স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে যে আশংকার কথা বলা হয়েছে, তার পেছনে আদৌ কোনো সত্যতা নেই। কেননা চীনের সঙ্গে মোদি সরকারের সম্পর্ক অনেক ভালো। দেশ দুটো বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের প্রভাব খর্ব করতে ব্রিকস ব্যাংক গঠন করেছে। উপরন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগ্রাসী নীতির কারণে চীন, ভারত এবং রাশিয়ার অবস্থান এখন এক। সুতরাং চীন ও ভারতের মাঝে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে উভয় দেশেরই নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে। সেসব স্বার্থকে বিবেচনায় নিয়েই দেশ দুটো কাজ করে। উপরন্তু বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় চীনের যে নীতি, তা হচ্ছে আর্থিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট। ভারতে চীনের বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে। চীনের কোনো দেশকে ‘ঘিরে ফেলার’ নীতি নেই। দ্বিতীয়ত, ‘Act of Provocation’-এর যে কথা বলা হচ্ছে, তা সর্বৈব মিথ্যা। বাংলাদেশের সেই সক্ষমতা নেই যে ভারতীয় নেভিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। উপরন্তু গত ৪৫ বছরের বৈদেশিক নীতিতে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এমন একটি সরকার আছে, যা ‘ভারতবান্ধব’ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ ভারতকে অনেক কিছু দিয়েছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশের প্রাপ্তি অনেকটা শূন্য। সুতরাং সাবমেরিন সংগ্রহের মধ্যে দিয়ে ‘Act of Provocation’-এর কোনো ঘটনা ঘটেনি বা ঘটার সম্ভাবনাও নেই। তৃতীয়ত, কোনো কোনো বিশ্লেষক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এটাও মিথ্যা প্রচারণা। বাংলাদেশের রিজার্ভ, পরবর্তী ১১টি দেশের মাঝে অন্যতম একটি দেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়া, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের ওপরে রাখা, দারিদ্র্য কমিয়ে আনা প্রমাণ করে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যথেষ্ট স্থিতিশীল। ফলে ২০৩ মিলিয়ন ডলার দিয়ে দুটো সাবমেরিন কেনা বাংলাদেশের জন্য কঠিন কিছু নয়। বাংলাদেশের সেই সক্ষমতা আছে। চতুর্থত, বাংলাদেশে চীনের ঘাঁটি (?) হবে কিংবা চীন বাংলাদেশে ‘শক্ত’ অবস্থানে থাকবে, এটাও অমূলক। বাংলাদেশ আজ নয়, অনেক আগে থেকেই চীন থেকে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করছে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী আধুনিকীরণে এসব অস্ত্রশস্ত্রের প্রয়োজন ছিল। এখন এই কাতারে নৌবাহিনী শরিক হল। এটা নতুন কিছু নয়। এতে করে ভারতের সংশয় থাকারও কোনো কারণ নেই। পঞ্চমত, দক্ষিণ এশিয়ায় অস্ত্র প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, এই আশংকাও সত্য নয়। বঙ্গোপসাগরে কিংবা ভারত মহাসাগরে ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। প্রায় ৭৯০২৩ নৌসেনা, ২৯৫টি ছোট-বড় মিলিয়ে যুদ্ধজাহাজ, একটি বিমানবাহী যুদ্ধ জাহাজ, প্রায় ১৫টি সাবমেরিন (যার মাঝে ১টি হচ্ছে পারমাণবিক শক্তিচালিত) নিয়ে ভারতের যে নৌবাহিনী, তা বিশ্বের ৫ম। শুধু তাই নয়, সিসিলি, মরিশাস ও মাদাগাস্কারে রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর ঘাঁটি। সুতরাং বাংলাদেশের নৌবাহিনীর শক্তির সঙ্গে তা কোনোভাবেই তুলনা করা যাবে না। বাংলাদেশের নৌবাহিনী সেই শক্তি রাখেও না। সুতরাং ভারতের যে উৎকণ্ঠা, তার কোনো ভিত্তি নেই। এ কারণেই রাশিয়ান সামরিক বিশ্লেষক ভেসিলি কাসিন মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের এই সাবমেরিন সংগ্রহ কোনো অবস্থাতেই ভারতের জন্য কোনো ‘হুমকি’ সৃষ্টি করবে না (স্পুটনিক, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬)।

তবে ভারতের পক্ষ থেকে এক ধরনের উৎকণ্ঠা যে আছে, তা তো অস্বীকার করা যাবে না। কেননা গেল বছর ১৪ নভেম্বর এই সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশের কাছে সরবরাহ করা হয়েছিল। এর ঠিক দু’সপ্তাহের মাথায় ভারতের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পানিক্কর বাংলাদেশে এসেছিলেন। সেটা ছিল কোনো ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। তবে একটা বিষয় আমার কাছে এখনও অস্পষ্ট। বাংলাদেশ এই সাবমেরিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সম্ভবত ২০১৪ সালে। গত প্রায় এক বছরের ওপরে বাংলাদেশী নাবিক ও কমান্ডিং অফিসাররা চীনে প্রশিক্ষণে ছিলেন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তা অজানা নয়। এখন ভারতীয় সরকার কিংবা বিশ্লেষকরা যেভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তা শুধু অনাকাক্সিক্ষতই নয়, বরং তা দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ধরনের অনাস্থা সৃষ্টি করতে পারে। একজন ভারতীয় নেভির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদপত্রে প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ভারত প্রয়োজনে বাংলাদেশের সঙ্গে সমুদ্র সীমান্তবর্তী ভারতীয় এলাকায় মিসাইল ব্যাটারি বসাবে। নতুন নৌঘাঁটি করার কথাও তিনি বলেছেন। বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য আছে কিনা জানি না; কিন্তু এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত (?) দু’দেশের বন্ধুত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার শামিল। সংবাদপত্রে (ভারতীয়) বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক একজন হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর একটি বক্তব্য দেখলাম। তিনি এটাকে অর্থের অপচয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ভারতীয় কর্মকর্তা তথা নীতিনির্ধারকদের মাঝে এক ধরনের উন্নাসিকতা কাজ করে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে ‘এক ধরনের নিয়ন্ত্রণের’ মধ্যে রাখতে চায় ভারত, যা কিনা বিশ্লেষকরা ‘ইন্ডিয়া ডকট্রিন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই যে মানসিকতা, তাতে কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে বর্তমান বিজেপি সরকারের কোনো পার্থক্য নেই।

বাংলাদেশ তার নৌবাহিনীর জন্য সাবমেরিন সংগ্রহ করেছে, তা শুধু একটাই কারণে। আর তা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা, সমুদ্রে আমাদের সম্পদের গ্যারান্টি দেয়া এবং সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আসরে নৌবাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো। একই সঙ্গে আরও একটি বিষয় আমাদের নীতিনির্ধারকরা বিবেচনায় নিয়েছেন, তা হচ্ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের কাছেই এখন সাবমেরিন আছে। বাংলাদেশ এখন এই কাতারে শরিক হল মাত্র। ২০১৫ সালে মিয়ানমার রাশিয়া থেকে সাবমেরিন সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছিল। শেষ পর্যন্ত আর্থিক বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা পরিত্যক্ত নয়। তবে পাকিস্তান নেভি মিয়ানমারের ক্রুদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে, এমন খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। পাকিস্তান তাদের পুরনো টাইপের দুটো সাবমেরিন মিয়ানমারের কাছে বিক্রি করতে চেয়েছিল। ২০১৬ সালে ভিয়েতনাম তাদের নৌবাহিনীতে ৬টি সাবমেরিন সংযোজন করেছে। মালয়েশিয়ার নেভি ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার খরচ করে ফ্রান্সের কাছ থেকে সাবমেরিন ক্রয় করেছে। ইন্দোনেশিয়ার অনেক আগে থেকেই সাবমেরিন ছিল। ২০২০ সালের মধ্যে তাদের বহরে মোট ১২টি সাবমেরিন সংযোজিত হবে। ইতিমধ্যে পুরনো টাইপের দুটো সাবমেরিনের বদলে নতুন দুটো সাবমেরিন বহরে যুক্ত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশগুলোর কেউই পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে না, এবং পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে না। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সমুদ্রসীমা এখন নির্ধারিত। সমুদ্রে এখন আমাদের সীমান্ত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের রায় আমাদের পক্ষে। এতে বাংলাদেশ ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার বেশি টেরিটোরিয়াল সি, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশের সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর অধিকার পেয়েছে। এই সম্পদকে রক্ষা করতে হলে দরকার শক্তিশালী নৌবাহিনী।

পাঠক, ২০০৮ সালের একটি পরিস্থিতির কথা আমরা স্মরণ করতে পারি। ওই সময় গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের নৌবাহিনী ও মিয়ানমারের নৌবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। মিয়ানমার তার গভীর সমুদ্রে এ-৩ ও এ-১ ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধানে দক্ষিণ কোরিয়ার দাইও কোম্পানিকে ব্যবহার করেছিল। দাইও কোম্পানি বাংলাদেশের সীমানার ভেতরেও ঢুকে অনুসন্ধান কাজ চালাচ্ছিল। বাংলাদেশের নৌবাহিনী তখন চ্যালেঞ্জ করেছিল। এক পর্যায়ে সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। পরে মিয়ানমারের নৌবাহিনী সরে গেলে ও দাইও তাদের কাজ বন্ধ করে দিলে উত্তেজনার অবসান ঘটেছিল। মিয়ানমারের এ-৩ ও এ-১ ব্লকের পাশাপাশি আমাদের রয়েছে ব্লক-১২, যেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার দাইও’র সহযোগী অপর একটি সংস্থার সঙ্গে পেট্রোবাংলা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এক্ষেত্রে ‘বড় জটিলতা’ এড়াতে হলে আমাদের শক্তিশালী নৌবাহিনী দরকার। সাবমেরিন এক্ষেত্রে যুদ্ধ করবে না, বরং যে কোনো সম্ভাব্য আক্রমণকে ‘নিউট্রাল’ করতে পারবে। আমাদের নৌবাহিনী ও তাদের অফিসাররা দক্ষতা প্রমাণ করেছেন অতীতে। বিএনএস ওসমান ও বিএনএস মধুমতি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লেবাননে মোতায়েন করা হয়েছিল। এখন সাবমেরিন সংযোজনের ফলে তাদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়ল। এটা বাংলাদেশের জন্য আরও সম্মান বয়ে আনবে। বাংলাদেশের এই গর্বের জয়টাকে আমরা ধরে রাখতে চাই। শুধু নৌবাহিনী কেন, এখন সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও আরও শক্তিশালী করা দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কেউ যদি আক্রমণ করে, তাহলে যেন তার সমুচিত জবাব দিতে পারি, সে প্রস্তুতি আমাদের থাকবে, এটাই হচ্ছে মোদ্দাকথা। আমরা শক্তিশালী দেশ। আমরা শান্তি চাই। কিন্তু যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত আক্রমণ চ্যালেঞ্জ ও রোধ করার সক্ষমতা আমাদের আছে ও থাকবে।
Daily Jugantor
21.03.2017

0 comments:

Post a Comment