এ দুঃখ আমি রাখব কোথায়! ভিসির বাড়িতে বিউটি পার্লার! ছবিসহ এ সংবাদটি ছাপা
হয়েছে যুগান্তরে গত ৫ মার্চ। একজন শিক্ষক হিসেবে আমার কাছে এর চেয়ে আর
লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না। একজন ভিসি, যিনি শিক্ষকও বটে, বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষকদের মান-মর্যাদা কোথায় নিয়ে গেলেন? সরকারি বাসভবনে তিনি বিউটি
পার্লার দেবেন? ভদ্রলোক গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। নাম তার খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। ভদ্রলোক
নাকি এক সময় ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। সেখানে নাকি
তিনি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষক প্যানেল সোনালী দলের সাবেক
যুগ্ম-সম্পাদকও ছিলেন! সত্য-মিথ্যা জানি না, যুগান্তরের গোপালগঞ্জ
প্রতিনিধি আমাদের এই তথ্যটিই দিয়েছেন। এই উপ-সম্পাদকীয় লেখার সময় পর্যন্ত
ভিসি মহোদয় এর কোনো জবাবও দেননি। সুতরাং ধরে নিচ্ছি, এর পেছনে সত্যতা আছে।
কেননা, ছবি তো আর মিথ্যা কথা বলে না। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভিসি তার বাসভবনে
প্রতিষ্ঠিত বিউটি পার্লারের সিরিয়াল নিজেই নিয়ন্ত্রণ করছেন। একজন ভিসি,
অর্থাৎ উপাচার্য, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিউটি পার্লার কেন, আলু-পটলের ব্যবসা
করতেই পারেন। এটা তার অধিকার। কিন্তু তিনি তো এর জন্য ভিসি ভবন ব্যবহার
করতে পারেন না! খোঁজ নিলে দেখা যাবে, ওই বিউটি পার্লারের জন্য যে বিদ্যুৎ
ব্যবহার করা হচ্ছে, তাও নেয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা
হয়, তা থেকে। দুঃখ লাগে, এ ধরনের ‘লোককেও’ আমরা ভিসি বানিয়েছি! তিনি তো
শিক্ষক সমাজের কলংক।
তিনি গোপালগঞ্জের মানুষ হতে পারেন। কিন্তু গোপালগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত একটি
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ওই এলাকার একজন শিক্ষককেই নিয়োগ দিতে হবে কেন? এ
প্রবণতা তো আঞ্চলিকতার জন্ম দেবে। দিয়েছেও। যুগান্তর প্রতিনিধির কাছে তিনি
প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করেছেন। এটা তিনি করতে পারেন না। দুদকে তার
বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও আর্থিক কেলেংকারির অভিযোগ রয়েছে। তাকে এ ব্যাপারে
প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, দুদকের চিঠির কোনো জবাব দিতে হবে না।
কেননা, তিনি ওপর থেকে ম্যানেজ করে ফেলেছেন। কী সাংঘাতিক কথা! যেখানে দুদক
রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি’র আর্থিক কেলেংকারি তদন্ত করছে, তাকে
নোটিশ দিয়েছে, সেখানে তিনি কী করে বলেন, ‘দুদককে ম্যানেজ’ করে ফেলেছেন?
দুদক বিষয়টি কীভাবে দেখবে, আমি জানি না। কিন্তু এ ঘটনা (যদি সত্যি হয়ে
থাকে) দুদকের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। উপরন্তু এটা দুদকের কর্মকাণ্ডকে একরকম
চ্যালেঞ্জ করার শামিল। সাম্প্রতিক সময়ে দুদকের অনেক কর্মকাণ্ড আমাদের মধ্যে
আশার সঞ্চার করেছে। আমরা আশাবাদী হয়েছি। একজন নাসির উদ্দিন, হতে পারেন
তিনি ভিসি, হতে পারেন তিনি গোপালগঞ্জের মানুষ, তিনি যদি অন্যায় করে থাকেন,
যদি দুর্নীতি করে থাকেন, প্রচলিত আইনেই তার বিচার হওয়া উচিত। ভিসি হিসেবে
তিনি মাফ পেতে পারেন না। একই কথা প্রযোজ্য রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক
ভিসি’র ব্যাপারেও, যিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি পারিবারিক
বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করেছিলেন। আমি জানি না, যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদটি
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে পড়েছে কী না!
আমি মনে করি, দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কেননা এর সঙ্গে
গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির প্রশ্নটি জড়িত। গোপালগঞ্জ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র কর্মকাণ্ড অনেকগুলো প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে। ধারণা
করা হচ্ছে, দেশের ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যাদের ভিসি হিসেবে নিয়োগ
দেয়া হয়েছে, তাদের অনেকে শুধু অযোগ্যই নয়, বরং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে
গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। শিক্ষক সমাজকে জাতির কাছে
‘ছোট’ করেছেন। দুই. দলীয় পরিচয়ে কিংবা আঞ্চলিকতা বিবেচনায় যাদের ভিসি
হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়, তারা যে ব্যর্থ এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান
যে তারা আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন না, গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির
কর্মকাণ্ডে আবারও তা প্রমাণিত হল। তিন. ভিসিরা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েই অনেক
ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন।
নিজের আত্মীয়-স্বজন, ভাই, স্ত্রী, এদের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেন নির্ধারিত
যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এর বড় প্রমাণ।
এ ধরনের ঘটনা আরও অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শোনা যায়। এ
ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন একটি আইন করতে পারে, যেখানে বলা
থাকবে- বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিদের সন্তান বা আত্মীয়-স্বজনরা প্রথমে
একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি নিয়োগ পাবেন না। তাদের অন্য যে কোনো
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা অর্জন করে পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে
আসতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষকরা প্রথমে
অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে পরে যদি চান, নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের
কর্মজীবন শুরু করেন। এটা করা না হলে অচিরেই প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে
একেকটি ‘পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে’ পরিণত হবে। আমার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে
এই প্রবণতা আমি প্রত্যক্ষ করছি। এটা ভালো নয়। উচ্চশিক্ষার জন্য তা
মঙ্গলজনকও নয়। চার. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর মঞ্জুরি কমিশনের নজরদারি
অনেক কম। চেয়ারম্যান ও সদস্যরা আছেন বটে, কিন্তু তাদের কোনো শক্ত
কর্মকাণ্ড আমার চোখে ধরা পড়ছে না। এখন ইউজিসির নাম পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।
তাতে করে উচ্চশিক্ষায় কতটুকু পরিবর্তন আসবে, আমি নিশ্চিত নই। অতি সম্প্রতি
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এসডিজিবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ
বলেছেন, ‘আমাদের শিক্ষার মান নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।’ জনাব আজাদ সাবেক
আমলা। সিনিয়র সচিব ছিলেন। অবসরে গেছেন। তিনি কথাটা মিথ্যা বলেননি। সাবেক
শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খানও একাধিকবার এ ধরনের কথা বলেছেন। উচ্চশিক্ষার
ক্ষেত্রে মানের যে অবনতি ঘটেছে, এটা তো হাজারটা দৃষ্টান্ত দিয়ে দেখানো যায়।
১৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর (যেগুলো সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়) টিআইবি
যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, তাতে তথ্য-উপাত্তসহ উল্লেখ করা হয়েছিল
ব্যক্তির ইচ্ছায়, দলীয় বিবেচনায়, টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে
শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের অনেকেই যোগ্য নন। ফলে উচ্চশিক্ষার
মানোন্নয়নে তারা অবদান রাখতে পারছেন না। আমার ধারণা ছিল, ওই প্রতিবেদনের পর
ইউজিসি একটি বড়সড় অনুসন্ধান চালাবে। কিন্তু তারা তা করেনি। শুধু প্রতিবাদ
করেই দায়িত্ব শেষ করেছে। দুদকও বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে পারে। টাকার
বিনিময়ে যদি শিক্ষক নিয়োগ হয়, তাহলে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন হবে কীভাবে?
একটা হতাশাজনক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। দেশে অনেক পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। এর প্রয়োজনীয়তা নিশ্চয়ই অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু
শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য যে কাজটি করা দরকার, তা হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে
যাদের ওপর এই দায়িত্বটি বর্তিয়েছে, তারা দায়িত্ব পালন না করে ব্যস্ত থাকছেন
অন্য কাজে। তাই যোগ্য ও দক্ষ লোকদের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে নিয়োগ
দেয়া প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য সরকার একটি কমিশন গঠন করতে
পারে। ইউজিসি এ কাজটি করতে পারছে না।
দুই.
ভিসিদের কাহিনী নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে একটি জাতীয় দৈনিক সিরিজ প্রতিবেদন
প্রকাশ করেছিল। সেখানে অনেক ভিসি কী করে প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন,
তা উল্লেখ করা হয়েছিল। ভিসি হচ্ছেন একটা প্রতিষ্ঠান। তিনি যদি বিতর্কিত
হন, দুর্নীতি করেন, তাহলে আস্থার জায়গাটা আর থাকে না। শুধু আর্থিক
কেলেংকারি নয়, কোনো কোনো ভিসি আবার নিজের অনুপযুক্ত ছেলেকে নিজ
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক বানিয়ে ‘সুবিধা’ নেয়ার চেষ্টা করেছেন। এ সংক্রান্ত
একটি সংবাদ অতি সম্প্রতি ছাপা হয়েছে। যে ‘ছাত্র’ কোনোদিন যোগ্যতা বলে
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি, সে এখন কবি কাজী নজরুল ইসলাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক! যে ছাত্রটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা
করেছে, তার তো ‘ভালো ছাত্র হলে’ ওই সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষকতা
করার কথা। বাবা ভিসি। তাই বলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে তাকে
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হবে! তার নিয়োগ প্রক্রিয়া যে সিন্ডিকেটে
অনুমোদিত হয়েছিল, ওই সিন্ডিকেট সভায় ভিসি কি উপস্থিত ছিলেন? নিজে উপস্থিত
থেকে ছেলের নিয়োগ প্রক্রিয়া তিনি কি অনুমোদন করতে পারেন? আইনগতভাবে এবং
নৈতিকভাবে তিনি তা পারেন না। ইউজিসি কী বিষয়টি তলিয়ে দেখেছে? শিক্ষামন্ত্রী
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অতি সম্প্রতি বলেছেন,
‘শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’
কথাটা শুনতে ভালোই শোনায়। কিন্তু খুব জানতে ইচ্ছে করে, মান বৃদ্ধির জন্য
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কী কী উদ্যোগ নিয়েছে? অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ কী শিক্ষার
মানোন্নয়নের কোনো নির্দেশনা দেয়? ব্যক্তির ইচ্ছায় এবং ব্যক্তিকে সামনে রেখে
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নতুন নতুন বিভাগ খোলা হচ্ছে, যার আদৌ কোনো
প্রয়োজন নেই। দক্ষ জনশক্তি গড়ার ক্ষেত্রেও তা কোনো অবদান রাখবে না।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাকটিক্যাল কেমেস্ট্রি নামে নতুন একটি
বিভাগ খোলা ও সেখানে জনবল নিয়োগে যে অনিয়ম হয়েছে, তার রেশ ধরে ইউজিসির এক
কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। এজন্য ইউজিসির চেয়ারম্যান ধন্যবাদ
পেতেই পারেন। কিন্তু অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সন্তানদের
শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ তথা বৃত্তি প্রদান ইত্যাদি বন্ধে ইউজিসি যদি উদ্যোগ
নেয়, তাহলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তা বড় অবদান রাখবে।
ভিসিদের অনিয়ম এই প্রথম নয়। গোপালগঞ্জের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র ‘বিউটি পার্লার’ দেয়ার খবর ছাপা হয়েছে বটে, কিন্তু
অনেক ভিসি’র ‘কাহিনী’ কোনোদিনই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়নি। হয়তো হবেও না।
তবে তাদের সম্পদের হিসাব যদি নেয়া যায় ‘থলের বেড়াল’ বেরিয়ে এলেও আসতে পারে।
মনে আছে, বিএনপি জামানায় এক ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ক্রয়কৃত ইট-সিমেন্ট
ঢাকায় নিজের বাড়ি নির্মাণের কাজে ব্যবহার করেছিলেন। আরেক ভিসি ভিসি’র জন্য
নির্ধারিত বাসভবনে না থেকে নিজ বাড়িতে থেকে বাসা ভাড়া গ্রহণ করেছিলেন (সে
টাকা ফেরত দিতে আমি বাধ্য করেছিলাম আমার তদন্ত শেষে)। আরেক ভিসি নিজের
বোনকে বিয়ের বিনিময়ে একজনকে চাকরি দিয়েছিলেন। তদন্তে তা প্রমাণিত হয়েছিল।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তার দুর্নীতি
সংক্রান্ত ফাইল হারিয়ে গিয়েছিল। কোনো বিচার হয়নি। আর তাই গোপালগঞ্জের
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির ‘বিউটি পার্লার’ দেয়ার কাহিনী শুধু সংবাদপত্রেই থেকে
যাবে বলে আমার আশংকা। অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রী আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের
সমাবর্তনে যাবেন এবং গতানুগতিকভাবে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের আহ্বান
জানাবেন। সংবাদপত্রে সে খবর ছাপা হবে। আমরা উৎসাহিত হব। শিক্ষার মানোন্নয়ন
হবে, আমরা তা আশা করতেই থাকব। এ ‘কাহিনীর’ যেন শেষ নেই। সরকার একটু ভাবুন,
কাদের ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে? কী তাদের যোগ্যতা? ‘বিউটি পার্লার’
দেয়া যার মানসিকতা, তিনি কি ভিসি হতে পারেন? যোগ্য লোককে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদগুলোয় নিয়োগ না দিলে যা হয়, তাই হয়েছে গোপালগঞ্জ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির ক্ষেত্রে। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিক,
তাকে ওই পদে রাখা কতটুকু যৌক্তিক হবে? আমরা শুধু আশা করতে পারি,
বিশ্ববিদ্যালয়টি ঠিকমতো চলুক। দক্ষ জনবল তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি অবদান
রাখুক।
Daily Jugantor
13.03.2017
0 comments:
Post a Comment