রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

চীন-ভারত দ্বন্দ্ব ও ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’-এর ভবিষ্যৎ


গত ১৬ মে পেইচিংয়ে শেষ হয়েছে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ (ওবিওআর) শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন। চীন এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের ‘ব্রেন চাইল্ড’ হচ্ছে এই ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ মহাপরিকল্পনা। এই মহাপরিকল্পনার আওতায় তিনি সড়ক ও রেলপথে চীনের সঙ্গে দক্ষিণ তথা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া তথা রাশিয়া ও ইউরোএশিয়ার সঙ্গে ইউরোপকে সংযুক্ত করতে চান। এটা করতে গিয়ে তিনি স্থলপথে চীনের এক অঞ্চলের সঙ্গে ইউরোপের সংযুক্তি ঘটাবেন, যাকে বলা হচ্ছে ‘বেল্ট’ আর অন্যদিকে সমুদ্রপথে চীনের অন্য একটি অঞ্চলের সঙ্গে ইউরোপের সংযুক্তি ঘটবে, যাকে বলা হচ্ছে ‘রোড’। প্রাচীন যুগে হান সাম্রাজ্যের সময় (২২০ বিসি-২০৬ বিসি) চীনা সম্রাট যে ‘সিল্ক রুট’-এর প্রচলন করেছিলেন (চীনা পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে অন্য অঞ্চলে যাওয়া), আধুনিক যুগে এসে শি চিনপিং সেই ‘সিল্ক রুট’-এর নতুন একটি সংস্করণ দিলেন।
২০১৩ সালে মধ্য এশিয়া সফরের সময় শি চিনপিং প্রথমবারের মতো এই ধারণা দিয়েছিলেন। মাত্র চার বছরের মধ্যে তিনি বাস্তবে এর রূপ দিলেন। তিনি পেইচিংয়ে যে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন, তাতে যোগ দিয়েছিলেন ২৯টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুপস্থিতি শীর্ষ সম্মেলনের সাফল্যকে ম্লান করে দেয়। ভারতের অনুপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মতো। ভারত এ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ায় এ কর্মসূচির ভবিষ্যৎ একটা প্রশ্নের মুখে থাকল; যদিও সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, চীন ধীরে ধীরে ভারতের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে উঠছে। ২০১৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৭১ বিলিয়ন ডলার; যদিও সত্য এটাই, বাণিজ্য ঘাটতিও বাড়ছে। আর এই ঘাটতি ভারতের প্রতিকূলে, যেখানে ২০০১-২০০২ সালে এক বিলিয়ন ডলার ঘাটতি ছিল, তা ২০১৫ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ বিলিয়ন ডলারে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির (পিপিপি) দেশ চীন। আর দ্রুত বিকাশমান ভারতের অর্থনীতি বিশ্বের তৃতীয় (পিপিপি, সাধারণ সপ্তম) অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। এশিয়ায় এ দুই বড় অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ক কী হবে কিংবা ওবিওআর নিয়ে দ্বন্দ্ব বড় কোনো সংকটের জন্ম দেবে কি না—এসব এখন ভাবনার বিষয়। তবে এটা বলতেই হয়, বেশ কিছু বিষয়ে পার্শ্ববর্তী এ দেশ দুটির মধ্যে দ্বিমত ও বিভাজন আছে। কিন্তু বাণিজ্যিক সম্পর্ক এ বিভাজন আর বিদ্বেষকে ছাড়িয়ে গেছে। সীমান্ত নিয়ে যে সমস্যা ছিল তা পুরোই গেছে—চীন অরুণাচল প্রদেশের একটা অংশকে তাদের নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। এ দাবি চীন পরিত্যাগ করেনি। নরেন্দ্র মোদির পেইচিং উপস্থিতির সময় (মে ২০১৫) চীনা সরকারি টিভিতে ভারতের যে ম্যাপ দেখানো হয়েছিল তাতে কাশ্মীর ও অরুণাচলকে ভারতীয় অংশ হিসেবে দেখানো হয়নি। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে চীন সড়ক নির্মাণ শেষ করছে ভারতের আপত্তি সত্ত্ব্বেও। দক্ষিণ চীন সাগরে চীন একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণ করছে, যা কিনা জাপানের নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভারতের নিরাপত্তা স্ট্র্যাটেজিস্টদের আতঙ্কিত করেছে। ভারত তার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও চীন তাতে সম্মান দেখায়নি। নেপাল ও মিয়ানমারে চীনা প্রভাব বাড়ছে—এটাও ভারতীয়দের উত্কণ্ঠার অন্যতম একটি কারণ। ২০১৫ সালে ভূমিকম্পকবলিত নেপালে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে এক ধরনের ‘ঠাণ্ডা লড়াই’ও আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম। ভারত গেল বছর ভারত মহাসাগরে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে একটি বড় ধরনের নৌ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। এটা নিঃসন্দেহে চীনাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। ভারত একটি পারমাণবিক শক্তি। ভারত এখন পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে (এনএসজি) অন্তর্ভুক্ত হতে চায়। কিন্তু তাতে আপত্তি রয়েছে চীনের। ওষুধ, তথ্য-প্রযুক্তি, কৃষিপণ্য নিয়ে ভারত চীনা বাজারে ঢুকতে চায়। কিন্তু তাতে রয়েছে চীনাদের আপত্তি।
ভবিষ্যতে চীনাদের একটা বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে ভারতের প্রাচীন ‘কটন রুট’-এর পুনরুত্থান। প্রাচীন যুগে ভারত ভারত মহাসাগরকে কেন্দ্র করে তার সুতি শিল্পের বিকাশ ঘটিয়েছিল। প্রাচীন ভারতে বণিকরা ভারত মহাসাগরের কয়েকটি রুট ব্যবহার করে তাদের পণ্যসামগ্রী, বিশেষ করে ভারতীয় সুতি কাপড় নিয়ে সুদূর আফ্রিকা পর্যন্ত যেত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল এ পথ ধরেই। অথচ চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ মহাপরিকল্পনার সঙ্গে মোদির প্রস্তাবিত ‘কটন রুট’-এর ধারণা সাংঘর্ষিক। প্রাচীন কটন রুটকে নতুন করে সাজানোর মধ্য দিয়ে ভারত এক মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে; অর্থাৎ ভারত মহাসাগরে তার সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা। অনেকেই স্মরণ করতে পারবেন, মোদি ২০১৫ সালের মার্চ মাসে মরিশাস, সিসিলি ও শ্রীলঙ্কা সফর করেছেন। মরিশাস সফরের সময় মরিশাসের সঙ্গে সেখানে একটি ভারতীয় নৌঘাঁটি স্থাপনের ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে। মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একটি মৈত্রী জোট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিল ভারত। ওই জোটেও মরিশাস ও সিসিলিকে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এটা যদি কার্যকর হয়, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূল থেকে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ মধ্যাঞ্চলের সিসিলি, মরিশাস কিংবা সুদূর ওমান-মোজাম্বিকও একই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এর অর্থ পরিষ্কার, বিশাল ভারত মহাসাগরে ভারত তার নৌবাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় এবং ‘ইন্ডিয়ান ওসেন রিম’ বা ভারত মহাসাগরভুক্ত অঞ্চলে অন্যতম একটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে চায়। অথচ চীন এরই মধ্যে ‘মুক্তার মালা’ নীতির মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। জিবুতিতে একটি নৌঘাঁটি নির্মাণ করতে চায় চীন—এ খবর সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। তবে চীনের জন্য একটি খারাপ খবর হচ্ছে শ্রীলঙ্কায় তার যে প্রভাব ছিল, তা এখন কমতির দিকে। সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের ‘অতি চীননির্ভর’ নীতির কারণে তাঁকে ক্ষমতা হারাতে হয়েছিল। সেখানে সিরিসেনার নেতৃত্বে একটি ‘ভারতবাজ’ সরকার ক্ষমতাসীন হয়েছে। ফলে আগামী দিনে ভারত মহাসাগরভুক্ত অঞ্চলে চীন ও ভারতের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করার প্রতিযোগিতা যে থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। এর ফলে বাধাগ্রস্ত হবে ওবিওআরের বিকাশ।
ভারত এরই মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বত্র তার রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় তার সীমান্তবর্তী যেসব দেশ রয়েছে, প্রতিটি দেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক শুধু ভালোই নয়, বরং সর্বকালের সেরা সম্পর্ক রয়েছে এখন। এ অঞ্চলে ভারতের অর্থনৈতিক, সামরিক ও স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। অতীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সরকার যা করতে পারেনি, তা মোদি সরকার করে দেখিয়েছে। ‘সার্ক যাত্রা’র অংশ হিসেবে ভারত এ অঞ্চলের দেশগুলোকে তার পতাকাতলে আনছে। এটা অনেকটা ‘মনরো ডকট্রিন’-এর ভারতীয় সংস্করণ, অর্থাৎ ভারত চাইবে না এ অঞ্চলে অন্য কোনো শক্তি কর্তৃত্ব করুক অথবা প্রভাব বিস্তার করুক। চীন এ অঞ্চলের নিকট প্রতিবেশী। বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে চীন সীমান্ত খুব বেশি দূরে নয়। এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব সংকুচিত করার উদ্দেশ্য নিয়েই ভারত কাজ করে যাচ্ছে। ভারতের আপত্তির কারণে ভুটানে এখন পর্যন্ত চীন তার দূতাবাস খুলতে পারেনি। তাই চীন-ভারত সম্পর্কটা অনেকের কাছেই আলোচনার অন্যতম একটি বিষয়। এ সম্পর্ককে অনেক পর্যবেক্ষক ‘ভারতের হাতি বনাম চীনের ড্রাগন’ (Indian Elephant vs Chinese Dragon) হিসেবে অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ চীনের পরিচিতি যেখানে ড্রাগনকে দিয়ে, ঠিক তেমনি ভারতের পরিচিতি হাতিকে দিয়ে। ‘হাতি বনাম ড্রাগন’ দ্বন্দ্ব নিঃসন্দেহে একুশ শতকের মধ্যভাগে শুধু এ অঞ্চলেই নয়, বরং বিশ্বরাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে।
অনেকেই স্মরণ করতে পারেন ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের কথা, যে যুদ্ধে ভারতের একটা বিশাল এলাকা চীন দখল করে নিয়েছিল। এর আগে মধ্য পঞ্চাশের দশকে ‘হিন্দি-চীনি ভাই ভাই’ স্লোগান তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। তিব্বতকে কেন্দ্র করে ভারত ও চীন যে ‘পঞ্চশীলা নীতি’ গ্রহণ করেছিল, যা ন্যাম বা জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন প্রতিষ্ঠায় একটি ভিত্তি দিয়েছিল। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের পররাষ্ট্রনীতির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই পঞ্চশীলা নীতি। যেমন বলা যেতে পারে ইন্দোনেশিয়ার কথা। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে এই পঞ্চশীলার কথা বলা আছে। মধ্য পঞ্চাশের সেই ‘নেহরু-চৌ এন লাই’ ইমেজ আবার ফিরে এসেছিল মোদি-শি চিনপিং বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে। এটি কতটুকু কার্যকর হবে, মোদির এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে কত উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবে, তা শুধু আগামী দিনগুলোই বলতে পারবে। এখানে মূল সমস্যা হচ্ছে মানসিকতার। ভারতের ব্যুরোক্রেসি ভারতকে একটি বিশ্বশক্তি হিসেবে দেখতে চায়। রাজনৈতিক নেতৃত্বের পক্ষে এ প্রভাব কাটানো কঠিন। মনমোহন সিং পারেননি। এখন দেখার পালা মোদি কতটুকু পারেন। তবে এটা তো সত্য, মোদির নিজস্ব একটা স্টাইল আছে। তিনি রাজনীতিকে পাশে ঠেলে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। তাঁর চাই উন্নয়ন। চাই বিনিয়োগ। চাই ব্যবসা। সে কারণে পুরনো বৈরিতা ভুলে গিয়ে তিনি চীন সফরে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়েছিলেন বেশি। তাঁর বৈদেশিক নীতির এটাই বড় বৈশিষ্ট্য। তাঁর জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও সর্বশেষ চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া সফরের উদ্দেশ্য ছিল একটাই, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে সফল করা।
এখন ভারত ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ বা ওবিওআর শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিল না। ভারত যুক্তি দেখিয়েছে, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর, যা ওবিওআরের একটি অংশ, তা গিলগিট বালটিস্তানের ওপর দিয়ে গেছে। ওই অঞ্চলটি পাকিস্তানের অধিকৃত হলেও, ভারতেরও দাবি রয়েছে। এই অর্থনৈতিক করিডর অবকাঠামো নির্মাণে প্রায় ১০ হাজার চীনা কাজ করছে আর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত রয়েছে ১২ হাজার পাকিস্তানি সেনা। বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে। অভিযোগে আছে, এর পেছনে ইন্ধন রয়েছে ভারতের। ফলে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব ও ভারত-চীন দ্বন্দ্ব প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচি ভণ্ডুল করে দিতে পারে! অথচ ওবিওআর একটি বড় সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। যে ৬৪টি দেশ ওবিওআর পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত, তা বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিশ্বের জ্বালানিসম্পদের ৭৫ শতাংশ রয়েছে এ অঞ্চলে। আর বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বাস করে এখানে। শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, চীন ওবিওআর প্রকল্পে প্রায় ১৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। আগামী ২০৪৯ সালে অর্থাৎ চীনা বিপ্লবের যখন ১০০ বছর পূর্ণ হবে তখন এ পরিকল্পনা সম্পন্ন হবে। নিঃসন্দেহে ভারত যদি শেষ পর্যন্ত এ পরিকল্পনায় না থাকে, তাহলে চীনা লক্ষ্য অর্জিত হবে না। ভারতকে বাদ দিয়ে ওই প্রকল্প কতটুকু সফল হবে, সে প্রশ্নও উঠেছে। জুন মাসে পেইচিংয়ে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে অংশ নেবেন নরেন্দ্র মোদি। তাতে বরফ কতটুকু গলবে, সেটিও একটি প্রশ্ন। যদি ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচি পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বদলে যাবে পুরো দৃশ্যপট। কিন্তু প্রশ্ন থাকলই ভারতের মতো বড় অর্থনীতির দেশের অংশগ্রহণ ছাড়া ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচি আদৌ সফল হবে কি না!
Daily Kaler kontho
23.05.2017

0 comments:

Post a Comment