রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

একটি অশনিসংকেত



বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার ওপর হামলা হয়েছে এমন একটি সময়ে যখন খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো এক ইফতার অনুষ্ঠানে ‘ধানের শীষ’-এর পক্ষে ভোট চেয়েছেন। আর প্রধানমন্ত্রী সুইডেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক অনুষ্ঠানে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মির্জা ফখরুল ও তার সঙ্গীদের ওপর হামলা আমাদের জন্য একটি অশনিসংকেত। নির্বাচনের বাকি আছে আরও অনেকটা সময়। এখনই যদি মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু মাহমুদের মতো শীর্ষ নেতাদের ওপর হামলা হয়, তাহলে সামনের দিনগুলো নিয়ে মানুষ আতঙ্কে থাকবেই। এ হামলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা অন্যায়। এই হামলায় কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে আমি স্বাগত জানাই। তবে তার বক্তব্য যেন শেষ পর্যন্ত কাগজ-কলমেই থেকে না যায়।

‘সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন’ দরকার। ২০১৪ সালের জানুয়ারির ‘সিনড্রম’ থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব? বিএনপি উত্থাপিত নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার নিয়ে একটা সমস্যা এখনও রয়ে গেছে। অনেকগুলো প্রশ্ন সামনে আছে। জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়া জেলে যেতে পারেন, এরকম একটা সম্ভাবনা দেখছেন কেউ কেউ। নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হতে পারে, এটাও সম্ভব। আবার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখনও শত শত মামলা আছে- এটাও বাস্তব। তবে খালেদা জিয়া যখন ‘ধানের শীষ’-এর পক্ষে ভোট চান, তখন তো মেসেজটি স্পষ্ট- বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে যখন ‘আস্থার সম্পর্ক’ গড়ে তোলাটা জরুরি, তখন মির্জা ফখরুল আর আমীর খসরু মাহমুদের ওপর হামলা হল। এটা কোনো ভালো খবর নয়। আমাদের তা নানা চিন্তার মাঝে ফেলে দেবে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনও কিছু ‘জটিলতা’ আছে। বিএনপি সহায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসেনি। শেখ হাসিনাকে তারা প্রধানমন্ত্রী রেখে নির্বাচনে যেতে চায় না। কিন্তু নির্বাচন হবে তো সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় ও সংবিধানের অধীনে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি অংশ না নিলেও সরকার নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচনের আয়োজন করবে, যেমনটি করেছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। বিএনপি এখন একটি ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’-এর কথা বলছে। কিন্তু এর রূপরেখা এখন অব্দি উপস্থাপন করেনি। তবে সেই রূপরেখা সরকার যে মানবে, তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। মোটামুটিভাবে যেভাবেই হোক একটি নির্বাচনী আমেজ ফিরে এসেছে। টিভি টকশোতেও দেখলাম এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমি নিজেও একাধিক টকশোতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, দিন যত যাচ্ছে খালেদা জিয়ার সম্ভাব্য সাজা একটি অন্যতম আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যখন খালেদা জিয়ার সম্ভাব্য সাজা নিয়ে মন্তব্য করেন, তখন বুঝতে হবে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। যদিও এটা আইনের বিষয়। আদালত ও উচ্চ আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা আগাম মন্তব্য করে বিষয়টিকে উসকে দিলেন মাত্র। আসলে ‘সব দলের অংশগ্রহণ’-এ একটি নির্বাচন হোক, এটা আমার ধারণা প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান। আরেকটি ৫ জানুয়ারির (২০১৪) মতো নির্বাচন হোক- আমরা তা কেউই চাই না। বিদেশিরাও চান না।

৫ জানুয়ারি (২০১৪) আমাদের জন্য কোনো সুখকর দিন ছিল না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে দুটো বিষয় ছিল। এক. সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা এবং দুই. বাস্তবতা। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার কারণে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একটি নির্বাচন আয়োজন করার প্রয়োজন ছিল। এ নিয়ে দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই। তবে ‘আস্থার সম্পর্ক’ গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল ২০১৪-পরবর্তী যে কোনো সময় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা, যেমনটি করেছিল বিএনপি ১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ (যে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল) কিংবা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বারবার আলোচিত হতে থাকবে। ষষ্ঠ সংসদে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি। আর দশম জাতীয় সংসদে বিএনপি অংশ নেয়নি। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় দুটি নির্বাচনেরই প্রয়োজন ছিল। তবে তুলনামূলক বিচারে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে বেশি। ১৫৪টি সংসদীয় আসনে (৩০০ আসনের মাঝে আওয়ামী লীগের ১২৮, ওয়ার্কার্স পার্টির ২, জাসদ ৩, জাপা-মঞ্জু ১, জাতীয় পার্টি-এরশাদ ২০) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়া, ৫ জেলায় কোনো নির্বাচন না হওয়া কিংবা ৫২ ভাগ জনগোষ্ঠীর ভোট না দেয়ার সুযোগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য কোনো ভালো খবর নয়। এটা নিয়ে যে যুক্তিই আমরা টিভির টকশোতে দেখাই না কেন, তা দেশে কোনো আস্থার সম্পর্ক গড়ে উঠতে সাহায্য করেনি। অথচ গণতন্ত্রের মূল কথাই হচ্ছে আস্থার সম্পর্ক, পরস্পরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস। পঞ্চম সংসদে (১৯৯১) এই ‘আস্থার সম্পর্ক’ ছিল বিধায় আমরা দ্বাদশ সংবিধানে সংশোধনী এনে দেশে পুনরায় সংসদীয় রাজনীতির ধারা প্রবর্তন করেছিলাম। সেদিন বিএনপি সংসদীয় সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ধারণা করেছিলাম, ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে ‘আস্থার ঘাটতি’ সৃষ্টি হয়েছিল, তা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। কিন্তু তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি বলে মনে হচ্ছে না।

এরপর এলো চলতি ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারির ঘটনা। বিএনপির ‘কালো পতাকা’ দিবসে পুলিশি হামলা প্রমাণ করল ‘আস্থার সম্পর্ক’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অত সহজ নয়। আস্থার সম্পর্কের পূর্বশর্ত হচ্ছে বিএনপিকে ‘স্পেস’ দেয়া। অর্থাৎ বিএনপিকে তার কর্মসূচি পালন করতে দেয়া। এটা সত্য, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছিল, তার দায়ভার বিএনপি এড়াতে পারে না। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারার সংস্কৃতি আর যাই হোক, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য মানানসই নয়। ওই ঘটনায় বিএনপি তার সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীও এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের দলগুলো। কিন্তু আন্দোলন তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। অর্থাৎ সরকারের পতন হয়নি। কিন্তু সহিংসতায় অনেক মানুষ মারা গেছে। অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া মানুষের করুণ কাহিনী সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। টিভি পর্দায় তাদের আর্তি দেখে সাধারণ মানুষ কেঁদেছে। এ জন্য মানুষ বিএনপির ওপরই দোষারোপ করেছে। এটা থেকে বিএনপি বের হয়ে আসতে পারেনি। তারপরও কথা থেকে যায়। বিএনপি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থেকেছে। এটা সরকারের জন্য একটা প্লাস পয়েন্টও বটে। সরকার বিএনপিকে মূলধারায় নিয়ে আসতে পেরেছে। এটাকে ধরে রাখতে হবে, যাতে করে বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়। বিএনপি অংশ না নিলে (?) জটিলতা থেকে যাবে। তাতে করে কেউই লাভবান হবে না। সরকার তো নয়ই, বিএনপিও নয়। তাই সুস্থ নির্বাচনী পরিবেশের জন্য আস্থার সম্পর্ক গড়ে ওঠা জরুরি।

দুঃখজনক হলেও সত্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও একটি আস্থার সম্পর্ক স্থাপিত হতে পারত। তা হয়নি। দুই বড় দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ব্যস্ত থেকেছে পরস্পরকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখতে। ২০১৪ সালে একটি নির্বাচন হয়েছিল। কেন হয়েছিল, কী জন্য হয়েছিল এটা আমরা সবাই জানি। রাজনীতিকরাও জানেন। ভালো করেই জানেন। বাস্তবতা হচ্ছে, ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষা করা গেছে বটে; কিন্তু দেশে নির্বাচনী সংস্কৃতির মৃত্যু ঘটেছে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য এটা কোনো ভালো খবর নয়। দেশে সুস্থ গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য শক্তিশালী একটি বিরোধী দল থাকা দরকার। আমরা ইতিমধ্যে একটি হাস্যস্পদ সংসদের জন্ম দিয়েছি। জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের ‘আসনে’ রয়েছে, আবার তারা মন্ত্রীও হয়েছে। দলে রাজনৈতিক সমীকরণের প্রশ্নে মতবিরোধ রয়েছে বলেও জানা যায়। ফলে জাতীয় পার্টি বিএনপির বিকল্প হিসেবে দাঁড়িয়ে যাওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, তা হয়নি। এ কারণে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল সংসদে থাকা দরকার। না হলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না। গত তিন বছরে অনেক জাতীয় ইস্যু সংসদে আলোচিত হয়নি। অনেক সময় সংসদ সদস্যদের অনুপস্থিতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ বসেনি। এর অর্থ অনেক সংসদ সদস্যই সংসদীয় কার্যক্রমের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এখন সেই ‘পরিস্থিতি’ থেকে ফিরে আসতে হবে। বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে। কারণ এই সংসদ নির্বাচনে (একাদশ জাতীয় সংসদ) বিএনপি অংশ না নিলে দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। উপরন্তু নেতাকর্মীদের স্থানীয়ভাবে ‘নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার স্বার্থেও বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়া জরুরি। তাই বিএনপির জন্য একটি ‘স্পেস’ দরকার। তবে বড় কথা হল, আমাদের মানসিকতায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। বিএনপি নিঃসন্দেহে এখন যথেষ্ট দুর্বল। মামলা-মোকদ্দমা আর কোর্টে যাওয়া-আসার মধ্য দিয়ে তাদের দিন যাচ্ছে। সিনিয়র অনেক নেতা এখন আর সক্রিয় নন। কোনো বড় আন্দোলনও তারা গড়ে তুলতে পারছে না। তারপরও বিএনপির একটা বড় জনসমর্থন আছে। বিএনপিকে আস্থায় নিয়েই নির্বাচনে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে তার নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। হুদা কমিশনের ব্যাপারে বিএনপির যত রিজার্ভেশনই থাকুক, বাস্তবতা হচ্ছে নির্বাচনের প্রশ্নে এই হুদা কমিশনের সঙ্গেই বসতে হবে বিএনপিকে। বিএনপি বড় দল। হুদা কমিশন নিশ্চয়ই এটা উপলব্ধি করবে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির একটা ভালো ‘ডায়ালগ’ প্রয়োজন। সাধারণ ভোটাররা একটা ভালো নির্বাচন চায়। দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে, এটাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। তাই প্রতিযোগিতা থাকবেই। এই প্রতিযোগিতা হতে হবে রাজনৈতিক ও কর্মসূচিভিত্তিক। একুশ শতকে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চায় দলগুলো, কীভাবে তা বাস্তবায়ন করবে, তা দেখতে চায় সাধারণ মানুষ। সে জন্য ‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ থাকবে। এটাই গণতন্ত্রের কথা। কিন্তু তা যদি ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে’ চলে যায়, তা কোনো মঙ্গল বয়ে আনবে না। তাই ‘আস্থার সম্পর্ক’ থাকাটা জরুরি। চলতি ২০১৭ সালটি হবে এই ‘আস্থার সম্পর্ক’ পর্যবেক্ষণ করার সময়।

নির্বাচন হতে এখনও বাকি অন্তত ১৮ মাস। ২০১৯ সালের জানুয়ারির ৩ মাস আগে যে কোনো সময় এই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখনই যদি মির্জা ফখরুলের ওপর হামলা হয়, তাহলে তো অন্য কোনো শীর্ষ নেতা গণসংযোগে যাবেন না। বিএনপির নেতারা এমনকি কোনো কোনো গণমাধ্যম পেছনে সাবেক এক মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনেছেন। ওই ঘটনার ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়ার সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপির গাড়িবহর দু’জন পথচারীকে চাপা দেয়ায় উত্তেজিত লোকজন এ কাজটি করেছে। এর পেছনে সত্যতা কতটুকু আছে, সে প্রশ্ন আছে। কেননা কোনো সংবাদপত্রেই ঘটনাটা এভাবে আসেনি। বিএনপি যদি ত্রাণ বিতরণ করে তাতে ক্ষতি কী? সারা জাতিই তো রাঙ্গামাটির ঘটনায় শোকাহত। বিএনপি বড় দল। তারা ত্রাণ দিতে যেতেই পারে। তাদের বাধা দেয়া ঠিক হয়নি। এটাকে ‘অন্যায়’ বলেছেন ওবায়দুল কাদের। আমি তাকে সাধুবাদ জানাই। আমি খুশি হব, যারা অভিযুক্ত এবং যাদের নাম পত্র-পত্রিকায় এসেছে, তাদের যদি আইনের আওতায় আনা হয়। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। সরকারি দল হলেই তিনি মাফ পাবেন, আইন তো সে কথা বলে না। তাই পুলিশ নিজে উদ্যোগী হয়েই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে পারে। আমরা চাই আইনের সঠিক প্রয়োগ। আমরা চাই একটা সুস্থ পরিবেশ। আমরা চাই আগামী দিনগুলো যেন শঙ্কামুক্ত হয়। আমরা একটা কথা ভুলে যাই। মির্জা ফখরুলের ওপর হামলার এই ছবি বিদেশি গণমাধ্যমেও ছাপা হবে। এতে করে একটা ভুল মেসেজ চলে যেতে পারে। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। আমাদের অনেক অর্জন আছে। এই অর্জন যেন এ ধরনের ঘটনায় ম্লান হয়ে না যায়।
Daily Jugantor
29.06.2017

0 comments:

Post a Comment