রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ঈদ-পরবর্তী রাজনীতির চালচিত্র

রাজনীতিতে মোটামুটিভাবে একটি ‘নির্বাচনী আমেজ’ এসে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের ভেতরে যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই তিনি ‘নৌকার পক্ষে’ ভোট দেয়ার কথা বলছেন। তিনি উন্নয়ন কর্মকা- আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ারও আহ্বান জানাচ্ছেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়া এখনও ব্যস্ত মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে। কোনো না কোনো মামলায় তাকে প্রতি মাসেই কোর্টে হাজিরা দিতে হচ্ছে। তারপরও বিভিন্ন ইফতার পার্টিতে রাজনীতি নিয়ে তিনি কথা বলছেন। নির্বাচন নিয়েও কথা বলছেন। তবে ১৪ জুন খালেদা জিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। এক ইফতার মাহফিলে তিনি এই প্রথমবারের মতো ‘ধানের শীষে’ ভোট চেয়েছেন। এর আগে আর কখনও এভাবে তাকে ভোট চাইতে দেখা যায়নি। তিনি ভোট চেয়েছেন। আবার একই সঙ্গে বলেছেন, ‘সংসদ নির্বাচন একতরফাভাবে হতে দেয়া হবে না!’ এর অর্থ বিএনপি নির্বাচন নিয়ে ভাবছে। ওই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, আগামী নির্বাচন হবে সবার অংশগ্রহণে। শেখ হাসিনা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। কিন্তু ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে পারবেন না। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। মানুষ বুঝে গেছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করলে ফল কী হয়। নির্বাচন হবে সহায়ক সরকারের অধীনে (যুগান্তর, ১৫ জুন)। এখানেই মূলত মূল আলোচনা নিবদ্ধ। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার যদি সাজা হয়ে যায়, তাহলে তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা? দ্বিতীয়ত, একটি সহায়ক সরকারের কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। এখন যদি সহায়ক সরকার (নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য) গঠন করা না হয়, তাহলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে কিনা? বিষয় দুইটি বিএনপির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়েও বিএনপির নেতাদের মাঝে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় একবার বলেছিলেন, ‘কীসের জেল, কী কারণে জেল?’ (সমকাল, ৬ মার্চ)। আর মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, ‘সাজা হলেও খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।’ খালেদা জিয়ার মতোই তিনি সম্প্রতি তার বাড়ি হারিয়েছেন। খালেদা জিয়া হচ্ছেন দলের মূল কা-ারি। তার যদি সাজা হয়েই যায় (?), আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন কিনা, সে প্রশ্ন থাকবেই। একই সঙ্গে এসে যাবে মূল প্রশ্নটিও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা? এক্ষেত্রে সরকারি দলের নেতাদের উৎসাহ অনেক বেশি। আকারে-ইঙ্গিতে তারা বারবার বলে আসছেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে! এখন বিএনপি কী করবে, তার দিকে শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরাই নন, বরং দেশবাসীর দৃষ্টি এখন এদিকে। গয়েশ্বর রায়ের পাশাপাশি রিজভী আহমদের বক্তব্যও অনেকটা তেমনই। একদিকে বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে রেখে তারা নির্বাচনে যেতে চান না! কিন্তু নির্বাচন হবে তো সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় ও সংবিধানের অধীনে। এক্ষেত্রে বিএনপি অংশ না নিলেও সরকার নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচনের আয়োজন করবে, যেমনটি করেছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। বিএনপি এখন একটি ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ কথা বলছে। কিন্তু এর রূপরেখা এখন অবধি উপস্থাপন করেনি। তবে সেই রূপরেখা সরকার যে মানবে, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। মোটামুটিভাবে যেভাবেই হোক একটি নির্বাচনী আমেজ ফিরে এসেছে। টিভি টকশোতেও দেখলাম এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমি নিজেও একাধিক টকশোতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, দিন যত যাচ্ছে খালেদা জিয়ার সম্ভাব্য সাজার বিষয়টি অন্যতম আলোচিত একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যখন খালেদা জিয়ার সম্ভাব্য সাজা নিয়ে মন্তব্য করেন, তখন বুঝতে হবে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও বিষয়টি বেশ আলোচিত হচ্ছে, যদিও এটা আইনের বিষয়। আদালত ও উচ্চ আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা আগাম মন্তব্য করে বিষয়টিকে উসকে দিলেন মাত্র! আসলে ‘সব দলের অংশগ্রহণে’ একটি নির্বাচন হোকÑ এটা আমার ধারণা প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান। আরেকটি ৫ জানুয়ারির (২০১৪) মতো নির্বাচন হোক, আমরা তা কেউই চাই না। বিদেশিরাও তা চান না।

৫ জানুয়ারি (২০১৪) আমাদের জন্য কোনো সুখকর দিন ছিল না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে দুইটি বিষয় ছিলÑ এক. সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা; দুই. বাস্তবতা। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার কারণে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একটি নির্বাচন আয়োজন করার প্রয়োজন ছিল। এটা নিয়ে দ্বিমত করার কোনো সুযোগ নেই। তবে ‘আস্থার সম্পর্ক’ গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল ২০১৪-পরবর্তী যে কোনো সময় একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা, যেমনটি করেছিল বিএনপি ১৯৯৬ সালের জুন মাসে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ (যে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল) কিংবা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বারবার আলোচিত হতে থাকবে। ষষ্ঠ সংসদে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়নি। আর দশম জাতীয় সংসদে বিএনপি অংশ নেয়নি। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় দুইটি নির্বাচনেরই প্রয়োজন ছিল। তবে তুলনামূলক বিচারে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে বেশি। ১৫৪টি সংসদীয় আসনে (৩০০ আসনের মাঝে, আওয়ামী লীগের ১২৮, ওয়ার্কার্স পার্টি ২, জাসদ ৩, জাতীয় পার্টি-মঞ্জু ১, জাতীয় পার্টি-এরশাদ ২০) বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়া, ৫ জেলায় কোনো নির্বাচন না হওয়া কিংবা ৫২ ভাগ জনগোষ্ঠীর ভোট না দেয়ার সুযোগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য কোনো ভালো খবর নয়। এটা নিয়ে যে যুক্তিই আমরা টিভির টকশোতে দেখাই না কেন, এতে দেশে কোনো আস্থার সম্পর্ক গড়ে উঠতে সাহায্য করেনি। অথচ গণতন্ত্রের মূল কথাই হচ্ছে আস্থার সম্পর্ক, পরস্পরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস। পঞ্চম সংসদে (১৯৯১) এই ‘আস্থার সম্পর্ক’ ছিল বিধায় আমরা দ্বাদশ সংবিধান সংশোধনী এনে দেশে ফের সংসদীয় রাজনীতির ধারা প্রবর্তন করেছিলাম। সেদিন বিএনপি সংসদীয় সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ধারণা করেছিলাম, ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে ‘আস্থার ঘাটতি’ সৃষ্টি হয়েছিল, তা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। কিন্তু তা কাটিয়ে উঠতে পারছি বলে মনে হচ্ছে না।
এরপর এলো ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারির ঘটনা। বিএনপির ‘কালো পতাকা’ দিবসে পুলিশি হামলা প্রমাণ করল ‘আস্থার সম্পর্ক’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অত সহজ নয়। ‘আস্থার সম্পর্কে’র পূর্বশর্ত হচ্ছে বিএনপিকে ‘স্পেস’ দেয়া। অর্থাৎ বিএনপিকে তার কর্মসূচি পালন করতে দেয়া। এটা তো সত্য, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছিল, তার দায়ভার বিএনপি এড়াতে পারে না। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারার সংস্কৃতি আর যা-ই হোক গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য মানানসই নয়। ওই ঘটনায় বিএনপি তার সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীও এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিএনপিসহ শরীক দল। কিন্তু আন্দোলন তার পক্ষে পৌঁছতে পারেনি। অর্থাৎ সরকারের পতন হয়নি। কিন্তু সহিংসতায় অনেক মানুষ মারা গেছে। অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া মানুষের করুণ কাহিনী সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। টিভি পর্দায় তাদের আর্তি দেখে সাধারণ মানুষ কেঁদেছে। মানুষ বিএনপিকেই দোষারোপ করেছে। এটা থেকে বিএনপি বের হয়ে আসতে পারেনি। তারপরও কথা থেকে যায়। বিএনপি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থেকেছে। এটা সরকরের জন্য একটা প্লাস পয়েন্টও। সরকার বিএনপিকে মূলধারায় আনতে পেরেছে। এটাকে ধরে রাখতে হবে, যাতে বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়। বিএনপি অংশ না নিলে (?) জটিলতা থেকে যাবে। তাতে কেউই লাভবান হবে নাÑ সরকার তো নয়ই, বিএনপিও নয়। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশের জন্য আস্থার সম্পর্ক গড়ে ওঠা জরুরি।
দুঃখজনক হলেও সত্য, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও একটি আস্থার সম্পর্ক স্থাপিত হতে পারত। তা হয়নি। দুইটি বড় দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ব্যস্ত থেকেছে পরস্পরকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখতে। ২০১৪ সালে একটি নির্বাচন হয়েছিল। কেন হয়েছিল, কী জন্য হয়েছিল এটা আমরা সবাই জানি; রাজনীতিবিদরাও জানেন, ভালো করে তারা জানেন।
বাস্তবতা হচ্ছে, ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষা করা গেছে; কিন্তু দেশে নির্বাচনী সংস্কৃতির মৃত্যু ঘটেছে! গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য এটা কোনো ভালো খবর নয়। দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য শক্তিশালী একটি বিরোধী দল থাকা দরকার। আমরা এরই মধ্যে একটি হাস্যস্পদ সংসদের জন্ম দিয়েছি। জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের ‘আসনে’ আছে বটে। আবার তারা মন্ত্রীও হয়েছেন। পার্টিপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দলের ওপর কর্তৃত্ব আছে বলে মনে হয় না। ফলে জাতীয় পার্টি বিএনপির বিকল্প হিসেবে দাঁড়িয়ে যাওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, তা হয়নি। এ কারণে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল সংসদে থাকা দরকার। না হলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না। গেল ৩ বছরে অনেক জাতীয় ইস্যু সংসদে আলোচিত হয়নি। অনেক সময় সংসদ সদস্যদের অনুপস্থিতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ বসেনি। এর অর্থ অনেক সংসদ সদস্যই সংসদীয় কার্যক্রমের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এখন সেই ‘পরিস্থিতি’ থেকে ফিরে আসতে হবে। বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে। কেননা এ সংসদ নির্বাচনে (একাদশ জাতীয় সংসদ) বিএনপি অংশ না নিলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। উপরন্তু নেতাকর্মীদের স্থানীয়ভাবে ‘নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার স্বার্থেও বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়া জরুরি। তাই বিএনপির জন্য একটি ‘স্পেস’ দরকার। তবে বড় কথা হলো, আমাদের মানসিকতায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। বিএনপি নিঃসন্দেহে এখন যথেষ্ট দুর্বল। মামলা-মোকদ্দমা আর কোর্টে যাওয়া-আসার মধ্য দিয়ে তাদের দিন যাচ্ছে। সিনিয়র অনেক নেতা এখন আর সক্রিয় নন। কোনো বড় আন্দোলনও তারা গড়ে তুলতে পারছেন না। তারপরও বিএনপির একটা বড় জনসমর্থন আছে। বিএনপিকে আস্থায় নিয়েই নির্বাচনে যেতে হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে তার নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। হুদা কমিশনের ব্যাপারে বিএনপির যত রিজার্ভেশনই থাকুক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে নির্বাচনের প্রশ্নে এই হুদা কমিশনের সঙ্গেই বসতে হবে বিএনপিকে। বিএনপি বড় দল। হুদা কমিশন নিশ্চয়ই এটা উপলব্ধি করবে। ফলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির একটা ভালো ‘ডায়ালগ’ প্রয়োজন। সাধারণ ভোটাররা একটা ভালো নির্বাচন চায়। দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে এটাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। তাই প্রতিযোগিতা থাকবেই। এ প্রতিযোগিতা হতে হবে রাজনৈতিক ও কর্মসূচিভিত্তিক। একুশ শতকে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চায় দলগুলো, কীভাবে তা বাস্তবায়ন করবে তা দেখতে চায় সাধারণ মানুষ। সেজন্য ‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ থাকবে। এটাই গণতন্ত্রের কথা। কিন্তু তা যদি ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে যায়, তা কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না। তাই ‘আস্থার সম্পর্ক’ থাকাটা জরুরি। ২০১৭ সালটি হবে এই ‘আস্থার সম্পর্ক’ পর্যবেক্ষণ করার সময়। ঈদের পরপরই বোঝা যাবে এ আস্থার সম্পর্কটা কোন পর্যায়ে উন্নীত হয়। নির্বাচনের জন্য এটা জরুরি। এজন্য নির্বাচন কমিশন রাজনীতিবিদদের জন্য একটি ‘কোড অব কনডাক্ট’ তৈরি করতে পারে, যাতে কতকগুলো নির্দিষ্ট বিষয়ে রাজনীতিবিদরা পরস্পরকে আক্রমণ করে নির্বাচনের ন্যূনতম ৬ মাস আগে কোনো বক্তব্য রাখতে পারবেন না। এতে এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, যাতে বড় দলগুলোর প্রার্থীরা কোনো ধরনের ভয়-ভীতি ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। খালেদা জিয়া নির্বাচনসহায়ক সরকারের কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে একটি রূপরখা দিলে তিনি ভালো করবেন। ঈদের পরপরই রাজনীতির মাঠ সরগরম হয়ে উঠবে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক ইস্যু কতটুকু প্রাধান্য পাবে সেটাই দেখার বিষয়।
Daily Alokito Bangladesh
18.06.2017

0 comments:

Post a Comment