রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদমর্যাদা প্রসঙ্গে

দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন মূলত দুটি বিষয় সামনে রেখে। এক. তাদের জন্য স্বতন্ত্র একটি পে-স্কেল গঠন এবং দুই. তাদের পদমর্যাদা পুনর্নির্ধারণ। এ ব্যাপারে ১৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাদের বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। একজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমি যেমন আমার সহকর্মীদের দাবি-দাওয়ার বিরুদ্ধে যেতে পারি না, ঠিক তেমনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যাপারে যে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়েছে, আমি তা অস্বীকার করি কীভাবে? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হোক, কিংবা আলাদা পে-স্কেল দেয়া হোক, এটা বোধকরি সবাই সমর্থন করবেন। তবে তাদের একটা দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করাও জরুরি। কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি টিভির টক-শো দেখছিলাম। আলোচক ছিলেন শিক্ষা সচিব এনআই খান এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মহব্বত খান। নজরুল সাহেব ‘স্পষ্টভাষী’ মানুষ, ‘ভালো কিছু’ করতে গিয়ে এর আগে তিনি বিতর্কিত হয়েছিলেন। কিন্তু ওই দিন টিভিতে তিনি যা বলেছিলেন, তা অস্বীকার করি কীভাবে? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক একটি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। শিক্ষকদের সন্তানরা মেধাবী হবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাকে বাবা অথবা মায়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে হবে কেন? যুক্তরাষ্ট্রে এমনটি নেই। একজন ছাত্র যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করেন, তিনি সাধারণত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হন না। তারা তা পারেন না। কিন্তু আমরা তা করি। দিব্যি সিনিয়র শিক্ষক হয়ে আমার সন্তানকে রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক বানিয়ে দিচ্ছি। আমরা সুযোগ দিচ্ছি না আমার সন্তানকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে তার মেধার বিকাশ ঘটাতে। প্রতিটি পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটি হচ্ছে। শিক্ষা সচিব এ কথাটাই বলেছিলেন ওই দিন। অধাপক মহব্বত খান গুণী শিক্ষক। আমার নিজেরও শিক্ষক। অত্যন্ত রাসভারী মানুষ। বলেছিলেন শিক্ষকদের পদোন্নতির তথাকথিত ‘রিস্ট্রাকচারিং’ নীতিমালা নিয়ে। তিনি নিজে এর ঘোর বিরোধী। অনেক কিছুই ইদানীংকালে বলা যায় না। পিএইচডি ছাড়া অধ্যাপক হওয়া পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে কি সম্ভব? আমরা পার্শ্ববর্তী দেশের কিংবা পাকিস্তানের দৃষ্টান্ত দিই পে-স্কেলের ব্যাপারে। কিন্তু সেসব দেশে কি পিএইচডি ছাড়া অধ্যাপক হওয়া যায়? শুধু বলে রাখি, পাকিস্তানের মতো দেশেও পাস করেই প্রভাষক হওয়া যায় না। যার নিজেরই পিএইচডি ডিগ্রি নেই, তিনি এ দেশে অবলীলায় পিএইচডির তত্ত্বাবধান করছেন! পিএইচডি ছাড়া শুধু অধ্যাপকই নয়, এমনকি মঞ্জুরি কমিশনের মতো জায়গায়ও নিয়োগ পাচ্ছি আমরা! বিজ্ঞানের কোনো ডিগ্রি না থাকলেও শুধু ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে! এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কেউ ভাবি না। প্রতিটি বিষয়ের জন্য যদি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়, তাহলে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক কিছু হতে পারে না।অর্থমন্ত্রী শিক্ষকদের নিয়ে কিছু কড়া মন্তব্য করেছিলেন। পরে দুঃখও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? আমরা যারা শিক্ষক, আমাদেরও ভেবে দেখার বিষয় রয়েছে। ১৯৭৩ সালের পদোন্নতির নীতিমালার সঙ্গে ২০১৫ সালের পদোন্নতির নীতিমালাকে মেলানো কি ঠিক হবে? একটু চিন্তাভাবনা করা দরকার। তবে অভিযোগ যাই থাকুক না কেন, শিক্ষকদের সমাজে পদমর্যাদা দিতে হবে। শিক্ষকরা যদি মর্যাদা না পান, তাদের মাঝে ক্ষোভ থাকবেই।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নতুন পে-স্কেলে খুশি হননি। তাদের যুক্তি, সিনিয়র শিক্ষকরা এখন ‘সিলেকশন গ্রেড’ বাতিল হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তারা সচিব পদমর্যাদার গ্রেড-১-এর সুযোগ-সুবিধা, বেতনও পাবেন না। প্রশ্ন উঠতেই পারে, সচিবরা নিজেদের সুবিধার জন্য যদি সিনিয়র সচিবের পদ সৃষ্টি করতে পারেন, তাহলে শিক্ষকদের জন্য সিনিয়র অধ্যাপকের পদ নয় কেন? বেতন স্কেলে অধ্যাপকের (সিনিয়র অধ্যাপক নন) গ্রেড এখন ৩-এ। অর্থাৎ তার বেতন শুরু হবে ৫৬,৫০০ টাকা দিয়ে। রাষ্ট্রের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে’ তাদের অবস্থান অনেক নিচে, যুগ্ম সচিবেরও নিচে! এটা কি শোভন? একজন অধ্যাপককে কি যুগ্ম সচিবের সঙ্গে তুলনা করা যায়? তাহলে একজন উপাচার্যের পদমর্যাদা কী? তিনি যদি ‘সিলেকশন গ্রেড’ভুক্ত প্রফেসর না হয়ে থাকেন (৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দু-একজন বাদে কেউই সিলেকশন গ্রেডভুক্ত প্রফেসর নন), তাহলে তার পদমর্যাদা কী হবে? ঢাকা বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা কি সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে তার ‘ছাত্রতুল্য’ যুগ্ম সচিবদের কাতারে একসঙ্গে বসবেন? সচিব মহোদয়রাই এ কাজটি করলেন! তারা নিজেদেরকে শিক্ষকদের চেয়েও উপরে রাখলেন। অথচ অভিযোগ আছে অনেক সচিবের ডিগ্রি নাকি ‘ভুয়া’। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস করেছেন, এমন সংখ্যাও কম নয়। এমনকি অনেকে ‘ভুয়া পিএইচডি’ ডিগ্রিও ব্যবহার করেন! ইদানীং দেখি অনেক সিনিয়র সচিব তাদের নামের আগে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি ব্যবহার করেন। কীভাবে পেলেন এই ডিগ্রি? কোথায় করলেন? এখন তারাই যদি নিজেদের সিনিয়র অধ্যাপকের উপরে রাখেন, তা দুঃখজনক।সচিব আর আমলা কখনও এক হতে পারে না। তাদের কাজের ধরন আলাদা আলাদা। একজন সচিব যে শুধু এখন বেশি বেতন পাবেন, তাই নয়। তাদের সুযোগ-সুবিধা কয়েক লাখ টাকার সমান। যেমন একজন সচিব সার্বক্ষণিক তিনটি গাড়ি ব্যবহার করেন। তার স্ত্রী রাষ্ট্রের কর্মচারী নন। রাষ্ট্রীয় কাজে তিনি কোনো অবদানও রাখেন না। অথচ তিনি সার্বক্ষণিক একটি গাড়ি ব্যবহার করেন! বিভিন্ন প্রকল্প থেকে গাড়ি নিয়ে তা ব্যবহার করেন তার সন্তানরা! যে ‘বাংলো বাড়ি’তে তিনি থাকেন, তার বাসাভাড়া হিসাব করলে মাসপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। তাদের জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল খুব সম্ভবত ‘ফ্রি’। গাড়ির অকটেন, গ্যাস ফ্রি। হিসাব করুন, এ রাষ্ট্র একজন সচিবের জন্য কী খরচ করে, সে তুলনায় একজন শিক্ষক কী পান। এই বেতনই তার একমাত্র ভরসা। আমি কয়েক ডজন অধ্যাপককে চিনি, যাদের গাড়ি নেই, বাড়ি নেই, চলেন রিকশায় আর লক্কড়মার্কা বাসে। রাষ্ট্র তাদের জন্য ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি কেনার ব্যবস্থা করে দেয়নি। কিংবা সরকারি ব্যাংক থেকে কম সুদে বাড়ি, ফ্ল্যাট বা গাড়ি ক্রয় করার ব্যবস্থা করে দেয়নি। অথচ তারাই তথাকথিত ‘সমাজ গড়ার কারিগর’! তারাই সচিবদের ‘জন্ম’ দিয়েছেন, তৈরি করেছেন, শিক্ষিত করেছেন। আর এ সচিব কমিটিই তাদের অমর্যাদা করল। অর্থমন্ত্রী যে ভাষায় শিক্ষকদের সমালোচনা করেছেন, তা ছিল অনাকাক্সিক্ষত। একজন অবিবেচক মানুষ তিনি। তিনি যে মনেপ্রাণে একজন ‘আমলা’, সেটাই তিনি প্রমাণ করলেন! পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জ্ঞানের গভীরতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার মতো একজন সিনিয়র সিটিজেনের কাছ থেকে আমরা এটা আশা করিনি। তার অনাকাক্সিক্ষত বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে সরকারকে একটা মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। তিনি অবশ্য তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কিন্তু ‘ক্ষতি’ যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।এটা সত্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সবকিছুর ঊর্ধ্বে নন। এটা আমি মনেও করি না। যাদের শিক্ষক হওয়ার কথা ছিল না, তারা ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ শিক্ষক হয়েছেন- এটা অস্বীকার করা যাবে না। যিনি যে বিভাগের ‘ছাত্র’ নন, তাকে সেই বিভাগে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পদোন্নতির নীতি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক, তা বলা যাবে না। এ ব্যাপারে অনেক সরকারি আমলার মাঝে আমি এক ধরনের ‘ক্ষোভ’ দেখেছি। আমার ছাত্র, যারা আমলা হয়েছে, তাদেরও দেখেছি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে।শিক্ষকরা তাদের যোগ্যতা বলেই পদোন্নতি পেতে চান। কিন্তু এ নীতিমালা যেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এক হয়, এটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এমনও দেখা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদোন্নতির নীতিমালার সঙ্গে বেশ পার্থক্য রয়েছে ঢাকা বা জাহাঙ্গীরনগরের নীতিমালার। সরাসরি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগেরও আমি বিরোধী। যিনি ভালো ছাত্র, তিনি ন্যূনতম এক বছর গবেষণা করবেন, সিনিয়র শিক্ষকের সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন, অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, তারপরই তাকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হোক। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দু-একজন শিক্ষক কোনো কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘ফুলটাইম’ চাকরি করেন। নৈতিকভাবে তারা কি এটা পারেন? উপাচার্য মহোদয়রা এসব জানেন। কেননা তাদের অনুমতি নিয়েই এ ধরনের কাজ হয়। এ প্রবণতা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। অর্থনীতি কিংবা ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক্লাস নেয়ার’ নাম করে ফুলটাইম চাকরিও করেন। নাট্যকলার শিক্ষকরা কাজ করছেন মিডিয়ায়, চ্যানেলে। এটা দুঃখজনক। এটা বন্ধ হোক।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়া হোক। তাদের বিনা সুদে গাড়ি, ফ্ল্যাট কেনার ব্যবস্থা করা হোক। মূল বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ১০ হাজার টাকা দেয়া হোক ‘বিশেষ ভাতা’ হিসেবে, যাতে তারা নিরুৎসাহিত হন অন্যত্র ক্লাস নিতে। সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আইনের আওতায় আনা হোক। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একই পদোন্নতির নীতিমালা হোক। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে পিএসসির মতো আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হোক। তরুণ শিক্ষকদের পিএইচডি করতে ‘ফান্ডে’র ব্যবস্থা করা হোক এবং পিএইচডি ছাড়া অধ্যাপক পদে পদোন্নতি নিষিদ্ধ হোক। অধ্যাপক পদে দুটি গ্রেড করা হোক- গ্রেড-১ ও গ্রেড-২। ‘সিলেকশন গ্রেড’ অথবা ১০ বছর অধ্যাপক পদে থাকা অধ্যাপকদের গ্রেড-১-এ পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হোক। তবে শর্ত থাকবে, তাকে একটি গবেষণামূলক বই লিখতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের গবেষণামূলক পাঠ্যবই লিখতে উৎসাহিত করা হোক। এটা আছে বটে; কিন্তু কেউই তা ব্যবহার করেন না।মোটকথা, শিক্ষকদের জন্য একটা দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করা হোক। এ দায়বদ্ধতার জন্য চাই সুস্পষ্ট একটি নীতিমালা। একজন শিক্ষক কী করবেন, কতটুকু করতে পারবেন, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতি থাকা প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্বায়ত্তশাসনের ভিন্ন ব্যাখ্যা করছেন কি-না, এটা ভেবে দেখা দরকার। রাষ্ট্র বেতন-ভাতা দেবে; কিন্তু এর যেন অপব্যবহার না হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পুরোটাই সরকারি টাকায় চলেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ‘আন্দোলনের’ সীমারেখা কতটুকু থাকা উচিত, তারা কতদূর পর্যন্ত যেতে পারবেন- এর একটা সুস্পষ্ট নীতি থাকা উচিত। ১৯৭৩ সালের পরিস্থিতির সঙ্গে ২০১৫ সালের পরিস্থিতি মেলানো ঠিক হবে না। বেতনবৈষম্যকে কেন্দ্র করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে এখনও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরকার বেতনবৈষম্য দূর করার জন্য আগের কমিটিকে পুনর্গঠন করেছে। শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এটা অত্যন্ত পাওয়ারফুল কমিটি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী এ কমিটির প্রধান থাকায় শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি ছাড়া এ কমিটির বৈঠকের কোনো সম্ভাবনা নেই। ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা সংকট থেকেই গেল। আরও একটা কথা। শিক্ষকরা যদি বেতনবৈষম্য আর পদমর্যাদা নিয়ে পড়ে থাকেন, এটাও ঠিক হবে না। বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একটি ৫ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নেই। অর্থাৎ শিক্ষকতার মান কমে গেছে। যোগ্য শিক্ষক তৈরি হচ্ছে না। যোগ্য শিক্ষক তৈরি করার দায়িত্বটি নিতে হবে মঞ্জুরি কমিশনকে। তরুণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জরুরি। আমরা আমাদের মর্যাদা ফিরে পেতে চাই- এটা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি আমাদের দায়িত্ব বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে আমাদের অবস্থান বাড়ানো। Daily Jugantor 28.09.15

0 comments:

Post a Comment