জাতিসংঘ যখন তার ৭০ বছর পূর্তি পালন করছে তখন অনেক পর্যবেক্ষক এ প্রশ্নটিই
তুলেছেন যে জাতিসংঘ কি আরো ৭০ বছর টিকে থাকতে পারবে? বিশ্বে শান্তি
প্রতিষ্ঠা করার ব্যর্থতা, ধনী ও গরিব দেশগুলোর মধ্যে পার্থক্য দূর করা,
মধ্যপ্রাচ্যে উগ্রপন্থী রাজনীতির বিকাশ, বিশ্বব্যাপী দরিদ্র মানুষের সংখ্যা
বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি জাতিসংঘে সিদ্ধান্ত গ্রহণে পশ্চিমা শক্তি বিশেষ করে
যুক্তরাষ্ট্রের একক কর্তৃত্ব করার প্রবণতা রোধ করার ব্যর্থতা একুশ শতকে
জাতিসংঘের ভূমিকাকে একটি প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই
বিভিন্ন ফোরামে এটি বারবার বলা হচ্ছে যে জাতিসংঘ উন্নয়নশীল বিশ্বের
দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। জলবায়ু পরিবর্তনে সাগরপারের দেশগুলো
বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে থাকলেও জাতিসংঘ বিশ্বের উষ্ণতা রোধকল্পে কোনো
কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে যখন
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বসে তখন এ প্রশ্নটিই ঘুরেফিরে আলোচিত হতে
থাকে যে জাতিসংঘের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? বলতে দ্বিধা নেই উন্নত বিশ্ব,
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ ক্ষমতাধর পাঁচটি দেশ তাদের নিজেদের স্বার্থেই
জাতিসংঘকে টিকিয়ে রাখছে। তবে এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন, ১৯৪৫ আর ২০১৫ এক
নয়। ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরে যে
প্রতিষ্ঠানটির জন্ম হয়েছিল, এত দিনে তার কর্মপরিধি বেড়েছে। ১৯৪৫ সালে মাত্র
৫০টি দেশ নিয়ে যে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল, আজকে তার সদস্য
সংখ্যা ১৯৬টি।
জাতিসংঘ যে উন্নয়নশীল বিশ্বের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না, এ অভিযোগ অনেক
পুরনো। তবে জাতিসংঘের সাফল্য যে একেবারে নেই, তা বলা যাবে না। ১৯৯০ সালের
উপসাগরীয় যুদ্ধ ও কুয়েতকে শত্রুমুক্ত করা, এল সালভাদর, কম্বোডিয়া কিংবা
নামিবিয়ায় পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি
করে দেওয়া ও শান্তি ফর্মুলায় রাজি করানোর মতো ঘটনার মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত
হয়েছিল যে স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী যে বিশ্বব্যবস্থা গড়ে উঠছে, তাতে জাতিসংঘের
একটা ভূমিকা রয়েছে। সাবেক যুগোস্লাভিয়ার গৃহযুদ্ধ থামাতে সেখানে
শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো, কম্বোডিয়ায় গৃহযুদ্ধ ঠেকাতে সেখানে জাতিসংঘ
বাহিনী মোতায়েন এবং পরবর্তী সময়ে সেখানে একটি সুষুম নির্বাচন সম্পন্ন করা,
এমনকি নেপালেও নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতা করার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ তার ভূমিকা
পালন করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে আফ্রিকায় যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করার মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার
একটি উদ্যোগও লক্ষণীয়। তবে ব্যর্থতার পাল্লাটা যেন ভারী। অতি সম্প্রতি
হাজার হাজার সিরীয় ও ইরাকি শরণার্থী যখন ইউরোপে প্রবেশ করে এক অমানবিক
পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, জাতিসংঘ এদের দেশত্যাগ ঠেকাতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্র ২০০১ সালে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে
আফগানিস্তানে হামলা চালানো এবং যে যুদ্ধের শুরু করেছিল, জাতিসংঘ দীর্ঘ ১৪
বছর পরও সেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেনি। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের
অনুমোদন ছাড়াই ইরাক দখল করে নিয়েছিল ও সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাত করেছিল, যা
ছিল জাতিসংঘ চার্টারের বরখেলাপ। ২০১১ সালে তথাকথিত 'মানবাধিকার রক্ষায়
হস্তক্ষেপ'- এই অভিযোগ তুলে লিবিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও
যুক্তরাজ্য। ওই হামলায় গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হন এবং রাষ্ট্রটি এখন কার্যত
একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অস্ত্রবাজরা এখন সব কিছু নিয়ন্ত্রণ
করছে এবং সেখানে কোনো কেন্দ্রীয় প্রশাসন নেই। অথচ একই অভিযোগ উঠেছে সিরিয়ার
একটি অংশ ও ইরাকের একটি অংশ নিয়ে গড়ে ওঠা তথাকথিত একটি অলিখিত জিহাদি
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, যার নেতৃত্বে রয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের
জঙ্গিরা। অভিযোগ আছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি লবির প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতে এই
জঙ্গিগোষ্ঠী 'ইসলামিক স্টেট'-এর উত্থান ঘটেছে। এরা হাজার হাজার সিরীয়
নাগরিককে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করছে। অথচ এখানে তথাকথিত 'মানবাধিকার রক্ষায়
হস্তক্ষেপ'-এর তত্ত্ব প্রয়োগ করছে না যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি জাতিসংঘের কোনো
উদ্যোগও আমরা লক্ষ করছি না। জাতিসংঘের বিরুদ্ধে একটা বড় অভিযোগ হচ্ছে,
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পদ বৃদ্ধিতে শক্তিশালী কোনো উদ্যোগ নেই।
স্থায়ী পরিষদে রয়েছে পাঁচটি দেশ (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও
রাশিয়া) ও ১৫টি অস্থায়ী দেশ। অস্থায়ী দেশগুলো দুই বছর পর পর অঞ্চল
ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়। কিন্তু স্থায়ী পরিষদের একটি রাষ্ট্র 'ভেটো' প্রয়োগ
করে যেকোনো সিদ্ধান্তের মৃত্যু ঘটাতে পারে। কিন্তু অস্থায়ী সদস্য দেশগুলো
তেমনটি পারে না। তাই অনেক দিন থেকেই উন্নয়নশীল বিশ্ব স্থায়ী পরিষদে তাদের
প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু আজও তা নিশ্চিত হয়নি।
তবে অনেকেই স্মরণ করতে পারেন জাতিসংঘের উদ্যোগে অনেক আগেই Commission on
Global Governance নামে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিশনকে দায়িত্ব
দেওয়া হয়েছিল জাতিসংঘে কিভাবে সংস্কার আনা যায় সে ব্যাপারে একটি সুপারিশ
করা। সিদ্ধার্থ রামপাল ও ইন্যাভার কার্লসন ছিলেন ওই কমিশনের যৌথ
চেয়ারম্যান। ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসে কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। ওই
কমিশনের সুপারিশে নিরাপত্তা পরিষদে এক ধরনের 'স্ট্যান্ডিং' সদস্য রাখার
প্রস্তাব করা হয়েছিল, যার সদস্য সংখ্যা হবে পাঁচ। এর মধ্যে দুটি দেশ আসবে
উন্নত দেশ থেকে, আর বাকি তিনটি দেশ আসবে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা
থেকে। কিন্তু তাদের কোনো 'ভেটো' ক্ষমতা থাকবে না। কিন্তু দীর্ঘ ২০ বছর পার
হয়ে যাওয়ার পরও এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলো ভেটো
ক্ষমতাসহ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পদ চায়। যেমন ভারতের কথা বলা যেতে পারে।
ভারত এখন এশিয়ায় চীনের পর দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশ। দুই ট্রিলিয়ন ডলারের (দুই
লাখ কোটি ডলার) অর্থনীতি ভারতের। ভারতের পাশাপাশি জাপানও এখন নিরাপত্তা
পরিষদের সদস্য হতে চায়। এ লক্ষ্যে জাপানের সংবিধান সংশোধন করে এই
প্রথমবারের মতো বিদেশে জাপানি সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর এবং পাঁচটি পশ্চিমা শক্তির সমর্থন এতে পাওয়া যাবে,
এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হলেও ২৮ সেপ্টেম্বর
থেকে মূল আলোচনা শুরু হয়ে চলে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন ৩০ সেপ্টেম্বর। এবার প্রধানত দুটি কারণে এই
অধিবেশনের গুরুত্ব বেশি ছিল। এক. এই অধিবেশনে এসডিজি বা Sustainable
Development Goals কর্মসূচি অনুমোদিত হয়েছে। এর আগে এমডিজি বা Millenium
Development Goals নামে যে কর্মসূচি জাতিসংঘ গ্রহণ করেছিল, তা এই ২০১৫
সালেই শেষ হয়ে যায়। এ জন্যই প্রয়োজন ছিল এসডিজি কর্মসূচি গ্রহণ করার। দুই.
আগামী নভেম্বরে প্যারিসে বসছে CoP-21 সম্মেলন। বিশ্বের উষ্ণতা রোধকল্পে
প্যারিসে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার কথা। চলতি অধিবেশনে এ ব্যাপারে একটি
সুপারিশ থাকবে। বাংলাদেশের জন্য এ দুটি বিষয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই
সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দুটি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ
এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন কর্তৃক
প্রবর্তিত আইসিটি পুরস্কার। বাংলাদেশের জন্য দুটি পুরস্কারের গুরুত্ব অনেক।
বাংলাদেশের জন্য এসডিজি বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন যেমন গুরুত্বপূর্ণ,
তেমনি চ্যালেঞ্জও বটে। এখানে বলা ভালো, এমডিজি বা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য
(২০১৫ সালে শেষ হয়ে যাবে) অর্জনের পর জাতিসংঘ প্রণয়ন করেছে এসডিজি, যা চলতি
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অনুমোদিত হয়েছে। এমডিজি অর্জনে বিভিন্ন
ক্ষেত্রে (মোট আটটি ক্ষেত্রে) বাংলাদেশের সফলতার যে চিত্র অতি সম্প্রতি
প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যায় দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা হয়েছে ২৪.৫
শতাংশে। প্রাথমিক শিক্ষার হার এখন ৮১ শতাংশ। শিশুমৃত্যুর হার (প্রতি
হাজারে) যেখানে ছিল ১৪৬ (১৯৯০ সালে), সেখানে এখন তা ৪৬-এ। অর্থাৎ এমডিজির
আটটি ক্ষেত্রের অনেকটিতে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। এখন এসডিজি অর্জনের পালা।
উল্লেখ্য, এসডিজির নির্ধারিত ১৭টি এজেন্ডার মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্যের হার
বিলোপ, ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ, গুণগত শিক্ষা,
নারী-পুরুষের সমতা, বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যবিধান, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি
ইত্যাদি। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা এমডিজির ক্ষেত্রে
ধনী দেশগুলো তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ০.৭ শতাংশ সাহায্য দেওয়ার
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পাওয়া গিয়েছিল মাত্র ০.৪ শতাংশ। তা-ও আবার ধনী
দেশগুলো দিয়েছিল তাদের জিডিপির মাত্র ০.২ শতাংশ। ফলে একটা প্রশ্ন থেকেই
গেল যে এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে সাহায্য দরকার হবে, তা পাওয়া যাবে
কি না? না পেলে বাংলাদেশ কেন, কোনো অনুন্নত দেশই এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়ন
করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকা হবে তাই গুরুত্বপূর্ণ।
এসডিজির পাশাপাশি প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু আলোচনা শীর্ষক CoP-21
(Committee of parties-21) নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে চলতি অধিবেশনে। CoP-21
আলোচনাটি প্যারিসে অনুষ্ঠিত হবে ৩০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১৯৯৭ সালে কিয়োটো সম্মেলনে বিশ্বের উষ্ণতা হ্রাস করার ক্ষেত্রে একটি
ঐকমত্যে পৌঁছলেও ধনী দেশগুলোর অসহযোগিতার কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব
হয়নি। জাতিসংঘের মতে, কার্বন হ্রাসের মাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে
আনতে হবে। এ ব্যাপারে প্যারিসে একটি চুক্তি হতে হবে। না হলে অনুন্নত
দেশগুলো, বিশেষ করে সাগরপারের দেশগুলোর জন্য খারাপ সংবাদ অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশের জন্য প্যারিস সম্মেলন তাই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের উষ্ণতা
বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণকে দায়ী করা হয়। আর এ জন্য দায়ী
শিল্পোন্নত পশ্চিমা বিশ্ব। বাংলাদেশের মতো অনুন্নত দেশ এর জন্য দায়ী নয়।
উন্নত বিশ্বের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিশ্ব জিডিপির ৭৫ শতাংশ, আর তারা কার্বন
নিঃসরণ করে ৫১ শতাংশ। বাংলাদেশ এসব উন্নত বিশ্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে
পারে না। বাংলাদেশের উপকূলে প্রতিবছর ১৪ মিলিমিটার করে সমুদ্রের পানি
বাড়ছে। গত ২০ বছরে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ সেন্টিমিটার। সমুদ্রের
পানি বেড়ে যাওয়ায় উপকূলের মানুষ অন্যত্র বিশেষ করে ঢাকা শহরে বস্তিতে
বসবাস করতে শুরু করেছে। গবেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে প্রতি সাতজনে একজন মানুষ
উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে। বাংলাদেশ কোপেনহেগেনের কপ সম্মেলনে এসব উদ্বাস্তু
মানুষকে Universal Natural Person হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিল।
কিন্তু এ দাবি গ্রহণযোগ্য হয়নি। জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো
কর্তৃক উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সাহায্য, টেকনোলজি ট্রান্সফার ইত্যাদি
প্রশ্নে কোনো কমিটমেন্ট পাওয়া যায়নি। ফলে প্যারিস সম্মেলন নিয়ে একটা
অনিশ্চয়তা থেকেই গেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু সমস্যার কারণে
বাংলাদেশের যে ক্ষতি হবে, তা বিশ্ব সভায় তুলে ধরেছেন।
জাতিসংঘ ৭০ বছরে পা দিয়েছে। সময়টা একেবারে কম নয়। প্রতিবছর একটি শীর্ষ
সম্মেলন আয়োজন করে আমরা অনেক ভালো ভালো কথা শুনি বটে; কিন্তু তা উন্নয়নশীল
বিশ্বের কোনো মঙ্গল ডেকে আনতে পারেনি। বরং সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি
রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে গেছে, প্রাচীন ঐতিহ্য নষ্ট করা হয়েছে কিংবা গুঁড়িয়ে
দেওয়া হয়েছে; কিন্তু জাতিসংঘ তা বন্ধ করতে পারেনি। শিশু আয়লান কুর্দির মতো
শত শত শিশুর জীবন রক্ষা করতেও পারেনি জাতিসংঘ। তাই আগামী ৭০ বছর অর্থাৎ
২০৮৫ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ টিকে থাকতে পারবে- এটা নিশ্চিত হতে পারছি না।
Daily Kaler Kontho
13.10.15
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment