৩০ নভেম্বর থেকে প্যারিসে কপ-২১
শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাসহ ১৯৬টি দেশের সরকার ও
রাষ্ট্রপ্রধানরা জলবায়ুবিষয়ক এ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সম্মেলন চলবে
প্রায় দু’সপ্তাহ এবং ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের উষ্ণতা রোধকল্পে বায়ুমণ্ডলে
কার্বন ডাই-অক্সাইড হ্রাস করার ব্যাপারে বিশ্বনেতারা শেষ পর্যন্ত একটি
সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন। বাংলাদেশের জন্য এই কপ-২১ সম্মেলনের গুরুত্ব অনেক।
কেননা বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে যে ক’টি দেশের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হবে,
তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশ এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত
শরিক দেশগুলোর জোট ‘ভালনারেবেল টোয়েন্টি’তে (ভি-২০) যোগ দিয়েছে। ভি-২০-তে
বাংলাদেশ ছাড়াও কিরিবাতি, টুভালুর মতো সাগরপাড়ের দেশগুলোর পাশাপাশি নেপাল,
ভুটানের মতো দেশও রয়েছে, যাদের সীমান্তে কোনো সাগর নেই। এসব দেশ বড় ধরনের
ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় যে প্রযুক্তি ও অর্থের দরকার এ
দেশগুলোর তা নেই। এমনকি পশ্চিমা বিশ্ব সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা তারা
দেয়নি।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের অনুন্নত ও উন্নত সব দেশই আজ
ঝুঁকির মুখে। তবে মালদ্বীপ কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশের ঝুঁকির পরিমাণ বেশি।
তবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বের দেশগুলো নানা গ্রুপে বিভক্ত এবং
তাদের স্ট্রাটেজিও ভিন্ন ভিন্ন। গ্রুপ-৭৭-এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ১৩০টি দেশ।
বিশ্বের জনসংখ্যার ৭৬ ভাগ এসব দেশে বসবাস করে এবং বিশ্ব জিডিপির ১৯ ভাগ
তারা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এ দেশগুলো বায়ুমণ্ডলে কার্বন নিঃসরণ করে মোট
নিঃসরণকৃত কার্বনের ৪২ ভাগ। চীন অন্যতম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ (২১ ভাগ),
অথচ বিশ্ব জিডিপির ৬ ভাগ তাদের এবং বিশ্ব জনসংখ্যার ২০ ভাগ চীনের। ধনী
দেশগুলো এনেস্ক ১-এর অন্তর্ভুক্ত, যাদের কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ৫১ ভাগ;
অথচ বিশ্ব জনসংখ্যার ১৯ ভাগ এবং জিডিপির ৭৫ ভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণে।
যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে ২০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ করে, ৩০ ভাগ জিডিপি আর বিশ্ব
জন্যসংখ্যার মাত্র ৫ ভাগ তাদের। এর বাইরে আফ্রিকান ইউনিয়নভুক্ত ৩৯ দেশ, তেল
ও গ্যাস সম্পদসমৃদ্ধ ওপেকভুক্ত দেশ এবং জনসম্পদসমৃদ্ধ ‘রেইনবো
কোয়ালিশন’ভুক্ত দেশগুলোর অবস্থান আলাদা আলাদা।মোটামুটিভাবে
সবাই এটা স্বীকার করে যে, তারা বায়ুমণ্ডলে কার্বন নিঃসরণের হার কমাবে।
কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে। ১৯৮০
সালে যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ করেছিল, (চীন
করেছিল ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন টন), সেখানে ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিঃসরণের
পরিমাণ ছিল ৬ বিলিয়ন টন (চীনের ৬ বিলিয়ন টনের উপরে)। এখন যুক্তরাষ্ট্র
বলছে, ২০২০ সালের মধ্যে তারা কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমাবে ১৭ থেকে ২০ ভাগ।
চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ ভাগ কমানোর। আর ভারতের প্রতিশ্রুতি ২০
ভাগ কমানোর। দেশগুলো এই প্রতিশ্রুতি কতটুকু রাখতে পারবে এটাই বড় প্রশ্ন
এখন।বাংলাদেশের ঝুঁকির প্রসঙ্গটি
বিশ্ব মিডিয়ায় অনেকবারই এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ভেতরে বিষয়টি নিয়ে তেমন
গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। অনেকে স্মরণ করতে পারেন, চলতি বছরের প্রথম
দিকে অনেকটা অগোচরেই খুলনায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল তিন দিনব্যাপী জলবায়ু
উদ্বাস্তু সংক্রান্ত একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্মেলন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ
ধরনের একটি সম্মেলনের যথেষ্ট গুরুত্ব থাকলেও মিডিয়ায় সেই সম্মেলন
সংক্রান্ত খবরাদি আমার চোখে পড়েনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং
নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংগঠক ‘ন্যানসেন ইনিশিয়েটিভে’র সহযোগিতায় ওই
সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলের
১৪টি দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। খুলনায় এ ধরনের একটি
অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য নিঃসন্দেহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ধন্যবাদ
পাওয়ার যোগ্য। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর
তালিকার শীর্ষে রয়েছে। আর বাংলাদেশের যেসব এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার
মধ্যে রয়েছে বৃহত্তর খুলনা। ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ ও ‘আইলা’য় অধিক ক্ষতিগ্রস্ত
এলাকাগুলো এ অঞ্চলেই অবস্থিত। এ অঞ্চলের মানুষ আজও সিডর ও আইলার বিপর্যয়
থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।এখানে গত
বছর ডিসেম্বরে পেরুর রাজধানী লিমায় অনুষ্ঠিত কপ-২০ (কমিটি অব দ্য পার্টিস)
সম্মেলনের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। নিঃসন্দেহে লিমা ঘোষণা ছিল একটি
উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। তবে প্রশ্ন আছেই। উন্নত বিশ্ব শেষ পর্যন্ত লিমা
ঘোষণাকে বিবেচনায় নিয়ে প্যারিসে চুক্তি স্বাক্ষর করে কি-না, তা জানার জন্য
আমাদের আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের
সঙ্গে প্রেসিডেন্টের দ্বন্দ্বের আলোকে মার্কিন কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কোনো
চুক্তির ব্যাপারে আপত্তি তোলে কি-না, সেটাই দেখার বিষয়। তবে প্যারিসে এ
নিয়ে বেশ দেন-দরবার হবে। উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলো
আন্তর্জাতিক আসরে দেন-দরবার করবে। জাতিসংঘ উদ্যোগী হবে। তবে বলার অপেক্ষা
রাখে না, এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের করার কিছু নেই। কেননা উন্নত বিশ্ব, বিশেষ
করে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাজি না হয়, তাহলে প্যারিস সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত কোনো
চুক্তিতে উপনীত হওয়া সম্ভব হবে না।আমাদের
জন্য খুলনা সম্মেলনের গুরুত্ব যথেষ্ট। সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো
বাংলাদেশ প্যারিসে অনুষ্ঠানরত ‘কপ’ সম্মেলনে উপস্থাপন করছে। খুলনা ঘোষণায়
বলা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের বাস্তুচ্যুতি একটি নির্মম সত্য।
এ সমস্যা মোকাবেলায় স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ
করতে হবে। বাস্তুচ্যুতি ঠেকাতে এবং নিদেনপক্ষে বাস্তুচ্যুতদের সহযোগিতায়
দেশীয় পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী ও উন্নত দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। জাতীয়
ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতিমালা তৈরি করাও একান্ত জরুরি। এছাড়া
বাস্তুচ্যুত অভিবাসীদের সুরক্ষার জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ওপরও গুরুত্ব
দেয়া হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যারা উদ্বাস্তুতে পরিণত
হয়েছে, তাদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক পরিসরে তেমন কোনো কর্মকাণ্ড
পরিলক্ষিত হয়নি। বাংলাদেশ এ সংক্রান্ত সুস্পষ্ট কোনো নীতিমালা প্রণয়ন করেছে
বলেও আমার জানা নেই। অথচ দ্বীপাঞ্চল থেকে মানুষ প্রতিদিনই উদ্বাস্তুতে
পরিণত হচ্ছে এবং বড় বড় শহরে আশ্রয় নিয়ে বস্তি জীবন বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
হাজার হাজার মানুষ তাদের পারিবারিক পেশা ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ এদের
পুনর্বাসনের কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নেই। বাংলাদেশ বারবার আন্তর্জাতিক
মিডিয়ায় স্থান পেলেও এ দেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
যারা চালান তারা এ ব্যাপারে কতটুকু সচেতন, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ
রয়েছে। অতি সম্প্রতি একটি শংকার কথা আমাদের জানিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট
ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশ এই জলবায়ু পরিবর্তনে কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হবে,
এডিবির এক রিপোর্টে সে কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এডিবি জানিয়েছে, ২০৫০ সাল
পর্যন্ত বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি গড়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ করে কম হতে পারে।
চলতি শতাব্দী শেষে এ ক্ষতি হতে পারে প্রায় ৯ শতাংশ। আর বৈশ্বিক তাপমাত্রা
বাড়তে পারে ৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এডিবির এ রিপোর্টে দক্ষিণ এশিয়ার
অপর দুটি দেশ নেপাল ও মালদ্বীপের ক্ষতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।জলবায়ু
পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের যে ক্ষতি হবে, তা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
শুধু এডিবির রিপোর্টেই নয়, জাতিসংঘের রিপোর্টেও এই ক্ষতির দিকটি উল্লেখ
করা হয়েছে একাধিকবার। প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যে শীর্ষ সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়, যা কপ বা কমিটি অব দ্য পার্টিস নামে পরিচিত, সেখানেও
বাংলাদেশের পরিবেশগত সমস্যার কথা উঠে আসে। দেশের পরিবেশমন্ত্রী ঘটা করে কপ
সম্মেলনে যান। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ইতিমধ্যে নাসা আরও একটি আশংকার কথা
জানিয়েছে। নাসা আশংকা করছে, গ্রিনল্যান্ডে যে বরফ জমা রয়েছে তা যদি উষ্ণতা
বৃদ্ধির ফলে গলে যায়, তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭ মিটার বৃদ্ধি পাবে। তাই
কার্বন ডাই-অক্সাইড হ্রাসের কথা বলছে নাসা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস
প্রেসিডেন্ট আল গোর তার এক নিবন্ধে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্বের বৃহত্তম
বন্দরগুলোয় ইতিমধ্যে ৪ কোটি মানুষ মারাত্মক প্লাবনের হুমকির মুখে আছে। আল
গোর বিশ্বের ১০৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে (বাংলাদেশের সাবেক
পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদও ছিলেন ওই দলে) গিয়েছিলেন অ্যান্টার্কটিকায়।
শুধু জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য। কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায় এখনও নীরব।প্রতিবছরই
কপ সম্মেলনে ভালো ভালো কথা বলা হয়। কোপেনহেগেন থেকে লিমা (২০১৪) সম্মেলন
পর্যন্ত প্রতিটি সম্মেলনেই বলা হয়েছিল, ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্ব কার্বন
নিঃসরণ কমাতে একটি চুক্তি করতে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ থাকবে। এ সংক্রান্ত আলোচনা
শুরু হলেও বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত কতটুকু কার্যকর হবে তা স্পষ্ট নয়। গত বছর
ডিসেম্বরে লিমা সম্মেলনে বলা হয়েছিল, পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ
কমাতে প্রতিটি দেশ নিজস্ব কর্মপদ্ধতি ও কাঠামো উপস্থাপন করবে। প্রতিটি
দেশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নিজস্ব কর্মপদ্ধতি উদ্ভাবন করার। অর্থাৎ তারা
নিজেরাই কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যবস্থা বের করবে। প্রশ্নটা এখানেই।
বাংলাদেশে ইতিমধ্যে একটি কর্মপদ্ধতি প্রণয়ন রয়েছে; কিন্তু এ নিয়ে স্থানীয়
স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আমাদের আমলারা বিদেশ ভ্রমণে যেতে পছন্দ
করেন। সম্মেলনে যোগ দিয়ে যে হাতখরচ পাওয়া যায়, তা নিয়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত
থাকেন তারা। দেশে ফিরে এসে একরকম ‘ভুলে’ যান সবকিছু!খুলনা
সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেছিলেন, শুধু ২০০৮ থেকে ২০১৩
সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৪ কোটি ৬ লাখ মানুষ
বাস্তুচ্যুত হয়েছে (কালের কণ্ঠ, ৬ এপ্রিল)। তার এ বক্তব্যের জন্য তাকে আমি
সাধুবাদ দিতে পারি না। কেননা জলবায়ু কূটনীতিতে বাংলাদেশের ভূমিকা তেমন
উল্লেখযোগ্য নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে সফল, তা তারা দাবি করতে পারে না।
পত্রপত্রিকা থেকে দেখেছি বাংলাদেশ লিমা সম্মেলনের আলোকে অতি সম্প্রতি একটি
‘কর্মপরিকল্পনা’র জন্ম দিয়েছে। এতে ১৫ ভাগ কার্বন নিঃসরণের প্রতিশ্র“তি
রয়েছে। কিন্তু যদি বিনিয়োগ না আসে, যদি প্রযুুক্তি সহায়তা না পাওয়া যায়,
তাহলে এই প্রতিশ্র“তি কাগজে-কলমেই থেকে যাবে। তাই ভি ২০ জোটে যোগ দিয়ে
বাংলাদেশ তার স্বার্থ কতটুকু আদায় করতে পারবে এ প্রশ্ন থাকলই।প্যারিসে
সন্ত্রাসী ঘটনাবলীর পরও এ সম্মেলন শুরু হয়েছে। শুধু বিপুলসংখ্যক সরকার ও
রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতিই নয়, বরং প্রায় ৫০ হাজার মানুষের উপস্থিতি (যারা
বিভিন্ন দেশ থেকে গেছেন, যাদের মধ্যে অনেক এনজিও প্রতিনিধিও আছেন)
প্যারিসকে পুনরায় বিশ্বের আকর্ষণীয় কেন্দ্রে পরিণত করলেও একটি ‘ভালো খবর’
প্যারিস কপ-২১ সম্মেলন জন্ম দিতে পারবে কি-না, সেটাই দেখার অপেক্ষায় আছি
আমরা। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা হচ্ছে ‘কর্পোরেট হাউস’ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা।
বড় বড় কর্পোরেট হাউসের ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়েছে। তাই তারা তাদের
শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কার্বন হ্রাস কতটুকু কমাবে, চীন তার কার্বন নিঃসরণ কতটুকু
কমাবে বা আদৌ কমাবে কি-না, ভারতের ভূমিকাই বা কী হবে- এসব প্রশ্ন ইতিমধ্যে
উঠেছে। তারপরও একটি চুক্তি হোক- এ প্রত্যাশা সবার।
Daily Jugantor
06.12.15
Daily Jugantor
06.12.15
0 comments:
Post a Comment