আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনকে
সামনে রেখে যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, এই নির্বাচন
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে কত উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবে? ‘কিংবা সব
দলের অংশগ্রহণে’ একটি জাতীয় নির্বাচনের যে দাবি, এই পৌর নির্বাচন কি সেই পথ
প্রশস্ত করবে? ৫ জানুয়ারির (২০১৪) জাতীয় সংসদের নির্বাচন বিএনপি বয়কট
করেছিল। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছিল। এরপর তিনটি সিটি
কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও মাঝপথে নির্বাচন বয়কট করেছিল।
উপজেলা নির্বাচন যেমন সুষ্ঠু হয়নি, ঠিক তেমনি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনও
সুষ্ঠু হয়নি। ফলে আগামী বুধবারের পৌর নির্বাচন একটি বড় আশংকার জন্ম দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচএম এরশাদ গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে
বলেছেন, পৌর নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচন কমিশনকে তিনি মেরুদণ্ডহীন
হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন। এইচএম এরশাদ সরকারের শরিক এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি।
দীর্ঘদিন তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করেছেন। একজন শীর্ষ রাজনীতিবিদ
হিসেবে তিনি যখন বলেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, তখন বিষয়টিকে আমরা হালকাভাবে
নিতে পারি না।
এই নির্বাচনের যথেষ্ট গুরুত্ব থাকলেও ৯ ডিসেম্বরের পর থেকে
(যখন থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়) দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বাচনী
প্রচারণায় যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের
সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বৈকি। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বটি
বর্তায় নির্বাচন কমিশনের ওপর। কিন্তু দুঃভাগ্যজনকভাবে আমরা লক্ষ করলাম
নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব। একজন কমিশনার তো প্রকাশ্যেই প্রধানমন্ত্রীর
সহযোগিতা চাইলেন। বললেন, ‘সরকারপ্রধানের প্রতি অনুরোধ থাকবে, আচরণবিধি
লংঘনের বিষয়টি তিনি যেন দেখেন।’ প্রধানমন্ত্রী দেখবেন! এই দায়িত্বটি কি
প্রধানমন্ত্রীর? মন্ত্রীরা, এমপিরা আচরণবিধি লংঘন করেছেন। ইসি নোটিশ করলেও
তাদের আবার দায়মুক্তিও দিয়েছে। আসলে নির্বাচন কমিশনের কাছে মানুষের যে
প্রত্যাশা, তা তারা পূরণ করতে পারেনি। অতীতে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের
সময়ও ইসির ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এখন একটা সুযোগ এসেছিল ইসির জন্য তাদের
ক্ষমতা প্রদর্শন করার। কিন্তু তারা সেটি পেরেছে, তা বলতে পারছি না।
সংবাদপত্রগুলো গত দু’সপ্তাহে আমাদের যেসব সংবাদ পরিবেশন করেছে, তা আমাদের
জন্য কোনো আশার কথা বলে না। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর
ওপর হামলায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি ইসি। ইসির
সতর্কতার পরও নির্লিপ্ত মাঠ প্রশাসন। বাড়ছে সহিংসতা- এমন খবরই দিয়েছে একটি
সংবাদপত্র। অন্য একটি দৈনিকের প্রথম পাতার ভাষ্য, ক্ষমতাসীনদের দৌরাত্ম্য
বাড়ছেই। সাভারে বিএনপি প্রার্থীর বাড়িতে হামলা, ৯ পৌরসভায় আচরণবিধি লংঘন,
তানোরে শিক্ষকদের নিয়ে এমপির ‘নির্বাচনী সভা’- এমন খবর একটি জাতীয় দৈনিকের।
পৌর নির্বাচনে সেনা মোতায়েন চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া- এমন খবরও দিয়েছে
সংবাদপত্রগুলো। আবার সিইসি খালেদা জিয়ার এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন- এমন
খবরও আছে সংবাদপত্রে। ফলে পৌর নির্বাচন নিয়ে একটা শংকা থেকেই গেল। অথচ
গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য এই নির্বাচনটির গুরুত্ব অনেক। প্রথমত, এই প্রথম
দুটি বড় দল তাদের দলীয় মার্কা নিয়েই (নৌকা ও ধানের শীষ) মেয়র নির্বাচনে
অংশ নিচ্ছে। অর্থাৎ মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সীমাবদ্ধ থাকছে দুটি বড় দলের
মাঝে। জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের একটা সুযোগও তৈরি হয়েছে। যদি নির্বাচনটি সুষ্ঠু
না হয়, তাহলে এই জনপ্রিয়তা প্রমাণের সুযোগ আর থাকবে না। আওয়ামী লীগের শীর্ষ
নেতাদের জন্যও এ ‘বিষয়টি’ কোনো শুভ সংবাদ বয়ে আনবে না।দ্বিতীয়ত,
পৌর নির্বাচনে সব ধরনের ‘অনিয়ম’ যদি বন্ধ করা না যায়, তাহলে জাতীয় পর্যায়ে
তথা জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এই প্রবণতার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। এই ‘প্রবণতা’
বন্ধ না হলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির ‘মৃত্যু’ ঘটবে বাংলাদেশে।তৃতীয়ত,
পৌর নির্বাচনে মোট ৬ জন মেয়র প্রার্থী এবং ১৩৪ জন সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী
‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ নির্বাচিত হয়েছেন! অভিযোগ আছে, জোরজবরদস্তি করে
বিরোধী দলের অনেক প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়া হয়নি। ফেনী জেলার
অন্তর্ভুক্ত ফেনী, পরশুরাম, দাগনভূঞা পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত
আসনের ৪৮টিতে ৪৪ জন প্রার্থীই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ নির্বাচনে ‘বিজয়ী’ হওয়ার নজির কোনো ভালো কথা বলে
না। এ প্রবণতা বন্ধ না হলে তা জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে।চতুর্থত,
পরিসংখ্যান বলছে, ৯০৪ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ২২৯ জনের নামে বর্তমানে ও
৩২১ জনের নামে অতীতে মামলা ছিল। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২২১ জন মেয়র
প্রার্থীর ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির মেয়র
প্রার্থীদের (২০৬ জন) মধ্যে ৯৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। যুক্তি হিসেবে
ধরে নেই, বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে, তা
হয়রানিমূলক। কিন্তু আওয়ামী লীগের ৩৩ জনের বিরুদ্ধে (মেয়র প্রার্থী) যে
মামলা রয়েছে, তা নিশ্চয়ই হয়রানিমূলক নয়! আওয়ামী লীগের নেতারা জেনেশুনে কেন
এসব প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলেন? স্থানীয় পর্যায়ে ভালো ও সৎ প্রার্থী না দিলে
দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় না। সরকারি দলের মেয়র প্রার্থীদের ৩৩ জন কোনো না
কোনোভাবে মামলায় জড়িয়ে গেছেন। দল তাদের বদলে সৎ প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে
পারত। এটা হলে ভালো হতো। আওয়ামী লীগ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করত। সৎ
প্রার্থী না হলে স্থানীয় পর্যায়ে সৎ রাজনীতি উপহার দেয়া যায় না। বড় দল
হিসেবে আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি। আওয়ামী লীগ এ প্রত্যাশা
পূরণ করতে পারেনি। উপরন্তু যে ৬টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ‘বিনা
প্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে কী ধরনের ‘পরিস্থিতি’ বিরাজ
করছে, তা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের জানার কথা। ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়’
বিজয়ী হওয়ার ঘটনা দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য যথেষ্ট নয়।পঞ্চমত,
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে ‘ব্যবসায়ী প্রার্থীর’ সংখ্যা বেশি। ৯০৪ জন মেয়র
প্রার্থীর মধ্যে ৬৫২ জন ব্যবসায়ী, অর্থাৎ শতকরা ৭২ দশমিক ১২ ভাগ ব্যবসায়ী।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলেই ব্যবসায়ীদের আধিক্য। আওয়ামী লীগের মেয়র
প্রার্থীদের ১৬৫ জন (শতকরা ৭৪ দশমিক ৬৬ ভাগ), আর বিএনপির ১৬২ জন (শতকরা ৭৮
দশমিক ৬৪ ভাগ) ব্যবসায়ী (সূত্র : সুজন)। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা যখন
মেয়র হন, তখন তারা কি ব্যবসায়িক স্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে, নিরপেক্ষভাবে
স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনা করতে পারেন? পৌরসভায় কোটি কোটি টাকার উন্নয়নমূলক
কাজ হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ থাকে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে
কি এ ধরনের মেয়র পাওয়া সম্ভব, যিনি ব্যবসায়িক স্বার্থের ঊর্ধ্বে থাকবেন?
বাস্তবতা বলে, এটা সম্ভব নয়। আর সম্ভব নয় বলেই দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়।ষষ্ঠত,
আরও একটা কারণে এই নির্বাচন গুরুত্ব বহন করে। দলীয়ভাবে নির্বাচন হওয়ায়
জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে নির্বাচন করতে পারছে না।
তবে জামায়াতের প্রার্থীরা মাঠে আছেন। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপির হাইকমান্ড এটি জানে। লিখিতভাবে অথবা
প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমে বিএনপি দুটি আসনে দিয়েছে জোটভুক্ত এলডিপি ও জাতীয়
পার্টিকে (জাফর)। এর বাইরে ধারণা করছি, প্রায় ২৬টি আসন বিএনপি জামায়াতকে
ছাড় দিয়েছে। ইসিতে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। দলটি নিষিদ্ধ ঘোষণার
পর্যায়ে রয়েছে। সরকার সম্ভবত আইনি প্রক্রিয়াতেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে
চায়। অতীত ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়েও জামায়াতের কর্মকাণ্ড নানা বিতর্কের জন্ম
দিয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের কয়েকজনের ফাঁসি
কার্যকর হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে জামায়াত সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী
হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের পরিচয় স্থানীয়ভাবে ভোটাররা জানে।
ওইসব আসনে বিএনপি প্রার্থী দেয়নি। ফলে এই নির্বাচন প্রমাণ করবে জামায়াতের
প্রতি জনসমর্থন কতটুকু আছে। ওই জনসমর্থন নিয়ে জামায়াত হয়তো ভবিষ্যতে নতুন
নামে আত্মপ্রকাশ করবে (অনেকটা তুরস্কের মডেলে), যদি জামায়াতকে আইনগতভাবে
নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এই পৌর নির্বাচন প্রমাণ করল বিএনপি জামায়াতকে যেমন
ছাড়বে না, ঠিক তেমনি জামায়াতও বিএনপিকে ছাড়বে না। এই দুটি রাজনৈতিক শক্তির
মাঝে একটা ‘বিভক্তির’ উদ্যোগ নেয়া হলেও তা কোনো ‘কাজ’ দেয়নি। পৌর নির্বাচন
আমাদের বলে দিচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত সখ্য ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও
বহাল থাকবে। তবে নিঃসন্দেহে তা জামায়াত নামে নয়, বরং অন্য কোনো নামে।
জামায়াতের তরুণ প্রজন্ম এমনটাই চাচ্ছে।নির্বাচনী
প্রচারণায় মন্ত্রী-এমপিরা যেতে পারছেন না। কিন্তু তত্ত্বগতভাবে বিএনপির
নেতাদের যাওয়ার কথা। কিন্তু ক’জন গেছেন? কেউ কেউ জেলে। অনেকে আবার অসুস্থ।
বিএনপি দুটি কাজ করতে পারত। এক. খালেদা জিয়া প্রতিটি বিভাগীয় শহরে জনসভা
করতে পারতেন। যদিও ধারণা করছি, তিনি পুরোপুরিভাবে সুস্থ নন। এমন অবস্থায়
তার পক্ষে ঢাকার বাইরে যাওয়াও কঠিন। তবে তার যাওয়া দরকার। এক কঠিন সময় পার
করছে বিএনপি। অর্থ আÍসাতের অভিযোগে তার সাজা হয়ে যাওয়া, তারেক রহমানের দেশে
আসতে না পারা, বিএনপিতে বিকল্প নেতৃত্ব না থাকা বিএনপিকে এক কঠিন
বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। অস্তিত্ব সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বিএনপিকে
এখন বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে
দলে ফিরিয়ে নিয়ে তাকে কার্যকরী সভাপতি করা যেতে পারে। দুই. বিএনপির তরুণ
নেতৃত্বকে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে পাঠানো যেতে পারে। এই তরুণ নেতৃত্ব এখন
ঢাকায়, এখন তাদের ব্যস্ততা টকশোকেন্দ্রিক। রিজভী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রেস
ব্রিফিংয়ের মধ্যে তার কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রেখেছেন। এতে করে জেলা পর্যায়ের
নেতাকর্মীরা দিকনির্দেশনাহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। বিএনপিকে নতুন রাজনীতি
আর নতুন নেতৃত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বিএনপির গবেষণা সেলকে আরও শক্তিশালী
করতে হবে। গবেষণা সেল ছাড়া বিএনপি আগামী দিনের রাজনীতি উপস্থাপন করতে
পারবে না।বিএনপির জন্য সুযোগ এসেছে
মূলধারার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার। বিএনপির টার্গেট থাকা উচিত ২০১৯ সালের
সংসদ নির্বাচন। পৌর নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না-ও হয়, তারপরও বিএনপিকে আগামী
নির্বাচন নিয়ে ভাবতে হবে। দল গোছাতে হবে। কর্মীদের উজ্জীবিত করতে হবে। ৫
জানুয়ারি নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি কোনো সুবিধাই ঘরে তুলতে পারেনি। সরকার
সর্বক্ষেত্রে তার একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে সংসদে বিএনপির
অনুপস্থিতিতে। নির্বাচন বয়কটের পেছনে যুক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন,
বাস্তবতা হচ্ছে, তাদের অনুপস্থিতিতে যে সুযোগটি তৈরি হয়েছে, আওয়ামী লীগ তার
পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছে। ‘ফাঁকা মাঠে কোনো দলকেই গোল’ করতে দেয়া উচিত নয়
বিএনপির।বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক
সংস্কৃতি, সেই সংস্কৃতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অন্যতম দুটি শক্তি। একটিকে
বাদ দিয়ে যেমন গণতন্ত্রকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যাবে না, ঠিক তেমনি এই
দুটি বড় দলের মাঝে আস্থার সম্পর্কই অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতা গ্রহণের
আশংকা রোধ করতে পারে। তাই পৌর নির্বাচনটিকে গুরুত্বহীন ভাবলে আমাদের চলবে
না। এই নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে সরকারের পতন ঘটবে না সত্য; কিন্তু
ভবিষ্যৎ রাজনীতির একটা রূপরেখা আমরা পাব।
Daily Jugantor
28.12.15
0 comments:
Post a Comment