রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ভারতে জাঠ আন্দোলন ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

জাঠ আন্দোলন নতুন করে আবারও ভারতের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার অসঙ্গতিগুলোকে সামনে নিয়ে এলো। জাঠরা মূলত একটি অনগ্রসর শ্রেণি। হরিয়ানাসহ মোট ৯টি রাজ্যে এই জাঠদের বসবাস। এরা মূলত চাষবাসের সঙ্গে জড়িত, অর্থাৎ কৃষক। কিন্তু ওবিসি অর্থাৎ ‘আদার ব্যাকওয়ার্ড কাস’ হিসেবে তারা স্বীকৃত নন। ১৯৯১ সালে ম-ল কমিশনের রিপোর্ট বলবৎ হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্র ও রাজ্যের ওবিসি তালিকা নিয়ে জাঠদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। ১৯৯৭ সালে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশসহ ছয়টি রাজ্যের জাঠ নেতারা দাবি তুলেছিলেন কেন্দ্রের ওবিসি তালিকায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কিন্তু অনগ্রসর শ্রেণিসংক্রান্ত ন্যাশনাল কমিশন তা খারিজ করে দেয়। ব্যাপারটা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল। সেখানেও জাঠ নেতারা সুবিধা করতে পারেননি। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ‘শিক্ষা ও আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়াটাকে অনগ্রসরতা বলা যাবে না। সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা মানুষদের অনগ্রসর বলতে হবে।’ কিন্তু তাতেও জাঠদের আন্দোলন থেমে থাকেনি। নিজেদের অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত দাবি করে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরিতে ‘কোটা’ সংরক্ষণ চেয়ে আবারও তারা আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন ঠেকাতে সেনাবাহিনী নামাতে হয়েছে। কারফিউ দিতে হয়েছে। পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ অতিক্রম করেছে। আন্দোলনকারীরা এক পর্যায়ে দিল্লিতে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। বলা ভালো দিল্লির পানির শতকরা ৬০ ভাগের উৎস হচ্ছে হরিয়ানা। স্পষ্টতই এই জাঠ আন্দোলন মোদি সরকারকে বড় ধরনের একটি চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ভারত বড় দেশ। অর্থনীতিতে উঠতি শক্তি। ভারতের জিডিপির পরিমাণ ২ দশমিক ৩০৮ ট্রিলিয়ন ডলার (পিপিপি অর্থাৎ ক্রয় ক্ষমতার হিসেবে এর পরিমাণ ৭ দশমিক ৯৯৬ ট্রিলিয়ন ডলার)। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ ভাগ। বিশ্বের ৭ম বড় অর্থনীতির দেশ ভারত (পিপিপিতে তৃতীয়)। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতে জাত-পাতের সমস্যা প্রচুর। স্বাধীনতার ৬৮ বছরেও ভারত এ সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। সেখানে কৃষকদের ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে, আত্মহত্যার ঘটনা অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে তেমন আন্দোলন হয় না। তবে গেল সপ্তাহে হরিয়ানায় জাঠরা কোটা সংরক্ষণ চেয়ে যে আন্দোলন গড়ে তুলেছে তাতে নতুন করে ভারতের সমাজে যে অসঙ্গতি রয়েছে, সেই বিষয়টি সামনে চলে এলো। মোদি গত ২১ মাসে এ সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। নিঃসন্দেহে গত দেড় বছরে মোদি নিজেকে একজন উদ্যমী ও শক্তিশালী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। দলে আদভানির (যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন) মতো নেতাকে পাশে সরিয়ে রেখে তিনি তার অবস্থানকে শক্তিশালী করেছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি বড়, তা হচ্ছে তিনি ‘গরিব দেশের ধনী প্রধানমন্ত্রী’। প্রেসিডেন্ট ওবামাকে স্বাগত জানাতে (জানুয়ারি ২০১৫) তিনি ১০ লাখ রুপির স্যুট পরিধান করে প্রমাণ করেছিলেন তিনি আসলে ধনী শ্রেণিরই প্রতিনিধি! এক সময় যে নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি কৈশোরে ট্রেনের কামরায় কামরায় চা বিক্রি করতেন, মা পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন (মে মাসের ২০১৫ টাইম সাময়িকীর প্রতিবেদকের কাছে তা তিনি স্বীকারও করেছেন), সেই মোদির সঙ্গে এখন করপোরেট জগতের বাসিন্দাদের সম্পর্ক বেশি। ট্রেনে চা বিক্রেতাদের মতো সাধারণ ভারতীয়দের কাছে এখন তিনি ‘অনেক দূরের মানুষ’। তিনি যখন বিদেশ যান, তখন তার সঙ্গে যান ব্যবসায়ীরা, যান করপোরেট হাউসের প্রতিনিধিরা। গত দেড় বছরে তার শরীরে দশ লাখ রুপির স্যুট উঠেছে সত্য, কিন্তু দরিদ্র ভারতের চেহারা তিনি পরিবর্তন করতে পারেননি। কৃষকদের আত্মহত্যার প্রবণতা তিনি দূর করতে পারেননি। ইন্টারন্যাশনাল কম্পারিজন প্রোগ্রামের মতে, জাপানকে হটিয়ে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে ভারত। ২০০৫ সালে ভারত দশম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ছিল, আজ তৃতীয় অবস্থানে (সাধারণ নিয়মে এই অবস্থান সপ্তম)। আর গত বছর জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি চিনের চেয়ে বেশি হবে। যেখানে চিনের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২ ভাগ, সেখানে ভারতের হবে ৭ দশমিক ৭ ভাগ। নরেন্দ্র মোদি এই ভারতকেই প্রতিনিধিত্ব করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ভারতের জনগোষ্ঠীর ৩৭ ভাগ মানুষ এখনো গরিব। ৫৩ ভাগ জনগোষ্ঠীর কোনো টয়লেট নেই, যারা প্রকাশ্যেই এই ‘কাজটি’ নিত্য সমাধান করেন। পরিসংখ্যান বলে, বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ গরিব মানুষের বাস ভারতে, যাদের দৈনিক আয় বিশ্বব্যাংক নির্ধারিত ১ দশমিক ২৫ সেন্টের নিচে। চিন্তা করা যায় প্রতিদিন ভারতে ৫ হাজার শিশু মারা যায় ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ৮ সেপ্টেম্বর ২০১০)। পাঁচ বছর আগের এই পরিসংখ্যানে খুব পরিবর্তন এসেছে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। শুধু দরিদ্রতা কেন বলি, প্রায় ৮০ কোটি লোকের দৈনিক আয় ২ দশমিক ৫০ ডলার। ৭০ ভাগ লোক গ্রামে বসবাস করে। নারী-পুরুষের পার্থক্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেখানে অবস্থান (জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ১৮৬-কে হিসাবে ধরে) ১৪৬, ভারতের সেখানে ১৩৬। এত নারী নির্যাতন আর নারী ধর্ষণ ঘটনা ঘটার পরও বন্ধ হয়নি। নারী নির্যাতনের কাহিনি নিয়ে তৈরি ছবি (যা বাস্তব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি) গুলাব গ্যাং-এর (উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখ-ে গ্রামের সত্য কাহিনি) কথা নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। মোদি গত দেড় বছরে এদের জন্য কী করেছেন? যদিও মাত্র দেড় বছরে দরিদ্রতা কমানো সম্ভব নয়, কিংবা বিপুল তরুণ প্রজন্মের জন্য চাকরির সংস্থান করাও সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে। কিন্তু দরিদ্রতা কমানো তার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তার ‘গুজরাট মডেল’ নিয়েও নানা প্রশ্ন আছে। গুজরাটে তিনি সড়ক, মহাসড়ক করেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। ভারতের প্রভাবশালী সংবাদপত্রগুলো তার দেড় বছরের পারফরম্যান্স নিয়ে নানা প্রবাদ লিখেছে। তবে বেশিরভাগ সংবাদপত্রের ভাষ্য একটাইÑ তিনি যে নির্বাচনের আগে ‘আচ্ছে দিন’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা এখনো অধরা। প্রাপ্তির ঘরটা এখনো শূন্য। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ১২৫ কোটি মানুষের প্রত্যেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ রুপি করে জমা হবে। কিন্তু তা হয়নি। ভবিষ্যতে হবে, এমন সম্ভাবনাও ক্ষীণ। কালো টাকা উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতিও ছিল। কিন্তু অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি জানিয়ে দিয়েছেন, কালো টাকার প্রশ্নটা ছেলে খেলা নয়। কাজেই অমন লুটোপুটি করলে চলবে না। আর অমিত শাহ বলেছেন, কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসাÑ এটা কথার কথা। এ ধরনের কথা বলতে হয়। এটা কথার কথা, এটাকে সিরিয়াসলি নিতে নেইÑ এটা অমিত শাহের সাফ কথা তাই নরেন্দ্র মোদির সেই প্রতিশ্রুতি ‘আচ্ছে দিন’, অর্থাৎ সুসময় কবে আসবে, বলা মুশকিল। তবে এটা তো ঠিক, সুসময় এসেছে ব্যবসায়ীদের জন্য। তারা এখন মোদির সঙ্গে বিশ্বময় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের চাই ব্যবসা। চাই বিনিয়োগ। আর সেই ব্যবসা ও বিনিয়োগ নিশ্চিত করছেন মোদি। জাপান, চিন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে তিনি প্রচুর আশ্বাস পেয়েছেন। ভারতকে তিনি চিনের বিকল্প হিসেবে ‘পণ্যের উৎপাদন কারখানায়’ পরিণত করতে চান। বড় বড় কোম্পানি এখন ভারতে আসছে। কিন্তু কৃষক যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। তাদের কোনো উন্নতি হয়নি। জাত-পাতের সমস্যা যা ছিল, তাও রয়ে গেছে। সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মোদি একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন। বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায়ও তা ছাপা হয়েছিল। এখানে তিনি কতগুলো বিষয় স্পষ্ট করেছেন। এমনকি বিজেপি এক সংবাদ সম্মেলনও করেছিল গত ২৬ মে (২০১৫)। মোদির চিঠি ও বিজেপির সংবাদ সম্মেলনে কতগুলো বিষয় স্পষ্ট হয়েছিল। এক. রামমন্দির প্রতিষ্ঠা কিংবা শরিয়া আইন বাতিল তারা করবেন না। কেননা লোকসভায় তাদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাই যথেষ্ট নয়। অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ, মুসলিমদের শরিয়া আইন বাতিল, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাবাহী সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলÑ এগুলো ছিল বিজেপির প্রধান নির্বাচনী ইস্যু। দুই. মোদি বলেছেন, তিনি গত এক বছরে দুর্নীতিমুক্ত একটি সমাজ উপহার দিতে পেরেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি প্রধান পাহারাদার, দেশের সম্পদের পাহারাদার। কিন্তু বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ (ভারত নির্মাণ) অভিযানকে অতিরঞ্জিত প্রচার বলে মন্তব্য করা হয়েছে। মোদি সরকারের কাছে বিপুল প্রত্যাশা থাকলেও কর্মসংস্থানের হাল যথেষ্ট খারাপ বলেও মন্তব্য করেছে তারা। প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে মোদি সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতে মোদির এক বছর উচ্ছ্বাসের পর্ব শেষ, সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ‘ভারতে এক বছর আগে পরিবর্তন ও আর্থিক পুনরুজ্জীবনের আশায় নরেন্দ্র মোদি বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু এবার চূড়ান্ত বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছে মোদি সরকার। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র অভিযান শুরু করলেও ভারতের অর্থনীতি খুঁড়িয়েই চলছে। আর নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, মোদির অধিকাংশ কর্মসূচি এখনো কথার কথাই রয়ে গেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, দেশের অভ্যন্তরে আর্থিক অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার এখনো বেহাল। ব্যবসায়িক উদ্যোগেও তেমন দানা বাঁধছে না। একই সঙ্গে রাজনৈতিকভাবেও চাপে পড়েছেন মোদি। এসব মূল্যায়ন মোদি সম্পর্কে কোনো ভাল ধারণা দেয় না। নিশ্চয়ই গত দেড় বছরে মোদি অনেক কিছু শিখেছেন। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, তিনি নিজস্ব একটি স্টাইল তৈরি করেছেন। তিনি সিদ্ধান্ত একাই নেন। এখানেই মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে তার পার্থক্য। মনমোহন সিং বেশি মাত্রায় সোনিয়া গান্ধীনির্ভর ছিলেন। নরেন্দ্র মোদির প্লাস পয়েন্ট এটাই। দলে তাকে চ্যালেঞ্জ করার কেউ নেই। তারপরও তার বিরুদ্ধে অসন্তোষ আছে। দলের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এটা মনে করে কিনা জানি না, গত আগস্টে (২০১৫) ভারতের ৬৯তম স্বাধীনতা দিবসে এক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘দুর্নীতি ভারতকে ঘুণপোকার মতো খেয়ে ফেলেছে। ওপরের পর্যায় থেকে আসাদের এ কাজ শুরু করতে হবে।’ ভাষণে তিনি কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর মাঝে আছে ১০০০ দিনের মধ্যে সব গ্রামে বিদ্যুৎ। তিনি বলেছিলেন, ‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’। নতুন ভারত গড়ার প্রত্যয়। কিন্তু জাঠ আন্দোলন এখন তার ‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’র পথে অন্যতম অন্তরায় হিসেবে দাঁড়িয়ে গেল। ভারত পৃথিবীর বড় গণতান্ত্রিক দেশ হওয়া সত্ত্বে মানুষ আর মানুষের মধ্যে যে কোনো পার্থক্য নেই, এই ‘সত্যটি’ বাস্তবে রূপ দিতে পারেনি। ভারতে গণতন্ত্র আছে, এটা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি এটাও সত্য সেখানে সমাজে মানুষের মাঝে পার্থক্য রয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সমাজে মাত্র ৫ ভাগ মানুষ ব্রাহ্মণ, অর্থাৎ তারা কুলিন শ্রেণি। অন্যদিকে নীচু তথা দলিত শ্রেণির সংখ্যা ১৩ ভাগ ও অনগ্রসর শ্রেণির সংখ্যাও ১৩ ভাগ। কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণিকে যদি ধরা হয়, তাহলে এ সংখ্যা ২৮ ভাগ। দলিতরা সমাজের অনগ্রসর শ্রেণি হিসেবে চিহ্নিত হলেও এই দলিতদের নিয়েই ‘রাজনীতি’ করে অনেকে শুধু রাষ্ট্র ক্ষমতা ভোগই করেননি, বরং ধনী ব্যক্তিত্বেও পরিণত হয়েছেন। মায়াবতী এর বড় প্রমাণ। ভারতের রাজনীতিবিদরা তাদের নিজেদের স্বার্থেই এই ‘জাত-পাত’-এর ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখছেন। Daily Amader Somoy 27.02.16

0 comments:

Post a Comment