হিলারি ক্লিনটন কি শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন? চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়ায় বিভিন্ন জনমতের যে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে দেখা যায়, হিলারি অনেক এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে। চলতি মাসের ২ তারিখে সিএনএনের জরিপ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ৯ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন হিলারি। হিলারির পক্ষে জনমত শতকরা ৫২ ভাগ। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে মাত্র ৪৩ ভাগ। সিএনএন এ জরিপটি চালায় রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট পার্টির জাতীয় কনভেনশনের পরপরই। জাতীয় কনভেনশনে রিপাবলিকান পার্টি ট্রাম্পকে আর ডেমোক্র্যাট পার্টি হিলারিকে ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়। ডেমোক্র্যাট পার্টির কনভেনশন একটি ঐতিহাসিক ঘটনার জন্ম দেয়। ১৭৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার পর ২৪০ বছরের ইতিহাসে কোনো নারী প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এই প্রথম একজন নারী এ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সেটা হবে আরেক ইতিহাস। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের নারী আন্দোলন তথা নারীদের অধিকারের ক্ষেত্রে এটা হবে একটি মাইলফলক। পাঠকদের জানিয়ে রাখি, যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বড় অর্থনীতি ও বড় গণতন্ত্রের দেশ হলেও এখানে নারীদের ভোটের অধিকারের বয়স মাত্র ৯৬ বছর। দীর্ঘদিন এখানে নারীদের ভোটের অধিকার দেয়া হয়নি। এ নিয়ে নারী আন্দোলনের ইতিহাসও বিভিন্ন গ্রন্থে পাওয়া যায়। নিঃসন্দেহে হিলারি ক্লিনটনের মনোনয়ন পাওয়া এখানকার নারী আন্দোলনকে আরও উজ্জীবিত করবে। এখানে বলা ভালো, যুক্তরাষ্ট্রের মতো কনজারভেটিভ সোসাইটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব সীমিত। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান বলে, কংগ্রেস ৫৩৫টি আসনে (সিনেট ১০০, প্রতিনিধি পরিষদ ৪৩৫) মাত্র ১০৭ জন নারী আইন প্রণেতা রয়েছেন (ডেমোক্র্যাট ৭৬ জন, রিপাবলিকান ২৮ জন)। সিনেটে নারী প্রতিনিধি রয়েছেন ২০ জন (১০০ জনের মাঝে, শতকরা ২০ ভাগ), আর প্রতিনিধি পরিষদে রয়েছেন মাত্র ৮৪ জন (শতকরা ১৯ দশমিক ৩ জন)। সুতরাং এ সীমিত প্রতিনিধিত্বের মধ্য দিয়ে নারীর পূর্ণ অধিকার রক্ষিত হয়েছে, এটি বলা যাবে না। স্পষ্টতই হিলারির এ মনোনয়ন যুক্তরাষ্ট্রের নারী সমাজের জন্য বড় ধরনের একটি অগ্রগতি। ১৮৪৮ সালে সেনেকা ফলস কনভেনশনে (ঝবহবপধ ঋধষষং ঈড়হাবহঃরড়হ) এই প্রথমবারের মতো নারীদের ভোটাধিকারের দাবি জানানো হয়েছিল। আর ওই কনভেনশনের ১৬৮ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রার্থী পেল, যিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জুলাই মাসের শেষে দুইটি দলের জাতীয় কনভেনশন শেষ হয়েছে। ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশন, আর ফিলাডেলফিয়ায় ডেমোক্র্যাট পার্টির। দুইটি কনভেনশনেই ডোনাল্ড ট্রাম্প আর হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়। দুইটি কনভেনশন ঘিরেই বিপুল উৎসাহ লক্ষ করা গেছে। সিএনএন চার দিনব্যাপী এ কনভেনশন ‘লাইভ’ কাভার করে। এ কনভেনশনে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য দেখে আমার কাছে কতগুলো বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। তুলনামূলকভাবে ডেমোক্র্যাটদের জাতীয় কনভেনশন ছিল যথেষ্ট আকর্ষণীয়। ওবামা ও ক্লিনটনের মতো দুইজন প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি ডিএনসিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। এক্ষেত্রে রিপাবলিকান পার্টি কনভেনশনে কোনো সাবেক রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট উপস্থিত ছিলেন না, যাদের কেউ কেউ এখনও জীবিত আছেন (যেমন বুশ)। উভয় কনভেনশনেই আমি লক্ষ করেছি, বক্তারা (যাদের কেউ কেউ সিনেটর, গভর্নর, মন্ত্রী) ক্লিনটন, ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন বেশি। এমনকি মনিকা লিউনেস্কির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের যৌন সম্পর্কের বিষয়টিও পরোক্ষভাবে এসেছে। ট্রাম্প ‘অযোগ্য’, তার হাতে “পারমাণবিক অস্ত্রের চাবি তুলে দেয়া নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ, কিংবা রাশিয়ার সঙ্গে ‘বিশেষ সম্পর্ক’ তৈরি করে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলতে পারেন” এ ধরনের বক্তব্য বারবার উচ্চারিত হয়েছে। এটা ঠিক হিলারি ক্লিনটনের মনোনয়ন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ‘ইতিহাস’ সৃষ্টি করেছে এটা স্বীকার করতেই হবে। ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি যদি ‘বিজয়ী’ হন, তাহলে সেটা হবে আরেকটা ইতিহাস। হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনী প্রচারণায় নারীদের অধিকারের কথাটি বারবার বলেছেন। তিনি শিশু ও মায়েদের ব্যাপারে আরও কিছু করতে চান। দুইটি কনভেনশনে দুই পরিবারের দুই ব্যক্তি ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা বক্তৃতা করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের পাশাপাশি মেয়ে চেলসি ক্লিনটনও বক্তৃতা করেছেন। আর অন্যদিকে ডোনাল্ডের স্ত্রী সাবেক মডেল মেলানিয়া ক্লাউস ট্রাম্পও বক্তৃতা করেছেন। এক্ষেত্রে মেলানিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, ২০০৮ সালে ওবামার স্ত্রী মিশেল ডিএনসি সম্মেলনে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, এটা তার কার্বন কপি। মার্কিন মিডিয়া আমাদের জানাচ্ছে যে, দুইজনের (মিসাইল ২০০৮, মেলানিয়া ২০১৬) বক্তৃতায় ভাষাগতভাবে অদ্ভুত এক মিল রয়েছে। একই সালে চেলসি যতটুকু আবেগময়ী ভাষায় তার মাকে (হিলারি ক্লিনটন) তুলে ধরতে পেরেছেন, ইভানকা ট্রাম্প এতটা পারেননি। এরই মধ্যে চেলসিকে নিয়েও ‘গুঞ্জন’ শুরু হয়েছে। তিনি কি হতে যাচ্ছেন বিল ও হিলারির যোগ্য উত্তরসূরি? হিলারির নির্বাচনী এলাকা নিউইয়র্ক। এখানে তিনি সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আগামী দিনে এ এলাকা থেকে আরেকজন হিলারি ক্লিনটনকে কী দেখতে পাবে নিউইয়র্কবাসী? বিল ক্লিনটনের ভাষণও অনেকে প্রশংসা করেছেন। ৪৫ বছর আগে আরাকানসাস লাইব্রেরিতে হিলারির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের কথা, তিন তিনবার হিলারিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া কনভেনশনে বিলের এ বক্তব্য তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে সবাই স্বাগত জানান। সমাপনী অনুষ্ঠানে হিলারি এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ৪৫ বছর আগে যে ‘যাত্রা’ শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত থাকবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। ডেমোক্র্যাটদের কনভেনশনে যেখানে দলীয় নেতৃত্বের মাঝে ঐক্য ও সংহতি প্রকাশিত হয়েছে (বিশেষ করে বার্নি শ্যান্ডার্স এর সমর্থকদের নিয়ে শঙ্কা ছিল), তা রিপাবলিকান শিবিরে দেখা যায়নি। মনোনয়নের জন্য শীর্ষ দাবিদার টেডক্রুজ শেষ সময় পর্যন্ত ট্রাম্পকে সমর্থন দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। উপরন্তু ট্রাম্পের ঔদ্ধত্য আচরণ, মেক্সিকান এবং মুসলমান বিদেষী মনোভাব লিবারেল রিপাবলিকানদের অনেকে সমর্থন করেননি। এমনকি ডেমোক্র্যাটদের কনভেনশনে একজন মুসলমান আমেরিকান খিজির খানের (যার সন্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হুমায়ুন খান ২০০৪ সালে ইরাকে আমেরিকান সৈন্যদের রক্ষা করতে গিয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মারা যান) বক্তব্যের ট্রাম্প যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন, তাও অনেকে সমর্থন করেননি। আসলে ট্রাম্প একজন ধনী ব্যবসায়ী, সন্দেহ নেই তাতে। পৃথিবীর অনেক দেশেই তার ব্যবসা আছে। অর্থ আয় আর নারী সঙ্গ ছাড়া (সুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজনকারীদের একজন তিনি) অন্য কিছু তিনি বোঝেন না। তিনি কখনোই সেনাবাহিনীতে ছিলেন না। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে তার কোনো অবদান নেই। এমনকি তার বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার অভিযোগও উঠেছে। তিনি নৈতিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার হারিয়েছেন। তরুণদের কাছে তিনি জনপ্রিয় নন আদৌ। শিশুরা তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে। তবে কট্টরপন্থীদের কাছে তিনি একজন যোগ্য নেতা! কট্টরপন্থীরা চাচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন, যিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রকে, বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পাবেন। একজন ‘নারী’ প্রেসিডেন্ট এ যোগ্যতা রাখেন না, এটাই তাদের অভিযোগ। কনভেনশনে হিলারি যখন সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন, বেতন বৃদ্ধি, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন, সেখানে ট্রাম্প গুরুত্ব দিয়েছেন অভিবাসন রোধ করা ও চাকরির সংখ্যা বাড়ানো ইত্যাদির ওপর।
নির্বাচনী প্রচারণায় প্রায় প্রতিদিনই হিলারি ক্লিনটন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প পরস্পর পরস্পরকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখছেন। এখন যে প্রশ্নটি অনেকেই করার চেষ্টা করছেন, তা হচ্ছে এই দুইজনের একজন যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন এবং ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করবেন, তখন কী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো বড় পরিবর্তন আসবে? ট্রাম্পের অভিযোগ, হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে ওবামা প্রশাসনের নীতিই তিনি অব্যাহত রাখবেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা আইএসকে সৃষ্টি করেছিল এবং হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে আইএস আরও শক্তিশালী হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা আরও ঝুঁকির মুখে থাকবে। ট্রাম্পের আরও অভিযোগ, ওবামা টিপিপি (ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ) চুক্তি করে অনেক মার্কিনিকে চাকরি হারানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে ওই চুক্তি তথা নাফটা চুক্তির (কানাডা, মেক্সিকো আর যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে মুক্ত বাজার) ব্যাপারে তিনি পুনর্মূল্যায়ন করবেন। চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের অর্থনৈতিক ‘প্রভাব’ বাড়ছে। এ ‘প্রভাব’ তিনি কমাতে চান। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট শিবিরের বক্তব্য হচ্ছে, ট্রাম্প অতিমাত্রায় দক্ষিণপন্থী, যুদ্ধংদেহী, তিনি প্রয়োজনে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও শুরু করে দিতে পারেন! তিনি অতিমাত্রায় রাশিয়াপন্থী। রাশিয়ায় তার বিশাল বিনিয়োগ আছে। পুতিনকে তিনি ওবামার চেয়েও যোগ্য নেতা মনে করেন। ফলে ট্রাম্পের অতি ‘রাশিয়াপ্রীতি’ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে আঘাত করতে পারে। ট্রাম্প মূলত মুনাফা অর্জন করতে বোঝেন। তার কাছে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, মধ্যবিত্তের সামাজিক কাঠামোর মানোন্নয়নের ব্যাপারে কোনো কমিটমেন্ট নেই। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি মুসলমান ও মেক্সিকান বিদ্বেষী। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করার কথাও বলেছেন তিনি। তিনি সেনাবাহিনীর গৌরবকে আঘাত করেছেন; এমন অভিযোগও উঠেছে ডেমোক্র্যাট শিবিরের পক্ষ থেকে। মিডিয়ায় বারবার খিজির খানের বক্তব্য প্রচার হতে দেখেছি। যেখানে খিজির খান ডেমোক্র্যাটদের কনভেনশনে বক্তৃতা দেয়ার সময় বুক পকেট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বের করে প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, ট্রাম্প সংবিধান পড়েননি! তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য অযোগ্য। ওবামাও প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ট্রাম্প ‘অযোগ্য’। সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগকারীদের ব্যাপারে ও তার পরিবারদের ব্যাপারে ট্রাম্পের বিরূপ সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা কেউই মেনে নেননি। ফলে এ অংশের সমর্থন পাবেন হিলারি।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনগণ ভোট দেন বটে, কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নির্বাচকম-লীর ভোটে। অর্থাৎ প্রতিটি রাজ্যের সিনেট সদস্য ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের নিয়েই এ নির্বাচকম-লী গঠিত। এর সংখ্যা ৫৩৮। এরাই জনগণের নামে প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করেন। এখানেও কিছুটা অসামঞ্জস্যতা আছে। যেমন দেখা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বাচকম-লীর সংখ্যা ৫৫, এখানে জনগণের ভোটে ডেমোক্র্যাটরা যদি বিজয়ী হন, তাহলে ধরা হবে ডেমোক্র্যাটরা পুরো ৫৫টি ভোটই পেয়েছেন। এক্ষেত্রে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প যদি শতকরা ৪০ ভাগ ভোটও পান, তা আদৌ কোনো বিবেচনায় নেয়া হবে না। এজন্যই দেখা যায়ত, জনমত যাই থাকুক না কেন, ওই রাজ্য কাদের (ডেমোক্র্যাট না রিপাবলিকান) তার ওপরই নির্ভর করছে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার প্রশ্নটি। পর্যবেক্ষকরা লক্ষ করেছেন, বেশ ক’টি রাজ্য হয়েছে (যেমন নিউইয়র্ক বা ক্যালিফোর্নিয়া, যারা বরাবরই ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করে। টেক্সাস সমর্থন করে রিপাবলিকানদের), এসব রাজ্য নির্বাচনে সবসময় একটা ভূমিকা পালন করে। তবে ১১টি রাজ্যের কথা বলা হচ্ছে (কলোরাডো, ফ্লোরিডা, আইওয়া, মিসিগান, নেভাদা, নিউহ্যাম্পশায়ার, নর্থ ক্যালোরিনা, ওহিও, পেনসেলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া এবং উনসকনসিপ), যাদের বলা হচ্ছে ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেটস’ (ইধঃঃষবমৎড়ঁহফ ঝঃধঃবং), যে রাজ্যগুলো গেল দুই-দুইটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এসব রাজ্যের ভোটাররা দ্বিধাবিভক্ত। তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট সমর্থন নেই। কখনও তারা ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করে। কখনও রিপাবলিকানদের। সুতরাং এ মুহূর্তে জনমতে হিলারি এগিয়ে থাকলেও এই ১১টি রাজ্যের ফল আগামী নির্বাচনে কোন প্রার্থীর বিজয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে।
ডালাস
Alokito Bangladesh
রবিবার, আগস্ট ১৪, ২০১৬
Alokito Bangladesh
রবিবার, আগস্ট ১৪, ২০১৬
0 comments:
Post a Comment