রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

কোন পথে ইউরোপ

ইউরোপকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন এখন। গত ২৩ জুন ব্রিটেনের গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, আর সেই সঙ্গে লাখ লাখ সিরীয় ও ইরাকি অভিবাসীর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবেশ পুরো ইউরোপের দৃশ্যপটকে এখন পাল্টে দিয়েছে। গত দুই সপ্তাহ আমি ইউরোপের বিভিন্ন শহরে ঘুরে বেড়িয়েছি। অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। যে ইউরোপকে আমি প্রায় ২৫ বছর আগে ফেলে এসেছিলাম, সেই ইউরোপকে আমি এখন আর চিনি না। ইউরোপ বদলে গেছে। বদলে যাচ্ছে। নতুন এক ইউরোপের জন্ম হচ্ছে! জন্ম হচ্ছে নতুন এক সংস্কৃতির। একটি সংকর জাতির জন্ম হচ্ছে—আদি জার্মানিকে আমি আর খুঁজে পাইনি। ফ্রাংকফুর্টের বিখ্যাত বিপণি এলাকা সাইল এ ক্যাফে শপগুলোতে নিত্যদিন বসে কফি পান করেছি আমার পুরনো বন্ধু কামাল আর ফেরদৌসের সঙ্গে। আমার কাছে এ এক নতুন জার্মানি! এখানে এক মিশ্র জাতির জন্ম হয়েছে। ২৫ বছর আগে আমি যখন জার্মানি ছেড়ে চলে যাই, স্পষ্টতই মনে আছে আমি রাস্তায় কোনো হিজাবি মহিলাকে দেখিনি তখন। এখন সাইলের বিপণিবিতানগুলোর পাশে উন্মুক্ত কফি শপে বসে লক্ষ করেছি হিজাবি মহিলারা হেঁটে যাচ্ছেন কোনো ধরনের ভয়-ডর ছাড়াই! অধিকাংশ মহিলাই আরব দেশগুলো থেকে আসা—কেউ সিরীয়, কেউ ইরাকি, কেউ বা আবার অন্য কোনো আরব দেশের। নিউ ইয়র্কের কুইন্সি এলাকায় আমি বাংলাদেশি মহিলাদের আপাদমস্তক বোরকায় ঢেকে বাজার করতে দেখেছি। সেদিন অবাক হয়েছিলাম বৈকি! আমেরিকার মতো সমাজে থেকেও পুরো হিজাবি! না, কোনো বাংলাদেশি মহিলাকে আমি বোরকা পরে জার্মানির রাস্তায় ঘুরতে দেখিনি। বাংলাদেশি সন্তানদেরও আমি দেখিনি। তবে আরব দেশগুলো থেকে যাঁরা সাম্প্রতিককালে এসেছেন তাঁরা প্রায় সবাই পর্দাপ্রথা মেনে চলছেন। এটা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক চললেও জার্মানিতে আমি কোনো বিতর্কের খবর শুনিনি। একসময় জার্মানরা গর্ব করত তাদের রক্তে কোনো মিশ্রণ নেই বলে। অর্থাৎ তাদের রক্তে অন্য কোনো রক্ত মেশেনি। এখন তা পরিপূর্ণভাবে বদলে গেছে। এখন আদি খাঁটি জার্মান নাগরিক পাওয়া খুব দুষ্কর। সবাই জার্মান নাগরিক। কিন্তু আদি জার্মান নয়। রক্তে মিশ্রণ ঘটেছে। আগামী ২০ বছর পর যে জার্মানির জন্ম হবে, তা হবে এক মিশ্র জাতির জার্মানি। অনেকটা ফ্রান্সের মতো। ফ্রান্সে ব্যাপকভাবে আফ্রিকান নাগরিকদের অভিবাসন, আলজেরিয়া তথা মাগরেব দেশভুক্ত এলাকা থেকে আসা নাগরিকদের ফ্রান্সে অবস্থান, বৈবাহিক সম্পর্ক ইত্যাদির কারণে নতুন এক ফ্রান্সের জন্ম হয়েছে। যদিও এটা সত্য, আফ্রিকায় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল এবং সেখান থেকে আসা নাগরিকদের ফ্রান্সে বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছিল ফ্রান্স। ফলে একসময়ের শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের দেশ ফ্রান্সকে এখন আর চেনা যায় না। শ্বেতাঙ্গ আর আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গদের সমন্বয়ে এক নয়া ফ্রান্সের জন্ম হয়েছে। সেই সঙ্গে মাগরেবভুক্ত অঞ্চল থেকে আসা বিপুলসংখ্যক (আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, মরক্কো) শ্বেতাঙ্গ মানুষেরও স্থান হয়েছিল ফ্রান্সে। এর পরই এক নতুন ফ্রান্স জন্ম নিয়েছে। তবে জার্মানির সঙ্গে পার্থক্য এখানেই যে জার্মানির কোনো উপনিবেশ ছিল না। ফলে আফ্রিকা থেকে এখানে অভিবাসন হয়েছে কম।
ইউরোপের সমস্যা এখন অনেক। প্রথমত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে যাওয়ার ফলে ইউরোপ যে বড় ধরনের আর্থিক ঝুঁকি ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে, তা এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কি না, তা নিয়ে বিতর্ক এখনো অব্যাহত রয়েছে। ব্রিটেনের গত ২৩ জুনের গণভোটের সিদ্ধান্তে (বেক্সিট) অনেকেই অবাক হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন পদত্যাগ করেছেন এবং ব্রিটেন একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে, এ খবর অনেক পুরনো এখন। তবে ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্তকে ইউরোপের অনেক দেশই সমর্থন করেনি। গত ৪ আগস্ট আইপিএস-ডিএস মরি নামক একটি প্রতিষ্ঠান ইইউভুক্ত ৯ দেশের জনগণের ওপর একটি জনমত জরিপ করে। এই দেশগুলো ইউরোপের ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত। এতে দেখা যায়, ওই ৯টি দেশের ৫৫ শতাংশ মানুষ মনে করে ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত (বেক্সিট) ব্রিটেনের জন্য একটি খারাপ সিদ্ধান্ত। ৫৮ শতাংশ মানুষ মনে করে পুরো ইইউয়ের জন্যও এটি খারাপ। ব্রিটেনের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছে রাশিয়া। সুইডেনের ৬৮ শতাংশ মানুষ মনে করে ইইউয়ের জন্য সিদ্ধান্তটি ভালো ছিল না। সুইডেনের মানুষ মনে করে বেক্সিটের ফলে এ অঞ্চলের ব্যাপারে রাশিয়ার হুমকি আরো বাড়বে এবং রাশিয়া এ থেকে ফয়দা নেবে। অন্যদিকে ফ্রান্সের ৬৪ শতাংশ মানুষ মনে করে বেক্সিটের ফলে অর্থনৈতিকভাবে ইইউ আরো দুর্বল হবে। এখন ব্রিটেনের ব্যাপারে ইইউয়ের সিদ্ধান্ত কী হবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। জনমত জরিপেও তা প্রতিফলিত হয়েছে। জনমত জরিপে দেখা গেছে ২৮ শতাংশ মানুষ মনে করে ইইউ ব্রিটেনের ব্যাপারে কঠোর হবে। আবার ২৬ শতাংশ মানুষ মনে করে ইইউ ব্রিটেনের ব্যাপারে নরম হবে। বলা ভালো, যেসব দেশে এই জনমত জরিপ চালানো হয় সেগুলো হচ্ছে—স্পেন, জার্মানি, বেলজিয়াম, সুইডেন, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি ইত্যাদি (ইকোনমিস্ট, ৬ আগস্ট ২০১৬)। এর আগে এক নিবন্ধে আমি উল্লেখ করেছিলাম ব্রিটেনের এ ধরনের (বেরিয়ে যাওয়ার) সিদ্ধান্তে ইইউয়ের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। স্কটল্যান্ড ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইইউয়ের সঙ্গে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে স্কটল্যান্ড দ্বিতীয়বারের মতো সেখানে গণভোটের আয়োজন করতে পারে। প্রথমবারের গণভোটে ব্রিটেনের সঙ্গে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছিল স্কটল্যান্ডের জনগণ। বেক্সিটের সিদ্ধান্তটি হয়েছে বটে; কিন্তু তা কার্যকর করতে ব্রিটেন দুই বছর সময় পাবে। ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্তের ফলে জার্মানির ওপর চাপ বাড়ছে। লন্ডনে শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাদের অফিস ফ্রাংকফুর্টে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে ফ্রাংকফুর্টের গুরুত্ব আরো বেড়েছে। তাই নিউ ইয়র্কের পর ফ্রাংকফুর্ট হতে যাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর। জার্মানি এর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। জার্মানিতে থাকার সময় লক্ষ করলাম সেখানে প্রচুর নির্মাণকাজ হচ্ছে। নতুন নতুন ‘হাইরাইজ’ ভবন তৈরি হচ্ছে। গালফ অঞ্চলের শাসকদের বিনিয়োগও বাড়ছে ফ্রাংকফুর্টে। নতুন এক ফ্রাংকফুর্ট তৈরি হচ্ছে।
ইউরোপে এই মুহূর্তে একটা বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের নিয়ে। প্রায় ১০ লাখ সিরীয় ও ইরাকি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে জার্মানি। শরণার্থীদের জন্য আগামী পাঁচ বছর ৯৪ বিলিয়ন ইউরো খরচ করবে জার্মানি। এই শরণার্থীদের নিয়ে ফ্রান্স এক মহাফ্যাসাদে আছে। সেখানে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের তৎপরতা বেড়েছে। ফ্রান্সে একাধিক সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে, যার সঙ্গে ফ্রান্সে মাগরেবভুক্ত দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীরা জড়িত ছিল। সিরীয় শরণার্থীদের মাঝে আইএসের এজেন্ট আছে—এ ধরনের কথা মিডিয়ায় বারবার এলেও তা এখনো প্রমাণিত নয়। ফ্রান্সে এখনো জরুরি অবস্থা চালু রয়েছে। জার্মানিতে অবশ্য আমি তেমন পুলিশি তৎপরতা দেখিনি। জার্মানি এটা নিয়ে তেমন আতঙ্কিত, সেটাও আমার মনে হয়নি। তবে সিরীয় ও ইরাকি শরণার্থীরা একটা সমস্যা তৈরি করতে পারে ভবিষ্যতে। তুরস্কের ‘গাস্ট আরবাইটার’দের নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে! গেল সপ্তাহে কোলন শহরে ৪০ হাজার তুরস্কের নাগরিকের এক বিশাল মিছিল হয়েছে। মিছিলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের পক্ষে স্লোগান উঠেছে। তুরস্কের সাম্প্রতিক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর তুরস্ক সরকার কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ী করার পর জার্মানি-তুরস্ক সম্পর্কও এখন খারাপের দিকে। জার্মানিতে তুরস্কের একটি গোপন নথি ফাঁস হওয়া, জার্মান সংসদীয় প্রতিনিধিদের তুরস্ক সফরের সময় ন্যাটোর ঘাঁটি দেখতে না দেওয়া ইত্যাদি ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্ক এখন অবনতির দিকে।
জার্মানিতে জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখতে বিপুলসংখ্যক তুরস্কের নাগরিককে এখানে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তারা একটি নিজস্ব সাংস্কৃতিক বলয় তৈরি করেছে এখানে। তাদের দ্বিতীয় প্রজন্ম এখন শিক্ষিত। জার্মান নাগরিক তারা। একজন পার্লামেন্ট সদস্যও আছেন, যাঁর মা-বাবা তুরস্ক থেকে এসেছিলেন। জার্মানিতে প্রায় তিন হাজার মসজিদ আছে, যার মাঝে দুই হাজার মসজিদ পরিচালনা করে তুরস্কের নাগরিকরা। এখন তাদের সঙ্গে যোগ হলো সিরিয়া ও ইরাকের শরণার্থীরা। তাদের এখন পর্যন্ত কোনো কাজের অনুমতিপত্র দেওয়া হয়নি। তবে তুরস্কের ‘গাস্ট আরবাইটার’দের মতো তারাও যে একসময় এখানে ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠবে, তা বলাই যায়। তারাও আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে স্থায়ীভাবে থাকার অধিকারসহ নাগরিকত্ব পাবে। এক নতুন সংস্কৃতি গড়ে উঠছে জার্মানিতে। জার্মানির উদারতার সুযোগ নিয়ে এখানে যদি ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠী তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ইউরোপ বদলে যাচ্ছে। ইয়ান ব্রেনার ও তার ইউরো-এশিয়া গ্রুপ (একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান) আগামী দিনে ইউরোপের জন্য সম্ভাব্য ১০টি ঝুঁকির কথা বলেছে। এসব ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তুরস্কের উত্থান, রাশিয়ায় পুতিনের নেতৃত্বে একটি উগ্রপন্থী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উত্থান। উভয় ক্ষেত্রেই ইউরোপের জন্য তা এক ভয়ের কারণ। বিশ্বরাজনীতি আবার নতুন করে এক নয়া স্নায়ুযুদ্ধের উত্থান দেখছে, যা অভিহিত করা হয়েছে স্নায়ুযুদ্ধ-২ নামে। সর্বশেষ তুরস্ক-রাশিয়া-ইরান ঐক্য এই ধারণাকে আরো শক্তিশালী করেছে। আর এই ঐক্যের পেছনে সমর্থন রয়েছে চীনের। একদিকে ট্রান্স-আটলান্টিক ঐক্যে যেমন ফাটল ধরেছে, অন্যদিকে রাশিয়ার আগ্রাসী তৎপরতা আরো বেড়েছে। যা কিনা আগামী দিনে ইউরোপের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ইউরোপে আইএস রিক্রুটদের তৎপরতা আরো একটা চিন্তার কারণ। ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও ইংল্যান্ডে এদের সমর্থকের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে ইউরোপ নিয়ে একটা চিন্তা থেকেই গেল। ইউরোপজুড়ে উগ্র দক্ষিণপন্থীদের উত্থানও দেখছেন কেউ কেউ। বিপুলসংখ্যক সিরীয় ও ইরাকি নাগরিক, যাদের বেশির ভাগই মুসলমান, ইউরোপের মাটিতে তাদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে উগ্র, দক্ষিণপন্থী রাজনীতির উত্থান ঘটেছে। ফ্রান্সে ন্যাশনাল ফ্রন্ট স্থানীয় নির্বাচনে সফল হয়েছে। জার্মানিতে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি তার অবস্থান শক্তিশালী করেছে। পোল্যান্ডসহ পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশে ধর্মীয় আবরণে এই দক্ষিণপন্থী রাজনীতি শক্তিশালী হচ্ছে। স্পষ্টতই বদলে যাচ্ছে ইউরোপের রাজনীতি। এই রাজনীতি আগামী দিনে ইউরোপকে কোথায় নিয়ে যায় সেটাই হচ্ছে এখন আমাদের দেখার বিষয়। Daily Kaler kontho 25.08.2016

0 comments:

Post a Comment