ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার সরকারি ও বেসরকারি খাতের নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। তার বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে রাশিয়ায়। রাশিয়া তথা পূর্ব ইউরোপীয় সুন্দরীদের প্রতি তার মোহ ও ভালোবাসার প্রচুর প্রমাণ রয়েছে। তিনি সব সময়ই নারীসঙ্গ পছন্দ করেন। তার তিন স্ত্রীর মাঝে প্রথম স্ত্রী ছিলেন চেক মডেল ইভানা জেরলিসকোভা (বিয়ে ১৯৭৭), আর বর্তমান তৃতীয় স্ত্রী হচ্ছেন স্লোভেনিয়ার মডেল মেনালিয়া কাউস, যাকে তিনি বিয়ে করেন ২০০৫ সালে। ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়া তথা পূর্ব ইউরোপের গোয়েন্দা সংস্থার সম্পর্ক থাকা বিচিত্র কিছু নয়। এর আগে ট্রাম্প ‘ওবামার চেয়ে পুতিন ভালো নেতা’ এ বক্তব্য দিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন। এক্ষেত্রে ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক, কিংবা তথাকথিত রাশিয়ার হ্যাকারদের মাধ্যমে ডিএনসির ই-মেইল হ্যাক করার বিষয়টি এখানকার অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যার, তার নির্বাচনী প্রচারণার কার্যক্রম একটি বিদেশী রাষ্ট্র কর্তৃক ফাঁস হয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে গণ্য করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকেও বিপন্ন করে তুলতে পারে। যদিও ট্রাম্প ডিএনসির ই-মেইল ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু হিলারি নিজে অভিযোগ এনেছেন রাশিয়ার হ্যাকারদের বিরুদ্ধে।
জুলাই মাসের শেষে দুটি দলের জাতীয় কনভেনশন শেষ হয়েছে। ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশন, আর ফিলাডেলফিয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টির। কনভেনশনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আর হিলারি ক্লিনটনের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়। দুটি কনভেনশন ঘিরেই বিপুল উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। সিএনএন চার দিনব্যাপী কনভেনশন লাইভ কভার করেছে। কনভেনশনে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য দেখে আমার কাছে কতগুলো বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। এক. তুলনামূলকভাবে ডেমোক্রেটদের জাতীয় কনভেনশন ছিল যথেষ্ট আকর্ষণীয়। ওবামা ও বিল ক্লিনটনের মতো দু’জন প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি ডিএনসিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। কিন্তু রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশনে কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট উপস্থিতি ছিলেন না, যাদের কেউ কেউ এখনও জীবিত আছেন (যেমন বুশ)।
দুই. উভয় কনভেনশনেই আমি লক্ষ্য করেছি বক্তারা (যাদের কেউ কেউ সিনেটর, গভর্নর, মন্ত্রী) ক্লিনটন ও ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন বেশি। এমনকি মনিকা লিউনস্কির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের ‘যৌন সম্পর্কের’ বিষয়টিও পরোক্ষভাবে এসেছে। ট্রাম্প ‘অযোগ্য’ তার হাতে ‘পারমাণবিক অস্ত্রের চাবি তুলে দেয়া নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ’, কিংবা রাশিয়ার সঙ্গে ‘বিশেষ সম্পর্ক’ তৈরি করে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে বিপজ্জনক করে তুলতে পারেন- এ ধরনের বক্তব্য বারবার উচ্চারিত হয়েছে।
তিন. হিলারি ক্লিনটনের মনোনয়ন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে- এটা স্বীকার করতেই হবে। ১৭৭৬ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পর গত ২৪০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন পেলেন। ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি যদি বিজয়ী হন, তাহলে সেটা হবে আরেকটি ইতিহাস। চিন্তা করা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো সমাজে মহিলাদের ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়েছে মাত্র ৯৬ বছর আগে! হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনী প্রচারণায় এ কথাটিই বারবার বলেছেন। তিনি শিশু ও মায়েদের ব্যাপারে আরও কিছু করতে চান।
চার. দুটো কনভেনশনে দুই পরিবারের দুই ব্যক্তি এবং ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা বক্তৃতা করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের পাশাপাশি মেয়ে চেলসি ক্লিনটনও বক্তৃতা করেছেন। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী সাবেক মডেল মেলানিয়া ক্লাউস ট্রাম্পও বক্তৃতা করেছেন। এক্ষেত্রে মেলানিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, ২০০৮ সালে ওবামার স্ত্রী মিশেল ডিএনসি সম্মেলনে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, এটা তার কার্বন কপি। মার্কিন মিডিয়া আমাদের জানাচ্ছে, দু’জনের (মিশেল ২০০৮, মেলানিয়া ২০১৬) বক্তৃতায় ভাষাগত অদ্ভুত এক মিল রয়েছে। একই সঙ্গে চেলসি যতটুকু আবেগময়ী ভাষায় তার মাকে (হিলারি ক্লিনটন) তুলে ধরতে পেরেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা ততটা পারেননি। ইতিমধ্যে চেলসিকে নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তিনি কি হতে যাচ্ছেন বিল ও হিলারির যোগ্য উত্তরসূরি? হিলারির নির্বাচনী এলাকা নিউইয়র্ক। এখানে তিনি সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আগামী দিনে এ এলাকা থেকে কি আরেক পরিচয়ে হিলারি ক্লিনটনকে দেখতে পাবে নিউইয়র্কবাসী? বিল ক্লিনটনের ভাষণও অনেকে প্রশংসা করেছেন। ৪৫ বছর আগে আরাকানসাস লাইব্রেরিতে হিলারির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হওয়া, তিন-তিনবার হিলারিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া- কনভেনশনে বিলের এ বক্তব্যকে তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে সবাই স্বাগত জানায়। সমাপনী অনুষ্ঠানে হিলারি এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ৪৫ বছর আগে যে ‘যাত্রা’ শুরু হয়েছিল, তা অব্যাহত থাকবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত।
পাঁচ. ডেমোক্রেটদের কনভেনশনে যেখানে দলীয় নেতৃত্বের মাঝে ঐক্য ও সংহতি প্রকাশিত হয়েছে (বিশেষ করে বার্নি স্যান্ডার্সের সমর্থকদের নিয়ে শংকা ছিল), তা রিপাবলিকান শিবিরে দেখা যায়নি। মনোনয়নের শীর্ষ দাবিদার টেড ক্রুজ শেষ সময় পর্যন্ত ট্রাম্পকে সমর্থন দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। উপরন্তু ট্রাম্পের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, মেক্সিকান ও মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাবকে লিবারেল রিপাবলিকানদের অনেকে সমর্থন করেননি। এমনকি ডেমোক্রেটদের কনভেনশনে একজন মুসলমান আমেরিকান খিজির খানের (যার সন্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হুমায়ুন খান ২০০৪ সালে ইরাকে আমেরিকান সৈন্যদের রক্ষা করতে গিয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মারা যান) বক্তব্যে ট্রাম্প যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন, তাও অনেকে সমর্থন করেননি। আসলে ট্রাম্প একজন ধনী ব্যবসায়ী সন্দেহ নেই। পৃথিবীর অনেক দেশেই তার ব্যবসা আছে। অর্থ আর নারীসঙ্গ ছাড়া (সুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজনকারীদের একজন তিনি) অন্য কিছু তিনি বোঝেন না। তিনি কখনোই সেনাবাহিনীতে ছিলেন না। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে তার কোনো অবদান নেই। এমনকি তার বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকির অভিযোগও উঠেছে। তিনি নৈতিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার হারিয়েছেন। তরুণদের কাছে তিনি জনপ্রিয় নন আদৌ। শিশুরা তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে। তবে কট্টরপন্থীদের কাছে তিনি একজন যোগ্য নেতা। কট্টরপন্থীরা চাচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন, যিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ করে দেবেন। একজন নারী প্রেসিডেন্ট এই যোগ্যতা রাখেন না, এটাই তাদের অভিমত।
ছয়. কনভেনশনে হিলারি যেখানে সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন, বেতন বৃদ্ধি, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন, সেখানে ট্রাম্প গুরুত্ব দিয়েছেন অভিবাসন রোধ করা, চাকরির সংখ্যা বাড়ানো ইত্যাদির ওপর।
৮ নভেম্বর নির্বাচন। দুই প্রার্থীই চূড়ান্ত মনোনয়নের পর প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। হিলারি ক্লিনটনের বক্তব্য, তার অভিবাসীদের পক্ষে কথা বলা, মধ্যবিত্তকে আকৃষ্ট করা, স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলা, টিম কেইনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন দেয়া- সব মিলিয়ে তার অবস্থান এখন শক্তিশালী বলেই মনে হয়। অন্যদিকে ট্রাম্পের কোনো বক্তব্যই সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। তার রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘদিনের নয়। ওয়াশিংটন ডিসির রিপাবলিকান শিবিরেও তিনি খুব একটা পরিচিত ছিলেন না। ৭০ বছর বয়সী ট্রাম্প বিপুল অর্থবিত্তের (ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার) মালিক হলেও তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত রিপাবলিকান পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ২০০০ সালে তিনি একবার রিফর্ম পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। তিনি অতীতে কখনও কোনো ‘রাজনৈতিক পদ’ গ্রহণ করেননি। টিভি উপস্থাপকও ছিলেন (রিয়েলটি শো, এবিসি)।
অন্যদিকে হিলারি ক্লিনটনের রাজনৈতিক জীবন বেশ বর্ণাঢ্য। তরুণ আইনজীবী হয়ে তিনি রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। কর্পোরেট আইনজীবী না হয়ে তিনি শিশু অধিকার, মাতৃ অধিকার নিয়ে তার কর্মময় জীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে ফার্স্ট লেডি, নিউইয়র্কের সিনেটর এবং সর্বশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তুলনামূলক বিচারে রাজনীতি, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক, বৈদেশিক নীতির প্রশ্নে তার স্পষ্ট ধারণা রয়েছে। এবং তিনি অভিজ্ঞ। অন্যদিকে পররাষ্ট্র তথা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো ধারণাই নেই। ন্যাটো প্রশ্নে, আইএস প্রশ্নে, ব্রেক্সিট প্রশ্নে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে তার অজ্ঞতাই প্রমাণ করেছে। নাফটা ও টিপিপি চুক্তির ব্যাপারেও তার অবস্থান হিলারির বিপরীতে। তিনি মনে করেন, নাফটা ও টিপিপি চুক্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব বেড়েছে। অথচ হিলারি মনে করেন, এই দুটো চুক্তির কারণে মার্কিন স্বার্থ রক্ষিত হয়েছে বেশি। ট্রাম্প মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে চান। অন্যদিকে হিলারি মনে করেন, মেক্সিকানরা মার্কিন অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন আছে ট্রাম্পের। ডেমোক্রেটরা গত আট বছরে (ওবামা প্রশাসন) যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের হাতে তুলে দিয়েছে- এই অভিযোগ ট্রাম্পের। অন্যদিকে হিলারি মনে করেন, চীনের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্কই নয়া বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ার অন্যতম শর্ত। ওবামার শাসনামলে আইএসের জন্ম হয়েছে এবং এজন্য ডেমোক্রেটরাই দায়ী- ট্রাম্পের এ ধরনের অভিযোগ স্বীকার করেন হিলারি ক্লিনটন। হিলারি বলেছেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় ১২২টি দেশ সফর করেছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মাইল ভ্রমণ করেছেন শুধু যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে। অথচ ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্যই নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশ সফর করেছেন। তবে ট্রাম্পের একটা প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে, তিনি সোজাসাপ্টা কথা বলেন। আক্রমণ করে কথা বলেন, যা হিলারি করেন না কখনও। তিনি তার বক্তৃতায় ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন সত্য; কিন্তু তা অনেক মার্জিত ভাষায়। তাই একটি প্রাক গবেষণায় (সিন কোলারোসি কর্তৃক পরিচালিত) যখন হিলারি সর্বোচ্চ নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে বিজয়ী হবেন বলে মন্তব্য করা হয়- আমি তাতে অবাক হই না। ওই গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ৫৩৮টি নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে হিলারি পাবেন ৩৪৭ ভোট, আর ট্রাম্প পাবেন ১৯১ ভোট। নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হয় কংগ্রেস সদস্যদের নিয়ে। অর্থাৎ হাউস অব কংগ্রেসের ৪৩৫ আর সিনেটের ১০০ সিট নিয়ে ৫৩৮টি নির্বাচকমণ্ডলীর ভোট। ৫০টি রাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটও আলাদা আলাদা। যেমন ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বাচকমণ্ডলীর ভোট ৫৫, আর নিউইয়র্কের ২৯। জনগণ ভোট দেয় বটে, কিন্তু তারা প্রেসিডেন্টকে নির্বাচন করে না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে, যে রাজ্যে যে প্রার্থী বিজয়ী হবেন, তিনি নির্বাচকমণ্ডলীর প্রতিটি ভোট পেয়েছেন বলে ধরে নেয়া হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণা এখন তুঙ্গে। ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত বিমানে এক শহর থেকে আরেক শহরে যাচ্ছেন। ট্রাম্প ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ৫১ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছেন, যা হিলারি পারেননি। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন সংস্থা ও মিডিয়ার জনমত জরিপের সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। তাতে কোথাও ট্রাম্পকে, কোথাও হিলারিকে সম্ভাব্য বিজয়ী বলা হচ্ছে। তবে বলা যায়, দুটো বিষয় সাধারণ মানুষ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। এক. রাশিয়ার হ্যাকারদের দ্বারা হিলারি ক্লিনটন তথা ডিএনসির ই-মেইল হ্যাক্ড হওয়া এবং দুই. একজন মুসলমান সৈনিকের আত্মত্যাগের ঘটনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে দেখা। টিভি চ্যানেলগুলোতে এ আলোচনা এখন অব্যাহত রয়েছে। তাই নির্বাচনের ৯০ দিন আগে এটা স্পষ্ট করে বলা যাবে না কে হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।
ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র
Daily Jugantar
05.08.16
0 comments:
Post a Comment