কিউবা বিপ্লবের মহানায়ক ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুর পর বিশ্ব মিডিয়া যখন
কিউবার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে, তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা
বলেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায়
২৮ নভেম্বর ট্রাম্প বলেছেন, ‘কিউবা তার দেশের জনগণ, কিউবান-আমেরিকান নাগরিক
এবং সর্বোপরি গোটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরও একটি চুক্তি করতে আগ্রহী না
হলে আমি যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা চুক্তির সমাপ্তি টানব।’ ট্রাম্পের বক্তব্য
স্পষ্ট। তিনি চান, কিউবায় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির আরও পরিবর্তন। আরও উদার
মনোভাব। না হলে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে দুই দেশের মধ্যে যে ‘বরফ
গলেছিল’, তা তিনি আবার ‘ডিপ ফ্রিজে’ পাঠিয়ে দিতে পারেন। এতে দুই দেশের
সঙ্গে দীর্ঘদিনের যে তিক্ততা, তা থেকে যেতে পারে। এখানে বলা ভালো, ৫৪ বছরের
বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে ২১ জানুয়ারি (২০১৬) কিউবা ও যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয়
আলোচনা শুরু করেছিল। এরপর এক ঐতিহাসিক সফরে ওবামা গিয়েছিলেন কিউবার রাজধানী
হাভানায় ২০ মার্চ। সেটাও ছিল একটি ঐতিহাসিক সফর। ১৯২৮ সালে আমেরিকার ৩০তম
প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ (১৯২৩-২৯) এর পর ওবামা ছিলেন দ্বিতীয় মার্কিন
প্রেসিডেন্ট, যিনি কিউবা সফর করেছিলেন। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন কিউবার ওপর
মার্কিনি চাপ ও আগ্রাসন ছিল। কিন্তু কিউবা প্রতিটি ‘চাপ’ উপেক্ষা করতে
পেরেছিল। যদিও ওই সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবার পাশে ছিল সবসময়। ইতিহাস
বলে, কুলিজের কিউবা সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্র ১৮৯৮-১৯০২ সালে একবার এবং
১৯১৭-১৯২২ সালে দ্বিতীয়বার কিউবায় সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছিল। সিরিয়াস
পাঠকরা এটাও স্মরণ করতে পারেন, ১৯৬১ সালে হাভানায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস
থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়েছিল। আর সে পতাকা আবার সেখানে
উঠেছিল ২০১৫ সালের আগস্টে। এর আগে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে হাভানায় দুই দেশের
মাঝে আলোচনা শুরু হয়েছিল। যদিও এটা সত্য, ওবামার হাভানা সফরের পরও দুই
দেশের মাঝে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উন্নতির প্রশ্নে কিছু কিছু জটিলতা থেকে
গিয়েছিল। ওবামার তিন দিনব্যাপী হাভানা সফরের শেষের দিন ওবামা-রাউল
কাস্ত্রোর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ওই ‘বিভক্তি’ ও ‘জটিলতা’ প্রতিফলিত হয়েছিল।
কোনো পক্ষই সেই ‘জটিলতা’ দূর করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ওবামার সেই সময়ও ছিল
না। তিনি এখন ট্রাম্পের কাছে জানুয়ারিতে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।
প্রেসিডেন্ট ওবামা সম্পর্কোন্নয়নের ও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বললেও, এটি করা তার জন্য খুব সহজ ছিল না। কেননা, ওবামাকে এ সংক্রান্ত একটি আইন পাস করাতে হতো। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে কংগ্রেসে তার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কংগ্রেসের উভয় কক্ষ তখন নিয়ন্ত্রণ করত রিপাবলিকানরা। রিপাবলিকানরা ওবামার উদ্যোগের ব্যাপারে খুশি ছিলেন না। আমি একাধিক কংগ্রেস সদস্য তথা সিনেটরের বক্তব্য দেখেছি, যেখানে তারা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওবামার ওই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। সিনেটর জন মেককেইন ও সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ওই সিদ্ধান্ত বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে সংকুচিত করবে। অন্যদিক সিনেটর রয় ব্লান্ট মনে করেন, এ ঘোষণা রাউল কাস্ত্রোকে ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করবে। ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর রবার্ট মেনডেজ মনে করেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার ওই সিদ্ধান্ত হচ্ছে কিউবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও স্বৈরশাসনকে স্বীকার করে নেয়ার শামিল। সিনেটর মেনডেজ নিজে কিউবান-আমেরিকান। এতে যা হওয়ার তাই হয়েছিলÑ কিউবার ওপর থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কোনো আইনকে কংগ্রেস অনুমোদন দেয়নি। ফলে ওবামার ঘোষণা ও উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত ‘একটি ঘোষণা’ হিসেবেই থেকে গিয়েছিল কাগজে কলমে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্র্রণেতাদের দাবি, কিউবায় আরও বেশি প্রয়োজন গণতন্ত্রায়ন, আরও বেশি অর্থনৈতিক উদারীকরণ, মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নতি, একই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কার। এটাই হচ্ছে মোদ্দা কথা। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে কিউবা সবকিছু ‘উন্মুক্ত’ করে দেবে না। সোভিয়েত ইউনিয়নে গরবাচেভের সংস্কার কর্মসূচির ফল তাদের অজানা নয়। সংস্কার, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে গিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গিয়েছিল। চীন ও ভিয়েতনামে অর্থনৈতিক সংস্কার এসেছে; কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কার সেখানে আসেনি। অর্থাৎ সোভিয়েত ইউনিয়নের সংস্কার কর্মসূচির ‘পেরেস্ত্রোইকা’ বাস্তবায়ন করছে ভিয়েতনাম (‘দই মই’)। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে টিপিপি (মুক্ত বাণিজ্য) চুক্তি করেছে। চীনের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামকে ব্যবহার করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। আজ যুক্তরাষ্ট্র যখন কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চাইছে, তখন এ প্রশ্নটিও উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সৎ কিনা? লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ‘কর্তৃত্ব’ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বেশ কয়েকজন ভেনিজুয়েলার ভিআইপির ব্যাপারে। সম্পদ আটক থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ভেনিজুয়েলার মারাত্মক মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির। এটা সত্য, হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর ভেনিজুয়েলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। কিন্তু এর চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে কলম্বিয়ায় কিংবা মেক্সিকোতে, যেখানে ২০১৪ সালে ৪৩ স্কুলশিক্ষার্থীকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। ভেনিজুয়েলার বিষয়টি যে পরিপূর্ণ রাজনৈতিক, তা আর কাউকে বলে দিতে হয় না। এখন খুব সংগত কারণেই ভেনিজুয়েলার ওপর মার্কিনি ‘চাপ’ যদি বাড়ে, তাহলে কিউবাকে দেয়া তাদের আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে তা কিউবার অর্থনীতিকে আঘাত করবে।
কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করে খোদ যুক্তরাষ্ট্রও উপকৃত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য খাত মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী তৈরি করতে পারছে না। স্বাস্থ্য কর্মীদের একটা বড় অংশ আসছে বাইরে থেকে। এক্ষেত্রে কিউবার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা জগদ্বিখ্যাত। তারা যুক্তরাষ্ট্রের এ চাহিদা পূরণ করতে পারে। ২০০২ সালে ফিদেল কাস্ত্রো এ ধরনের একটি প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা গ্রহণ করেনি। ২০১৪ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় মারাত্মক ইবোলা রোগ ছড়িয়ে পড়ায় কিউবার স্বাস্থ্য কর্মীরা সেখানে গিয়েছিলেন। এখন কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি হলে যুক্তরাষ্ট্র স্বাস্থ্য খাতে উপকৃত হতে পারে।
তবে মূল সমস্যাটিই হচ্ছে মানসিকতার। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের মানসিকতায় কী পরিবর্তন আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট হাভানায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে মার্কিন পতাকা উত্তোলনকালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব জন কেরি বলেছিলেন, কিউবা এখন আর শত্রু নয়, বন্ধু। বাস্তব ক্ষেত্রে এই ‘বন্ধুত্ব’ কতটুকু প্রতিফলিত হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ওবামার কিছু কিছু বক্তব্যও এখানে উল্লেখ করা যায়। তিনি কি মনে করেন রাউল কাস্ত্রোর নেতৃত্বাধীন কিউবায় পরিবর্তন এসেছে? এর অর্থ কী? কিউবা কি আসলেই সব ‘উন্মুক্ত’ করে দিয়েছে? আমার তা মনে হয় না। অর্থনীতিতে কেন্দ্রীয় ‘কমান্ড’ এখনও বজায় রয়েছে। এখানে ভিয়েতনামের ‘দই মই’ স্টাইলে কিছু কিছু পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, এটা সত্য। বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে বিনিয়োগ উন্মুক্ত নয়।
সংগত কারণেই প্রশ্নÑ এখন কিউবা চীন বা ভিয়েতনামের পথ অনুসরণ করবে কিনা? কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় ছিল কিউবার নিরাপত্তাহীনতা। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই কিউবায় একটি সমাজতান্ত্রিক সরকারকে স্বীকার করে নেয়নি। বরং কিউবায় বিপ্লবের পর (১৯৫৯), কিউবা সরকার যখন লাতিন আমেরিকাজুড়ে বিপ্লব ছড়িয়ে দিতে চাইল, চে গুয়েভারা যখন ‘বিপ্লব’ সম্পন্ন করার জন্য কিউবা সরকারের মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে বলিভিয়ায় গেলেন (সেখানেই তাকে পরে হত্যা করা হয়), তখন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের কাছে ভিন্ন একটি বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চায়নি ‘তার প্রভাবাধীন এলাকায়’ অন্য কোনো ‘শক্তি’ প্রভাব খাটাক। ‘মনরো ডকট্রিন’ এর আদলে যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছে এ এলাকায় তথা লাতিন আমেরিকায় তার পূর্ণ কর্তৃত্ব। কিন্তু কিউবার বিপ্লব যুক্তরাষ্ট্রের এ ‘হিসাব-নিকাশে’ বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্র কিউবা বিপ্লবের ২ বছরের মাঝে ১৯৬১ সালে ভাড়াটে কিউবানদের দিয়ে কিউবা সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চালায়। সিআই’র অর্থে পরিচালিত এ অভিযান ‘বে অব পিগস’ এর অভিযান হিসেবে খ্যাত। বলাই বাহুল্য, ওই অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেমে থাকেনি। ঠিক এর পরের বছর ১৯৬২ সালের অক্টোবরে ‘কিউবা সংকট’ একটি পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছিল। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল, কিউবায় সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে, যা তার নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছে, এটা বিচেনায় নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র একটি নৌ অবরোধ আরোপ করে, যাতে করে কিউবায় কোনো ধরনের সামরিক মারণাস্ত্র সরবরাহ করা না যায়। এই নৌ অবরোধ অনেকটা সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রকে একটি যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন এখন দাবি করে, যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্ক থেকে তাদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাহার করে নিতে হবে। ১৩ দিন এ নৌ অবরোধ বহাল ছিল। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক থেকে মিসাইল প্রত্যাহার করে নিলে সোভিয়েত ইউনিয়নও কিউবা থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সরিয়ে নেয়। এর মধ্য দিয়ে পামাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা কমে গেলেও সংকট থেকে গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কিউবার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। ৫৪ বছর ধরে এ অর্থনৈতিক অবরোধের বিরুদ্ধে কিউবা ‘যুদ্ধ’ করে আসছে।
তবে দুই দেশের মাঝে এখনও বেশকিছু বিষয়ে ন্যূনতম ঐকমত্যের অভাব রয়েছে। ওবামার হাভানা সফরের সময়ও তা লক্ষ করা গেছে। মানবাধিকার ইস্যু, কিংবা গুয়ানতানামো বে’তে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার, কিউবায় রাজনৈতিক বন্দি ইত্যাদি ইস্যুতে দুই রাষ্ট্রপ্রধান হাভানায় সংবাদ সম্মেলনে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এসব ইস্যুতে দুইটি দেশের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা আলাদা। সংবাদ সম্মেলনে রাউল কাস্ত্রো জানিয়েছিলেন, তার দেশে কোনো রাজনৈতিক বন্দি নেই। গুয়ানতানামো বে কিউবার কাছে হস্তান্তরিত করারও কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি ওবামা। তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের। কিউবার মানবাধিকারের অবনতি হয়েছে এটাও স্বীকার করেননি কাস্ত্রো। স্পষ্টতই এসব ইস্যুতে দুইটি দেশের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। যুক্তরাষ্ট্র যাদের ‘রাজনৈতিক বন্দি’ হিসেবে গণ্য করছে, কিউবা তা করছে না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে দেখে, কিউবা সেভাবে দেখে না। ফলে মতপার্থক্য রয়েই গেছে।
তাই খুব সংগত কারণেই যে প্রশ্নটি উঠেছে তা হচ্ছে, হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন কট্টরপন্থী নেতার দায়িত্ব গ্রহণ এখন এ দুই দেশের মাঝে সম্পর্ককে কোথায় নিয়ে যাবে? কাস্ত্রোর মৃত্যুর পর মিয়ামিতে কিউবান-আমেরিকানরা আনন্দ-উৎসব করেছে। এরাই বিগত নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিল। এখন এরাই যে কিউবার ওপর ‘চাপ’ প্রয়োগে ট্রাম্পকে বাধ্য করবে, এটা সহজেই অনুমেয়। ট্রাম্প তাই করবেন বলেই আমার ধারণা। তাই কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ‘বরফ’ আরও গলবে, এটা আশা করা যায় না। তবে এটাও সত্য, ট্রাম্প যদি কিউবার ব্যাপারে ‘শক্ত’ একটি অবস্থান গ্রহণ করেন, তাহলে তা আগামীতে এ অঞ্চলের জন্য কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না।
Daily Alokito Bangladesh
04.12.2016
প্রেসিডেন্ট ওবামা সম্পর্কোন্নয়নের ও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বললেও, এটি করা তার জন্য খুব সহজ ছিল না। কেননা, ওবামাকে এ সংক্রান্ত একটি আইন পাস করাতে হতো। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে কংগ্রেসে তার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কংগ্রেসের উভয় কক্ষ তখন নিয়ন্ত্রণ করত রিপাবলিকানরা। রিপাবলিকানরা ওবামার উদ্যোগের ব্যাপারে খুশি ছিলেন না। আমি একাধিক কংগ্রেস সদস্য তথা সিনেটরের বক্তব্য দেখেছি, যেখানে তারা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওবামার ওই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। সিনেটর জন মেককেইন ও সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ওই সিদ্ধান্ত বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে সংকুচিত করবে। অন্যদিক সিনেটর রয় ব্লান্ট মনে করেন, এ ঘোষণা রাউল কাস্ত্রোকে ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করবে। ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর রবার্ট মেনডেজ মনে করেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার ওই সিদ্ধান্ত হচ্ছে কিউবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও স্বৈরশাসনকে স্বীকার করে নেয়ার শামিল। সিনেটর মেনডেজ নিজে কিউবান-আমেরিকান। এতে যা হওয়ার তাই হয়েছিলÑ কিউবার ওপর থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কোনো আইনকে কংগ্রেস অনুমোদন দেয়নি। ফলে ওবামার ঘোষণা ও উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত ‘একটি ঘোষণা’ হিসেবেই থেকে গিয়েছিল কাগজে কলমে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্র্রণেতাদের দাবি, কিউবায় আরও বেশি প্রয়োজন গণতন্ত্রায়ন, আরও বেশি অর্থনৈতিক উদারীকরণ, মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নতি, একই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কার। এটাই হচ্ছে মোদ্দা কথা। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে কিউবা সবকিছু ‘উন্মুক্ত’ করে দেবে না। সোভিয়েত ইউনিয়নে গরবাচেভের সংস্কার কর্মসূচির ফল তাদের অজানা নয়। সংস্কার, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে গিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গিয়েছিল। চীন ও ভিয়েতনামে অর্থনৈতিক সংস্কার এসেছে; কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কার সেখানে আসেনি। অর্থাৎ সোভিয়েত ইউনিয়নের সংস্কার কর্মসূচির ‘পেরেস্ত্রোইকা’ বাস্তবায়ন করছে ভিয়েতনাম (‘দই মই’)। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে টিপিপি (মুক্ত বাণিজ্য) চুক্তি করেছে। চীনের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামকে ব্যবহার করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। আজ যুক্তরাষ্ট্র যখন কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চাইছে, তখন এ প্রশ্নটিও উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সৎ কিনা? লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ‘কর্তৃত্ব’ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বেশ কয়েকজন ভেনিজুয়েলার ভিআইপির ব্যাপারে। সম্পদ আটক থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ভেনিজুয়েলার মারাত্মক মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির। এটা সত্য, হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর ভেনিজুয়েলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। কিন্তু এর চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে কলম্বিয়ায় কিংবা মেক্সিকোতে, যেখানে ২০১৪ সালে ৪৩ স্কুলশিক্ষার্থীকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। ভেনিজুয়েলার বিষয়টি যে পরিপূর্ণ রাজনৈতিক, তা আর কাউকে বলে দিতে হয় না। এখন খুব সংগত কারণেই ভেনিজুয়েলার ওপর মার্কিনি ‘চাপ’ যদি বাড়ে, তাহলে কিউবাকে দেয়া তাদের আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে তা কিউবার অর্থনীতিকে আঘাত করবে।
কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করে খোদ যুক্তরাষ্ট্রও উপকৃত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য খাত মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী তৈরি করতে পারছে না। স্বাস্থ্য কর্মীদের একটা বড় অংশ আসছে বাইরে থেকে। এক্ষেত্রে কিউবার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা জগদ্বিখ্যাত। তারা যুক্তরাষ্ট্রের এ চাহিদা পূরণ করতে পারে। ২০০২ সালে ফিদেল কাস্ত্রো এ ধরনের একটি প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা গ্রহণ করেনি। ২০১৪ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় মারাত্মক ইবোলা রোগ ছড়িয়ে পড়ায় কিউবার স্বাস্থ্য কর্মীরা সেখানে গিয়েছিলেন। এখন কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতি হলে যুক্তরাষ্ট্র স্বাস্থ্য খাতে উপকৃত হতে পারে।
তবে মূল সমস্যাটিই হচ্ছে মানসিকতার। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের মানসিকতায় কী পরিবর্তন আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট হাভানায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে মার্কিন পতাকা উত্তোলনকালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব জন কেরি বলেছিলেন, কিউবা এখন আর শত্রু নয়, বন্ধু। বাস্তব ক্ষেত্রে এই ‘বন্ধুত্ব’ কতটুকু প্রতিফলিত হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ওবামার কিছু কিছু বক্তব্যও এখানে উল্লেখ করা যায়। তিনি কি মনে করেন রাউল কাস্ত্রোর নেতৃত্বাধীন কিউবায় পরিবর্তন এসেছে? এর অর্থ কী? কিউবা কি আসলেই সব ‘উন্মুক্ত’ করে দিয়েছে? আমার তা মনে হয় না। অর্থনীতিতে কেন্দ্রীয় ‘কমান্ড’ এখনও বজায় রয়েছে। এখানে ভিয়েতনামের ‘দই মই’ স্টাইলে কিছু কিছু পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, এটা সত্য। বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে বিনিয়োগ উন্মুক্ত নয়।
সংগত কারণেই প্রশ্নÑ এখন কিউবা চীন বা ভিয়েতনামের পথ অনুসরণ করবে কিনা? কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় ছিল কিউবার নিরাপত্তাহীনতা। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই কিউবায় একটি সমাজতান্ত্রিক সরকারকে স্বীকার করে নেয়নি। বরং কিউবায় বিপ্লবের পর (১৯৫৯), কিউবা সরকার যখন লাতিন আমেরিকাজুড়ে বিপ্লব ছড়িয়ে দিতে চাইল, চে গুয়েভারা যখন ‘বিপ্লব’ সম্পন্ন করার জন্য কিউবা সরকারের মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে বলিভিয়ায় গেলেন (সেখানেই তাকে পরে হত্যা করা হয়), তখন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের কাছে ভিন্ন একটি বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চায়নি ‘তার প্রভাবাধীন এলাকায়’ অন্য কোনো ‘শক্তি’ প্রভাব খাটাক। ‘মনরো ডকট্রিন’ এর আদলে যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছে এ এলাকায় তথা লাতিন আমেরিকায় তার পূর্ণ কর্তৃত্ব। কিন্তু কিউবার বিপ্লব যুক্তরাষ্ট্রের এ ‘হিসাব-নিকাশে’ বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্র কিউবা বিপ্লবের ২ বছরের মাঝে ১৯৬১ সালে ভাড়াটে কিউবানদের দিয়ে কিউবা সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চালায়। সিআই’র অর্থে পরিচালিত এ অভিযান ‘বে অব পিগস’ এর অভিযান হিসেবে খ্যাত। বলাই বাহুল্য, ওই অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেমে থাকেনি। ঠিক এর পরের বছর ১৯৬২ সালের অক্টোবরে ‘কিউবা সংকট’ একটি পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছিল। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল, কিউবায় সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে, যা তার নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছে, এটা বিচেনায় নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র একটি নৌ অবরোধ আরোপ করে, যাতে করে কিউবায় কোনো ধরনের সামরিক মারণাস্ত্র সরবরাহ করা না যায়। এই নৌ অবরোধ অনেকটা সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রকে একটি যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন এখন দাবি করে, যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্ক থেকে তাদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাহার করে নিতে হবে। ১৩ দিন এ নৌ অবরোধ বহাল ছিল। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক থেকে মিসাইল প্রত্যাহার করে নিলে সোভিয়েত ইউনিয়নও কিউবা থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সরিয়ে নেয়। এর মধ্য দিয়ে পামাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা কমে গেলেও সংকট থেকে গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কিউবার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। ৫৪ বছর ধরে এ অর্থনৈতিক অবরোধের বিরুদ্ধে কিউবা ‘যুদ্ধ’ করে আসছে।
তবে দুই দেশের মাঝে এখনও বেশকিছু বিষয়ে ন্যূনতম ঐকমত্যের অভাব রয়েছে। ওবামার হাভানা সফরের সময়ও তা লক্ষ করা গেছে। মানবাধিকার ইস্যু, কিংবা গুয়ানতানামো বে’তে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার, কিউবায় রাজনৈতিক বন্দি ইত্যাদি ইস্যুতে দুই রাষ্ট্রপ্রধান হাভানায় সংবাদ সম্মেলনে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এসব ইস্যুতে দুইটি দেশের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা আলাদা। সংবাদ সম্মেলনে রাউল কাস্ত্রো জানিয়েছিলেন, তার দেশে কোনো রাজনৈতিক বন্দি নেই। গুয়ানতানামো বে কিউবার কাছে হস্তান্তরিত করারও কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি ওবামা। তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের। কিউবার মানবাধিকারের অবনতি হয়েছে এটাও স্বীকার করেননি কাস্ত্রো। স্পষ্টতই এসব ইস্যুতে দুইটি দেশের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। যুক্তরাষ্ট্র যাদের ‘রাজনৈতিক বন্দি’ হিসেবে গণ্য করছে, কিউবা তা করছে না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে দেখে, কিউবা সেভাবে দেখে না। ফলে মতপার্থক্য রয়েই গেছে।
তাই খুব সংগত কারণেই যে প্রশ্নটি উঠেছে তা হচ্ছে, হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন কট্টরপন্থী নেতার দায়িত্ব গ্রহণ এখন এ দুই দেশের মাঝে সম্পর্ককে কোথায় নিয়ে যাবে? কাস্ত্রোর মৃত্যুর পর মিয়ামিতে কিউবান-আমেরিকানরা আনন্দ-উৎসব করেছে। এরাই বিগত নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিল। এখন এরাই যে কিউবার ওপর ‘চাপ’ প্রয়োগে ট্রাম্পকে বাধ্য করবে, এটা সহজেই অনুমেয়। ট্রাম্প তাই করবেন বলেই আমার ধারণা। তাই কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ‘বরফ’ আরও গলবে, এটা আশা করা যায় না। তবে এটাও সত্য, ট্রাম্প যদি কিউবার ব্যাপারে ‘শক্ত’ একটি অবস্থান গ্রহণ করেন, তাহলে তা আগামীতে এ অঞ্চলের জন্য কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না।
Daily Alokito Bangladesh
04.12.2016
0 comments:
Post a Comment