রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

তিস্তার জট খুলবে কি?



পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন গত ৭ ডিসেম্বর। তিনি বলেছেন, ভারতের দু’জন প্রধানমন্ত্রী (মনমোহন সিং ও নরেন্দ্র মোদি) তাদের ঢাকা সফরের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন, তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে একটা সমাধান হবে। তিনি আশাবাদী, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় তিস্তা চুক্তির জট খুলবে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা ছিল। কিন্তু এ সফর স্থগিত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যস্ততার কারণে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি নির্ধারণে সমস্যা, অনেক জটিল ইস্যুর প্রস্তুতি শেষ না হওয়া এবং তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে অগ্রগতি না হওয়াই সফর স্থগিতের কারণ (যুগান্তর, ১০.১২.১৬)। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরটি ফেব্রুয়ারিতে পিছিয়ে দিতে ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে। সম্ভাব্য নতুন সময়সূচি বের করার বিষয়ে ভারত কাজ করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সেই সফরে তিস্তা চুক্তিটি আদৌ স্বাক্ষরিত হবে কিনা?

আমরা মোটামুটিভাবে এতদিনে জেনে গেছি, তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে সমস্যাটা কোথায়। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের (যাদের সঙ্গে আমাদের চুক্তি করার কথা) এই চুক্তির ব্যাপারে ‘আগ্রহ’ থাকলেও সমস্যা তৈরি করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিস্তার পানিবণ্টন তার জন্য ছিল একটি ‘রাজনৈতিক ইস্যু’। দু’দুবার তিনি ঢাকা এসেছেন এবং বলে গেছেন তার ওপর আস্থা রাখার জন্য। বাংলাদেশের মানুষ তার ওপর আস্থা রেখেছে। কিন্তু তিনি ‘প্রতিদান’ দেননি। তিস্তার পানিবণ্টনের ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করে কোনো কথা বলেননি। পশ্চিমবঙ্গের বিধান সভার নির্বাচনে (এপ্রিল-মে ২০১৬) মমতা ব্যানার্জি পুনরায় বিজয়ী হয়ে আবারও রাজ্য সরকার গঠন করেছেন। এর আগে ২০১১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গে বামদের ‘একনায়কতন্ত্র’ খতম করেছিলেন। বামদের ক্ষমতা থেকে নামানো অত সহজ ছিল না। তিনি তা পেরেছিলেন। তখন থেকেই তিস্তা চুক্তি নিয়ে তার বিতর্কিত মন্তব্য আমাদের মাঝে শংকার জন্ম দিয়েছিল। আমাদের জন্য আরও খারাপ খবর ছিল, তিস্তায় পানিপ্রবাহ কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের লালমনিরহাটের ডালিয়া পয়েন্টে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পানির প্রবাহ কমে এসে দাঁড়িয়েছিল মাত্র ৫০০ কিউসেকে। অথচ নদী রক্ষার জন্য প্রয়োজন হয় ১ হাজার কিউসেক। এখন ফেব্রুয়ারি আসতে বাকি মাত্র দু’মাস। হয়তো এবারও পানির গড় প্রবাহ ৫০০ কিউসেকের নিচে নেমে যাবে। যৌথ নদী কমিশন পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা ব্যারাজ নির্মাণ শুরুর আগে ১৯৭৩-৮৫ সালের সময়সীমাকে ঐতিহাসিক গড় প্রবাহ হিসেবে ধরে। ওই সময় ফেব্রুয়ারির প্রথম ১০ দিনে পানির গড় প্রবাহ ছিল ৫ হাজার ৯৮৬ কিউসেক।

শুধু নদী বাঁচানোই নয়, সেচ প্রকল্পের জন্যও আমাদের দরকার ন্যূনতম ৩ হাজার কিউসেক পানি। সুতরাং তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে এটি সরাসরি সম্পৃক্ত। আমাদের নীতিনির্ধারকরা যদি বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখেন, তাহলে এ দেশ, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ একটি বড় ধরনের সংকটে পড়বে। খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে থাকবে। এমনকি এতে করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও বাড়বে। মনে রাখতে হবে, তিস্তায় পানিপ্রাপ্তি আমাদের ন্যায্য অধিকার। আন্তর্জাতিক আইন আমাদের পক্ষে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব আমাদের অধিকার নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে মমতা ব্যানার্জির আপত্তি বা সমর্থন থাকা না-থাকার বিষয়টি আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা এটা বিবেচনায় নিতে চাই না। আমাদের অধিকার, যা আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত, তা নিশ্চিত করবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এখানে বলা ভালো, সিকিম হয়ে ভারতের দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ারের সমভূমি দিয়ে চিলাহাটি থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার উত্তর খড়িবাড়ির কাছে ডিমলা উপজেলার ছাতনাই দিয়ে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। ছাতনাই থেকে এ নদী নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতিবান্দা, কালীগঞ্জ, রংপুরের কাউনিয়া, পীরগাছা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর হয়ে চিলমারীতে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছে। ডিমলা থেকে চিলমারী এ নদীর বাংলাদেশ অংশের মোট ক্যাচমেন্ট এরিয়া প্রায় ১ হাজার ৭১৯ বর্গকিলোমিটার।

১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশন গঠনের পর তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে দু’দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টনে ৩৬ ভাগ বাংলাদেশ ও ৩৯ ভাগ ভারত এবং ২৫ ভাগ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি। পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালের ২৫, ২৬, ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ তিস্তার পানির ৮০ ভাগ দু’দেশের মধ্যে বণ্টন করে বাকি ২০ ভাগ নদীর জন্য রেখে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। ভারত সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এরপর যুক্ত হয়েছিল মমতার আপত্তি। বাংলাদেশের কোনো প্রস্তাবের ব্যাপারেই অতীতে মমতার সম্মতি পাওয়া যায়নি। এখানে আরও একটা বিষয় বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন। তিস্তার পানিবণ্টনে সিকিমকে জড়িত করার প্রয়োজনীয়তা পড়েছে। কেননা সিকিম নিজে উজানে পানি প্রত্যাহার করে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। ফলে তিস্তায় পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে দিন দিন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গে কৃষকদের কাছে তিস্তার পানির চাহিদা বেশি। সেচ কাজের জন্য তাদের প্রচুর পানি দরকার। এটা বরাবরই মমতার জন্য একটি ‘রাজনৈতিক ইস্যু’। তাই মমতা তিস্তা চুক্তি করে বাংলাদেশের পানিপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবেন- এটা আমার কখনোই বিশ্বাস হয়নি। সুতরাং মমতায় আস্থা রাখা যায় না। এ ক্ষেত্রে আমাদের যা করণীয় তা হচ্ছে, তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভারতের ওপর ‘চাপ’ অব্যাহত রাখা। আমরা ভারতের অনেক ‘দাবি’ পূরণ করেছি। মোদির আমলে সীমানা চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর দু’দেশের সীমানা এখন চিহ্নিত। দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এখন প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও মমতা যদি তার ওপর রাখা আস্থার প্রতিদান না দেন, তাহলে তা যে দু’দেশের সম্পর্কের মাঝে একটা অবিশ্বাসের জন্ম দেবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

মমতাকে আস্থায় নেয়া কঠিন। ঢাকা সফরে আসার আগে আত্রাই প্রসঙ্গটি তুলে তিনি একটি ‘জট’ লাগিয়েছিলেন। তিনি আত্রাইয়ের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি এক করে দেখেছেন। অথচ এটি একটি ভিন্ন বিষয়। আত্রাই নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু তিস্তার পানিপ্রাপ্তি আমাদের অগ্রাধিকার। এর সঙ্গে অন্য কোনো ইস্যুকে তুলনা করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টিকে সামনে রেখে ভারতের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমাও নির্ধারিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক আসরে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হয়নি। কাজেই প্রয়োজন হলে তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক আসরে তুলে ধরতে হবে। দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা তিস্তার পানির ওপর নির্ভরশীল। মমতা ব্যানার্জির দয়া-দাক্ষিণ্যের ওপর বিষয়টি নির্ভর করে না। ভাটির দেশ হিসেবে তিস্তার পানির ন্যায্য অধিকার আমাদের রয়েছে। মমতা ব্যানার্জি এককভাবে পানি প্রত্যাহার করে নিতে পারেন না। যদি তিনি তা করেন, তাহলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। সে ক্ষেত্রে মমতা নয়, বরং ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর আমাদের চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। তবে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, মমতা বারবার রং বদলেছেন। একবার বলেছিলেন তিনি ‘কাঠবিড়ালি’ হবেন। আর এবার বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেবেন। স্পষ্টতই এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে তিনি অন্যদিকে দৃষ্টি সরাতে চান।

তিস্তা একটি আন্তর্জাতিক নদী। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ এককভাবে পানি প্রত্যাহার করতে পারে না। আন্তর্জাতিক নদীর পানি ব্যবহারসংক্রান্ত ১৯৬৬ সালের আন্তর্জাতিক আইন সমিতির হেলসিংকি নীতিমালার ৪ ও ৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রতিটি অববাহিকাভুক্ত রাষ্ট্র অভিন্ন নদীসমূহ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই অন্য রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রয়োজনকে বিবেচনায় নেবে। পশ্চিমবঙ্গের পানি ব্যবহারে বাংলাদেশের ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রয়োজন’কে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। হেলসিংকি নীতিমালার ১৫নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রতিটি তীরবর্তী রাষ্ট্র তার সীমানায় আন্তর্জাতিক পানিসম্পদের ব্যবহারের অধিকার ভোগ করবে যুক্তি ও ন্যায়ের ভিত্তিতে। কিন্তু এই ‘যুক্তি ও ন্যায়ের’ ভিত্তিটি উপেক্ষিত থাকে যখন পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ১৯৯২ সালের ডাবলিন নীতিমালার ২নং নীতিতে বলা হয়েছে, পানি উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা অবশ্যই সবার অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। তিস্তার পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটা হয়নি। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ‘জলপ্রবাহ কনভেনশন’ নামে একটি নীতিমালা গ্রহণ করে। এই নীতিমালার ৬নং অনুচ্ছেদে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘যুক্তি ও ন্যায়পরায়ণতার’ কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এককভাবে তিস্তার পানি ব্যবহার এই ‘যুক্তি ও ন্যায়পরায়ণতা’র ধারণাকে সমর্থন করে না। আমরা আরও আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যা দিতে পারব, যেখানে বাংলাদেশকে অধিকারবঞ্চিত করা হচ্ছে। বিশেষ করে পরিবেশসংক্রান্ত জীববৈচিত্র্য কনভেনশনের ১৪নং অনুচ্ছেদ, জলাভূমিবিষয়ক রামসার কনভেনশনের ৫নং অনুচ্ছেদ- প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবেশের প্রভাব এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীসমূহের সংরক্ষণের যে কথা বলা হয়েছে, যা রক্ষিত হচ্ছে না। এখানে সমস্যাটা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের। ভারতের ফেডারেল কাঠামোয় রাজ্য কিছু সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। কিন্তু কোনো রাজ্য (এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ) এমন কিছু করতে পারে না, যা আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ এবং আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে। সমস্যাটা ভারতের। পশ্চিমবঙ্গকে আশ্বস্ত করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। আমরা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীই আমাদের পানির হিস্যা নিশ্চিত করতে চাই।

আমরা চাই তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার স্থায়ী সমাধান। এ ক্ষেত্রে প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে, মোদি সরকার একটি চুক্তিতে যেতে চায়। ইতিমধ্যে স্থলসীমানা চুক্তিতে সম্মতি দিয়ে মমতা ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন। এমনটি তিস্তার ব্যাপারেও তিনি পারেন। এটা কঠিন নয়। তিনি যদি সত্যিই আন্তরিক হন, তাহলে কল্যাণ রুদ্র কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারেন। তিনি নিজে এই কমিশন গঠন করেছিলেন। কলকাতার পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রুদ্র কমিশন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দেয়া রিপোর্টে বলেছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি না করেও বাংলাদেশকে ৫০ ভাগ পানি দেয়া সম্ভব। তার এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন আরেকজন পানি বিশেষজ্ঞ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক প্রণব কুমার রায়। অধ্যাপক রায়ের অভিমত হচ্ছে, তিস্তায় পানি নেই কথাটা ঠিক নয়। পানি মজুদ রেখে (বর্ষা মৌসুমে) এবং ম্যানেজমেন্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ সমস্যার সমাধান করা যায়।

আসলে যা প্রয়োজন তা হচ্ছে মানসিকতা। মমতা নিজে বাঙালি। এটা সত্য বাঙালিদের দাবি-দাওয়া নিয়ে তিনি বরাবরই সোচ্চার। তার পূর্বপুরুষ একসময় যশোরে বসবাস করত। বাংলাদেশের মানুষ তাকে নিকট আপনজন হিসেবেই মনে করে। এ জন্যই দ্বিতীয়বারের মতো তিনি যখন বিজয়ী হন, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ তাকে ২০ কেজি ইলিশ পাঠিয়েছিলেন। সে খবর তখন পত্র-পত্রিকায় ছাপাও হয়েছিল। তাহলে আমাদের ন্যায্য হিস্যার ব্যাপারে তিনি আন্তরিক হবেন না কেন? প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় তার সঙ্গে মমতা ব্যানার্জির সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা কম। আমরা চাই দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এর সমাধান। আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে তিস্তার পানি চুক্তি। আমাদের প্রত্যাশা একটাই- তিস্তা চুক্তির জট খুলুক।
Daily Jugantor
11.12.2016

0 comments:

Post a Comment