সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ডা.
সেলিনা হায়াৎ আইভী বিজয়ী হয়েছেন। এই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন কম ছিল না। খোদ
আইভী নিজে কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং নির্বাচনের আগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করার দাবি জানিয়েছিলেন। এই নির্বাচন
অনেকগুলো প্রশ্নের জবাব আমাদের দিয়েছে, যা আগামী দিনের রাজনীতিতে কিছুটা
হলেও প্রভাব ফেলবে। প্রথমত, আইভীর এই বিজয় তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তারই
প্রতিফলন। তিনি অনেকটা ‘এককভাবে’ নির্বাচন পরিচালনা করে গেছেন। দলের
কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি কমই পেয়েছেন। তার ব্যক্তিগত
ইমেজ, সততা, পারিবারিক ঐতিহ্য ইত্যাদি নির্বাচনে বিজয়ী হতে তাকে সাহায্য
করেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের মাঝে তার সম্পর্কে একটা ‘রিজার্ভেশন’ ছিল।
কিন্তু তা সত্ত্বে¡ও তিনি জিতেছেন শুধু তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার কারণেই।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের তিনটি ‘পক্ষ’ এখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে প্রথম
থেকেই ‘কমিটেড’ ছিল। এই তিনটি ‘পক্ষ’ হচ্ছে নির্বাচন কমিশন, সরকার ও
রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। নির্বাচন কমিশন এবার সরকারের
পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছে। সরকারপ্রধান চাচ্ছিলেন দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীকে
দেখাতে যে, দলীয় সরকারের আওতায় ‘সুষ্ঠু’ নির্বাচন সম্ভব, যা অতীতে সরকার
‘প্রমাণ’ করতে পারেনি। সরকারের কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল। আইভী যে জিতবেন,
তা গোয়েন্দা রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছিল। তাই সরকার নির্বাচনটা ‘সুষ্ঠু’ হতে
দিয়েছে। প্রচুর আইন রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। ফলে কোনো ধরনের
অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উপরন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জন্য এই নির্বাচন ছিল
একটি ‘টেস্ট কেস’। বিএনপির ভবিষ্যৎ নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং আওয়ামী লীগের
জনপ্রিয়তা যাচাই করা- দুটোই ছিল। ফলে এই নির্বাচন একটি ‘মেসেজ’ দিয়ে গেল
দুটো বড় দলের জন্য। তৃতীয়ত, এই নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি
উঠেছিল। সরকার ও ইসি তাতে রাজি হয়নি। এখন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ফলে
আগামীতে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি উঠলেও সরকার নাসিক
নির্বাচনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে পারবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন ছাড়াও যে
নির্বাচন সুষ্ঠু করা যায়, সরকার এটা এখন প্রচার করতে চাইবে। চতুর্থত, বলা
হচ্ছে- এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নৌকা তথা আওয়ামী লীগের ‘বিশাল’ জনপ্রিয়তা
প্রমাণিত হল। এর পেছনে কিছুটা সত্যতা থাকলেও বাস্তবতা হচ্ছে স্থানীয়
পর্যায়ের একটি নির্বাচন দিয়ে কোনো দলের জনপ্রিয়তা কতটুকু তা ‘প্রমাণ’ করা
যাবে না। ব্যক্তি আইভী ২০১১ সালে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হয়ে আওয়ামী লীগের
প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলেন। এবার তার ব্যক্তিগত ইমেজ, প্লাস নৌকা-
দুটো একসঙ্গে কাজ করেছে। আমার বিশ্বাস- তিনি যদি নৌকা মার্কা ছাড়াও
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন, বিজয়ী হতেন। পঞ্চমত, নাসিক নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা
ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১। ভোট পড়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬৫। এর মধ্যে বিএনপি
প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৬৭৪ ভোট। আমার জানা মতে,
২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে বিএনপির ১২, আওয়ামী লীগের ১১, জাতীয়
পার্টির ৩ ও বাসদের একজন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এ থেকে একটা ধারণা করা
স্বাভাবিক যে, আওয়ামী লীগের বিকল্প হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির নেতাকর্মীর
বিরুদ্ধে দেশজুড়ে অজস্র মামলা-মোকদ্দমা থাকলেও তাদের জনপ্রিয়তার যে এতটুকুও
ঘাটতি হয়নি, নাসিক নির্বাচন এর বড় প্রমাণ। বাংলাদেশে যে একটি দ্বিদলীয়
ব্যবস্থা বিদ্যমান, এটা আবারও প্রমাণিত হল। ষষ্ঠত, নাসিক নির্বাচনে মহিলা
ভোটাররা একটা ফ্যাক্টর ছিলেন। ভোটারদের মধ্যে ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন মহিলা
ভোটার। পত্রপত্রিকার রিপোর্টে দেখা গেছে, মহিলারা ব্যাপক হারে উপস্থিত
হয়েছেন ভোট দেয়ার জন্য। এদের একটা বড় অংশেরই ভোট পেয়েছেন আইভী। সপ্তম,
রাজনীতিতে যে একটি ‘কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজার্স’ বা আস্থার সম্পর্ক থাকা
দরকার, নাসিক নির্বাচনে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় উভয়
প্রার্থীই একে অপরকে আক্রমণ করে কোনো বক্তব্য দেননি। কোনো উত্তেজনা ছড়াননি।
যাকে নিয়ে সবচেয়ে বড় ভয় ছিল, তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং তার সঙ্গে আইভীর
অতীত সম্পর্ক ভালো ছিল না, তিনিও কোনো ‘উত্তেজনা’ ছড়াননি। ফলে আস্থার
সম্পর্ক থাকায়, নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে। এ ধরনের নির্বাচন একটি
‘মডেল’ হতে পারে। অষ্টম, নাসিক নির্বাচন প্রমাণ করল প্রার্থী যদি ‘ভালো’
হয়, দুর্নীতিমুক্ত হয়, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী ও মাস্তানির অভিযোগ যদি না
থাকে, তাহলে ওই প্রার্থীর পক্ষে জনমত থাকে। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের
জন্য এটা একটা ‘সিগন্যাল’। উভয় দলের শীর্ষ নেতারা একটা বিবেচনায় নিতে
পারেন। কেননা বর্তমান সরকারের আমলে অনেক এমপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।
অনেক এমপির বিরুদ্ধে স্থানীয় সমস্যাগুলোর ব্যাপারে গুরুত্ব না দিয়ে
ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছা বাস্তবায়নে বেশি উৎসাহী- এমন অভিযোগ রয়েছে। এ
ক্ষেত্রে সেলিনা হায়াৎ আইভী ছিলেন ব্যতিক্রম। দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই
তার বিরুদ্ধে। পরিবারের সদস্যরা তার ক্ষমতা ব্যবহার করে কোনো সুযোগ-সুবিধা
নিয়েছেন, এমনটি শোনা যায় না। মাত্র ১০ লাখ টাকার সম্পত্তির মালিক তিনি।
হলফনামায় এমন তথ্যই তিনি দিয়েছেন। ফলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কিংবা
বিএনপি যদি সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের প্রার্থী করে, তাতে করে রাজনীতিতে শুধু
গুণগত পরিবর্তনই আসবে না, বরং দলীয় সেই প্রার্থীকে বিজয়ী হতেও সাহায্য
করবে। নাসিক নির্বাচন প্রমাণ করল প্রার্থী দিতে হবে সৎ, যোগ্য ও
আধুনিকমনস্ক। নবম, এই নির্বাচন বিএনপির জন্যও ছিল একটি প্লাস পয়েন্ট।
বিএনপি মূল রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। বিএনপি নাসিক নির্বাচনে অংশ নিয়ে এবং
নির্বাচনী লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থেকে প্রমাণ করেছে তারা ‘রাজনীতির মাঠে’
থাকতে চায়। তবে এই ‘রাজনীতির মাঠে’ থাকাটা শুধু বিএনপির ওপরই নির্ভর করে
না। অনেকাংশে নির্ভর করে সরকারের ওপর। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’-এর পরিবেশ
সৃষ্টি করতে হবে। বিএনপিকে ‘স্পেস’ দিতে হবে। আক্রমণাত্মক বক্তব্য পরিহার
করে, বিএনপিকে আস্থায় নিয়েই রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দশম, নাসিক
নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী হেরে গেছে। এই হারকে মেনে নিতে হবে এবং কেন
বিএনপি হারল, এর চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হবে। স্থানীয় কোনো কোনো নেতা
নির্লিপ্ত ছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে এবং বিএনপির জন্য যা করা দরকার,
তা হচ্ছে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা
প্রণয়ন। নির্বাচনের জন্য ইস্যু গ্রহণ, প্রার্থী বাছাই, জোটের সদস্যদের
সঙ্গে ‘কো-অর্ডিনেশন’ করা ইত্যাদি বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে। তরুণ
নেতৃত্বকে সামনে আনতে হবে। বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের (স্থায়ী কমিটি) উপদেষ্টা
কমিটিতে রেখে বিএনপি একটি তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারত, যারা আগামী দশকে
বিএনপিকে নেতৃত্ব দেবে। সেটা হয়নি। এদিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। একাদশ,
নাসিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে- এটাই শেষ কথা নয়। যেতে হবে অনেকদূর। একদলীয়
নির্বাচন নয়, সব দলের অংশগ্রহণে একটি জাতীয় নির্বাচন দরকার। নাসিক
নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী ছুটে গেছেন সাখাওয়াত হোসেন খানের
বাসায়। চেয়েছেন তার সহযোগিতা। জবাবে সাখাওয়াত সাহেবও নির্বাচিত মেয়রকে
আশ্বাস দিয়েছেন সহযোগিতার। রাজনীতি এমনটিই হওয়া উচিত। আস্থার সম্পর্ক রেখেই
রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি
পরিবর্তন প্রয়োজন। রাজনীতিকে গণমুখী করা, পরস্পরকে আক্রমণ করা থেকে বিরত
থাকা, কোনো একটি বিশেষ দলকে আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত না করা, জাতীয়
পর্যায়ের নেতাদের প্রতি সম্মান দেখানো, সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রবর্তন করা-
এসবই হচ্ছে সময়ের দাবি। রাজনীতি থেকে যদি অপসংস্কৃতিকে বিদায় করা না যায়,
তাহলে তরুণ প্রজন্ম রাজনীতির ব্যাপারে আকৃষ্ট হবে না। তরুণ প্রজন্মের জন্যই
নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, নাসিক
নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয়ভাবে দুটি বড় দলের নেতারা যে ধরনের মন্তব্য করেছেন,
তাতে নাসিক নির্বাচনের ‘স্পিরিট’কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে
নাসিক নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। বাস্তব ক্ষেত্রে এই
নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে তিনটি পক্ষ। আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। কেননা আওয়ামী
লীগের দলীয় সরকারের আমলে যে ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর’ নির্বাচন সম্ভব, তা তারা
প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। বিএনপির প্রার্থীকে তারা শেষ পর্যন্ত মাঠে রাখতে
পেরেছে। এটা তাদের জন্য বড় বিজয়। বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান হেরে
গেছেন বটে। কিন্তু বিএনপিও বিজয়ী হয়েছে। বিএনপির বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ ছিল
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মানুষ তা পুরোপুরি বিশ্বাস
করেনি। ১২ কাউন্সিলরকে (বিএনপি সমর্থক) তারা নির্বাচিত করেছে। বিএনপি আবার
মূলধারার রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। নাসিক নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ বিএনপিকে
নিয়ে যাবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় এক অর্থে নির্বাচন
কমিশনও বিজয়ী হয়েছে। কমিশন শেষ সময় এসে একটি ভালো নির্বাচন ‘উপহার’ দিল।
সরকারের সদিচ্ছা থাকায় তারা এটি করতে পেরেছে। প্রশ্নটা সেখানেই। অতীতের
নির্বাচনগুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন ছিল। মিডিয়ার কারণে মানুষ তা দেখেছে। এ
ক্ষেত্রে কমিশন তথা সিইসি সাংবিধানিকভাবে তাদের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকার
প্রতি সম্মান দেখাতে পারেননি। ৫ জানুয়ারির (২০১৪) নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ
সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেলেন। নির্বাচন কমিশন ‘তাকিয়ে
তাকিয়ে’ তা দেখল। পরবর্তী সময়ে ইউপি নির্বাচনে ‘ভোট কেন্দ্র দখল’ আর ‘সিল
মারা’ সংস্কৃতি চালু হল, ইসি থাকল নির্লিপ্ত। ভোট চলাকালীন সিইসি চলে গেলেন
‘প্রমোদ ভ্রমণে’ যুক্তরাষ্ট্রে! ঢাকার দুটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনেও
সাধারণ মানুষ দেখল ইসির নিষ্ক্রিয় ভূমিকা। সর্বশেষ নাসিক নির্বাচনটা ‘সফল’
করতে গিয়ে সরকার কমিশনকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দিতে চাইছে! ফলে ইসি একটি
ক্রেডিট পেতে পারে বটে। কিন্তু এর পেছনে কাজ করছিল সরকারের সদিচ্ছা। নাসিক
নির্বাচনকে নিয়ে আমরা যেভাবেই মূল্যায়ন করি না কেন, সবার দৃষ্টি থাকবে এখন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে। নাসিক নির্বাচনের পরদিন ২৩ ডিসেম্বর
তোফায়েল আহমেদ একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন,
নির্বাচন (জাতীয় সংসদ) হবে ২০১৯ সালে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে
ক্ষমতায় রেখেই ওই নির্বাচনটি হবে। ২০১৭ সালটি আমাদের জন্য তাই যথেষ্ট
গুরুত্বপূর্ণ। একটি সার্চ কমিটি হবে, যারা সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের
মনোনয়ন দেবে। রাষ্ট্রপতি এখন সংলাপ করছেন একটি সার্চ কমিটি গঠনের ব্যাপারে
ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য। এ ব্যাপারে বিএনপিসহ সংলাপে অংশগ্রহণকারী সব দলের
নিজস্ব একটা সুস্পষ্ট অভিমত আছে। এখন সার্চ কমিটি গঠিত হবে এবং তাদের
মনোনয়নের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি সিইসিসহ কমিশনারদের মনোনয়ন দেবেন। এ ক্ষেত্রে
নিরপেক্ষতা, দক্ষতা ও যোগ্যতা কতটুকু রক্ষিত হবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন।
যদি নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হয়, যদি দলীয় বিবেচনা প্রাধান্য পায়, তাহলে সংকট
থেকে যাবে। উপরন্তু সাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে রেখে নির্বাচন আয়োজন
করা বৈধ হলেও সংবিধানের আলোকে একটা ‘মেকানিজম’ খুঁজে বের করা প্রয়োজন, যার
মাধ্যমে ‘নির্বাচনকালীন সরকারের’ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত
করা যায়। কেননা ‘সকল দলের অংশগ্রহণের’ স্বার্থে এ ধরনের নিরপেক্ষ একটি
সরকার প্রয়োজন। নাসিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এটা ছিল একটা উৎসবের মতো।
এমনটি হওয়াই প্রত্যাশিত ছিল এবং তাই হয়েছে। এই মুহূর্তে নাসিক নির্বাচন
কিছু প্রশ্নের ‘জবাব’ দেবে না সত্য, কিন্তু সরকার এই নির্বাচন থেকে অনেক
কিছু ‘শিখতে’ পারে, যা ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে
সহায়ক হবে।
Daily Jugantor
25.12.2016
0 comments:
Post a Comment