রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

কোন পথে ফ্রান্স


ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাক্রনের বিজয়ী হওয়ার পর যে প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে কোন পথে এখন ফ্রান্স? প্রথম দফা নির্বাচনে কোনো প্রার্থী শতকরা ৫০ ভাগ ভোট নিশ্চিত করতে না পারায় চূড়ান্ত পর্বে দুজন প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। গত ৭ মে মূল পর্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইমানুয়েল ম্যাক্রন আর মেরিন লে পেন। নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রন। ফ্রান্সের নয়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি এলিসি প্রাসাদে উঠবেন আগামী ১০ দিনের মধ্যে। মজার কথা হচ্ছে, প্রথা অনুযায়ী নয়া প্রেসিডেন্টকে কোনো শপথ নিতে হবে না। তবে ১০ দিনের একটি কথা বলা আছে। এই ১০ দিনের মধ্যেই তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। এর আগে যেদিন তিনি এলিসি প্রাসাদে যাবেন, সেদিন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওলাঁদের সঙ্গে একটি বৈঠকে মিলিত হবেন এবং পারমাণবিক অস্ত্রের কোড বুঝে নেবেন। সাধারণত বিভিন্ন অনুষ্ঠান, মার্চপাস্ট, সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে নয়া প্রেসিডেন্টকে বরণ করে নেওয়া হবে। অনেকগুলো কারণের জন্য এবারের ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনেক বৈশিষ্ট্যম-িত ছিল। বিশেষ করে ট্রেডিশনাল দুটি পার্টি সমাজতান্ত্রিক ও রিপাবলিকান এই দল দুটোর প্রার্থীরা চূড়ান্ত পর্বে আসতে পারেননি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ সমাজতান্ত্রিক। কিন্তু তিনি নির্বাচনেই ছিলেন না। কেননা জনপ্রিয়তা না থাকায় দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। ম্যাক্রন ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী এবং সমাজতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য তিনি নতুন একটি সংগঠন (‘এন মার্চে’Ñ চলো এগিয়ে যাই) গঠন করেন। প্রশাসনে ম্যাক্রনের অভিজ্ঞতা আছে। তিনি সাবেক ব্যাংকারও বটে। নির্বাচনের জন্যই তিনি গত আগস্ট (২০১৬) সালে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। অন্যদিকে মেরিন লে পেনের কোনো প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ছিল না। পারিবারিকভাবেই তিনি রাজনীতিতে এসেছেন। তার প্রয়াত বাবা জ্যাঁ পেরি লে পেন অতীতে উগ্রপন্থি নানা বক্তব্যের জন্য বারবার সমালোচিত হয়েছিলেন। তিনি কট্টরপন্থি উগ্র ন্যাশনাল ফ্রন্ট দলটি গঠন করেছিলেন অনেক আগেই। ২০০২ সালে জ্যাঁ পেরি লে পেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন। ফ্রান্সের রাজনীতিতে ন্যাশনাল ফ্রন্টের অবস্থান কখনই শক্ত ছিল না। তবে এবারই প্রথম ব্যতিক্রম। মূলত ব্যাপক অভিবাসন ইস্যুকে মুখ্য করে মেরিন লে পেন এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অবস্থান শক্ত করেছিলেন। এমনকি কোনো এক পর্যায়ে তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী হবেন বলেও ধরা হয়েছিল। যদিও প্রথম দফায় তিনি তেমন সুবিধা করতে পারেননি। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি থেকে গিয়েছিলেন। এটাই তার বড় সাফল্য। নির্বাচনে এদের দুজনেরই রাজনৈতিক অবস্থান ছিল পরস্পরবিরোধী। মেরিন লে পেন ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী। তিনি ব্রিটেনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ফ্রান্সকে ইইউ থেকে বের করে আনতে চেয়েছেন। তবে কাজটি কারো জন্যই খুব সহজ নয়। এর সঙ্গে সংবিধানের প্রশ্নটি জড়িত। লে পেন বলেছিলেন, তিনি ‘বিজয়ী’ হলে গণভোটের আয়োজন করবেন। এমনকি তিনি ইউরোর পরিবর্তে ফ্রান্সের আদি মুদ্রা ফ্রাংক প্রবর্তনেরও পক্ষপাতী ছিলেন। অন্যদিকে ম্যাক্রনের অবস্থান ছিল পরিপূর্ণভাবে বিপরীত। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফ্রান্সের থাকার পক্ষে ছিলেন। তবে সংস্কারের পক্ষপাতী। আবার ম্যাক্রনের মুখ থেকে কখনও মুসলমানবিরোধী কোনো মন্তব্য শোনা যায়নি। কিন্তু মেরিনের বক্তব্য ছিল ঠিক উল্টো। তিনি প্রথম থেকেই মুসলমানবিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। তিনি প্রচ-ভাবে অভিবাসনবিরোধী। ২০১৫ সালের পর থেকে ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে যে সন্ত্রাসী কর্মকা- সংঘটিত হয়েছে, তাতে মারা গেছেন ২৩০ জন। এ প্রসঙ্গ টেনে মেরিন বলেছিলেন, সীমান্তে কড়াকড়ি করার ইচ্ছা আছে তার। ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভিসাহীন ও অবাধ যাতায়াতের (শেঙ্কে চুক্তি) যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাতে তার আপত্তি রয়েছে। অন্যদিকে ফ্রান্সে বেকারত্বের হার শতকরা ১০ ভাগ। ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বেকারত্বের দিক থেকে ফ্রান্সের অবস্থান অষ্টম। মাগরেবভুক্ত দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীদের মধ্যে এই বেকারত্বের হার বেশি, যা কিনা তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গিবাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক তরুণ এখন সিরিয়ার রাকা থেকে ফ্রান্সে ফিরে আসছে। এরা অনেকেই আবার ফ্রান্সের ভেতরেই সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ছে। নয়া প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনের দায়িত্ব এখন তরুণদের কীভাবে এ পথ থেকে ফেরানো যায়, সে ব্যাপারে একটি ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়া ও সবার সহযোগিতা নিশ্চিত করা। ম্যাক্রনের নীতিতে বছরে ১০ হাজার অভিবাসী গ্রহণের কথা বলা হয়েছে, যারা ফ্রান্স ভাষা জানেন ও বলতে পারেন। অন্যদিকে মেরিন লে পেন সীমান্ত ‘সিল’ করে দিয়ে মুসলমান অভিবাসীদের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু এতে করে ফ্রান্সে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করা যাবে না। এটা সত্য, আগামীতে ফ্রান্সের জন্য নিরাপত্তা ইস্যু হবে প্রধান সমস্যা। ট্রেডিশনালি এক সময় যে দেশগুলো ফ্রান্সের কলোনি ছিল এবং যারা মুসলমানপ্রধান দেশ হিসেবেই পরিচিত (যেমন আলজেরিয়া, মরক্কো, তিউনিশিয়া), সেসব দেশ থেকেই মানুষ আইনগতভাবে ফ্রান্সে বসবাস করতে যান। এরা সবাই ফ্রান্স ভাষা জানেন। ফলে এদের আসা বন্ধ করা যাবে না। তাহলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তবে ইমানুয়েল ম্যাক্রন অনেকটাই সফল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো নির্বাচনের আগে জনমানসে তিনি একটা অভিবাসনবিরোধী ‘সেন্টিমেন্ট’ ঢুকিয়ে দেননি। মানুষ এটা গ্রহণও করেনি, একই সঙ্গে ট্রাম্পের মতো ‘হোয়াইট সুপ্রিমেসি’ বা ‘শ্বেতাঙ্গ প্রাধান্য’ মানসিকতার জন্ম তিনি দেননি। এটা ফ্রান্সের রাজনীতির জন্য বড় বেশি বেমানান। অতীতে কখনো ফ্রান্সের রাজনীতিতে এই ‘শ্বেতাঙ্গ-অশ্বেতাঙ্গ’ দ্বন্দ্ব বড় ভূমিকা পালন করেনি। কিন্তু ট্রাম্পের আদলে লে পেন এই রাজনীতি শুরু করেছিলেন। কিছুটা সফল তিনি হয়েছেন, তা তো অস্বীকার করা যাবে না। এই ‘রাজনীতি’ আগামী দিনে ফ্রান্সকে কোথায় নিয়ে যাবে, বলা মুশকিল। ম্যাক্রন এখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে হয়তো অশ্বেতাঙ্গ অভিবাসীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসবে। কিন্তু রাজনীতিতে এই শ্বেতাঙ্গ-অশ্বেতাঙ্গ দ্বন্দ্ব থেকে যেতে পারে। ভয়টা এখানেই। তাই ফ্রান্সের নয়া প্রেসিডেন্টের জন্য একটি প্রধান কাজ হবে মুসলমান অভিবাসীদের আস্থা অর্জন করা।
তবে এটা ঠিক, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় এবং রাজনীতিতে উগ্র দক্ষিণপন্থি যে প্রবণতা, তা আটলান্টিকের ওপারে ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশেই স্পর্শ করেছে। ইউরোপের মানুষ এই সস্তা ‘পপুলিজ’-এ আকৃষ্ট হয়েছে। যে কারণে দেখা যায়, ব্রিটেনে দক্ষিণপন্থি তেরেসা মের উত্থান ও ‘ব্রেক্সিট’ বাস্তবায়ন। অর্থাৎ ব্রিটেনের নিজস্ব স্বকীয়তা, ‘শ্বেতাঙ্গ সুপ্রিমেসি’ অভিবাসন বিরোধিতা ইত্যাদি সস্তা সেøাগান তুলে ব্রিটেন এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেল। এই রাজনীতি ফ্রান্সে লাগেনি, এটাই প্লাস পয়েন্ট। কিন্তু আগামীর কথা কেউ বলতে পারে না। আগামী ১১ জুন সেখানে সংসদ নির্বাচন। যদিও ফ্রান্সে সংসদীয় রাজনীতি নেই। এখানে রাষ্ট্রপতি সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, উগ্র দক্ষিণপন্থিরা সমাজে সর্বত্র ঘাঁটি গেড়েছে। এই উগ্র দক্ষিণপন্থি তথা ন্যাশনাল ফ্রন্ট সমর্থকরা সংসদ নির্বাচনে ভালো করতে পারে। উগ্র দক্ষিণপন্থিদের সঙ্গে মডারেট বা মধ্যপন্থিদের ব্যবধান যে কমেছে, এটা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেই প্রমাণিত হয়েছে। যেখানে ম্যাক্রন ভোট পেয়েছেন শতকরা ৬৫ ভাগ, সেখানে মেরিন লে পেন পেয়েছেন প্রায় ৩৫ ভাগ। ২০০২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর উগ্র দক্ষিণপন্থিরা এবার সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। ২০০২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চিরাক পেয়েছিলেন ৮২ দশমিক ২ ভাগ ভোট, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী মেরিন লে পেনের বাবা জ্যাঁ লে পেন পেয়েছিলেন ৬৪ দশমিক ৪ ভাগ ভোট। এর পর প্রতিটি নির্বাচনে ব্যবধান ছিল বিশাল এবং উগ্র দক্ষিণপন্থিরা কখনো মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন না। ১৯৬৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যবধানটা ছিল কাছাকাছি, পমপেদু (৫৮.২ ভাগ) ও পোহের ( ১৬.৪ ভাগ)। ২০১২ সালে ব্যবধানটা ছিল বিশাল। ওলাঁদ (৫১.৬ ভাগ) ও সারকোজি (৩.৩ ভাগ)। ২০০৭ সালে ব্যবধান ছিল সারকোজি (৫৩.১ ভাগ) ও রয়াল (৬.১ ভাগ)। এর অর্থ হচ্ছে, ২০০২ সালের পর উগ্র দক্ষিণপন্থিরা নির্বাচনে তাদের অবস্থান শক্ত করতে পেরেছে। এটা যে সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।
কোন পথে এখন ফ্রান্স? নির্বাচনে বিজয়ের পর ম্যাক্রন স্পষ্ট করেছেন ফ্রান্স ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে। তবে আমাদের বুঝতে হবে, ফ্রান্সের জনগোষ্ঠীর প্রতি ৩ জনের ১ জন ইইউবিরোধী। এটা এখন ম্যাক্রনকে বিবেচনায় নিতে হবে। ১৯৫৮ সালে ফ্রান্সে ৫ম রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম ফ্রান্সের জনগণ এমন একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেয়েছে, যিনি শুধু তারুণ্যেরই প্রতিনিধিত্ব করেন না; বরং মূল ধারার রাজনীতিতেও তিনি নেই। তিনি দক্ষিণপন্থি নন, আবার বামপন্থিও নন। তিনি মূলত করপোরেট জগতের মানুষ। নির্বাচনের আগে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আগামী ৫ বছরে ১ লাখ ২০ হাজার সরকারি কর্মসংস্থান কমিয়ে সরকারি খরচ ৬০ বিলিয়ন ইউরো কমাবেন। সেই সঙ্গে সরকারি বিনিয়োগ কমাবেন ৫০ বিলিয়ন ইউরো। করপোরেট লাভের কর ৩০ ভাগ থেকে কমিয়ে আনবেন ২৫ ভাগে এবং সরকারি খরচ জিডিপির ৫২ ভাগে কমিয়ে আনবেন। সপ্তাহের শ্রমঘণ্টা ৩৫ ঘণ্টা তিনি বহাল রাখবেন। যারা স্বল্প আয়ের মানুষ তাদের সবার স্বাস্থ্যসেবা তিনি নিশ্চিত করবেন। প্রতি মাসে ৫০০ ইউরো বাসা ভাড়া বরাদ্দ ও বেকার ভাতার পরিধি বাড়াবেন। ইইউ যে সাধারণ শরণার্থী নীতি গ্রহণ করেছে, তা তিনি অনুসরণ করবেন। অতিরিক্ত ১০ হাজার পুলিশ তিনি নিয়োগ করবেন। কিন্তু যে প্রশ্ন আমি ইতোমধ্যে অনেকের লেখায় পেয়েছি, তা হচ্ছে তার এসব অর্থনৈতিক কর্মসূচি বেকার সমস্যা সমাধানে ও সন্ত্রাসী কর্মকা- হ্রাসে কতটুকু সাহায্য করবে? ম্যাক্রন অর্থনীতি ভালো বোঝেন। তাই তিনি জানেন অর্থনীতিকে কীভাবে বাগে আনতে হয়। কিন্তু মেরিন লে পেন যে ইসলামবিরোধী একটি সেন্টিমেন্টের জন্ম দিয়ে গেলেন, তার কী হবে? প্রায় ৬৬ দশমিক ৮১ মিলিয়ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। শতকরা হিসেবে প্রায় ১১ ভাগ। মূল জনগোষ্ঠীর জন্য এটা কোনো হুমকি নয়। তবে আইএস এদের মাঝে, বিশেষ করে তরুণ মুসলমানদের মধ্যে কিছুটা ঘাঁটি গেড়েছে। ম্যাক্রন এখন এসব তরুণের ব্যাপারে কী নীতি গ্রহণ করেন, সেটাই দেখার বিষয়। ইইউর মধ্যে ফ্রান্সের অর্থনীতির অবস্থান তৃতীয়। জার্মানি ও ব্রিটেনের পর। এখন ব্রিটেন বেরিয়ে গেল। এর একটা প্রভাব ফ্রান্সের অর্থনীতিতে থাকবেই।
নির্বাচনে বিজয়ের পর ম্যাক্রন ওই রাতেই হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘ফ্রান্সের দীর্ঘ ইতিহাসে নতুন একটি পালক যুক্ত হলো।’ কথাটা সত্য। তারুণ্য, মূল ধারার বাইরে গিয়ে নতুন একটি ধারা তৈরি করে ম্যাক্রন একটি ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। আপাতত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার হাত থেকে ম্যাক্রনের এই বিজয় কিছুটা স্বস্তি এনে দেবে। কিন্তু যেতে হবে বহুদূর। ব্রেক্সিট এবং ট্রাম্পের আগামী রাজনীতি ইইউবিরোধী জনমতকে কোথায় নিয়ে যায়, সেটাই দেখার বিষয়। ফ্রান্সে ম্যাক্রনের বিজয় প্রো-ইইউ ধারাকে শক্তিশালী করল। কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়।
Daily Amader Somoy
09.05.2017

2 comments: