রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কোন পথে




গেল সপ্তাহে রোহিঙ্গা প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ ছাপা হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা বেশ কিছুদিন ধরে যখন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে স্থান পেয়ে আসছিল, তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে মিয়ানমার সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। গেল সপ্তাহে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা নিপীড়নের তথ্য ‘গালগল্প’। কমিশন রোহিঙ্গা নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পায়নি! তদন্ত কমিটির এ রিপোর্ট কতটুকু তথ্যনির্ভর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতিসংঘ গেল বছর অক্টোবরে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও ও ধর্ষণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেরা তদন্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তাতে রাজি হয়নি; বরং তারা নিজেরা তদন্ত করবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল। পরে তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। গেল রোববার তদন্ত কমিটি তাদের এ রিপোর্টটি প্রকাশ করে। অথচ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০৪ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে তা অস্বীকার করা হয়েছে। এখন এ রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই শুধু প্রশ্ন ওঠেনি, বরং মিয়ানমার সরকারের ‘মূল ব্যক্তি’ অং সান সু চির ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি সেনাবাহিনীর স্বার্থে কাজ করছেন এবং সেনাবাহিনীকে হত্যাকা- ও ধর্ষণের ঘটনায় দায়ভার দিতে চান না। বলা ভালো, ১৩ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটির প্রধান ছিলেন সাবেক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সুয়ি। একজন সাবেক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান যখন এ ধরনের একটি তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেন, তখন প্রশ্ন থাকাই স্বাভাবিক। জেনারেল মিন্ট সুয়ির নেতৃত্বাধীন কমিটির ক্ষেত্রেও এ প্রশ্নটি উঠেছে।
রিপোর্টটি প্রকাশিত হওয়ার পর যে প্রশ্নটি এখন উঠেছে, তা হচ্ছে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান তাহলে কোন পথে? এভাবেই কি রোহিঙ্গারা নিজ দেশে পরবাসী হয়ে বছরের পর বছর কাটিয়ে দেবেন? কিংবা অত্যাচার আর নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশান্তরিত হবেন, কখনও আশ্রয় নেবেন বাংলাদেশে, কখনও সাগরে ভাসবেন। মিয়ানমার সরকার তো সেটাই চাইছে। রাখাইন রাজ্যকে তারা রোহিঙ্গামুক্ত করতে চায়। মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে এক ধরনের বৌদ্ধ সন্ত্রাস চলছে। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মিয়ানমারকে একটি বৌদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। মিয়ানমার তিন দশকের মধ্যে তাদের প্রথম আদমশুমারির ফল প্রকাশ করে ২০১৪ সালে। সেখানে তাদের জনসংখ্যা ৫ কোটি ১০ লাখ। আর দেশটিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ। মিয়ানমারে প্রায় ১৩৫টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী থাকলেও এদের মধ্যে রোহিঙ্গাদের কোনো স্বীকৃতি নেই। সু চি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেও একাধিকবার স্পষ্ট করেছেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নন, তারা বাঙালি।’ সু চির এ বক্তব্যের পেছনে কোনো সত্যতা নেই। ইতিহাস বলে, রোহিঙ্গারা অষ্টম শতাব্দী থেকেই আরাকান অঞ্চলে বসবাস করে আসছে। ১৪৩০ সালের দিকে তৎকালীন আরাকান শাসক বৌদ্ধ রাজ নারামাইখালা (Narameikhala), যিনি মিন স মুন নামেও পরিচিত ছিলেন, তার শামনামলে তিনি রোহিঙ্গা মুসলমানদের এ অঞ্চলে নিয়ে এসেছিলেন এবং আরাকানে বসবাস করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সেই থেকে রোহিঙ্গারা সেখানে বসবাস করে আসছে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৩৪ হাজার। কিন্তু অবৈধভাবে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা বৃহত্তর কক্সবাজারে বসবাস করছে। কিছুদিন আগে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ১ হাজার রোহিঙ্গাকে ইউরোপসহ অন্যত্র পুনর্বাসন করা হবে। বাংলাদেশ সরকারও একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, রোহিঙ্গাদের হাতিয়ার ঠেঙ্গারচরে পুনর্বাসন করা হবে। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই তেমন অগ্রগতি নেই।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে দুইভাবে বাংলাদেশকে এখন এগোতে হবেÑ প্রথমত, আন্তর্জাতিক আসরে রোহিঙ্গা সমস্যাটা তুলে ধরা; দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের জন্য সীমিত সময়ের জন্য ‘নিজস্ব একটি বাসস্থান’ তৈরি করা। উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ একটি ‘পজেটিভ’ অবস্থান নিয়েছে। জার্মানি সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মরকেলের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ একটি বড় পরিসরে রোহিঙ্গা সমস্যাটি তুলে ধরেছিল। এটা প্রশংসাযোগ্য। জার্মানি নিজেও জানে অভিবাসী সমস্যার গভীরতা। জার্মানি সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ১০ লাখ সিরীয় ও ইরাকি অভিবাসীকে তার দেশে আশ্রয় দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসব শরণার্থী জার্মানিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এরা যুদ্ধ শরণার্থী। মানবিক দিকটি বিবেচনা করে জার্মানি এদের আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থাও অনেকটা তেমনই। রোহিঙ্গারা নিজ দেশ থেকে উৎখাত হয়েছেন। সেখানে এক ধরনের ‘এথনিক ক্লিনসিং’ হচ্ছে। অর্থাৎ জাতিগত উচ্ছেদ অভিযান এ ধরনের ‘এথনিক ক্লিনসিং’ আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম বসনিয়ায়, যেখানে সার্বরা মুসলমানদের নিজ বাসভূম থেকে উৎখাত করেছিল। হাজার হাজার মুসলমানকে নিজ বাসভূমিতে হত্যা করা হয়েছিল। সেই গণহত্যাকারী সার্ব জেনারেলদের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার পর্যন্ত হয়েছিল। মিয়ানমারে আজ রোহিঙ্গারা সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের দ্বারা ‘এথনিক ক্লিনসিং’ এর শিকার হয়েছেন। বাধ্য হয়ে তারা বাংলাদশে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশ মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশ একটি ছোট্ট দেশ। এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে স্থায়ী আবাসের নিশ্চয়তা দিতে পারে না বাংলাদেশ। এর আগেও ১৯৭৯ সালের পর থেকে যেসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছিল, মিয়ানমার তাদের অনেককেই ফিরিয়ে নেয়নি। একমাত্র মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করেই সম্ভব রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন। এ কাজটি বাংলাদেশ শুরু করেনি। এখন বিষয়টি ওআইসি ও জাতিসংঘেও তুলতে হবে। আমরা ইইউর সহযোগিতাও নিতে পারি। এরই মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শেষ হয়েছে। ওই সেনা অভিযানের খবরও মিডিয়ায় এসেছে। যাতে রোহিঙ্গাদের অত্যাচারের খবরও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। আমার ধারণা, এটি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর একটি কৌশল হতে পারে, যাতে অভিযান অব্যাহত রেখে রোহিঙ্গাদের উৎখাত করা যায়। কিছু রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিয়ে প্রত্যাবাসন আবার বন্ধ করে দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াং হি কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। তিনি রোহিঙ্গাদের অবস্থান জানতে বাংলাদেশে এসেছিলেন। বাংলাদেশ অবস্থানকালে তিনি লেদা, নয়াপাড়া শরণার্থী শিবির, শামলাপুর অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গারা সেখানে অত্যাচারিত। তিনি এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জাতিসংঘের মহাসচিবকে দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন। এটা বিবেচনায় নিয়েই মিয়ানমার সরকার তখন কিছু রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে ফিরে আসতে সুযোগ করে দিয়েছিল। তবে যারা এরই মধ্যে বাংলাদেশে এসে গেছেন, তাদের দ্রুত ঠেঙ্গারচরে পুনর্বাসন প্রয়োজন। ঠেঙ্গারচরটি বর্তমানে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। হাতিয়ার মূল ভূখ- থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এবং নলচিরা ঘাট থেকে পূর্বদিকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে জেগে ওঠা একটি চর। প্রায় ১০ হাজার একর জমি রয়েছে এখানে। বন বিভাগ এখানে বিশাল একটি বনাঞ্চল তৈরি করেছে। বিরান এ জনপদে দ্রুত অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রয়োজন রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠারও। ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষার জন্য শেল্টার হোম তৈরি করাও প্রয়োজন। এ চরাঞ্চলে গো-চাষের বিশাল এক সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ ইইউর কাছ থেকে এ ব্যাপারে সাহায্য ও সহযোগিতা পেতে পারে। এজন্য দরকার ‘দক্ষ কূটনীতি’। আমরা যেন এটা ভুলে না যাই, রোহিঙ্গাদের একটা অংশ এখন নানা ধরনের অসামাজিক কাজে লিপ্ত রয়েছে। অবৈধ অভিবাসীরা ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত রয়েছেÑ এমন সংবাদও ছাপা হয়েছে পত্রপত্রিকায়। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে। ফলে যত দ্রুত আমরা রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে পুনর্বাসন করতে পারব, ততই আমাদের জন্য মঙ্গল। কিন্তু দুঃখজনক যা, তা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নির্লিপ্ততা। আশিয়ান কিংবা ওআইসির তেমন তৎপরতা চোখে পড়ে না। গেল ২ আগস্ট চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন ওআইসি মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমাদ আল ওসাইমিন। ওই সময় তিনি রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেয়ার এবং দেশটিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন। তিনি ঢাকায় স্পষ্ট করে বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয় ও স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন। তিনি কক্সবাজার ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পও পরিদর্শন করেছিলেন। কিন্তু এ ব্যাপারে ওআইসি আগামীতে কী ভূমিকা নেয়, সেটাই আমাদের দেখার বিষয়। তবে রোহিঙ্গা সমস্যাটা আন্তর্জাতিক আসরে তুলে ধরার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের বড় ভূমিকা রয়েছে। সেই ভূমিকাটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরোপুরিভাবে করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। এ প্রসঙ্গে ২১ জুন বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম যে কথা বলেছিলেন, তা বেশ প্রণিধানযোগ্য। এইচ টি ইমাম বলেছিলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি বাংলাদেশ। যে রকমভাবে এটা (রোহিঙ্গা ইস্যু) প্রকাশ্যে নিয়ে আসা উচিত ছিল এবং বিভিন্ন মহলের যে রকম চাপ দেয়ার কথা ছিল, সে রকমভাবে তো করা হয়নি।’ এ মন্তব্যটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। একজন উপদেষ্টা যখন এ ধরনের মন্তব্য করেন, তা হালকাভাবে নেয়া যায় না। আসলে ওটাই হচ্ছে মোদ্দাকথা। রোহিঙ্গা সমস্যাটা আন্তর্জাতিকীকরণের মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারের ওপর ‘চাপ’ দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা চীন ও আশিয়ানের শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি উত্থাপন করতে পারি। চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক ভালো। চীনকে ব্যবহার করা যায়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে আমরা আমাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারি। এটা সত্য, মিয়ানমারে আমাদের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বিমসটেক তথা প্রস্তাবিত বিসিআইএম জোটে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন সান সু চির একাধিকবার কথা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে অগ্রগতি হয়েছে কম। এখন তাই সময় এসেছে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক আসরে শক্তভাবে তুলে ধরা। এ সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া হচ্ছে না। সমস্যার মূলে রয়েছে এটাই। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এখন স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে হবে।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় রোহিঙ্গারা অমানবিক জীবনযাপন করছে। এরা নানা অসামাজিক কাজে জড়িয়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, তারা পরিবেশেরও যথেষ্ট ক্ষতি করছে। গাছ, পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংস করছে। এক্ষেত্রে ঠেঙ্গারচরে এদের পুনর্বাসন যুক্তিযুক্ত। এটা যত দ্রুত করা যায়, ততই আমাদের মঙ্গল। যত দেরি হবে, ততই আমাদের ক্ষতি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় এসেছিলেন মিয়ানমার সরকারের বিশেষ দূত ও সে দেশের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিউ টিন। সে সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে এবং দেশটিতে জাতিগত নির্যাতন বন্ধের জন্য চাপ দেয়া হয়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। মিয়ানমার মূলত সময়ক্ষেপণ করছে। তারা যে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে না, এটা স্পষ্ট। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকেই উদ্যোগী হয়ে ও সমস্যার সমাধানে ‘বড় ভূমিকা’ পালন করতে হবে। একদিকে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন, অন্যদিকে রোহিঙ্গা সমস্যা আন্তর্জাতিকীকরণ করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে একটি ‘বড় ভূমিকা’ পালন করতে হবে।
Daily Alokito Bangladesh
13.08.2017

0 comments:

Post a Comment