রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

লাদেনের মৃত্যু ও একটি কালো অধ্যায়

ওসামা বিন লাদেন এখন মৃত। তার মৃত্যু নিয়ে যত ‘কাহিনী’ই থাকুক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একটি ‘অধ্যায়ের’ অবসান হল। ওসামার এ মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমে যাবে কিনা, সেটা ভিন্ন এক প্রশ্ন। কিন্তু  বিন লাদেনের মৃত্যু একটি ‘কালো অধ্যায়ের’ সূচনা করল, যেখানে কোন পরাশক্তি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের সীমানা লঙ্ঘন করতে পারে অনায়াসে। কোন আইন তাকে বাধা দিতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র আজ যে কাজটি করল, তাতে করে এখন উৎসাহিত হতে পারে আরও অনেক আগ্রাসী রাষ্ট্র। সন্দেহের দৃষ্টি এখন থাকবে ইসরাইলের দিকে।
নিঃসন্দেহে ওসামা বিন লাদেন একজন বিতর্কিত ব্যক্তি ছিলেন। ইসলামের নামে তার কর্মকাণ্ড অনেকেই সমর্থন করবেন না। আÍঘাতী বোমারু তৈরি করা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা, প্রচলিত সমাজব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার নাম আর যাই হোক, ইসলাম নয়। আমাদের দেশে যারা ইসলাম প্রচার করার জন্য একসময় আরব দেশ থেকে এসেছিলেন, তারা এভাবে ইসলাম প্রচার করেননি। একে-৪৭ রাইফেল হাতে নিয়ে আর পুঁজিবাদের প্রতীক ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস করে দিলেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয় না। এ কারণেই ওসামা বিন লাদেনের কর্মকাণ্ড বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। যেহেতু তিনি অন্যায় করেছেন এবং অভিযুক্ত, সেহেতু তার বিচার হওয়া উচিত ছিল। এ ধরনের বিচার তো হচ্ছে। যারা বসনিয়া, রুয়ান্ডা কিংবা কসোভোতে গণহত্যা চালিয়েছিল, দি হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার হচ্ছে। লাইবেরিয়া কিংবা রুয়ান্ডায় যারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল, তাদেরও বিচার হচ্ছে। চার্লস টেলর, মিলোসেভিচের মতো একসময়ের মতাসীন ব্যক্তিরা আজ বিচারের মুখোমুখি। পানামার সাবেক সামরিক শাসক নরিয়েগাকে যুক্তরাষ্ট্র ধরে নিয়ে এসেছিল। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের জেলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাজি বাহিনী ইউরোপে ‘অপরাধ’ করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের, যুদ্ধ সংঘটিত ও শান্তি বিঘিœত করার। ১৯৪৫ সালে গঠিত ওহঃবৎহধঃরড়হধষ গরষরঃধৎু ঞৎরনঁহধষ (ঘঁৎবসনবৎম) এ তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়েছিল। বিচার তাদেরও হয়েছিল যারা দূরপ্রাচ্যে (ঋধৎ ঊধংঃ) অপরাধ সংঘটিত করেছিল। ১৯৪৬ সালে গঠিত হয়েছিল ওহঃবৎহধঃরড়হধষ গরষরঃধৎু ঞৎরনঁহধষ ভড়ৎ ঋধৎ ঊধংঃ (ঔধঢ়ধহ)। জাপানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল। ওসামা বিন লাদেনও তো একই ধরনের অপরাধ করেছেনÑ যুদ্ধ ও হত্যাকাণ্ড তথা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এর জন্য উপযুক্ত জায়গা ছিল দি হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেখানে তাকে তার অপরাধের জন্য ‘বিচার’ করা যেত। তা না করে যুক্তরাষ্ট্র কমান্ডো পাঠিয়ে তাকে হত্যা করল। আন্তর্জাতিক আইনে এ ধরনের হত্যা অনুমোদন করে না। এমনকি কোন দেশের সীমান্ত লঙ্ঘন করাও আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ। ওহঃবৎহধঃরড়হধষ খধি অংংড়পরধঃরড়হ ২০১০ সালের আগস্টে দি হেগে একটি আইন অনুমোদন করেছিল। তাতে বলা হয়েছেÑ ‘ঈধষষং ড়হ ধষষ ংঃধঃবং ঃড় ড়নংবৎাব পধৎবভঁষষু ঃযব ফরংঃরহপঃরড়হ নবঃবিবহ ংরঃঁধঃরড়হং ড়ভ ধৎসবফ পড়হভষরপঃ ধং ফবভরহবফ রহ ওহঃবৎহধঃরড়হধষ খধি ধহফ ংরঃঁধঃরড়হং ড়ভ ঢ়বধপব রহ ফবাবষড়ঢ়রহম ধহফ পধৎৎুরহম ড়ঁঃ ঢ়ড়ষরপরবং রহাড়ষারহম ঃযব ঁংব ড়ভ ষবঃযধষ ভড়ৎপব, ফবঃবহঃরড়হ ধহফ ঃৎরধষং, ধংুষঁস ড়নষরমধঃরড়হং, ধহফ ড়ঃযবৎ ৎবষবাধহঃ ংঃধঃব ধপঃরড়হ.’ ঊঁৎড়ঢ়বধহ ঈড়ঁৎঃ ড়ভ ঐঁসধহ জরমযঃং (ঊঈঐজ) ১৯৯৫ সালে সংঘটিত একটি ঘটনার রায় দিয়েছিল, যে ঘটনার সঙ্গে বিন লাদেনের ঘটনার অদ্ভুত এক মিল রয়েছে। মামলাটি ছিল ‘ম্যাককেন (গপঈধহহ) বনাম যুক্তরাজ্য’। এ মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন ওজঅ সদস্যরা, যাদের জিব্রালটারে হত্যা করেছিল ব্রিটিশ ঝঅঝ বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ওজঅ সদস্যরা বোমা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঊঈঐজ তখন রায় দিয়েছিল, ঝঅঝ’র উচিত ছিল তাদের গ্রেফতার করা। যদি সন্দেহভাজনরা গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করতেন, তাহলে তারা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারতেন। এখন বিন লাদেনের েেত্র ব্যাপারটি কি সেরকমই দাঁড়ালো না? বিন লাদেন নিরস্ত্র ছিলেন। জিব্রালটার ছিল ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত এলাকা। কিন্তু পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত এলাকা নয়। পাকিস্তান একটি স্বাধীন দেশ। সেই স্বাধীন দেশের সীমানায় অনুমতি ব্যতিরেকে প্রবেশ করে একজন ‘সন্ত্রাসী’কে হত্যা করা একটা অপরাধ এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। ওহঃবৎ অসবৎরপধহ ঈড়ঁৎঃও বলছে, সন্ত্রাস দমনের নামে অস্ত্রের অতিরিক্ত ব্যবহারের বৈধতা দেয়া যায় না [আইনের অধ্যাপক গধৎু ঙ’ ঈড়হহবষষ (ঘড়ঃৎব উধসব) এর প্রবন্ধ ঞযব ইরহ খধফবহ ধভঃবৎসধঃয : অননড়ঃঃধনধফ ধহফ রহঃবৎহধঃরড়হধষ ষধ,ি অঋচঅক ঈযধহহবষ, ৪ সধু)]। যুক্তরাজ্যের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিশেষজ্ঞ নিক গ্রিফ লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় ঠিক এ প্রশ্নটিই তুলেছেন যে, লাদেনের হত্যাকাণ্ড আইনসম্মত ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার কর্মী জিওফ্রে রবার্টসনের মতে, লাদেনকে ধরে নিয়ে আসা উচিত ছিল। নিরস্ত্র লাদেনকে মাথায় গুলি করে হত্যা করার ঘটনার ব্যাখ্যাও দাবি করেছেন তিনি। ওয়ারেন রিচি ঞযব ঈযৎরংঃরধহ ঝপরবহপব গড়হরঃড়ৎ এ সরাসরিই প্রশ্ন তুলেছেন, ডধং রঃ খবমধষ ঃড় করষষ ইরহ খধফবহ? যুক্তরাষ্ট্রের অপর এক মানবাধিকার কর্মী কার্টিস ডোয়েবলার অযৎধস ঙহষরহব এ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
বিন লাদেন অপরাধ করেছেন। বিচারে তার ফাঁসি হতে পারতÑ সেটাই বরং স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র অনেক প্রশ্নের জš§ দিল এখন। মৃত ওসামা বিন লাদেন এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠল। বিন লাদেনের জনপ্রিয়তা বাড়বে বৈ কমবে না এতে করে। কিন্তু যে প্রশ্নটি আমার কাছে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ভূমিকা উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর জন্য কোন ধরনের হুমকি কিনা? মুসলমান বিশ্বে অসন্তোষ আছে। বিশ্বায়নের নামে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের আধিপত্যবাদ। এেেত্র ইসলামিক পণ্ডিতদের কারও কারও মতে, (যেমন মিসরের ঝধুুরফ ছঁঃন) ‘ওংষধস রং ঃযব ংড়ষঁঃরড়হ’ অর্থাৎ ইসলামই সমাধানের পথ। বছরের পর বছর যখন ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হয় না, যখন ইসরাইলি কমান্ডোরা ফিলিস্তিনি নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে এবং তার বিচার হয় না, তখন লাদেনের মতো নেতারা জিহাদের ডাক দেন। এই তথাকথিত ‘জিহাদ’ মুসলিম বিশ্বে ব্যাপকভাবে সমর্থিত হয়নি এটা সত্য, কিন্তু ইরাক ও আফগানিস্তানে যখন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়, তখন এক ধরনের ােভ ও ঘৃণা মুসলিম বিশ্বে জš§ হওয়া স্বাভাবিক। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালিয়েছিল এ যুক্তিতে যে, বিন লাদেনকে তালেবানরা আশ্রয় দিয়েছিল। সেই ২০০১ থেকে ২০১১Ñ আফগানিস্তানে আজও মার্কিন সৈন্য আছে। ওবামা শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু তার হাতেও ‘রক্ত’ এখন। তিনি প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন, ২০১১ সালে সব মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করা হবে। এখন বলছেন, সেই সময়সীমা ২০১৪। কিন্তু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞকরা জানেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘বড় স্বার্থ’ রয়েছে আফগানিস্তানে, তাই সেখানে তাদের থাকতে হবে। মধ্য এশিয়ায় রয়েছে বিপুল জ্বালানি সম্পদÑ গ্যাস ও তেল। সেখানে মার্কিন কোম্পানিগুলোর বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। অন্য কোন শক্তি এই জ্বালানি সম্পদে ভাগ বসাবে (বিশেষ করে চীন ও রাশিয়া), তা চাইবে না যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানে বসেই মধ্য এশিয়ার ‘জ্বালানি সম্পদ’ নিয়ন্ত্রিত হবে। তাই তাজিকিস্তান কিংবা উজবেকিস্তানে ‘ইসলামী জঙ্গিবাদে’র ‘জš§’ হয়েছে! এই জঙ্গিবাদও মধ্য এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি! ‘ন্যাটোর এশীয়করণ’ হবে এ অঞ্চলকে ঘিরে। তাই আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সম্ভাবনা ীণ। ইরাকে বলা হয়েছিল ডগউ বা গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র রয়েছে। বলা হয়েছিল, এ মারণাস্ত্র এই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এই যুক্তি তুলে ২০০৩ সালে দেশটি দখল করে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তার পরের কাহিনী আমরা সবাই জানি। সেখানে কোন ডগউ পাওয়া যায়নি। কিন্তু সাদ্দামের ফাঁসি হয়েছে। ইরাক ধ্বংস হয়ে গেছে। ইরাকের তেল বিক্রি করে সেদেশের পুনর্গঠনের কাজ করছে কিছু মার্কিন কোম্পানি। আজ ঐঁসধহরঃধৎরধহ ওহঃবৎাবহঃরড়হ-এর নামে লিবিয়ায় সামরিক হস্তেেপর পথ খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের টার্গেট লিবিয়ার তেল। লিবিয়া হচ্ছে উত্তর আফ্রিকায় যাওয়ার ‘গেটওয়ে’। লিবিয়াকে যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তাহলে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী আফ্রিকার দেশগুলোও নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে।  অঋজওঈঙগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এ ল্য সামনে রেখেই।
ইসলামের নামে যে সন্ত্রাসবাদ, তা সমর্থনযোগ্য নয়। এটা ইসলাম নয়। কিন্তু এই সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে অন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র আক্রমণ করা কিংবা তার সার্বভৌমত্ব লংঘন করাও গ্রহণযোগ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই ভূমিকা জাতিসংঘ সনদ ৪.১ ও ৪.৪ এর পরিপন্থী, যেখানে ‘সার্বভৌমত্ব’ ও ‘আঞ্চলিক অখণ্ডতার’ কথা বলা হয়েছে। সন্ত্রাস দমনের নামে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ‘চৎববসঢ়ঃরাব ঝঃৎরশব’ বা আগাম আক্রমণের যে ধারণা প্রেসিডেন্ট বুশ ব্যবহার করেছিলেন, কিংবা এখন ওবামা ব্যবহার করলেন, তা বাহ্যত যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে আদৌ কোন সাহায্য করবে না। ইতিহাসে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটাচ্ছে। ১৯৮৬ সালে দি হেগের ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়ঁৎঃ ড়ভ ঔঁংঃরপব নিকারাগুয়ায় ‘অবৈধভাবে শক্তি প্রয়োগ’ করা ও কন্ট্রা বিদ্রোহীদের (যারা ওই সময় নিকারাগুয়ার বামপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেছিল) সাহায্যের অপরাধে অভিমত দেয়, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আদালতের এ রায় স্বীকার করে নেয়নি। অথচ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৯৪-২ ভোটে আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায় মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল তাদের। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল ওই প্রস্তাবের বিপে ভোট দিয়েছিল সেদিন।
লাদেন হত্যাকাণ্ড অনেক প্রশ্নেরই জবাব দেবে না। আমরা কোনদিনই জানতে পারব না কেন সেদিন ৯/১১ সংঘটিত হয়েছিল, কারা কারা ছিল এর পেছনে। ঋড়ৎবরমহ চড়ষরপু গধমধুরহব এ (৪ মে) একটি সিরিজ ছবি ছাপা হয়েছে। একটি স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিও আছে, যাতে দেখানো হয়েছে অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়িটি, যেখানে বিন লাদেন থাকতেন। ছবিটি তোলা হয়েছে ২০০৫ সালের ১৫ জুন। বিন লাদেনের স্ত্রীও স্বীকার করেছেন, তারা ২০০৫ সাল থেকেই ওখানে আছেন। তাহলে প্রশ্নটি এসেই যায়, আগেই কেন সেখানে কমান্ডো পাঠানো হল না? এই ‘কেন’র কোন জবাব নেই। কারণ যিনি জবাব দিতেন, তিনি আজ মৃত। বিন লাদেনকে হত্যা করার ঘটনা একটি ‘কালো অধ্যায়’। যুক্তরাষ্ট্র আজ যে কাউকে ‘বড় সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে যে কোন দেশে কমান্ডো হামলা চালাতে পারে। আন্তর্জাতিক আইনকে থোড়াই কেয়ার করে যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রবণতা ভালো নয়। এটা বিশ্বে উত্তেজনা বাড়াবে মাত্র। মুসলিম বিশ্ব একসময় বারাক ওবামার ওপর আস্থা রেখেছিল। এখন ওসামার হত্যাকাণ্ডে সেই আস্থা যদি ফিঁকে হয়ে আসে, আমি তাতে অবাক হব না।
[পূর্বে প্রকাশ @দৈনিক যুগান্তর ১৪-০৫-২০১১]

0 comments:

Post a Comment