এটি সংবিধান সংশোধনের পথ নয় |
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন এবং সংসদে উত্থাপন করায় দেশ আজ এক গভীর সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে। বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা বা পরামর্শ না করে একতরফাভাবে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ এবং এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সরকার এর আগে সংবিধান সংশোধনের জন্য একটি বিশেষ সংসদীয় কমিটি গঠন করেছিল। যেখানে বিরোধী দলের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। ওই বিশেষ কমিটি গত ৮ জুন সংসদে সংবিধান সংশোধনের জন্য ৫১ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করে এবং মাত্র ১২ দিনের মাথায় মন্ত্রিসভা ওই ৫১ দফা প্রস্তাব হুবহু অনুমোদন দেয়ায় সরকারের ভূমিকা এখানে প্রশ্নবিদ্ধ। কেননা সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যখন বিরোধী দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার কথা বলেন, তখন আলাপ-আলোচনার কোনো উদ্যোগ না নিয়েই অতি দ্রুততার সঙ্গে সরকার সংবিধান সংশাধনের উদ্যোগ নিয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তথাকথিত বিশেষ কমিটি দেশের মুখচেনা কিছু বুদ্ধিজীবী, জাতীয় সংবাদপত্রের সম্পাদকবৃন্দ, আইনজীবী ও অবসরপ্রাপ্ত ক'জন প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা করেন। কিন্তু তাদের কারো অভিমত ওই কমিটি গ্রহণ করেনি। কমিটি ২৭টি সভায় মিলিত হন। তারা শরিকদের কোনো মতামতও গ্রহণ করেননি। বরং শরিকদের কারো কারো আপত্তি রয়েছে কমিটি যেসব সুপারিশ করেছে সে ব্যাপারে। মজার ব্যাপার, কমিটি সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখা না রাখা নিয়ে যখন এক ধরনের সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন, তখন তারা দেখা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে এবং বিশেষ কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করে এটা ধারণা করা স্বাভাবিক যে, বিশেষ কমিটি প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার বাস্তব প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তাদের রিপোর্টে।
সংবিধান সংশোধনের বিপরীতে এই জঘন্যতা কাম্য নয় |
বিশেষ কমিটি যে ৫১ দফা সংশোধনী উপস্থাপন করেছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্যগুলো নিম্নরূপ :
এক.
কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেছে। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের একটি রায়। উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিশেষ কমিটি রায়ের পুরো অংশ গ্রহণ করেনি। উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করলেও, আবার বলা হয়েছে, 'জনগণ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই যেহেতু সর্বোচ্চ আইন, সে কারণে প্রয়োজনের নিরিখে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনেই অনুষ্ঠিত হতে পারবে।' সংসদ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। বিশেষ কমিটি তাদের রিপোর্টে এই অংশটুকু যোগ না করায় তাতে বিতর্ক ও বিভ্রান্তি বেড়েছে। এটি আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে কি-না, তা ভেবে দেখা যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি আমরা এখনো পাইনি। এমতাবস্থায় আংশিক রায় দিয়ে যদি দ্রুততার সঙ্গে সংবিধান সংশোধন করা হয়, তাহলে বিশেষ কমিটির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই।
দুই.
প্রস্তাবে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে সংবিধানের মূলনীতিতে (৮.১ক) যেখানে 'সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসই হইবে যাবতীয় কার্যাবলীর ভিত্তি'র কথা বলা হয়েছে, তা বাতিল হবে। এ ধরনের কোনো প্রস্তাব যে দেশের শতকরা ৯০ ভাগের উপরে মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী তারা তা গ্রহণ করে নিতে পারে না। 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম' প্রস্তাবনায় রেখে দেয়া হলেও, বাংলা শব্দ যোগ করা হয়েছে, 'পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে' বাক্যটি। এটি এক ধরনের জগাখিচুড়ি ও বিভ্রান্তিকর।
তিন.
সমাজতন্ত্র পুনঃস্থাপনের প্রস্তাব করা হলেও আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে বর্তমানে সমাজতন্ত্র নেই। এমনকি বিশ্বব্যাপী সমাজতন্ত্রের চিন্তা-চেতনা এখন অচল। এর ফলে বহির্বিশ্বে বিশেষ করে গণতান্ত্রিক বিশ্বে বাংলদেশ সম্পর্কে ভিন্ন ধারণার জন্ম হতে পারে। চীনেও ধ্রুপদী সমাজতন্ত্র নেই। কিউবায় পরিবর্তন আসছে। আর ভিয়েতনামে পরিবর্তন এসেছে অনেক আগে।
চার.
প্রস্তাবে সংবিধানের ২৫(২) ধারা বাদ দেয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, 'রাষ্ট্র ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে মুসলিম দেশসমূহের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক সংহত, সংরক্ষণ এবং জোরদার করিতে সচেষ্ট হইবেন।' এই ধারাটি বাদ দেয়ার ফলে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত আমাদের কর্মীরা এক ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকতে পারেন। রেমিটেন্স, যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস, তাতে ভাটা আসতে পারে। একমাত্র সৌদি আরবেই কর্মরত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ১০ লাখের উপরে।
পাঁচ.
জাতীয় পরিচয় বাঙালি ও নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশি প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করে পাহাড়ে অশান্তি বাড়বে। পাহাড়িরা বাঙালি নয়, তারা তাদের নিজস্ব জাতিসত্তার পরিচয়ে পরিচিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাহাড়িদের বাঙালি হিসেবে গণ্য করার উদ্যোগ নিলে, সেদিন পাহাড়ে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল। সম্প্রতি পাহাড়িদের নেতা সন্তু লারমাও এর প্রতিবাদ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন পাহাড়িরা বাঙালি নন।
ছয়.
সংবিধানে ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম তফসিল নামে নতুন তিনটি তফসিল সংযোজন করে সেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ অন্তর্ভুক্তি, শেখ মুজিবের ২৬ মার্চের মধ্যরাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার টেলিগ্রাম এবং ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা এতে অন্তর্ভুক্ত না থাকায়, তা বিতর্কের মাত্রা আরো বাড়াবে মাত্র। বিএনপির নেতারা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা এটা মানেন না।
সাত.
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, 'রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম'। তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে। এ ধরনের প্রস্তাব 'ধর্মনিরপেক্ষতার' প্রস্তাবের পরস্পরবিরোধী।
আট.
প্রস্তাবে সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে (সংগঠনের স্বাধীনতা) কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে ৩৮(খ) এর অন্তর্ভুক্তির ভিন্ন ব্যাখ্যা হতে পারে এখন।
নয়.
নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু তাদের নিরপেক্ষতা কিভাবে নিশ্চিত হবে, তা বলা হয়নি। বর্তমান সরকার সিইসি ও কমিশনারদের নিয়োগ দিলে, তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এদের নিয়োগ দিতে হবে।
দশ.
অবৈধ ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান, যুদ্ধাপরাধে দ-িতদের নির্বাচনে অযোগ্য ও ভোটার হতে না পারা ইত্যাদি বিষয়ে কমিটি যেসব প্রস্তাব করেছে, তার ভিন্ন ব্যাখ্যা হতে পারে এখন। এতে করে অসাংবিধানিক শক্তিকে ক্ষমতা দখলে কতটুকু নিরুৎসাহিত করবে, সেটাই বড় প্রশ্ন এখন।
সবচেয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া। সংবিধানের ১৪২ ধারায় সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে (১৪২ আ) সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে সংবিধান সংশোধন করা যায়। এখন সংশোধনীতে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে সংশোধনী আনা সহজ হবে না। সংশোধন প্রক্রিয়ায় যেতে হলে উচ্চ আদালতসহ বহু বাধা পেরুতে হবে। খসড়া প্রস্তাবে ৭(খ) যোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে 'এ সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহাই কিছু থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম ক-ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয়ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের অনুচ্ছেদ ১৫০ সহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোন পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে'।
এর ফলে বিলের খসড়ায় 'জাতির পিতা' শিরোনামের অনুচ্ছেদ ৪-এ যা কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে (ছবি প্রদর্শন) তাতে সংশোধনী আনা সহজ হবে না। ৭ মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা, মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ইত্যাদি সংযুক্তি (অনুচ্ছেদ ১৫০.২) সংশোধন কঠিন হবে। রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি, জাতি হিসেবে বাঙালি ও নাগরিকতায় বাংলাদেশি বাতিল করা কিংবা 'আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস' পুনঃস্থাপন করা সহজ হবে না।
একটি দেশের সংবিধান কোনো দলের নয়। কোনো ব্যক্তির স্বার্থে রচিত হতে পারে না। সংবিধান সংশোধিত হতেই পারে। তবে তা হতে হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে। বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছাড়া যে কোনো সংবিধান সংশোধন গ্রহণযোগ্য হবে না। বিরোধী দল তথা চারদলীয় জোট দেশের জনগোষ্ঠীর ৩৭ ভাগ ভোটারের প্রতিনিধিত্ব করে। এই ৩৭ ভাগ ভোটারের মতামত যদি গ্রহণ করা না হয়, তাহলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়বে। আগামী দুটো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার জাতির বৃহত্তর স্বার্থে নতুন একটি প্রস্তাব আনতে পারেন। বিশেষ কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অন্তর্বর্তী সরকারের যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা শুধু অসাংবিধানিকই নয়, বরং তা ধূম্রজাল সৃষ্টি করার জন্য যথেষ্ট। সরকার যদি আন্তরিক থাকে, তাহলে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া গত ১৬ জুন সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য রেখেছেন, সেই আলোকে একটা সমাধান খোঁজা সম্ভব। এক্ষেত্রে বিএনপি সংসদে গেলে বরফ গলতে পারে।
এই কি গনতন্ত্র একেই কি বলে সংবিধান??? |
সংবিধান সংশোধন নিয়ে দেশ এক বড় ধরনের অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা একাধিকবার হরতাল প্রত্যক্ষ করেছি। স্থিতিশীলতার স্বার্থে, বাংলাদেশে বিকাশমান গণতন্ত্রকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ জরুরি। হরতাল কোনো সমাধান নয়। হরতাল দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যায় না। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির মূল কথা হচ্ছে আস্থা ও বিশ্বাস। এটা যদি না থাকে, সে দেশে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না। ১৯৯২ সালে সংবিধানে দ্বাদশ সংশোধনী এনে আমরা সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলাম। পরে ১৯৯৬ সালে ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আজ ১৫ বছর পর আবার এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার উদ্যোগ নিচ্ছি আমরা। এভাবে গণতন্ত্র চর্চা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ভালো নয়। এখন পঞ্চদশ সংশোধনী বিল সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। পাসও হয়ে যাবে। তারপরও একটা সমাধান সম্ভব। সংসদ একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে যে, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের পক্ষ থেকে অথবা শরিকদের পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি বিল উত্থাপিত হতে পারে এবং সরকারি দল তাতে সমর্থন দিতে পারে। এতে করে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা থাকলো না বটে, কিন্তু পরবর্তী দুটো নির্বাচন একটি নিরপেক্ষ সরকারের আওতায় আয়োজন করা সম্ভব এবং এর মাধ্যমে বিরোধী দলের সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে যাওয়াও সম্ভব।
লেখক : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়