রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক ও বেগম জিয়ার প্রস্তাব

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক ও বেগম জিয়ার প্রস্তাব

ড. তারেক শামসুর রেহমান
বেগম খালেদা জিয়া গত ১৬ জুন সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখা হলে সরকারের সঙ্গে ভবিষ্যত্ প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। গত ৫ জুন এবং ১২ ও ১৩ জুন লাগাতার হরতালের পর বেগম জিয়ার এই অবস্থান পরিষ্কার ও স্পষ্ট। যে ইস্যুতে বিএনপি তথা চার দল হরতাল পালন করেছিল, সেই ইস্যুটিকেই যে বেগম জিয়া প্রাধান্য দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। বেগম জিয়া জানিয়ে দিলেন তিনি ও তার দল নির্বাচনে যাবে, যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকে। এ ব্যাপারে তার দল সরকারের সঙ্গে আলোচনায় যেতেও রাজি। ‘বল’টি তিনি এখন ঠেলে দিলেন সরকারের কোর্টে। সরকারকেই এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখবে কী রাখবে না।
আমরা বার বার বলে আসছি একদলীয়ভাবে যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সেই সিদ্ধান্তের পেছনে জনগণের কোনো সম্মতি থাকবে না। সরকার দেয়ালের লিখন থেকে কিছুই শিখছে না। এই আওয়ামী লীগই ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। শেখ হাসিনা নিজেও স্বীকার করেছেন তিনি হচ্ছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার উদ্ভাবক। এ ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবিতে আওয়ামী লীগ অতীতে দেশে হরতাল পর্যন্ত করেছিল। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। কৈ সেদিন তো আওয়ামী লীগ এই ব্যবস্থা বাতিলের দাবি জানায়নি? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামোয় ১৯৯৬ সালেই আওয়ামী লীগ সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার পর্যন্ত গঠন করেছিল। সেদিন এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন শেখ হাসিনা। তারপর পর্যায়ক্রমে অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনও সম্পন্ন হয়, তাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আওতায়। কোনোদিনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেননি শেখ হাসিনা। সরকার গঠনের এক বছরের মাথায় সরকার যখন একের পর এক সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হচ্ছিল, তখনই এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে না রাখার দাবি উঠতে থাকে। শেখ হাসিনাই প্রথম প্রসঙ্গটির অবতারণা করেন। তারপর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা তার প্রতিধ্বনি করতে থাকেন। সরকারের আড়াই বছরের মাথায় এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে সরকার আর সংবিধানে এই ব্যবস্থাটি রাখতে চাইছে না। এরপর এলো উচ্চ আদালতের রায়টি। উচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে ভাবীসাপেক্ষে বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হলো। রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এই ব্যবস্থা আরও দুই মেয়াদে বহাল থাকার পর। এটি রায়ের পরবর্তী অংশে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে জনগণ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই যেহেতু সর্বোচ্চ আইন, সে কারণে প্রয়োজনের নিরিখে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনেই অনুষ্ঠিত হতে পারবে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি কিংবা আপিল বিভাগের বিচারপতিরা নিযুক্ত হতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে স্বাধীনভাবে জাতীয় সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে রায়ে অভিমত দেয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, উচ্চ আদালতের রায় যদি মানতেই হয় তাহলে তো পুরোটাই মানতে হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটি তাহলে উচ্চ আদালতের রায়ের একটি অংশ গ্রহণ করল কেন? পুরোটা গ্রহণ করে সুপারিশ দিলে তো এই প্রশ্নটি আজ উঠত না। বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও বলার কিছু থাকত না। আজ যখন বেগম জিয়া পুরো রায়ের কথা বলছেন, তার যুক্তি তো ফেলে দেয়ার নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে। এটাকে বাদ দেয়া যাবে না। তবে অবশ্যই আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় সংস্কার চাই। বিশেষ করে ৫৮(গ)(৩) ধারায় পরিবর্তন আনতে হবে। এই ধারায় সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করার বিধান রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে উচ্চ আদালতে ‘রাজনীতি’ ঢুকে গেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে তিনি নিজেকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে পারেননি। তার একাধিক রায় নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা গ্রহণের যে সংবাদ পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা তিনি দেননি। স্বাভাবিক কারণেই এ নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। অতীতে কোনো প্রধান বিচারপতি এভাবে বিতর্কিত হননি। অনেক প্রধান বিচারপতি অবসর গ্রহণের পরও তাদের মেধা দিয়ে জাতিকে সেবা করে যাচ্ছেন। জাতিকে পথ দেখাচ্ছেন। কিন্তু বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক নিজেকেই শুধু বিতর্কিত করলেন না, বরং বিচারপতিদের জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করালেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের উদ্ধৃতি আমি কী দেব? যেখানে তিনি নিজে আইনজীবীদের কাছেই গ্রহণযোগ্য হলেন না সেখানে আমজনতার কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন কীভাবে? তার কুশপুত্তলিকা তো আইনজীবীরাই দাহ করেছিলেন।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় তিনি দিয়েছেন। পঞ্চম সংশোধনী, সপ্তম সংশোধনী কিংবা ত্রয়োদশ সংশোধনী—সংবিধানের এসব সংশোধনী বাতিল হয়েছে উচ্চ আদালতের রায়ে। তার নেতৃত্বে উচ্চ আদালত রায় দিয়েছে। রায় নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না। তাতে করে আদালত অবমাননা হয়ে যেতে পারে। আমি একজন সাধারণ শিক্ষক। আমি ঝুঁকি নিতে পারি না। ওই তিনটি রায় নিয়ে নানা মন্তব্য, নানা কথা পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। মুন সিনেমা হল নিয়ে মামলা হয়েছিল। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক রায় দিলেন পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের। বিচারপতি মুন সিনেমা হলের মালিকানার সঙ্গে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর কী সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছিলেন, আমি বলতে পারব না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মুন সিনেমা হলের আদি মালিক তার সিনেমা হল আর ফেরত পাননি। কিন্তু এরই মধ্যে পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হয়ে গেছে। ত্রয়োদশ সংশোধনীও বাতিল হলো। অর্থাত্ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হলো। আবার একই রায়ে বলা হলো আগামী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। এটা কি পরস্পরবিরোধী নয়? যদি বাতিল হয়, সব সময়ের জন্যই বাতিল। পরের দুটি কেন তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে? এটা কি এজন্য যে বিচারপতি খায়রুল হকের নিজেরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার ইচ্ছে ছিল তাই? সংবিধান তো তা-ই বলে। সংবিধানের ৫৮(খ), এবং বিশেষ করে ৫৮(গ)(৩) ধারায় যদি পরিবর্তন আনা না হয়, তাহলে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকই হবেন পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান। একজন বিতর্কিত লোক প্রধান উপদেষ্টা হবেন, সেটা নিশ্চয়ই কারও কাম্য নয়।
যিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসরে গেছেন, তার তো চাওয়ার কিছু থাকতে পারে না। রাষ্ট্র তাকে তো অনেক দিয়েছে। সাধারণ নিয়মে তার প্রধান বিচারপতি হওয়ার কথা ছিল না। তিনি দু-দু’বার ‘সুপারসিডেড’ হয়ে প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন। সর্বশেষ ঘটনায় বিচারপতি শাহ মোহাম্মদ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান পদত্যাগ পর্যন্ত করেছিলেন। বিচারপতি শাহ আবু নাঈমের পদত্যাগের ঘটনাও বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্ক। উচ্চ আদালতের রায় অনুসরণ করে সংসদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতে পারত। এক্ষেত্রে শাহ মোহাম্মদ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানকে প্রধান বিচারপতি করা হলে, তাতে ক্ষতির কিছু ছিল না। তিনিও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারতেন না। যারা ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ বিশ্বাস করেন, তারা তো ‘ষড়যন্ত্র’ খুঁজবেনই। আমি আরও খুশি হতাম যদি বিচারপতি খায়রুল হক অবসরে যাওয়ার আগের দিন যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন, তখন যদি তিনি ঘোষণা করতেন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন না, তাহলে তিনি সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা বলেননি। বলেছেন ভবিষ্যত্ই নির্ধারণ করবে সবকিছু। এটা ‘ডিপ্লোম্যাটিক এনসার’। জবাব এড়িয়ে যাওয়া। তার এই জবাবই বলে দেয় তার কিছুটা হলেও ওই পদটির ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে। এটা আমাকে অবাক করেছে। একজন বিচারপতি তো সব লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থাকেন। এই রাষ্ট্র তো বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে অনেক কিছু দিয়েছে। তিনি কোনোদিনই প্রধান বিচারপতি হতে পারতেন না। কিন্তু হয়েছেন। তাকে নিয়ে এত যখন বিতর্ক, তখন তার বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়া উচিত, তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন না। যেমনটি করেছিলেন বিচারপতি কেএম হাসান। তবে সময় এখনও আছে। তিনি তা করতে পারেন।
আরও একটি বিষয়ে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি কষ্ট পেয়েছি। তা হচ্ছে তার স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার। বিচারপতি খায়রুল হক আপিল বিভাগে আইনজীবীদের এনরোলমেন্ট নিয়ে লাগামহীন অনিয়ম আর স্বজনপ্রীতি করেছেন। কিছু মুখচেনা আর রাজনৈতিক আদর্শগতভাবে একই ঘরানার লোকদের এনরোলমেন্ট করে গেছেন তিনি। এর ফলে হাইকোর্ট বিভাগের অনেক যোগ্য আইনজীবীও আপিল বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে বাদ পড়েছেন। এটা করা কি তার ঠিক হয়েছে? তিনি কেন রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠতে পারলেন না? এখন কেউ যদি তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়, তাহলে কি তিনি ভুল করবেন? বিচারপতিরা আমাদের নমস্য। তারা যদি কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শে অনুপ্রাণিত কিংবা প্রভাবিত হন, তাহলে তা জাতির জন্য খারাপ। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক সুন্দরবনে ‘প্রমোদ ভ্রমণে’ গিয়েছিলেন। তিনি সুন্দরবনে যেতেই পারেন। একজন নাগরিক হিসেবে এ অধিকার তার আছে। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি কীভাবে সুন্দরবন ভ্রমণে গেছেন, তা আমাদের জানিয়ে দিয়েছে একটি জাতীয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদন। তিনি তো অতীতে অনেককে ‘শাস্তি’ দিয়েছেন। বিচারপতিদের হাত অনেক লম্বা। তারা যখন এজলাসে থাকেন, তখন কথা বলা যায় না, প্রশ্ন তোলা যায় না, তাতে আদালত অবমাননা হয়। এখন তিনি অবসরে। এখন সাহস করে বলা যায়। সত্য উত্ঘাটিত হোক। তিনি যদি অন্যায় করে থাকেন, তারও ‘বিচার’ হওয়া উচিত। তিনি যদি সত্যিসত্যিই ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকেন, প্রমোদ ভ্রমণের নামে সরকারি অর্থের অপচয় করে থাকেন, নিয়ম ও ট্র্যাডিশন ভঙ্গ করে তিনি যদি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে আমজনতার মতো তাকেও বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। আজ তাই একটি সংবাদপত্র যখন তাদের প্রতিবেদনে বলে ‘সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে গেছেন খায়রুল হক’ (যুগান্তর ১৮ মে), তখন বেগম জিয়ার মন্তব্যকে অবশ্যই আমাদের সমর্থন করতে হবে। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অযোগ্য। তাকে রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। এক্ষেত্রে সংবিধানের ৫৮গ(৪) ধারা আমরা অনুসরণ করতে পারি। মোট কথা, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চাই একটি গ্রহণযোগ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সরকার যদি এটা করতে না চায়, যদি এককভাবে সংসদে ৫১ দফা সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করে, তাহলে দেশে সংঘাত দেখা দিতে বাধ্য। আমরা আশা করব সরকার দূরদর্শিতার পরিচয় দেবে। সংসদে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই। বেগম জিয়ার বক্তব্য পত্রপত্রিকায় গুরুত্বের সঙ্গে ছাপা হয়েছে। এটাকে বিবেচনায় নিয়ে সরকার সংসদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে। আমার বিশ্বাস বিএনপি তথা চার দলের সংসদ সদস্যরা তখন সংসদে আলোচনায় অংশ নেবেন। দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য এটা মঙ্গল। রাজনীতিতে জেদাজেদির কোনো বিষয় নেই। রাজনীতি হচ্ছে ‘অ্যান আর্ট অব কমপ্রোমাইজ’। পরস্পরের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস রেখেই রাজনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করা যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
tsrahmanbd@yahoo.com

0 comments:

Post a Comment