সংবিধান সংশোধন নিয়ে সঙ্ঘাত কাম্য নয়
সংবিধান কোনো ব্যক্তি বা দলের স্বার্থে পরিবর্তন হতে পারে না। উচ্চ আদালতে একাধিক রায়ের ফলে সংবিধান সংশোধন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। সমসাময়িক কালে উচ্চ আদালতের তিনটি রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ আদালত সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছে। এর ফলে আদালতের দৃষ্টিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেমনি অবৈধ, ঠিক তেমনি ১৯৭৫ সালে ও ১৯৮২ সালে জারিকৃত সামরিক শাসনের সময় রাষ্ট্রের কর্মকা- পরিচালনার জন্য যেসব আদেশ/ফরমান জারি করাও অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছিল। সঙ্গত কারণেই তাই আদালতের রায়কে অনুসরণ করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।ড. তারেক শামসুর রেহমান সংবিধান সংশোধন নিয়ে বিশেষ কমিটির ৫১ দফা সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপনের পর যে প্রশ্নটি আমার কাছে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে সরকার কি শেষ পর্যন্ত এককভাবে এসব সংশোধনী সংসদে পাস করিয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করবে? এর ফলে কি সঙ্ঘাত আরো বাড়বে না? তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি তথা চারদল হরতাল পালন করেছিল গত ৫ জুন। এখন ১২ ও ১৩ জুন লাগাতার ৩৬ ঘণ্টা হরতাল হলো। সংবিধান সংশোধনী নিয়ে দেশ তাহলে কোন দিকে যাচ্ছে? এমনিতেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো নয়। মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কের কোটা অতিক্রম করেছে। রেমিট্যান্সের প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হয়নি। সামনে রমজান। মানুষ আছে আতঙ্কে। সুশাসন নিয়েও কথা আছে। এই যখন পরিস্থিতি তখন সংবিধান সংশোধন নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা জটিলতা।
সংবিধান কোনো ব্যক্তি বা দলের স্বার্থে পরিবর্তন হতে পারে না। উচ্চ আদালতে একাধিক রায়ের ফলে সংবিধান সংশোধন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। সমসাময়িক কালে উচ্চ আদালতের তিনটি রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ আদালত সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছে। এর ফলে আদালতের দৃষ্টিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেমনি অবৈধ, ঠিক তেমনি ১৯৭৫ সালে ও ১৯৮২ সালে জারিকৃত সামরিক শাসনের সময় রাষ্ট্রের কর্মকা- পরিচালনার জন্য যেসব আদেশ/ফরমান জারি করাও অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছিল। সঙ্গত কারণেই তাই আদালতের রায়কে অনুসরণ করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
সরকার একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ওই কমিটিতে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব থাকলেও, তারা দীর্ঘ ২৭টি বৈঠকের একটিওতে অংশগ্রহণ করেনি। তবে বিএনপি নেতাদের বক্তৃতায় সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে তাদের কিছু মতামত পাওয়া গেছে। যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার প্রশ্নে তারা মতামত দিয়েছেন। কিন্তু বিশেষ কমিটির তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করার প্রস্তাব করেছে। এই দুই পরস্পরবিরোধী মতামত জাতিকে আরো সঙ্ঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে। যদিও বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিএনপিকে সংসদে এসে প্রস্তাব উত্থাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি এ কাজটি করতে পারে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সরকার বিএনপির একটি প্রস্তাব গ্রহণ করতে নাও পারে। সেখানেই বিএনপির সার্থকতা। তারা জাতিকে জানাতে পারবে সরকার তাদের একটি প্রস্তাবও গ্রহণ করেনি। তবে একটা সমঝোতা প্রয়োজন। প্রয়োজন নূ্যনতম ঐকমত্য। যেসব প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে যার জবাব খোঁজা অত্যন্ত জরুরি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। যুক্ত হচ্ছে উচ্চ আদালতের একটি রায়। কিন্তু রায়ে এ কথাটাও বলা হয়েছিল যে আরো দুটো টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। সুপারিশে এটি নেই। তাই সঙ্গত কারণেই সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়_ এই অভিযোগ কাটিয়ে ওঠা এখন কঠিন হবে। সংবিধানে মাত্র দু'টার্মের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে, এ ধরনের বিধান রাখা যায় না। এমনকি মূল সংবিধানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যেভাবে আছে, সেটাও রাখা যাবে না। কেননা তাতে করে সংবিধান ৫৮ গ (৩) ধারা মতে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার কথা, যাতে বিএনপির রায়ের প্রবল আপত্তি। তাই সংবিধানে নয়, বরং সাংসদ একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। এই 'দল নিরপেক্ষ' এর ব্যাখ্যাও সাংসদকে দিতে হবে। সংসদ একটি 'এলডার্স কাউন্সিলের' এ প্রস্তাব করতে পারে, যেখানে চারজনের একটি টিম (দু'জন আওয়ামী লীগের দু'জন বিএনপির মনোনীত নিরপেক্ষ ব্যক্তি) নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এখানে কেউ এককভাবে 'প্রধান উপদেষ্টার' দায়িত্ব পালন করবেন না। বিকল্প হিসেবে তিনজন 'সিনিয়র সিটিজেন' (একজন প্রবীণ প্রদান বিচারপতি, একজন শিক্ষাবিদ, একজন সুশীল অথবা ব্যবসায়িক সমাজের প্রতিনিধি) নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বটি পালন করতে পারেন।
সংসদ যদি এ ধরনের একটি ফর্মুলা উপস্থাপন করে, তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতা ধরে রাখার যে অভিযোগ, সেই অভিযোগ থেকে সরকার নিষ্কৃতি পাবে। তখন সরকারের বিরুদ্ধে বলার কিছু থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প হিসেবে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার কথা বলেছে। এটাও গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা আগামী মাসেই সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে এ পদে নতুনদের নিয়োগ দিতে হবে। এখন সরকার যাদেরকেই নিয়োগ দিক, তাদের নিয়ে বিতর্ক উঠবে। তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা হবে। আর এটা তো ঠিক সামরিক ও বেসামরিক আমলারা তাদের অবসরের আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটি সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং দল ক্ষমতায় গেলেই তারা সরকারের একটা 'পদ বাগিয়ে নেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন পর্যায়ে গিয়ে উন্নীত হয়েছে যে এখানে 'নিরপেক্ষ' ব্যক্তি এখন খুঁজে পাওয়া ভার। 'জনতার মঞ্চ' করে আমরা সচিবালয়ের আমলাদের রাজনীতিতে টেনে এনেছিলাম। 'প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী' হিসেবে যে তত্ত্বই হাজির করা হোক না কেন, বাস্ততা হচ্ছে সচিবালয়ের আমলারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে গেছেন। কেউ এখন বিএনপির আমলা, কেউ আওয়ামী লীগের। কেউবা আবার কবিতা লিখে নেতানেত্রীর গুণগান করে তার ভবিষ্যৎ পথ পরিষ্কার করে রাখছেন। সুতরাং সরকার এখন যাদেরকেই এ পদে নিয়োগ দেবে, তাদের নিয়ে বিতর্ক হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময় একটি বড় ভূমিকা পালন করে। তাদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি। সুতরাং এ ধরনের সাংবিধানিক পদে নিযুক্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ন্যায় একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা যায়। প্রয়োজনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কর্ম পরিধির মধ্যও এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যায়। বিশেষ কমিটি যখন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পক্ষে অভিমত দিয়েছে, ঠিক তখনই অষ্টম সংশোধনী অর্থাৎ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কেন সংবিধান পরিপন্থী নয়, সে ব্যাপারে হাইকোর্ট একটি কারণ দর্শাও নোটিস জারি করেছেন। এখন হাইকোর্ট যদি একটি রায় দেন, তাহলে তা সংসদ সদস্যদের একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিতে পারে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্যরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তাতে করে হাইকোর্ট অবমাননার প্রশ্ন উঠতে পারে। উপরন্তু সুপারিশমালায় রয়েছে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলনীতিতে ফিরে যাওয়া, যেখানে বলা হয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা। এই ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পরস্পর বিরোধী। এমনকি সংবিধানের ২৫(২) ধারায় যেখানে বলা হয়েছে 'রাষ্ট্র ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক সংহত, সংরক্ষণ এবং জোরদার করিতে সচেষ্ট হইবেন' _ সংবিধানের এই অংশটুকু নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। পঞ্চম সংশোধনীতে সংবিধানে এটি সংযোজন করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে এই অংশটুকু ছিল না। বিশেষ কমিটি অবশ্যি এ ব্যাপারে কোনো সুপারিশ করেনি। পঞ্চম সংশোধনী এখন উচ্চ আদালত কর্তৃক বাতিল হয়ে যাওয়ায়, যে কেউ এখন সংবিধানের ২৫(২) ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুপারিশে বলা হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে 'বাঙালি' এবং নাগরিক হিসেবে 'বাংলাদেশি' হিসেবে পরিচিত হবেন। এটা কি নতুন করে আবারো বিতর্ক সৃষ্টি করবে না? পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী ১৩টি নৃগোষ্ঠী কি নিজেদের 'বাঙালি' ভাববে? এই বিতর্ক তো বেশ পুরনো। এই বিতর্কের সূত্র ধরেই এক সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছিল। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমারা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘ অসন্তোষের অবসান হয়েছিল আওয়ামী লীগের সময়েই ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অসন্তোষের একটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে গঠন করেছে ইউপিডিএফ, যারা অধিক স্বায়ত্তশাসন চায়। পাহাড়িদের বাঙালি বলা যাবে না। তারা বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে এবং জাতি হিসেবেও। অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতা গ্রহণ, কিংবা সংরক্ষিত নারী আসন নিয়েও কথা আছে।
সরকার এককভাবে যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা বিতর্কের মাত্রা বাড়াবে। অভিযোগ উঠেছে বিশেষ কমিটি এর আগে দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, প্রধান বিচারপতি, আইনজ্ঞ কিংবা সুশীল সমাজের যাদের সঙ্গেই কথা বলেছেন, তাদের কারো মতামতই গ্রহণ করা হয়নি। পত্রিকায় প্রকাশিত এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে তা সত্যিই দুঃখজনক। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে কি সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা লোক দেখানো ছিল? বিশেষ কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রশ্নে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। কিন্তু কমিটি যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন, যখন প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মতামত দিলেন, কমিটির রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যই প্রতিফলিত হলো। এতে করে কমিটির নিরপেক্ষতা রক্ষিত হলো কি?
প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের কথা না বললেও পারতেন। জাতি হিসেবে আমরা এখনো বিভক্ত। প্রতিটি ইস্যুতে আমাদের এই বিভক্তি লক্ষ্য করার মতো। পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা গড়ে ওঠেনি। সরকারে থাকলে যে সহনশীল হতে হয়, তার দৃষ্টান্ত আমরা দেখাতে পারিনি। আমরা নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা থেকে সবকিছু ভাবতে পছন্দ করি এবং সেভাবেই দেখতে চাই। এই প্রবণতা ২০০৬ সালে চারদলীয় জোটের ক্ষমতা ছাড়ার পর চরম সঙ্কটের জন্ম দিয়েছিল। দেশ আবারো সেদিকে যাচ্ছে কি না, এ প্রশ্ন এখন অনেকের।
উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অগণতান্ত্রিক হিসেবে অভিহিত করেছে। উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে কথা বলা যাবে না। কিন্তু আদালত সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে না। তারা মতামত দিতে পারে। সংবিধান পরিবর্তন করবে সংসদ। সংসদ এই কাজটিই এখন করছে। সংসদ সদস্যরা উচ্চ আদালতের রায়কে বিবেচনায় নিয়ে নতুন একটি ফর্মুলা দিতে পারে। কেননা আমরা আমাদের মানসিকতা এখনো পরিবর্তন করিনি। যারা ক্ষমতায় থাকে, তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। সংবিধানে বিসমিল্লাহ রাখা না রাখা নিয়ে যে বিতর্ক, এই বিতর্ক চলতে দেয়া ঠিক না। মৌলবাদীরা এটা থেকে ফায়দা ওঠাতে পারে। সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে তাই একটি সমঝোতা ও ঐকমত্য খুবই জরুরি।
ড. তারেক শামসুর রেহমান : অধ্যাপক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
সংবিধান কোনো ব্যক্তি বা দলের স্বার্থে পরিবর্তন হতে পারে না। উচ্চ আদালতে একাধিক রায়ের ফলে সংবিধান সংশোধন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। সমসাময়িক কালে উচ্চ আদালতের তিনটি রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ আদালত সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছে। এর ফলে আদালতের দৃষ্টিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেমনি অবৈধ, ঠিক তেমনি ১৯৭৫ সালে ও ১৯৮২ সালে জারিকৃত সামরিক শাসনের সময় রাষ্ট্রের কর্মকা- পরিচালনার জন্য যেসব আদেশ/ফরমান জারি করাও অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছিল। সঙ্গত কারণেই তাই আদালতের রায়কে অনুসরণ করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।ড. তারেক শামসুর রেহমান সংবিধান সংশোধন নিয়ে বিশেষ কমিটির ৫১ দফা সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপনের পর যে প্রশ্নটি আমার কাছে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে সরকার কি শেষ পর্যন্ত এককভাবে এসব সংশোধনী সংসদে পাস করিয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করবে? এর ফলে কি সঙ্ঘাত আরো বাড়বে না? তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি তথা চারদল হরতাল পালন করেছিল গত ৫ জুন। এখন ১২ ও ১৩ জুন লাগাতার ৩৬ ঘণ্টা হরতাল হলো। সংবিধান সংশোধনী নিয়ে দেশ তাহলে কোন দিকে যাচ্ছে? এমনিতেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো নয়। মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কের কোটা অতিক্রম করেছে। রেমিট্যান্সের প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হয়নি। সামনে রমজান। মানুষ আছে আতঙ্কে। সুশাসন নিয়েও কথা আছে। এই যখন পরিস্থিতি তখন সংবিধান সংশোধন নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা জটিলতা।
সংবিধান কোনো ব্যক্তি বা দলের স্বার্থে পরিবর্তন হতে পারে না। উচ্চ আদালতে একাধিক রায়ের ফলে সংবিধান সংশোধন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। সমসাময়িক কালে উচ্চ আদালতের তিনটি রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ আদালত সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছে। এর ফলে আদালতের দৃষ্টিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেমনি অবৈধ, ঠিক তেমনি ১৯৭৫ সালে ও ১৯৮২ সালে জারিকৃত সামরিক শাসনের সময় রাষ্ট্রের কর্মকা- পরিচালনার জন্য যেসব আদেশ/ফরমান জারি করাও অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছিল। সঙ্গত কারণেই তাই আদালতের রায়কে অনুসরণ করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
সরকার একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ওই কমিটিতে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব থাকলেও, তারা দীর্ঘ ২৭টি বৈঠকের একটিওতে অংশগ্রহণ করেনি। তবে বিএনপি নেতাদের বক্তৃতায় সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে তাদের কিছু মতামত পাওয়া গেছে। যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার প্রশ্নে তারা মতামত দিয়েছেন। কিন্তু বিশেষ কমিটির তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করার প্রস্তাব করেছে। এই দুই পরস্পরবিরোধী মতামত জাতিকে আরো সঙ্ঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে। যদিও বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিএনপিকে সংসদে এসে প্রস্তাব উত্থাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি এ কাজটি করতে পারে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সরকার বিএনপির একটি প্রস্তাব গ্রহণ করতে নাও পারে। সেখানেই বিএনপির সার্থকতা। তারা জাতিকে জানাতে পারবে সরকার তাদের একটি প্রস্তাবও গ্রহণ করেনি। তবে একটা সমঝোতা প্রয়োজন। প্রয়োজন নূ্যনতম ঐকমত্য। যেসব প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে যার জবাব খোঁজা অত্যন্ত জরুরি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। যুক্ত হচ্ছে উচ্চ আদালতের একটি রায়। কিন্তু রায়ে এ কথাটাও বলা হয়েছিল যে আরো দুটো টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। সুপারিশে এটি নেই। তাই সঙ্গত কারণেই সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়_ এই অভিযোগ কাটিয়ে ওঠা এখন কঠিন হবে। সংবিধানে মাত্র দু'টার্মের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে, এ ধরনের বিধান রাখা যায় না। এমনকি মূল সংবিধানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যেভাবে আছে, সেটাও রাখা যাবে না। কেননা তাতে করে সংবিধান ৫৮ গ (৩) ধারা মতে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার কথা, যাতে বিএনপির রায়ের প্রবল আপত্তি। তাই সংবিধানে নয়, বরং সাংসদ একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। এই 'দল নিরপেক্ষ' এর ব্যাখ্যাও সাংসদকে দিতে হবে। সংসদ একটি 'এলডার্স কাউন্সিলের' এ প্রস্তাব করতে পারে, যেখানে চারজনের একটি টিম (দু'জন আওয়ামী লীগের দু'জন বিএনপির মনোনীত নিরপেক্ষ ব্যক্তি) নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এখানে কেউ এককভাবে 'প্রধান উপদেষ্টার' দায়িত্ব পালন করবেন না। বিকল্প হিসেবে তিনজন 'সিনিয়র সিটিজেন' (একজন প্রবীণ প্রদান বিচারপতি, একজন শিক্ষাবিদ, একজন সুশীল অথবা ব্যবসায়িক সমাজের প্রতিনিধি) নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বটি পালন করতে পারেন।
সংসদ যদি এ ধরনের একটি ফর্মুলা উপস্থাপন করে, তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতা ধরে রাখার যে অভিযোগ, সেই অভিযোগ থেকে সরকার নিষ্কৃতি পাবে। তখন সরকারের বিরুদ্ধে বলার কিছু থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প হিসেবে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার কথা বলেছে। এটাও গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা আগামী মাসেই সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে এ পদে নতুনদের নিয়োগ দিতে হবে। এখন সরকার যাদেরকেই নিয়োগ দিক, তাদের নিয়ে বিতর্ক উঠবে। তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা হবে। আর এটা তো ঠিক সামরিক ও বেসামরিক আমলারা তাদের অবসরের আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটি সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং দল ক্ষমতায় গেলেই তারা সরকারের একটা 'পদ বাগিয়ে নেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন পর্যায়ে গিয়ে উন্নীত হয়েছে যে এখানে 'নিরপেক্ষ' ব্যক্তি এখন খুঁজে পাওয়া ভার। 'জনতার মঞ্চ' করে আমরা সচিবালয়ের আমলাদের রাজনীতিতে টেনে এনেছিলাম। 'প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী' হিসেবে যে তত্ত্বই হাজির করা হোক না কেন, বাস্ততা হচ্ছে সচিবালয়ের আমলারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে গেছেন। কেউ এখন বিএনপির আমলা, কেউ আওয়ামী লীগের। কেউবা আবার কবিতা লিখে নেতানেত্রীর গুণগান করে তার ভবিষ্যৎ পথ পরিষ্কার করে রাখছেন। সুতরাং সরকার এখন যাদেরকেই এ পদে নিয়োগ দেবে, তাদের নিয়ে বিতর্ক হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময় একটি বড় ভূমিকা পালন করে। তাদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি। সুতরাং এ ধরনের সাংবিধানিক পদে নিযুক্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ন্যায় একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা যায়। প্রয়োজনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কর্ম পরিধির মধ্যও এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যায়। বিশেষ কমিটি যখন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পক্ষে অভিমত দিয়েছে, ঠিক তখনই অষ্টম সংশোধনী অর্থাৎ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কেন সংবিধান পরিপন্থী নয়, সে ব্যাপারে হাইকোর্ট একটি কারণ দর্শাও নোটিস জারি করেছেন। এখন হাইকোর্ট যদি একটি রায় দেন, তাহলে তা সংসদ সদস্যদের একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিতে পারে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্যরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তাতে করে হাইকোর্ট অবমাননার প্রশ্ন উঠতে পারে। উপরন্তু সুপারিশমালায় রয়েছে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলনীতিতে ফিরে যাওয়া, যেখানে বলা হয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা। এই ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পরস্পর বিরোধী। এমনকি সংবিধানের ২৫(২) ধারায় যেখানে বলা হয়েছে 'রাষ্ট্র ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক সংহত, সংরক্ষণ এবং জোরদার করিতে সচেষ্ট হইবেন' _ সংবিধানের এই অংশটুকু নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। পঞ্চম সংশোধনীতে সংবিধানে এটি সংযোজন করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে এই অংশটুকু ছিল না। বিশেষ কমিটি অবশ্যি এ ব্যাপারে কোনো সুপারিশ করেনি। পঞ্চম সংশোধনী এখন উচ্চ আদালত কর্তৃক বাতিল হয়ে যাওয়ায়, যে কেউ এখন সংবিধানের ২৫(২) ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুপারিশে বলা হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে 'বাঙালি' এবং নাগরিক হিসেবে 'বাংলাদেশি' হিসেবে পরিচিত হবেন। এটা কি নতুন করে আবারো বিতর্ক সৃষ্টি করবে না? পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী ১৩টি নৃগোষ্ঠী কি নিজেদের 'বাঙালি' ভাববে? এই বিতর্ক তো বেশ পুরনো। এই বিতর্কের সূত্র ধরেই এক সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছিল। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমারা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘ অসন্তোষের অবসান হয়েছিল আওয়ামী লীগের সময়েই ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অসন্তোষের একটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে গঠন করেছে ইউপিডিএফ, যারা অধিক স্বায়ত্তশাসন চায়। পাহাড়িদের বাঙালি বলা যাবে না। তারা বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে এবং জাতি হিসেবেও। অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতা গ্রহণ, কিংবা সংরক্ষিত নারী আসন নিয়েও কথা আছে।
সরকার এককভাবে যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা বিতর্কের মাত্রা বাড়াবে। অভিযোগ উঠেছে বিশেষ কমিটি এর আগে দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, প্রধান বিচারপতি, আইনজ্ঞ কিংবা সুশীল সমাজের যাদের সঙ্গেই কথা বলেছেন, তাদের কারো মতামতই গ্রহণ করা হয়নি। পত্রিকায় প্রকাশিত এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে তা সত্যিই দুঃখজনক। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে কি সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা লোক দেখানো ছিল? বিশেষ কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রশ্নে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। কিন্তু কমিটি যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন, যখন প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মতামত দিলেন, কমিটির রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যই প্রতিফলিত হলো। এতে করে কমিটির নিরপেক্ষতা রক্ষিত হলো কি?
প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের কথা না বললেও পারতেন। জাতি হিসেবে আমরা এখনো বিভক্ত। প্রতিটি ইস্যুতে আমাদের এই বিভক্তি লক্ষ্য করার মতো। পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা গড়ে ওঠেনি। সরকারে থাকলে যে সহনশীল হতে হয়, তার দৃষ্টান্ত আমরা দেখাতে পারিনি। আমরা নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা থেকে সবকিছু ভাবতে পছন্দ করি এবং সেভাবেই দেখতে চাই। এই প্রবণতা ২০০৬ সালে চারদলীয় জোটের ক্ষমতা ছাড়ার পর চরম সঙ্কটের জন্ম দিয়েছিল। দেশ আবারো সেদিকে যাচ্ছে কি না, এ প্রশ্ন এখন অনেকের।
উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অগণতান্ত্রিক হিসেবে অভিহিত করেছে। উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে কথা বলা যাবে না। কিন্তু আদালত সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে না। তারা মতামত দিতে পারে। সংবিধান পরিবর্তন করবে সংসদ। সংসদ এই কাজটিই এখন করছে। সংসদ সদস্যরা উচ্চ আদালতের রায়কে বিবেচনায় নিয়ে নতুন একটি ফর্মুলা দিতে পারে। কেননা আমরা আমাদের মানসিকতা এখনো পরিবর্তন করিনি। যারা ক্ষমতায় থাকে, তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। সংবিধানে বিসমিল্লাহ রাখা না রাখা নিয়ে যে বিতর্ক, এই বিতর্ক চলতে দেয়া ঠিক না। মৌলবাদীরা এটা থেকে ফায়দা ওঠাতে পারে। সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে তাই একটি সমঝোতা ও ঐকমত্য খুবই জরুরি।
ড. তারেক শামসুর রেহমান : অধ্যাপক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
0 comments:
Post a Comment