রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বিতর্ক না হলেই ভালো হতো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত অধ্যাপক পিয়াস করিমের মৃতদেহ শহীদ মিনারে আনার অনুমতি দিল না। এটা ভালো হয়েছে, কী মন্দ হয়েছে আমি এই বিতর্কে যাব না। কিন্তু বাস্তবতা যা তা হচ্ছে পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নিয়ে আসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যা ঘটল, এই মার্কিন মুলুকে অবস্থান করে আমার তাতে কষ্টই বেড়েছে বেশি। এর কী আদৌ কোনো প্রয়োজন ছিল? পিয়াস করিম বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো বুদ্ধিজীবী নন। এমনকি তিনি কোনো দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেননি। তার কোনো উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ বা প্রকাশনা নেই, যাতে করে ৩ প্রজন্ম তা পড়ে বা তা ধারণ করে উপকৃত হতে পারে। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন, তাও মাত্র ৭-৮ বছর। ওই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মান জানাতে পারত। এমনকি ব্র্যাক সেন্টারেও তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া যেত। সেটাই বরং শোভন ছিল। এখন তার মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে লেখালেখি, তার পিতার পরিচয় টেনে আনা কিংবা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে তিনি কী বলেছেন, তা উল্লেখ করাÑ এসবই আমাদের অসুস্থ মানসিকতার পরিচয়। তিনি যা মিডিয়ায় বলেছেন, তাও গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির সমালোচনা করতে নেই। জীবনাবসানের মধ্যে দিয়ে তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে চলে যান। তাই কোনো মৃত ব্যক্তির অতীত ইতিহাস নিয়ে আমরা ঘাঁটাঘাঁটি করি না। কেননা তিনি তখন সমালোচনার ঊর্ধ্বে চলে যান। কিন্তু যখন পিয়াস করিমের বাবার স্বাধীনতা যুদ্ধের ভূমিকা টেনে আনা হলো, তখন আমাকে তা কষ্ট দিয়েছে। পিয়াস করিম নিশ্চয়ই তার বাবার পরিচয়ে পরিচিত হননি। কিংবা বাবার ভূমিকার জন্য আমরা তাকে দায়ীও করব না। এটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে যে, টক-শোর মাধ্যমেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। ৭-৮ বছর আগে মানুষ তাকে চিনত না। এখন চেনে এবং তা মিডিয়ার কল্যাণেই। তিনি বিএনপির পক্ষে কথা বলতেন। বিএনপি সমর্থকদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি যেতেন। তবে এক সময় মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক কমিটির সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন। এমনও শোনা গেছে, ছাত্রাবস্থায় তিনি সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির সমর্থক ছিলেন। এসব নিয়ে আলোচনা এখন মূল্যহীন। একজন মানুষের অতীত পরিচয় থাকতেই পারে। সেই অতীত ভূমিকা বিতর্কিত ছিল কি না, এটা বর্তমানকে দিয়ে বিচার করা যাবে না। তার বর্তমান পরিচয়ই আসল। বর্তমানে তিনি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ধারণ করেছিলেন। এতেও দোষের কিছু ছিল না। এ দেশের লাখ লাখ মানুষ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ধারণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনেক শিক্ষকও এই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পেশাজীবীদের একটা অংশও এই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাই পিয়াস করিম এই রাজনীতি ধারণ করে কোনো অন্যায় করেননি। কিন্তু তার মৃত্যু ও মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে যা ঘটেছে, তা এখন অনেকগুলো প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এল। এক. এই জাতি যে কত ‘বিভক্ত’, তা আবারও প্রমাণিত হলো। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার কোনো কোনো বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আহত করেছিল। ফলে ওই পক্ষের কাছে তিনি ‘বিতর্কিত’ ছিলেন। তাই তার মরদেহ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর সিদ্ধান্ত, একটি পক্ষের মনঃপূত হয়নি। এটাই স্বাভাবিক। এর মাঝে ‘রাজনীতি’ যে কাজ করেনি, তা বলা যাবে না। দুই. একটি প্রশ্ন উঠেছেÑ শহীদ মিনার তাহলে কার? শহীদ মিনারের দেখভাল, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কী এই দায়িত্বটি সুষ্ঠুভাবে পালন করে? খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে শুধু ভাষা আন্দোলনের মাসটিতে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তৎপর হয়। এরপর সারা বছর এদের তৎপরতা দেখা যায় না। বছরজুড়ে এখানে ভবঘুরে, দেহপসারিণী আর ভিক্ষুকদের ‘আশ্রয়স্থল’-এ পরিণত হয়। তখন দেখার কেউ থাকে না। এখন একজন পিয়াস করিমের মৃতদেহকে শ্রদ্ধা জানানোর প্রশ্নটি যখন এল, তখন আপত্তি তুলল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তথাকথিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। এর পেছনে যে ‘যুক্তিই থাকুক না কেন, এটা একটা বাজে সিদ্ধান্ত হয়ে রইল। আগামীতে বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যারা বরেণ্য ব্যক্তি, তবে সরকারবিরোধী, তাদের মৃত্যুর পর তাদের মরদেহ সম্মান জানানোর জন্য শহীদ মিনারে আনার কী অনুমতি দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ? তিন. কারা শহীদ মিনার ব্যবহার করতে পারবে, কাদের মৃতদেহ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আনা যাবে, সে ব্যাপারেই একটি নীতিমালা থাকা উচিত। না হলে বারবার আমরা এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হব এবং যারা সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত, তাদের মৃত্যুর পর শ্রদ্ধা জানানোর কোনো সুযোগ থাকবে না শহীদ মিনারে। চার. মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর স্থান শহীদ মিনার হতে পারে না। অন্য একটি উন্মুক্ত স্থান আমরা চিন্তা করতে পারি। শাহবাগ চত্বর একটি বিকল্প স্থান হতে পারে। চার. শহীদ মিনার এলাকাটির ব্যবস্থাপনা তদারকির জন্য একটি বিকল্প কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এই এলাকাটিকে ঘিরে একটি ‘বলয়’ প্রতিষ্ঠা করা যায়, যেখানে ভাষা আন্দোলন শুধু নয়, ১৯৪৭-পরবর্তী প্রতিটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার ‘ইতিহাস’ সংরক্ষিত থাকবে। পাঁচ. অধ্যাপক পিয়াস করিমের মৃত্যুর পর তার মৃতদেহের প্রতি সম্মান জানানো নিয়ে যা ঘটল, তাতে আমি নিজেই এখন থেকে আতঙ্কিত। আমি নিজেও চাই না আমার মৃত্যুর পর আমার মরদেহ শহীদ মিনার কিংবা আমার কর্মস্থল জাহাঙ্গীরনগরে নিয়ে যাওয়া হবে। এর কোনো প্রয়োজন নেই। ছয়. পিয়াস করিমের মৃত্যুর পর এখনো লেখালেখি চলছে। বিবৃতি চলছে। এর অবসান হওয়া প্রয়োজন। জীবদ্দশায় যিনি সম্মান পান না। মৃত্যুর পর তাকে সম্মান দেখানো অর্থহীন।
আমরা অনেক বিষয় নিয়ে এখনো বিতর্ক করছি। এ ধরনের বিতর্ক জাতি হিসেবে আমাদের সম্মানকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে না। চিরস্থায়ীভাবে এ ধরনের বিতর্কের অবসান হওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তোলা অর্থহীন। ৪৩ বছর পার করলাম এখনো যদি আমাদের শুনতে হয় কে মুক্তিযোদ্ধা, কে মুক্তিযোদ্ধা নন, এর চেয়ে আর দুঃখজনক কিছু থাকতে পারে না। এই প্রশ্ন নিয়ে এত বছর পর জাতিকে বিভক্ত করাও ঠিক নয়। আমরা জানি কারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। ইতিহাস তাদের ‘শাস্তি’ দিয়েছে। তরুণ প্রজন্ম এই অপশক্তিকে ঘৃণা করে। শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের উল্লাস এর বড় প্রমাণ। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জাতিকে বিভক্ত নয়, বরং বিরোধিতাকারীদের ঘৃণা করাই মঙ্গল। এই কাজটি সম্মিলিতভাবে করাই উচিত। আমাদের ব্যর্থতা আমরা এটা পারিনি। কিন্তু তাই বলে জাতিকে বিভক্ত কেন? দ্বিতীয়ত, বিরোধী দলকে আস্থায় নেয়াটা জরুরি। এটাও আমরা পারিনি। তৃতীয়ত, রাজনীতির নতুন এক সংস্কৃতির আমরা জন্ম দিয়েছি। নির্বাচনে একটা বড় জনগোষ্ঠীর অংশ না থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন হয়েছে এবং সরকার সাংবিধানিকভাবে সরকার পরিচালনা করছে। এখানে ‘সকল দলের অংশগ্রহণের যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি’ তা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছি। এখানে কার ভুল বেশি, এটা নিয়ে আমরা এখনো বিতর্ক করছি। কিন্তু আমরা ভুলে যাই একটা ভুল সিদ্ধান্ত হাজারটা ভুল সিদ্ধান্তের জন্ম দিতে পারে। জাতির জন্য তা কখনো কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না। আমরা টক-শোতে এই ভুলগুলো শোধরানোর কথা বলি। দেয়ালের লিখন থেকে শিখতে বলি। কিন্তু ইতিহাস থেকে, দেয়ালের লিখন থেকে কেউ কিছু শেখে না, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতার কারণেই জাতি হিসেবে আমরা আজ বিভক্ত। এই বিভক্তিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে পিয়াস করিমের মরদেহের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়ে। আজ যখন যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে সময় কাঁটাতে এসেছি, তখন এ ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি আমাকে হতে হয়েছে। প্রতিবারই হয়। গেল বারও হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতির আদৌ পরিবর্তন হবে, এটা কেন জানি বিশ্বাস করতে পারছি না। তাহলে কি দেশ এভাবেই চলবে? একটা সম্ভাবনার দেশ ছিল আমাদের এই দেশটি। কিন্তু সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে পারছি না। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নতুন করে আবার তৈরি করা হচ্ছে। দিব্যি দিয়েই বলতে পারি যদি এই সরকারের পতন ঘটে কোনো একদিন, নয়া সরকার আবার নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের তালিকা তৈরি করবে! শিক্ষামন্ত্রী যতই ‘বড় কথা’ বলেন না কেন, জিপিএ ৫ এবং সংখ্যা বাড়িয়ে যে শিক্ষার মানের উন্নতি করা যায় না, এটা নিশ্চয়ই তিনি উপলব্ধি করেন। হয়তো রাজনৈতিক কারণেই বলতে পারেন না প্রকাশ্যে। যখন তিনি বলেন, ‘অতীতে শিক্ষার কোনো মান ছিল না’, তখন তার জন্য আমার কষ্ট হয়। একজন শিক্ষামন্ত্রী এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। এভাবে বাহবা নেওয়া যায় না। ইদানীং তার নানা বক্তব্য তাকে বিতর্কিত করেছে। উচ্চশিক্ষা নিয়ে আমি হতাশাগ্রস্ত। এখানে এসে দেখলাম সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজগুলোকে আবার বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করার। এটিও একটি ভুল সিদ্ধান্ত। ইডেন বা ঢাকা কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে? কারা সেখানে পড়াবে? যেখানে নিয়মিত কাস হয় না, সেখানে শিক্ষার মানের উন্নতি হবে কীভাবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একখানা সার্টিফিকেট দিয়ে আমরা এতে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে কী এক ধরনের প্রতারণা (২) করব না? জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকেন্দ্রীকরণ ভালো। এ জন্য সাতটি বিভাগীয় শহরে নতুন করে সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যায়। জগন্নাথ কলেজকে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা যায়, তাহলে ঢাকা বা ইডেন কলেজকে সামনে রেখে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করাও সম্ভব। তবে আলাদা একটি মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় (ইডেন কলেজ থেকে অনেক সময় এ দাবি উঠেছে) প্রতিষ্ঠা করার দাবি অযৌক্তিক। একুশ শতকে এসে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে বিভক্তিকে সমর্থন করা যায় না। যদি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হয়, তাহলে বিভাগীয় শহরে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সেখানকার কলেজগুলোকে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর এ দিকে দৃষ্টি নেই। তার দৃষ্টি জিপিএ ৫ সংখ্যা বাড়ানো। এখানেও রাজনৈতিক মানসিকতা কাজ করছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের মধ্যে কোনো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখানেও বিভক্তি লক্ষ করা যায়। আজ যখন দেখি শহীদ মিনারে পুলিশ, যখন শ্রদ্ধা জানানোকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষ তৈরি হয়ে গেছে, তখন এসব প্রশ্ন এসে ভিড় করে আমাদের মনে। ছোট্ট একটি ঘটনাকে এখন সরকার সমর্থকরা ‘বড়’ করল। সৃষ্টি হল বিতর্কের। আর এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল বড় দল দুটি। কী দুর্ভাগ্য এ জাতির! বিএনপির নেতারাও হুমকি দিলেন পিয়াস করিমের মরদেহটি শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার। এ ধরনের বক্তব্য কী যুক্তিসঙ্গত? যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন, কোনো রাষ্ট্রীয় পদকে যিনি ভূষিত হননি, মুক্তিযুদ্ধেও যার অবদান নেই, তার মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের এই আপত্তির ব্যাপারে সমর্থন রয়েছে প্রশাসনের। এই বিষয়টি অন্যভাবেও ‘সমাধান’ করা যেত। কিংবা বিএনপি তার প্রতি সম্মান জানানোর জন্য পল্টনে বিএনপির অফিসের সম্মুখের স্থানটি বেছে নিতে পারত। তাতে বিতর্ক কম হতো। এখন এটা অনেকটা জেদাজেদির পর্যায়ে চলে গেছে। রাজনীতিতে যে অস্থিরতা রয়েছে, এই ঘটনায় এটা একটা বড় প্রমাণ। বিএনপি সুযোগ খুঁজছে আন্দোলনে যাওয়ার। সরকারের উচিত হবে না ‘রাজনীতির বলটি’ বিএনপির হাতে তুলে দেওয়ার। আরও অনেক ইস্যু রয়েছে। সরকার সেদিকে নজর দিক। মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথাও সরকার ভাবতে পারে। পিয়াস করিমের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ঘটনা নিয়ে যা ঘটল, তা দুঃখজনক ও অনাকাক্সিক্ষত। এ ঘটনা এখানেই শেষ হোকÑ বিদেশ থেকে এটাই প্রত্যাশা করি। ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র Daily Amader Somoy 20.10.14

0 comments:

Post a Comment