রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

আমি লজ্জিত দুঃখিত ও অপমানিত

আমি লজ্জিত, দুঃখিত ও অপমানিত বোধ করছি। এই প্রবাসে থেকে যখন খবর দেখি একটি সংগঠন ৯ জন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীকে ‘বুদ্ধি বেশ্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে শহীদ মিনারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে, তখন লজ্জায় আমার মাথা হেঁট হয়ে যায়। কারণ তাদের ‘অপরাধ’ ছিল, তারা প্রয়াত বুদ্ধিজীবী পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আনার দাবি জানিয়েছিলেন। সেটা হয়নি। এটা নিয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কম ‘নাটক’ করেনি। তারা অনুমতি দেয়নি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নামে (সেইসঙ্গে সিপি গং) একটি সংগঠনের ব্যানারে এদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা এবং এদের ছবিতে কালি লেপন করে তা টানিয়ে দেয়া। এ ঘটনায় আমি দুঃখিতও বটে।কেননা সরকারি বুদ্ধিজীবী হিসেবে যারা পরিচিত, তাদের একজনও এর প্রতিবাদ করলেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও মুখ খুললেন না। পিয়াস করিমের ‘অধ্যায়’ শেষ হয়ে গেছে। তিনি কবরে শায়িত হয়েছেন। কিন্তু তাকে নিয়ে যা ঘটল, তার রেশ রয়ে যাবে আরও অনেক দিন।যে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং যে শব্দ ব্যবহার করে তাদের অপমান করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। একজন ছাড়া বাকি আটজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন এবং বিএনপির কোনো ফোরামে উপস্থিত থেকে বক্তব্যও রাখেন না। বরং বিএনপি এবং জামায়াতবিরোধী একটি পরিচিতি সবার আছে। এদের মাঝে পিয়াস করিমের স্ত্রী অধ্যাপক আমেনা মহসিনের নামও আছে। অথচ অধ্যাপক আমেনা দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ইস্যুতে কিংবা নৃ-গোষ্ঠীর দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে তার অবস্থান ছিল বিএনপিবিরোধী শিবিরে। সাম্প্রতিক টকশোতে আমার সঙ্গে একাধিকবার তিনি ছিলেন। কিন্তু সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে বিএনপির সমালোচনা করতেও তিনি ভোলেননি।অপরদিকে মতিউর রহমান চৌধুরী কিংবা নূরুল কবিরের মতো সম্পাদকরা বিএনপিকে সমর্থন করেন। এটা বোধকরি কেউই বিশ্বাস করেন না। একাধিকবার মতি ভাইয়ের সঙ্গে এ নিয়ে আমার ‘বিতর্ক’ হয়েছে। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আমার ‘অবস্থান’কে তিনি সমালোচনা করতেও দ্বিধা করেননি। অধ্যাপক আসিফ নজরুলের ‘অবস্থান’ মানুষ জানে। বারবার তিনি বিএনপির সমালোচনা করেছেন। বাকিদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এরা কেউই বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও, এটা সত্য ওরা সরকারের সমালোচনা করতেন।তাহলে কী সরকারের সমালোচনার জন্যই তাদের অপমানিত হতে হলো। সরকারের নীতির সমালোচনা করা কি অপরাধ? একটি গণতান্ত্রিক সমাজে সরকার সব কাজ ভালো করে, এটা বলা যায় না। সরকারের সমালোচনা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অংশ। সরকারের যদি সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা না থাকে, যদি সরকার অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে, তাহলে তো সেই সরকারকে গণতান্ত্রিক সরকার বলা যাবে না। সরকারের ‘সহ্য’ ক্ষমতা থাকতে হয়। টকশোতে আমরা সরকারের ভুলত্রুটিগুলো ধরিয়ে দিই। এটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির একটি অংশ। অধ্যাপক পিয়াস করিমকে নিয়ে যা হয়ে গেল, তা শুধু দুঃখজনকই নয়, অনাকাক্সিক্ষতও বটে। অধ্যাপক করিম সব সময় তার বক্তব্যে কিংবা তার মূল্যায়নে সৎ ছিলেন। এটা আমি বলব না। তিনি বিএনপির রাজনীতিকে সমর্থন করতেন। তাতেও আমি কোনো অন্যায় দেখি না। কিন্তু অন্যায় দেখি যখন তাকে নিয়ে ‘বিতর্ক’ হয়। তাকে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে তুলনা করা হয়। রাজাকার বলা হয়। স্বাধীনতাবিরোধী বলা হয়। এটাই অন্যায়।ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির সমালোচনা করতে নেই। জীবনাবসানের মধ্যে দিয়ে তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে চলে যান। তাই কোনো মৃত ব্যক্তির অতীত ইতিহাস নিয়ে আমরা ঘাঁটাঘাঁটি করি না। কেননা তিনি তখন সমালোচনার ঊর্ধ্বে চলে যান। কিন্তু যখন পিয়াস করিমের বাবার স্বাধীনতা যুদ্ধের ভূমিকা টেনে আনা হলো, তখন আমাকে তা কষ্ট দিয়েছে। পিয়াস করিম নিশ্চয়ই তার বাবার পরিচয়ে পরিচিত হননি। কিংবা বাবার ভূমিকার জন্য আমরা তাকে দায়ীও করব না। এটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে, টকশোর মাধ্যমেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। সাত-আট বছর আগে মানুষ তাকে চিনত না। এখন চেনে এবং তা মিডিয়ার কল্যাণেই। তিনি বিএনপির পক্ষে কথা বলতেন। বিএনপি সমর্থকদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি যেতেন। তবে একসময় মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক কমিটির সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন। এমনও শোনা গেছে, ছাত্রাবস্থায় তিনি সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টির সমর্থক ছিলেন। এসব নিয়ে আলোচনা এখন মূল্যহীন।একজন মানুষের অতীত পরিচয় থাকতেই পারে। সেই অতীত ভূমিকা বিতর্কিত ছিল কিনা- এটা বর্তমানকে দিয়ে বিচার করা যাবে না। তার বর্তমান পরিচয়ই আসল। বর্তমানে তিনি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ধারণ করেছিলেন। এতেও দোষের কিছু ছিল না। এ দেশের লাখ লাখ মানুষ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ধারণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনেক শিক্ষকও এ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পেশাজীবীদের একটি অংশও এ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সুতরাং পিয়াস করিম এ রাজনীতি ধারণ করে কোনো অন্যায় করেননি। কিন্তু তার মৃত্যু ও মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে যা ঘটেছে, তা এখন অনেক প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এলো। এ জাতি যে কত ‘বিভক্ত’, তা আবারও প্রমাণিত হলো। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার কোনো কোনো বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আহত করেছিল। ফলে ওই পক্ষের কাছে তিনি ‘বিতর্কিত’ ছিলেন।সুতরাং তার মরদেহ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর সিদ্ধান্ত, একটি পক্ষের মনঃপূত হয়নি। এটাই স্বাভাবিক। এর মাঝে ‘রাজনীতি’ যে কাজ করেনি, তা বলা যাবে না। একটি প্রশ্ন উঠেছে, শহীদ মিনার তাহলে কার? শহীদ মিনারের দেখভাল, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কি এ দায়িত্বটি সুষ্ঠুভাবে পালন করে? খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে, শুধু ভাষা আন্দোলনের মাসটিতে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তৎপর হয়। এরপর সারা বছর এদের তৎপরতা দেখা যায় না। বছরজুড়ে এখানে ভবঘুরে, দেহপসারিনী, আর ভিক্ষুকদের ‘আশ্রয়স্থল’-এ পরিণত হয়। তখন দেখার কেউ থাকে না।এখন একজন পিয়াস করিমের মৃতদেহকে শ্রদ্ধা জানানোর প্রশ্নটি যখন এলো, তখন আপত্তি তুলল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তথাকথিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ সিদ্ধান্তটি নিয়েছিল। এর পেছনে যে ‘যুক্তি’ই থাকুক না কেন, এটা একটি বাজে সিদ্ধান্ত হয়ে রইল। আগামীতে বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যারা বরেণ্য ব্যক্তি, তবে সরকারবিরোধী, তাদের মৃত্যুর পর তাদের মরদেহ সম্মান জানানোর জন্য শহীদ মিনারে আনার কি অনুমতি দেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ? কারা শহীদ মিনার ব্যবহার করতে পারবে, কাদের মৃতদেহ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আনা যাবে, সে ব্যাপারে একটি নীতিমালা থাকা উচিত। না হলে বারবার আমরা এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো এবং যারা সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত, তাদের মৃত্যুর পর শ্রদ্ধা জানানোর কোনো সুযোগ থাকবে না শহীদ মিনারে। মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর স্থান শহীদ মিনার হতে পারে না। অন্য একটি উন্মুক্ত স্থান আমরা চিন্তা করতে পারি। শাহবাগ চত্বর একটি বিকল্প স্থান হতে পারে। শহীদ মিনার এলাকাটির ব্যবস্থাপনা তদারকির জন্য একটি বিকল্প কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এ এলাকাটিকে ঘিরে একটি ‘বলয়’ প্রতিষ্ঠা করা যায়। যেখানে ভাষা আন্দোলন শুধু নয়, ১৯৪৭-পরবর্তী প্রতিটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার ‘ইতিহাস’ সংরক্ষিত থাকবে।অধ্যাপক পিয়াস করিমের মৃত্যুর পর তার মৃতদেহের প্রতি সম্মান জানানো নিয়ে যা ঘটল, তাতে আমি নিজেই এখন থেকে আতঙ্কিত। আমি নিজেও চাই না আমার মৃত্যুর পর আমার মরদেহ শহীদ মিনার কিংবা আমার কর্মস্থল জাহাঙ্গীরনগরে নিয়ে যাওয়া হবে। এর কোনো প্রয়োজন নেই। পিয়াস করিমের মৃত্যুর পর এখনও লেখালেখি চলছে। বিবৃতি চলছে। এর অবসান হওয়া প্রয়োজন। জীবদ্দশায় যিনি সম্মান পান না, মৃত্যুর পর তাকে সম্মান দেখানো অর্থহীন। আমরা অনেক বিষয় নিয়ে এখনও বিতর্ক করছি। এ ধরনের বিতর্ক জাতি হিসেবে আমাদের সম্মানকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে না। চিরস্থায়ীভাবে এ ধরনের বিতর্কের অবসান হওয়া প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তোলা অর্থহীন। ৪৩ বছর পার করলাম- এখনও যদি আমাদের শুনতে হয় কে মুক্তিযোদ্ধা, কে মুক্তিযোদ্ধা নন, এর চেয়ে আর দুঃখজনক কিছু থাকতে পারে না। এ প্রশ্ন নিয়ে এত বছর পর জাতিকে বিভক্ত করাও ঠিক নয়।আমরা জানি, কারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। ইতিহাস তাদের ‘শাস্তি’ দিয়েছে। তরুণ প্রজন্ম এ অপশক্তিকে ঘৃণা করে। শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের উল্লাস এর বড় প্রমাণ। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জাতিকে বিভক্ত নয় বরং বিরোধিতাকারীদের ঘৃণা করাই মঙ্গল। এ কাজটি সম্মিলিতভাবে করাই উচিত। আমাদের ব্যর্থতা আমরা এটা পারিনি। কিন্তু তাই বলে জাতিকে বিভক্ত কেন? বিরোধী দলকে আস্থায় নেয়াটা জরুরি। এটাও আমরা পারিনি। রাজনীতির নতুন এক সংস্কৃতির আমরা জন্ম দিয়েছি। নির্বাচনে একটা বড় জনগোষ্ঠীর অংশ না থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন হয়েছে এবং সরকার সাংবিধানিকভাবে সরকার পরিচালনা করছে এখানে ‘সব দলের অংশগ্রহণের যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি’, তা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছি। এখানে কার ভুল বেশি, এটা নিয়ে আমরা এখনও বিতর্ক করছি। কিন্তু আমরা ভুলে যাই, একটা ভুল সিদ্ধান্ত হাজারটা ভুল সিদ্ধান্তের জন্ম দিতে পারে। জাতির জন্য তা কখনও কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না। আমরা টকশোতে এ ভুলগুলো শোধরানোর কথা বলি। দেয়ালের লেখা থেকে শিখতে বলি। কিন্তু ইতিহাস থেকে, দেয়ালের লিখন থেকে কেউ কিছু শেখে না, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আর এ বাস্তবতার কারণেই জাতি হিসেবে আমরা আজ বিভক্ত। এ বিভক্তিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে পিয়াস করিমের মরদেহের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়ে। আরও দুঃখজনক ঘটনা ঘটল ৯ জন বরেণ্য ব্যক্তিকে অপমানিত করে। জাতি হিসেবে আমরা কত অকৃতজ্ঞ।ওইসব ব্যক্তির বক্তব্য, তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আমরা প্রশ্ন করতে পারি। সমালোচনা করতে পারি। প্রবন্ধ লিখতে পারি। কিন্তু যুদ্ধাপরাধী বলা কি ঠিক? এ রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমাদের বদলাতে হবে। না হলে জাতি হিসেবে আমরা দাঁড়াতে পারব না। এতে করে বিস্মৃত হবে জাতি গঠন। যারা সরকারের কর্মকা-ের সমালোচনা করেন, তাদের সবাইকে যুদ্ধাপরাধী বলা একটি ‘ফ্যাশন’ হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। কেউ কেউ এটা করেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা ভুলে যাই, কোনো এক সময় অন্য পক্ষ যদি ক্ষমতায় আসে, তারাও ঠিক একই কাজ করবে। এরই মধ্যে আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অনেক ক্ষতি করে ফেলেছি। একদলীয় নির্বাচন হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনার সঙ্গে মেলে না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে আমরা জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছি। ৪৩ বছর পর আবারও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটা কোনো ভালো খবর নয়।আমি তাই ৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করে তাদের সমালোচনা করা, ইত্যাদি ঘটনার নিন্দা জানাই। আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবীরাও এর সমালোচনা করবেন। না করলে তারাও সমালোচিত হবেন। এ ঘটনায় আমি নিজেও বিব্রতবোধ করছি। কেননা সরকারের অনেক কর্মকা- আমি সমালোচনা করেছি। এ ঘটনার পর আমার বারবার মনে হয়েছে, ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’দের তালিকায় আমার নামও সংযোজিত হতে পারে আগামীতে! নিঃসন্দেহে এটা দুঃখজনক ঘটনা। যাকে নিয়ে এত ঘটনা, তিনি চলে গেছেন না ফেরার জগতে। এর মধ্যে দিয়ে সব বিতর্কের অবসান হবে, এটাই প্রত্যাশা করি। Daily ALOKITO BANGLADESH 19.10.14

0 comments:

Post a Comment