রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ছিটমহল বিনিময়ের সিদ্ধান্ত ও প্রসঙ্গ কথা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের অগ্রগতি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছিটমহল বিনিময়ের সিদ্ধান্তটি শেষ পর্যন্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে। ভারতে মোদি সরকারের সময়ে এই সিদ্ধান্তটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস ও খোদ বিজেপি এই ছিটমহল বিনিময়ের বিরোধী ছিল। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত তাদের আপত্তি তুলে নেন। ভারতীয় লোকসভার বিদেশ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লোকসভার চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই এই বিলটি পাস হবে। এরপর এটি যাবে রাজ্যসভায়। সেখানেও কোনো আপত্তি থাকবে না। এর মধ্যদিয়ে ২০১৫ সালের অধীবেশনেই ভারতীয় সংবিধানের সংশোধনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এর ফলে ১৬২টি ছিটমহলের ৫১ হাজার মানুষ উপকৃত হবে। এই ১৬২টি ছিটমহলের মধ্যে ১১১টি বাংলাদেশি ছিটমহল ভারতের অভ্যন্তরে রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের পূর্ণ কর্তৃত্ব এখন বহাল হবে। অন্যদিকে ৫১টি ভারতীয় ছিটমহল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রয়েছে, যা ভারত এখন ফিরে পাবে। বলা ভালো দীর্ঘদিন এই ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি ঝুলে ছিল। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে শেখ মুজিব ও ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিনিময়ে বাংলাদেশ ভারতকে তার এলাকা ফেরত দিলেও দীর্ঘ ৪০ বছরে বাংলাদেশ তার এলাকা ফেরত পায়নি। এখন চূড়ান্তভাবে ছিটমহল বিনিময়ের সিদ্ধান্তটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। তবে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে আরো বেশকিছু বিষয় রয়েছে, সে ব্যাপারেও ভারতের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন। বাংলাদেশের মানুষ মনে করে ছিটমহল বিনিময়ের মতো বাকি সমস্যাগুলো সমাধানে ভারত উদ্যোগ নেবে। ভারত বড় দেশ। বড় অর্থনীতি। আমাদের উন্নয়নে ভারতের ভূমিকাকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ভারত সমমর্যাদার দৃষ্টিতে বাংলাদেশকে দেখছে না। বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ ভারতকে যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশের যে প্রত্যাশা সেই প্রত্যাশা পূরণে ভারত এগিয়ে আসেনি। বরং ভারতীয় নীতি-নির্ধারকদের ভূমিকায় একটি বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব আমরা লক্ষ্য করেছি। মোদি নির্বাচনের আগে বার বার বলে আসছিলেন ভারতে বাংলাদেশিরা অবৈধভাবে বসবাস করেন। পশ্চিমবাংলাকে তিনি টার্গেট করেছেন। ক্ষমতাসীন হয়েই তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় আলাদা একটি সেল খুলেছেন, যাদের কাজ হবে তথাকথিত 'বাংলাদেশি' অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা ও মনিটর করা। কিছুদিন আগে বিজেপির সভাপতি ও মোদির দক্ষিণহস্ত বলে পরিচিত অমিত শাহ কলকাতায় বলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ অধিবাসী পাঁচগুণ বেড়েছে। সারদা কেলেঙ্কারির ঘটনায় বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর নাম এসেছিল। বলা হয়েছিল জামায়াতের মাধ্যমে জঙ্গি তৎপরতায় অর্র্থায়ন করেছে সারদা। ভারতের সিবিআই বিষয়টি তদন্ত করছে। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে তাদের অজ্ঞতার কথা জানিয়েছে। বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর, সেহেতু সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখনও বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেছিল সমস্যাগুলোর সমাধানের ব্যাপারে তিনি একটি বড় উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু তারপরও কংগ্রেস নেতাদের তিনি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। অর্থমন্ত্রী থাকাকালে ভারতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি বাংলাদেশের বিষয়টি নিজেই দেখভাল করতেন_ এরকম একটি কথা আমরা বরাবরই শুনতে পেয়েছি। একজন বাঙালি হয়ে বাংলাদেশের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে তিনি পূর্ণ অবগত ছিলেন। তবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার ভূমিকা সীমিত থাকায় তিনি সমাধানের কোনো পথ বের করতে পারেননি। তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও সমস্যাগুলোর জট খোলেনি। আসলে ভারতের আমলাতন্ত্র অত্যন্ত শক্তিশালী। এই আমলারা নীতি-নির্ধারণে প্রভাব খাটায়। এই আমলাতন্ত্রের কারণেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ধীরে ধীরে তিক্ততায় পরিণত হয়েছিল। তাই ব্যক্তিগতভাবে প্রণব বাবু বাংলাদেশের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে 'সমব্যথী' থাকলেও সমস্যা সমাধানে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এমনকি ড. মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ২০১১ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন। প্রণব বাবুর মতো তিনিও আমাদের আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছিলেন যে সমস্যার সমাধান হবে। বিশেষ করে সীমান্ত হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি দিলি্ল ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত হত্যা হয়েছিল। তার ঢাকা সফরের সময়ই আমরা শুনেছিলাম মমতা ব্যানার্জির কারণে কোনো তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মমতা ব্যানার্জিকে রাজি করানোর দায়িত্বটি কেন্দ্রীয় সরকারের, বাংলাদেশ সরকারের এখানে কোনো ভূমিকা নেই। তিস্তার পানি বণ্টনের চুক্তি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই ১৯৭২ সাল থেকেই তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা চলে আসছে। দুবার ১৯৯৮ ও ২০০৭ সালে একটি চুক্তির কাছাকাছি আমরা চলে গিয়েছিলাম। দুই দেশের মধ্যে সমানভাবে পানি বণ্টন করে কিছু পানি নদীতে রেখে দেয়ার একটি সিদ্ধান্তে দুই দেশ একপর্যায়ে রাজিও হয়েছিল। তারপরও চুক্তি হয়নি। এখন মূল সমস্যা পশ্চিমবঙ্গের আপত্তি। এতে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা নেই। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্যা। আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। কিন্তু ভারত আমাদের সেই অধিকার নিশ্চিত করছে না। টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও ভারত আমাদের বার বার মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছে। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং একাধিকবার বলেছিলেন, ভারত এমন কিছু করবে না যাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? নয়া দিলি্লতে ইতোমধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সেখানে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার। প্রায় ৯ হাজার কোটি রুপিও ব্যয় করা হয়ে গেছে। বাঁধটি যদি নির্মাণ হয়, তাতে বাংলাদেশের কী ক্ষতি হবে, তা একাধিক সেমিনারে আলোচিত হয়েছে। এখানে আমাদের ব্যর্থতা আমরা শক্ত অবস্থানে যেতে পারছি না। জেসিসির যৌথ ইশতেহারে এসংক্রান্ত কোনো কথা বলা হয়নি। গঙ্গাচুক্তি আমরা করেছিলাম ১৯৯৬ সালে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। এর আগেই পদ্মায় পানি নেই। চুক্তি অনুযায়ী আমরা পানি পাচ্ছি না। ২০২৭ সালে লোকসংখ্যা বাড়বে তিনগুণ। যে বিপুল পানির চাহিদা থাকবে তার কী হবে? চুক্তি অনুযায়ী পর্যালোচনার সুযোগ আছে। কিন্তু সেই সুযোগটি আমরা নিচ্ছি কই? অতীতে কখনো আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা বোধ করিনি। সীমান্ত হত্যা আজো বন্ধ হয়নি। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরও একের পর এক সীমান্ত হত্যা হচ্ছে। এমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই যেখানে বিজেপির গুলিতে কোনো ভারতীয় নাগরিক মারা গেছেন। প্রতি মাসেই মারা যাচ্ছেন নিরপরাধ বাংলাদেশি নাগরিকরা। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশি মারা গেছেন, তার পরিসংখ্যান 'অধিকার'-এর কাছে আছে। একাধিকবার শীর্ষপর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। বার বার আমরা শুনেছি একটি কথা_ সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে। কিন্তু সেই হত্যা বন্ধ হয়নি। মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরও সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি। এর মূল কারণ হচ্ছে মানসিকতা। ভারতের নীতি-নির্ধারকরা বাংলাদেশকে সমমর্যাদার দৃষ্টিতে দেখছে না। বাংলাদেশকে তারা দাবিয়ে রাখতে চায়। ফলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি। একই কথা প্রযোজ্য ছিটমহল বিনিময়ের ক্ষেত্রেও। বাংলাদেশ তার আন্তরিকতা দেখিয়েছে। কিন্তু ভারত দেখায়নি। এমনকি ছিটমহল বিনিময়ের ক্ষেত্রে ভারত শেষ পর্যন্ত রাজি হলেও দীর্ঘ ৪০ বছর ছিটমহলের বাসিন্দারা অবর্ণনীয় ও মানবেতর জীবনযাপন করেছে। ভারতীয় রাজনীতিবিদরা এদিকে দৃষ্টি দেননি। তবে মমতা ব্যানার্জির সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবেই। কেননা কিছু 'শর্ত' মমতা ব্যানইর্জ জুড়ে দিয়েছেন। উপরন্তু প্রায় ২ লাখ কোটি রুপি ঋণ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের। এর সমাধান না হলে মমতা বেঁকে বসতে পারেন আবারো। ছিটমহলসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ভারতের সদিচ্ছা প্রমাণ করে না। ১০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল ভারত। প্রণব বাবু ঢাকায় এসে ২০ কোটি ডলার অনুদানের কথা বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঋণের টাকা দিয়ে তো প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না? ১৩টি প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতার অভাবে কিছু প্রকল্প এখনো আটকে আছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের রয়েছে বিশাল এক বাণিজ্য ঘাটতি। ২০০৯-১০ সালে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৯০ মিলিয়ন ডলার। আর ২০১০-১১ সালে তা এসে দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০১৩-১৪ সালের পরিসংখ্যান যখন আমাদের হাতে আসবে, ধারণা করছি তা ৪ মিলিয়ন ডলারের অঙ্ককে ছাড়িয়ে যাবে। ভারত মাঝেমধ্যে কিছু পণ্যের শুল্কমূল্য প্রবেশাধিকারের কথা বলে বটে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশ এসব পণ্যের অনেকই রপ্তানি করে না। ভারতের অশুল্ক বাধা দূর করা নিয়েও 'নানা কাহিনী' আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নানা ধরনের শুল্ক দূর করা যাচ্ছে না। ফলে ভারত বাংলাদেশের রপ্তানি সেই তুলনায় বাড়ছে না। শুধু ঘাটতি বাড়ছেই। এটা আমাদের জন্য শঙ্কার কারণ। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টির একটা সমাধান হয়েছে সত্য, কিন্তু আদৌ ২০১৫ সালেও আমরা বিদ্যুৎ পাব_ এ ব্যাপারটি আমি নিশ্চিত হতে পারছি না। বাংলাদেশ বড় ধরনের বিদ্যুৎ সঙ্কটের মুখে। বিদ্যুতের অভাবে উৎপাদন বন্ধ অনেক কারখানায়। অথচ ভারত যদি আন্তরিক হয়, তাহলে আমাদের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান সম্ভব। মহাজোট ও বর্তমান সরকারের গত ৬৮ মাসের ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক যদি আমরা পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখব ভারতের পাল্লা ভারী, আমাদের প্রাপ্তি কম। আমরা ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছি (ট্রান্সশিপমেন্ট অথবা করিডোর), কিন্তু ট্রানজিট 'ফি' এখনো নির্ধারণ হয়নি। বলা হচ্ছে ট্রানজিটের বিষয়টি বহুপাক্ষিকতার আলোকে দেখা হবে। কিন্তু দেখা গেল ভারত একপক্ষীয়ভাবে তা ব্যবহার করছে, ভুটান বা নেপাল এখনো ট্রানজিট পায়নি। ভারতের এ দুটো দেশকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার কথা। কিন্তু ইতোমধ্যে এই সুবিধা দুটো দেশকে নিশ্চিত করা হয়েছে_ এ কথা আমাদের জানা নেই। আগামীতে ভারতের 'সাতবোন' রাজ্যগুলোও আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করবে_ এসংক্রান্ত একটি সমঝোতাও স্বাক্ষরিত হয়েছে। অথচ আমাদের যে নূ্যনতম প্রাপ্তি, সে ব্যাপারে এতটুকু ভারতীয় উদ্যোগ আমরা লক্ষ্য করিনি। আজ তাই নরেন্দ্র মোদি এখন ভারতের সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছেন, আমরা চাইলে তার প্রতি সম্মান দেখিয়েই ভারত সমস্যাগুলোর সমাধানে উদ্যোগ নেবে। কেননা নরেন্দ্র মোদি সরকারের জন্য একটি বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশ বড় দরকার। ভারতের একগুঁয়েমির কারণে যদি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কেও অবনতি ঘটে, তাহলে তা থেকে সুবিধা নেবে জঙ্গিরা, বিশেষ করে আল-কায়েদা। জাওয়াহিরি তার একটি ভিডিও বার্তায় দক্ষিণ এশিয়া ও মিয়ানমারে আল-কায়েদার শাখা খোলার কথা ঘোষণা করেছেন। এটা ভারত ও বাংলাদেশের জন্য চিন্তার অন্যতম কারণ। উভয় দেশেই জঙ্গিরা আছে। এখন দুই দেশ জঙ্গি দমনে এক সঙ্গে কাজ করতে পারে। মোদির জন্য বাংলাদেশের জনগণের আস্থা অর্জন করাটা জরুরি। ছিটমহল বিনিময় করে এই আস্থাটা নিঃসন্দেহে অর্জিত হতে পারে। আমরা চাই ভারত-বাংলাদেশের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে উদার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসুক। 'বড়ভাই' সুলভ আচরণ বন্ধ করুক। অতীতে কংগ্রেস সরকার সমস্যাগুলো জিইয়ে রেখে বাংলাদেশ থেকে ফায়দা নিয়েছে মাত্র। এতে একটি শক্তিশালী ভারতবিরোধী মনোভাব বাংলাদেশে জন্ম হয়েছে। মোদি সরকার অন্তত একটি সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আস্থা অর্জনের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই Daily Jai Jai Din 09.12.14

0 comments:

Post a Comment