লিমায় গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে বিশ্বের উষ্ণতারোধ সংক্রান্ত
কপ-২০ সম্মেলন। ‘কপ’ বা Conference of the Parties জাতিসংঘ কর্তৃক আয়োজিত
পরিবেশ সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। গত বেশ ক’বছর ধরে এই ‘কপ’
সম্মেলন নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। এবারের কপ-২০ সম্মেলনের গুরুত্ব এ কারণে
বেশি যে, এই সম্মেলনেই একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো
বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই অক্সাইড নির্মাণের পরিমাণ কী পরিমাণে হ্রাস করবে।
বিশ্বের উষ্ণতা বাড়ছে। এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে কার্বন-ডাই অক্সাইডসহ
অন্যান্য গ্রিন হাউস গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত নির্মাণকে। ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত
হয়েছে যে, ২০১৫ সালের জুনে প্যারিসে যে কপ-২১ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হতে
যাচ্ছে, সেখানে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হবে। অর্থাৎ কিয়োটো প্রটোকলের পর
প্যারিস কপ-২১ সম্মেলনটি হবে উষ্ণতা রোধের জন্য একটি যৌথ প্রয়াস। কিয়োটো
প্রটোকলের বাধ্যবাধকতা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। আর এ জন্যই নতুন একটি
চুক্তি দরকার। এ জন্যই লিমা সম্মেলনের গুরুত্ব অনেক বেশি। এখানেই সমঝোতায়
উপনীত হতে হবে। বিশ্বের পরিবেশ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো সমুদ্র
উপকূলবর্তী দেশগুলো বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে।বন্যা, ঘূর্ণিঝড় আর
টর্নেডো এখন যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সমুদ্র উপকূলবর্তী
অঞ্চলগুলোর পাশাপাশি বড় শহরগুলোও আক্রান্ত হচ্ছে। সারা বিশ্বই আজ পরিবেশ
বিপর্যয়ের মুখে। বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাস, বিশেষ করে কার্বন-ডাই
অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পৃথিবী। ফলে সাগর-মহাসাগরে
জন্ম হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের, যা এক সময় প্রবল বেগে আছড়ে পড়ছে উপকূলে। ধ্বংস করে
দিচ্ছে জনপদ। ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে উপকূলবর্তী গ্যাস, ছোট ছোট শহর। ‘মহাসেন’
ছিল সে রকম একটি ঘূর্ণিঝড়। এর আগে আমরা ‘সিডর’ ও ‘আইলা’র সঙ্গে পরিচিত
ছিলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সমুদ্রে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম আগে থেকেই
নির্ধারিত থাকে। ইংরেজি বর্ণমালার ক্রমানুসারে কার্যকরণের সুযোগ পায় ভারত
উপমহাসাগরভুক্ত ৮টি দেশ। প্রতিটি দেশকে ৪টি করে নাম পাঠাতে হয়। এর মধ্য
থেকে একটি নাম বেছে নেয়া হয়। এক সময়ের শ্রীলঙ্কার রাজা মহাসেন ধ্বংস
করেছিলেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনেক ঐতিহ্য। সে কারণে ধ্বংসাত্মক ঝড়ের নাম
রাখা হয়েছিল ধ্বংসের প্রতীক সেই রাজা ‘মহাসেন’-এর নামে। এদিকে এ অঞ্চল
পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ হয়েছে থাইল্যান্ডের দেয়া নামে। আর এর নাম ছিল
ফাইলিন। ‘মহাসেন’-এর পর এলো ‘ফাইলিন’। এখন পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আমাদের
অপেক্ষা করতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি অতিবন্যা, অসময়ে বন্যা এখন
নিত্যনৈমেত্তিক ব্যাপার। যারা নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠ করেন, তারা জানেন গেল
বছর সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা বিপুল পানির স্রোত বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ
অঞ্চল প্লাবিত করে দিয়েছিল। দেশের প্রায় ১৭টি জেলা ওই বন্যায় আক্রান্ত
হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বন্যায়। অকাল বন্যার অন্যতম
কারণ হচ্ছে এই জলবায়ু পরিবর্তন। বিশ্বে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর
প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে হিমালয়ে। সেখানে বরফ গলছে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে।
আমাদের দেশের আবহাওয়াতেও পরিবর্তন আসছে। অসময়ে বৃষ্টি প্রমাণ করে পরিবেশ
কীভাবে বদলে যাচ্ছে। যে সময় বৃষ্টি হওয়ার কথা, সে সময় বৃষ্টি হচ্ছে না।
শীতের ব্যাপ্তি কমছে। মনে আছে গেল শীত আসতে আসতেই চলে গিয়েছিল। এর ফলে
কৃষিতে সমস্যা হচ্ছে। উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের মানুষ
লড়াকু। ‘সিডর’ ও ‘আইলা’র পর তারা বুঝে গেছে এই ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসের
সঙ্গেই তাদের বসবাস করতে হবে। লোনা পানি তাদের জীবনযাত্রার মান হুমকির মুখে
ঠেলে দিলেও এই লোনা পানির সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ করেই তারা বেঁচে আছে। প্রকৃতিই
তাদের শিখিয়েছে কীভাবে সব ধরনের প্রতিকূলতার সঙ্গে তাদের বেঁচে থাকতে হয়।
আগের চেয়েও উপকূল এলাকার মানুষ আজ অনেক সচেতন।আজ সারা বিশ্ব জানে
বিশ্বের উষ্ণতা যে হারে বাড়ছে তাতে আগামীদিনে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের উপকূলে প্রতি বছর ১৪ মিলিমিটার করে সমুদ্রের
পানি বাড়ছে। গত ২০ বছরে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ সেন্টিমিটার।
সমুদ্রের পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে প্রতি ৭ জনে ১ জন উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে।
এরা হচ্ছে জলবায়ু উদ্বাস্তু। আগামীতে বাংলাদেশের ১৭ ভাগ এলাকা সমুদ্রে
বিলীন হয়ে যাবে। বিশ্ববাসী জলবায়ু উদ্বাস্তুর সঙ্গে প্রথম পরিচিত হয় ২০০৫
সালে, যখন বাংলাদেশে ভোলার চরাঞ্চল থেকে ৫ লাখ মানুষ অন্যত্র চলে যেতে
বাধ্য হয়েছিল। ক্রিশ্চিয়ান পেনেনটি (Christian Penenti) তার প্রকাশিত হওয়া
গ্রন্থ Tropic of Chaos: Climate change and the new geography of violence
(2011) এ উল্লেখ করেছেন সে কথা। পেনেনটি আরো উল্লেখ করেছেন ২০৫০ সালের
মধ্যেই ২২ মিলিয়ন অর্থাৎ ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চল থেকে
অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হবে। আইপিসিসির রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে
বাংলাদেশের কথা। অনেকের মনে থাকার কথা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস
প্রেসিডেন্ট আলগোর পরিবেশের ব্যাপারে বিশ্ব জনমতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য
২০১২ সালের জানুয়ারিতে এন্টার্কটিকায় গিয়েছিলেন। আমাদের তৎকালীন
পরিবেশমন্ত্রীকেও তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সেখানে। সেটা ঠিক আছে। কেননা
বিশ্বের উষ্ণতা বেড়ে গেলে যেসব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তার মধ্যে অন্যতম
হচ্ছে বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ পর পর দু’বার বন্যা ও পরবর্তীকালে
‘সিডর’-এর আঘাতের সম্মুখীন হয়। এরপর ২০০৯ সালের মে মাসে আঘাত করে ‘আইলা’।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশে ব্যাপক খাদ্যদ্রব্যের ঘাটতি দেখা দেয়। দেশে
খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যায়। অর্থনীতিতে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ‘সিডর’-এর
পর বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের বিষয়টি বারবার বিশ্বসভায় আলোচিত হচ্ছে!
সিডরের ক্ষতি ছিল গোর্কির চেয়েও বেশি। মানুষ কম মারা গেলেও সিডরের
অর্থনৈতিক ক্ষতি ছিল ব্যাপক। সিডরে ৩০ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছিল ৯টি জেলা। ২০০ উপজেলার ১ হাজার ৮৭১টি ইউনিয়ন
ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার ২৬৫ পরিবারের মধ্যে ৮৫ লাখ ৪৫ হাজার
৪৫৬ জন মানুষ সিডরের আঘাতপ্রাপ্ত ছিল। মারা গিয়েছিল ৩ হাজার ৩শ’র বেশি। তবে
অর্থনৈতিক ক্ষতি ছিল ব্যাপক। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ১৬ হাজার
কোটি টাকা। ‘সিডর’ ও ‘আইলা’র পর ‘মহাসেন’ বাংলাদেশে আঘাত করেছিল। যদিও এতে
কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তার হিসাব আমরা পাব না কোনো দিনই। ‘সিডর’ ও
‘আইলা’র আঘাত আমরা এখনো পরিপূর্ণভাবে কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আইলার আঘাতের পর
খুলনার দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছায় যে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করা
সম্ভব হয়নি। জলাবদ্ধতা কোথাও কোথাও ১ মিটার থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত। আইলায় ৮০
ভাগ ফলদ ও বনজ গাছ মরে গিয়েছিল। দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে আজ নোনা পানির আগ্রাসন।
সুপেয় পানির বড় অভাব ওইসব অঞ্চলে। এরপর ‘মহাসেন’ আমাদের আবারো ক্ষতিগ্রস্ত
করে দিয়ে গিয়েছিল। আমাদের মন্ত্রী, সচিব কিংবা পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের
কর্তাব্যক্তিরা বিদেশ সফর ও সম্মেলনে অংশ নিতে ভালোবাসেন। কানকুন, ডারবান,
কাতার কিংবা তারও আগে কোপেনহেগেনে (কপ সম্মেলন) আমাদের পরিবেশমন্ত্রী
গেছেন। আমাদের কয়েকজন সংসদ সদস্য কোপেনহেগেনে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে
নিয়ে বিশ্বজনমত আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। আমরা পরিবেশ রক্ষায় তাতে বড়
ধরনের আর্থিক সহায়তা পাইনি।বলা ভালো বাংলাদেশ এককভাবে বিশ্বের জলবায়ু
পরিবর্তন রোধে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারে না। বাংলাদেশ এককভাবে যদি
কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ও, তা সামগ্রিকভাবে বিশ্বের উষ্ণতা রোধ করতে খুব একটা
প্রভাব রাখবে না। এ জন্য বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে মিলে
ঐক্যবদ্ধভাবে আন্তর্জাতিক আসরে জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে সোচ্চার হতে
হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় বিদেশি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি
পাওয়া গেছে, কিন্তু এই সাহায্যের ওপর নির্ভর করা ঠিক নয়। পরিবেশ বিপর্যয়
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বড় ভূমিকা রয়েছে। গেলবার যে বন্যা হলো আবার আমাদের সে
কথাটাই স্মরণ করিয়ে দিল। বন্যা, অতিবৃষ্টি,ঘূর্ণিঝড় এখন এ দেশে স্বাভাবিক
ব্যাপার। কিন্তু ‘সিডর’ ও ‘আইলা’র আঘাতে আমাদের যা ক্ষতি হয়েছিল, সেই ক্ষতি
সারাতে সরকারের বড় বড় উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি
মোকাবিলায় ১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হলেও এখানে ‘রাজনীতি’ ঢুকে
গেছে। দলীয় বিবেচনায় টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে (কালের কণ্ঠ ২৭ মে)। ভাবতে
অবাক লাগে যেসব এনজিও জলবায়ু নিয়ে কাজ করেনি, যাদের কোনো অভিজ্ঞতাও নেই,
শুধু দলীয় বিবেচনায় তাদের নামে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জলবায়ু তহবিলের অর্থ
যাওয়া উচিত ওইসব অঞ্চলে, যেখানে ঘূর্ণিঝড়, প্লাবনের আঘাত বেশি আর মানুষ
‘যুদ্ধ’ করে সেখানে বেঁচে থাকে। অথচ দেখা গেছে জলবায়ুর জন্য বরাদ্দকৃত টাকা
দেয়া হয়েছে ময়মনসিংহ পৌরসভাকে, মানিকগঞ্জের একটি প্রকল্পে কিংবা নীলফামারী
তিস্তা বহুমুখী সমাজকল্যাণ সংস্থাকে। সিরাজগঞ্জের প্রগতি সংস্থাও পেয়েছে
থোক বরাদ্দ। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানের একটিরও জলবায়ু সংক্রান্ত কাজের কোনো
অভিজ্ঞতাই নেই। জলবায়ু তহবিলের টাকা বরাদ্দেও যদি ‘রাজনীতি’ ঢুকে যায়,
তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু থাকতে পারে না। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ
অনুযায়ী দেখা যায়, বরাদ্দ পাওয়া এনজিওগুলোর সঙ্গে সরকারি দলের নেতা ও
কর্মীরা জড়িত। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে
বাংলাদেশ। কিন্তু দুর্নীতি যদি এখানেও স্পর্শ করে, তাহলে জলবায়ু ফান্ডে আর
সাহায্য পাওয়া যাবে না। সচেতন হওয়ার সময় তাই এখনই। লিমা কপ-২০ সম্মেলনটি
তাই কারণেই গুরুত্বপূূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশসহ সমুদ্র
উপকূলবর্তী দেশগুলোর জন্য কোনো সুসংবাদ অপেক্ষা করছে কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন
এখন। ইউরোপীয় ইউনিয়নযুক্ত দেশগুলো চাচ্ছে একটি স্থায়ী চুক্তি, যা কিয়োটো
প্রটোকল বা চুক্তির স্থলাভিষিক্ত হবে। যদিও কিয়োটাতে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত
হওয়ার পরও তা কার্যকর করা যায়নি শিল্পোন্নত দেশগুলোর অসহযোগিতার কারণে।
কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রেসিডেন্ট ওবামার চীন সফরের
সময় চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যেখানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র
বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই অক্সাইড নিগর্মন হ্রাস করার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এটা একটা বড় অগ্রগতি। কেননা যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলে আসছিল চীন ও ভারত যদি
কার্বন নিঃসরণ হ্রাস না করে, তাহলে কোনো চুক্তিই কার্যকর করা যাবে না।
গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের ব্যাপারেও কথা আছে। ১০ বিলিয়ন ডলারের ফান্ড গঠন
করার সিদ্ধান্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্র যে ৩ বিলিয়ন ডলারের নিশ্চয়তা দিয়েছিল, তা
নিশ্চিত করেনি। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ওয়াদা নিয়েও প্রশ্ন আছে। কেননা
কংগ্রেস এখন আর ওবামার নিয়ন্ত্রণে নেই। ফান্ড বরাদ্দের ব্যাপারে ওবামার
প্রতিশ্রুতি কংগ্রেস নাও শুনতে পারে। কংগ্রেস সদস্যরা বড় বড় ব্যবসায়িক
প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষা করে।চলতি ২০১৪ সালকে বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম
বছর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার এ সংক্রান্ত একটি
প্রতিবেদন ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকাতেও ছাপা হয়েছে। এরই
পরিপ্রেক্ষিতে কপ-২০ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন একটি সিদ্ধান্ত হবে এবং
প্যারিসে আগামী বছর কপ-২১ সম্মেলনে তা স্বাক্ষরিত হবে, সে আশা রাখতে পারছি
না। গত দু’মাস যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। মেক্সিকোও গিয়েছিলাম। পরিবেশ যে
কীভাবে বদলে যাচ্ছে, তা নিজ চোখে দেখেছি। নিউইয়র্কে নভেম্বর মাসে কখনো তেমন
শীত পড়ে না। কিন্তু গত বছর থেকে পড়তে শুরু করেছে। নভেম্বরেই নিউইয়র্কের
আবার স্টেট বাফেলো সাত ফুট বরফের নিচে চলে গিয়েছিল। সুতরাং একটা ভয়াবহ
পরিস্থিতি ঠেকাতে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এখনই
Daily Manobkontho
11.12.14
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment