২৭ মে ২০১৬ তারিখ মমতা ব্যানার্জি পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নিতে যাচ্ছেন। গত ৪ এপ্রিল পশ্চিম বাংলার বিধান সভায় নির্বাচন শুরু হয়ে শেষ হয় ৫ মে। ১৯ মে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফলে দেখা যায় বিপুল ভোটে পশ্চিম বাংলার মানুষ মমতার তৃণমূল কংগ্রেসকে বিজয়ী করেছে। বিপুল ভোটে তার এই বিজয় (২৯৪ আসনের ২১১টিতে তার দল জয়ী), কেন্দ্রের সঙ্গে ‘হিসেব-নিকেশ’ ইত্যাদি বিষয়ে তার অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করবে। ইতোমধ্যে বিজেপি সভাপতি তাকে পুনরায় এনডিএ জোটে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশের জন্য তার এই বিজয়ের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে তিস্তার পানি বণ্টনের ব্যাপারে তার সম্মতি একটি বড় ফ্যাক্টর। এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মমতার সম্মতি ছাড়া কোনো চুক্তিতে যেতে পারবে না। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দু’ দুবার বাংলাদেশে এসেছেন। একবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। কিন্তু প্রতিবারই তিস্তার পানি বণ্টনের ব্যাপারে তিনি আমাদের হতাশ করেছেন। এমনকি আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে তিনি অযাচিতভাবে পশ্চিমবঙ্গের জন্য তিস্তায় বেশি পানি দাবি করেছিলেন। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের মানুষ তার ওপর আস্থা রেখেছিল। ঢাকায় এসে তিনি বলেছিলেন, তিনি ‘কাঠবিড়াল হয়ে সেতুবন্ধনের’ মতো কাজ করে যেতে চান। অর্থাৎ বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে এক ধরনের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে চান। কিন্তু তিনি কি তা করেছেন? না, করেননি। ঢাকায় দ্বিতীয়বারের মতো আসার আগে তিনি বলেছিলেন নতুন এক কথা আত্রাই নদীতে বাংলাদেশ বাঁধ দিয়েছে। আর তাতে পশ্চিমবঙ্গ কম পানি পাচ্ছে! তিনি জানেন রাজনীতিকে কিভাবে জটিল করতে হয়। যেখানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চাচ্ছে তিস্তার ব্যাপারে একটি সমঝোতা, সেখানে ‘আত্রাই প্রসঙ্গ’ নতুন করে উত্থাপন করে কৌশলী মমতা চাচ্ছেন তিস্তার প্রসঙ্গটি ‘ডিপ ফ্রিজ’-এ পাঠাতে। এটাই তার কৌশল। তিনি তিস্তায় পানি দেবেন না, যাতে করে বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে যে সম্পর্কের ‘নয়া অধ্যায়’-এর সূচনা হয়েছে তা একটি প্রশ্নের মধ্যে থাকুক! বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের কারণে পশ্চিম বাংলায় বিজেপির জনপ্রিয়তা বাড়–ক, এটা মমতা কখনো চাননি। পশ্চিম বাংলার উত্তরাঞ্চলে (তিস্তার পানির ওপর যারা নির্ভরশীল) তার জনপ্রিয়তা তলানিতে ছিল। ‘ভোটের হিসাবে’ তিনি তাই চাননি তিস্তার পানি বণ্টন হোক। তিনি দেখাতে চেয়েছেন তিনিই প্রকৃত বাংলাদেশের বন্ধু। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হাসিনা দিদি’ হিসেবে সম্বোধন করে তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন তিনি আন্তরিক! প্রটোকল তার কাছে মুখ্য ছিল না, ছিল গৌণ। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে যে এভাবে প্রকাশ্যে ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করা যায় না, মমতা ব্যানার্জির বিবেচনায় এটা আসেনি। সেবার তার জন্য গণভবনে দুপুরের খাবারেরও আয়োজন করা হয়েছিল। ১২ পদের খাবারের তালিকায় ইলিশ ছিল ৩ পদের। সবাই জানেন বাংলাদেশের ইলিশের প্রতি মমতার বিশেষ টান আছে। আগে মমতা যখন দিল্লিতে রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে যারাই মমতার বিজয় ও তিস্তার পানি চুক্তির ভবিষ্যৎনয়াদিল্লি গেছেন (বিশেষ করে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী), তারা অবধারিতভাবেই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন ‘পদ্মার ইলিশ।’ তাই ইলিশ প্রসঙ্গ এসেছিল (আপাতত রফতানি বন্ধ)। মমতার সফরে কিন্তু সারা জাতি ও মিডিয়া তখন তাকিয়ে ছিল মমতা তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে তার অনাপত্তির কথা জানিয়ে যাবেন। কেননা তিস্তায় পানি বণ্টনের সমস্যা একটাই আর তা হচ্ছে মমতা। মমতার আপত্তির মুখে তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। এমনকি ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখনো মমতার আসার কথা ছিল। মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যের কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রী আসলেও শেষ মুহূর্তে মমতা তার আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। ফলে শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি আর হয়নি। এরপর অনেক সময় পেরিয় গেছে। কিন্তু তিস্তার ব্যাপারে মমতার দৃষ্টিভঙ্গির কি কোনো পরিবর্তন এসেছে? প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর তিনি দু’ দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন এ কথাটা। এর আগে ভারতীয় হাইকমিশন কর্তৃক আয়োজিত ‘বৈঠকি বাংলা’য়ও মমতা নিজেই বলেছিলেন তার ওপর ‘আস্থা’ রাখতে! স্থল সীমানা চুক্তি নিয়ে তার আপত্তি নেইÑএটা অবশ্য তিনি প্রমাণ করেছেন। ঢাকাতেও এ কথাটা পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন মমতা। কিন্তু তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে তার ‘কমিটমেন্ট’ কোথায়? সোজা সাপটা হিসাব হচ্ছে তিনি ঢাকায় এসে তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে কোনো ‘কমিটমেন্ট’ করে যাননি।
তিস্তার পানির ব্যাপারে তার স্বার্থ অনেক বেশি। এখন সেখানে বিধানসভার নির্বাচন শেষ। এটাকে তিনি বিজেপির হাতে তুলে দিতে চাননি। উত্তরবঙ্গে পানির চাহিদা বেশি। মমতা এটা জানেন ও বোঝেন। বলা ভালো, ১৯ ফেব্রুয়ারি (২০১৪) পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ঢাকা সফরের প্রাক্কালে তিস্তায় পানির সর্বনি¤œ প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল। এটা কাকতলীয় কি না জানি না। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে ক’টি বিষয় অন্তরায় সৃষ্টি করেছিল তার মাঝে তিস্তার পানি বন্টন অন্যতম। এ ক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একটা আগ্রহ থাকলেও শুধুমাত্র মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়নি। সেই মমতা ব্যানার্জিই এখন আবার ক্ষমতায় এলেন। ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে তার ঢাকা আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তিস্তায় পানি বণ্টনের ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বার্থ অনেক বেশি। গত ৬ ফেব্রুয়ারি (২০১৫) সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ওই মাসের প্রথম ৫ দিনে তিস্তায় পানি প্রবাহ ছিল ৫০০ কিউসিকের নিচে। সেচ প্রকল্পের পানি দেযা দূরের কথা, শুধু নদী বাঁচানোর জন্যই দরকার এক হাজার কিউসেক। ফলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা আজ মৃত্যুমুখে। গত নভেম্বর থেকেই তিস্তায় পানি প্রবাহ কমতে থাকে। বাংলাদেশের লালমনিরহাটের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীতে ইতিহাসের সবচেয়ে কম পানি প্রবাহ রেকর্ড হয়। ফেব্রুয়ারি (২০১৫) মাসের প্রথম চার দিনের হিসাবে দেখা গেছে, প্রথম দিন পাওয়া গেছে ৪২৬ কিউসেক, দ্বিতীয় দিন ৪৭৫ কিউসেক, তৃতীয় দিন ৪৪৫ কিউসেক, আর চতুর্থ দিন ৪১৬ কিউসেক পানি প্রবাহিত হয় (সকালের খবর, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। যৌথ নদী কমিশন সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা ব্যারাজ নির্মাণ শুরুর আগে ১৯৭৩-৮৫ সময়কালে বাংলাদেশ অংশে তিস্তার পানি প্রবাহ ভালো ছিল বলে তুলনার জন্য এই সময়কালের হিসাবকে ঐতিহাসিক গড় প্রবাহ ধরা হয়। ওই ১২ বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম ১০ দিনে পানি প্রবাহ ছিল ৫৯৮৬ কিউসেক। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তা নেমে আসে ৯৬৩ কিউসেকে। এরপর তা নেমে যায় ৫০০ কিউসেকের নিচে। অথচ নদী রক্ষার জন্যই দরকার ১ হাজার কিউসেক পানি। আর বিদ্যমান সেচ প্রকল্পের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি ‘নোট ভারবাল’ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
মমতা ব্যানার্জির প্রথম ঢাকা সফরের আগে আমরা অনেক প্রত্যাশার কথা শুনেছি। তবে এটা সত্য, তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে আমাদের নিরাপত্তার সঙ্গে এটা সরাসরি সম্পৃক্ত। আমাদের নীতি নির্ধারকরা যদি বিষয়টিকে হাল্কাভাবে দেখেন তাহলে এ দেশ, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ খুব বড় ধরনের সংকটে পড়বে। খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে থাকবে। এমনকি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এতে করে বাড়বে। মনে রাখতে হবে তিস্তায় পানি প্রাপ্তি আমাদের ন্যায্য অধিকার। আন্তর্জাতিক আইন আমাদের পক্ষে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব আমাদের অধিকারকে নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে মমতা ব্যানার্জির আপত্তি বা সমর্থন এটা বিষয় নয়। আমরা এটা বিবেচনায় নিতে চাই না। আমাদের অধিকার যা আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত, তা নিশ্চিত করবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সিকিম হয়ে ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ারের সমভূমি দিয়ে চিলাহাটি থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার উত্তর খাড়িবাড়ির কাছে ডিমলা উপজেলার ছাতনাই দিয়ে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। ছাতনাই থেকে এ নদী নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, লালমনিরহাটের সদর, পাটগ্রাম, হাতিবান্দা, কালীগঞ্জ, রংপুরের কাউনিয়া, পীরগাছা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর হয়ে চিলমারীতে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছে। ডিমলা থেকে চিলমারী এ নদীর বাংলাদেশ অংশের মোট ক্যাচমেন্ট এরিয়া প্রায় ১ হাজার ৭১৯ বর্গকিলোমিটার। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশন গঠনের পর তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে দু দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টনের শতকরা ৩৬ ভাগ বাংলাদেশ ও ৩৯ ভাগ ভারত ও ২৫ ভাগ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ২৫, ২৬, ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ তিস্তার পানির ৮০ ভাগ দু’ দেশের মধ্যে বণ্টন করে বাকি ২০ ভাগ নদীর জন্য রেখে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। ভারত সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এরপর যুক্ত হয়েছিল মমতার আপত্তি।
বাংলাদেশের কোনো প্রস্তাবের ব্যাপারেই অতীতে মমতার সম্মতি পাওয়া যায়নি। এখানে আরো একটা বিষয় বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন। তিস্তার পানি বণ্টনে সিকিমকে জড়িত করার প্রয়োজনীয়তা পড়েছে। কেননা সিকিম উজানে পানি প্রত্যাহার করে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। ফলে তিস্তায় পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে ক্রমেই। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গে কৃষকদের কাছে তিস্তার পানির চাহিদা বেশি। সেচ কাজের জন্য তাদের প্রচুর পানি দরকার। এটা বরাবরই মমতার জন্য একটি ‘রাজনৈতিক ইস্যু।’ সুতরাং মমতা তিস্তা চুক্তি করে বাংলাদেশের পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করবেন এটা আমার কখনই বিশ্বাস হয়নি। এ ক্ষেত্রে আমাদের যা করণীয় তা হচ্ছে তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে ভারতের ওপর ‘চাপ’ অব্যাহত রাখা। আমরা ভারতের অনেক ‘দাবি’ পূরণ করেছি। নরেন্দ্র মোদির আমলে সীমানা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে দু দেশের সীমানা এখন চিহ্নিত। দু দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনের পর মমতা যদি তার ওপর রাখা আস্থার প্রতিদান না দেন, তাহলে তা যে দু দেশের সম্পর্কের মাঝে একটা অবিশ্বাসের জš§ দেবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গে রুদ্র কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিতে পারেন, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের এই পানি বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশকে শতকরা ৫০ ভাগ পানি দেয়া সম্ভব বলে সুপারিশ করেছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রণব কুমার রায়ও এই সুপারিশ সমর্থন করেছিলেন। এর ভিত্তিতেই মমতা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ঢাকায় আসার আগে আত্রাই প্রসঙ্গটি তুলে তিনি একটি ‘জট’ লাগিয়ে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ আত্রাই-এর সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি এক করে দেখেছেন। এটি একটি ভিন্ন বিষয়। আত্রাই নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু তিস্তায় পানি প্রাপ্তি আমাদের অগ্রাধিকার। এর সঙ্গে অন্য কোনো ইস্যুর তুলনা করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টিকে সামনে রেখে ভারতের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। সমুদ্র সীমানাও নির্ধারিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক আসরে। ‘দ্বিপাক্ষিক’ আলোচনায় সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হয়নি। আমাদের জরুরি প্রয়োজনে তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক আসরে উত্থাপন করা যেতে পারে। কারো ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষের বেঁচে থাকার বিষয়টি ঝুলে থাকতে পারে না।
Daily Manobkontho
26.05.16
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment