রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

নতুন উচ্চতায় দু’দেশের সম্পর্ক

সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফর করেছেন। পাঁচদিনের জন্য তিনি সৌদি আরব যান গত ৩ জুন। গত ৫ জুন তিনি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয়াদি নিয়ে মতবিনিময় করেন। বাংলদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উšে§াচন হলো। মুসলিম উম্মাহর শান্তি প্রতিষ্ঠায় এক সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে দুই দেশ। দু’ দেশের মধ্যে কয়েকটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাসবাদ দমনে ৩৪টি মুসলিম দেশ নিয়ে সৌদি জোটের রূপরেখার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটা তার প্রথম সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফর। এর আগে তিনি ২০১৩ সালের নভেম্বরে সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সৌদি আরব সফরের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। প্রথমত, সৌদি আরবের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে যে সামরিক জোট গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ তার সদস্য অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সিরিয়ায় আইএসবিরোধী যে জোট গঠিত হয়েছে, বাংলাদেশ তাতে যোগ দেয়নি। সৌদি জোটে যোগ দেয়ায় সৌদি রাজ পরিবার বাংলাদেশকে যে গুরুত্ব দেয় সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশ সফরে  এসেছিলেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবাইর। সমসাময়িককালে কোনো সৌদি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সেটা ছিল প্রথম বাংলাদেশ সফর। এতে প্রমাণিত হয়েছিল সৌদি আরব বাংলাদেশকে কত গুরুত্ব দেয়। তৃতীয়ত, সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের সংখ্যা ১২ লাখ ৮০ হাজার। এরা বাংলাদেশে যে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায় তা অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। তবে সৌদি আরবে শ্রমবাজার বর্তমানে বন্ধ। তবে ৭ জুন ২০১৬ তারিখে গণমাধ্যমে প্রকাশ, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব ৫ লাখ জনশক্তি নিতে নতুন করে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। - সৌদি অর্থনীতিতে বর্তমানে এক ধরনের মন্দা চলছে। তেলের দাম সম্প্রতি কমে যাওয়ায় তা সৌদি অর্থনীতিতে আঘাত করেছে। এর প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে নির্মাণ শিল্পে। সেখানে শ্রমিক ছাঁটাই চলছে। সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বিন লাদেন কোম্পানি থেকে প্রায় ১৪ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে এ রকম একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে সম্প্রতি। ফলে সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে এই মুহূর্তে শ্রমিক নেবে কিনা, এমন অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যেই সৌদির নতুন আগ্রহের কথা জানা গেল। তেলের দাম কমে যাওয়া ও সৌদি প্রতিরক্ষায় বিপুল অর্থ ব্যয় হওয়ায় সৌদি আরবের বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। সৌদি আরবে প্রধানমন্ত্রীর এই রাষ্ট্রীয় সফরকে আমরা কীভাবে মূল্যায়ন করব? এটা নিছক একটি রুটিন সফর নয়। এটা রাষ্ট্রীয় সফর। এই সফরে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি বাদশাহর যেমনি আলোচনা হয়েছে তেমনি সৌদি শ্রমবাজার খুলে দেয়ার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পেয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সৌদি জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের প্রসঙ্গটিও আলোচিত হয়েছে। পাঠক স্মরণ করতে পারেন সম্প্রতি সৌদি আরবের নেতৃত্বে একটি সামরিক জোট গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ এই জোটের সদস্য। জোটভুক্ত দেশের সেনাবাহিনী গত মার্চ মাসে একটি সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে সেখানে। একটি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ‘জধধফ-অষ-ঝযধসধধষ’ (ঘড়ৎঃয ঞযঁহফবৎ) নামে ওই মহড়ায় অংশ নিয়েছে জোটভুক্ত ২১ দেশের সেনাবাহিনী। আরো গুরুত্বপূর্ণ খবর হচ্ছেÑ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ গত ৯ মার্চ আলাদা আলাদাভাবে সৌদি আরব সফর করেছেন। দু’জনই সেখানে দুই দিন অবস্থান করেন। ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তান এখন নীতিগতভাবে এই জোটে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ তাই কোনো ‘সামরিক কার্যক্রমে’ অংশ নেয় কিনা সেটাই দেখার বিষয়। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে আসছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে ‘কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ এই নীতি অনুসরণ করে আসছে। এখন বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দেয়ায় বাংলাদেশ এই নীতি থেকে সরে আসবে কিনা সেটাও একটা প্রশ্ন। উপরন্তু বাংলাদেশের সংবিধানের ২৫তম অনুচ্ছেদ ‘আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা, সংহতি ও উন্নয়নের’ কথা বলা হয়েছে। ২৫(ক) তে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং নিরস্ত্রীকরণের জন্য চেষ্টা করবে।’ অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ না করা আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথাও বলা হয়েছে এই অনুচ্ছেদে। তাই জোটে যোগ দিয়ে আগামীতে “অন্য কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় বাংলাদেশ হস্তক্ষেপ করবে কিনা, ‘শক্তি প্রয়োগে’ অংশ নেবে কিনা, এ প্রশ্ন থাকলই। যদিও জোটের পূর্ণাঙ্গ ভূমিকা কী হবে তা এই মুহূর্তে স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই জোটের উদ্যোগে রিয়াদে একটি কেন্দ্র হবে এবং এই কেন্দ্র সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী তথ্য-উপাত্ত ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে।” তবে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ আমাদের জানিয়েছিল, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামরিক অভিযান সমন্বয় ও তাতে সহায়তা করতে সৌদি নেতৃত্বাধীন এ জোট গঠন করা হয়েছে।’ বাংলাদেশ আগে যুক্তি দেখিয়েছিল যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবে অন্য মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ এই কেন্দ্রে থাকবে। তবে এই জোটের ভবিষ্যৎ ইতোমধ্যে নানা প্রশ্নের জš§ দিয়েছে। জোটের অন্যতম শরিক পাকিস্তান প্রথমে কিছুটা অবাকই হয়েছিল এই জোট গঠনে এবং জোটে পাকিস্তানের নাম থাকায়। পাকিস্তানের বক্তব্য হচ্ছে, পাকিস্তানের সঙ্গে পরামর্শ না করেই এই জোটের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। আমি নিশ্চিত নই, এই জোট গঠনে বাংলাদেশের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা আদৌ হয়েছিল কিনা। সৌদি আরব এ ধরনের একটি জোট গঠন করতে যাচ্ছে কিংবা বাংলাদেশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে প্রারম্ভিক আলোচনা হয়েছেÑএটাও আমাদের অনেকের জানা নেই। ফলে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান যখন গত ১৫ ডিসেম্বর এই জোট প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন তখন বিষয়টি আমাদের অবাকই করেছিল। এমন হয়েছে কিনা সৌদি আরব একাই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা জোটবদ্ধ দেশগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে শুধু? এটা যদি সত্য হয় তাহলে তা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। জোট নিয়ে পাকিস্তানের প্রশ্ন তোলা এই সম্ভাবনাটকেই সামনে নিয়ে এসেছিল। যদিও এখন মনে হচ্ছে পাকিস্তান তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। আরো একটা কথা বলা দরকার। মধ্য এশিয়ার দেশগুলো যাদের নাগরিকদের প্রায় সবাই মুসলমান, ওই অঞ্চলের একটি দেশও জোটে যোগ দেয়নি। তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, আজারবাইজান, কিরগিজস্তানÑ এই দেশগুলো এক সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৯১ সালে স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ও সোভিয়েত রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙে গেলে এই দেশগুলো স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে ‘ইসলামিক ভ্রাতৃত্ববোধ’ যদি অন্যতম ফ্যাক্টর হয়ে থাকে জোটে যোগ দেয়ার ব্যাপারে, তাহলে মুসলমানপ্রধান এই দেশগুলো যোগ দিল না কেন? ইন্দোনেশিয়া বড় মুসলিম দেশ। এই দেশটিও নেই কেন? পাঠক, লক্ষ্য করুন কোন দেশগুলো যোগ দিয়েছে? বেনিন, সাদ, টোগো, জিবুতি, সুদান, সিয়েরালিওন, গ্যাবন, সোমালিয়া, মালদ্বীপÑএই দেশগুলোর সন্ত্রাস দমনে আদৌ কোনো অভিজ্ঞতা নেই বরং জাতিসংঘ এই দেশগুলোকে কখনো বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে আমন্ত্রণও জানায়নি। শুধু তাই নয়, সুদান, সিয়েরালিওন, সোমালিয়া, গিনি ইতিমধ্যে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এসব দেশে কোনো কেন্দ্রীয় সরকারও নেই। তাহলে এই দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হলো কেন? দেশগুলো গরিব। আর্থিক ভিত্তি দুর্বল। ধনী দেশগুলোর আর্থিক সহযোগিতার ওপর দেশগুলো নির্ভরশীল। এটাকে বিবেচনায় নিয়েই কি দেশগুলোকে সৌদি আরব তার জোটে রেখেছে? সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন এই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী জোটে ৩৪ দেশ যোগ দিয়েছে। এই জোটকে বলা হচ্ছে, ‘ইসলামিক মিলিটারি অ্যালায়েন্স টু ফাইট টেররিজম’ (আইএমএএফটি)। অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেই এই জোটের জš§। এখানে কোনো একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কথা বলা হয়নি। সম্প্রতি সিরিয়া-ইরাকে জš§ নেয়া ইসলামিক স্টেট বা দায়েশের (আরবি নাম) বিরুদ্ধে আলাদা আলাদাভাবে বিমান হামলা পরিচালনা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ও রাশিয়া। অনেক আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে একটি জোট ‘দি গ্লোবাল কোয়ালিশন টু কাউন্টার আইএসআইএল।’ এখানে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে, আইএসআইএল তথা ইসলামিক স্টেটের কথা। ৬৫টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত এই জোটের মূল টার্গেট জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট। পরে এর পাশাপাশি গঠিত হয়েছিল আইএমএএফটি। একটির নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপরটির নেতৃত্বে সৌদি আরব। উভয় জোটের স্বার্থ কি এক? অর্থাৎ উভয় জোটই কি ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবহƒত হবে? বিষয়টি আমার কাছে অস্পষ্ট। কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে জোটে বাংলাদেশকে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশ ওই জোটে যোগ দেয়নি। কিন্তু সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটে বাংলাদেশ যোগ দিয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিল না কেন? নাকি ওই জোটে যোগ দেয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে আগে সৌদি জোটে যোগ দিলমার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ না দেয়ার পেছনে বাংলাদেশের জোট নিরপেক্ষ নীতির কথা আমাকে বলতে চেয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এক টিভি টকশোতে তিনি আমাকে এ ব্যাখ্যাই দিয়েছিলেন। তবে জানিয়েছিলেন, ‘অসামরিক ও জাতিসংঘের উদ্যোগে যে কোনো উদ্যোগকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে।’ অর্থাৎ আমি ধরে নিয়েছি যদি কোনো ধরনের ‘মানবিক বিপর্যয়ের’ ঘটনা ঘটে সিরিয়ায় তাহলে বাংলাদেশ মার্কিন জোটকে সহযোগিতা করবে এবং প্রয়োজনে জোটে যোগ দেবে। কিন্তু ইতোমধ্যে সৌদি জোট যার চরিত্র অনেকটা সামরিক, বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দিয়েছে। ফলে সৌদি জোটে যোগ দেয়া নিয়ে প্রশ্ন যে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। মজার ব্যাপার কিছু দেশ রয়েছে, যে দেশগুলো উভয় জোটেই আছে (জর্দান, আরব আমিরাত, বাহরাইন, তুরস্ক, কুয়েত প্রভৃতি)। সৌদি আরব মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটেও আছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হঠাৎ করে বাংলাদেশ সফর কিংবা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের সৌদি আরব গমন প্রমাণ করে সৌদি আরব তার সামরিক জোট নিয়ে সিরিয়াস। সেখানে একটি সামরিক মহড়ার আয়োজন করাও অনেক প্রশ্নের জš§ দিতে পারে। কিছুদিন ধরেই সৌদি আরব সিরিয়ায় একটি ‘সামরিক আগ্রাসন’ চালাতে পারে এমন কথা বলা হচ্ছে। এর প্রস্তুতি হিসেবে কি একটি সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছিল সৌদি আরব? তবে মূল প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ কি আদৌ আগামীতে কোনো সামরিক কার্যক্রমে তার দেশের সেনাবাহিনী পাঠাবে? বাংলাদেশ বারবার বলে আসছে তারা কোনো রকমের ‘সেনা কার্যক্রমে’ অংশ নেবে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’-এর কথা বাংলাদেশ বারবার বলে আসছে। এখন দেখতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরের পর এই প্রসঙ্গটি কোন পর্যায়ে আলোচিত হয়। আমাদের জাতীয় স্বার্থ হলো বড়। আমাদের শ্রমবাজার এখনো উš§ুক্ত হয়নি, এখন পর্যন্ত বিষয়টি ঘুরপাক খাচ্ছে আশাবাদ আর আগ্রহের মধ্যেই। সৌদি বিনিয়োগও আশাপ্রদ নয়। প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ জানানোর পেছনে সৌদি জোটে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সরাসরি অংশগ্রহণের বিষয়টি যে সৌদি আরবের প্রধান বিবেচিত বিষয় এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশকে তার জাতীয় স্বার্থকে বিবেচনায় নিয়েই সিদ্ধান্তটি নিতে হবে। শুধু সৌদি আরবের স্বার্থের কারণে বাংলাদেশ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আমাদের জাতীয় স্বার্থটাই হলো আসল। Daily Manobkontho 08.06.15

0 comments:

Post a Comment