রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

জঙ্গিরা কি এখন যুক্তরাষ্ট্রমুখী?


জঙ্গিরা কি এখন যুক্তরাষ্ট্রমুখী?ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো শহরে একটি সমকামী ক্লাবে হামলা চালিয়ে ৪৯ নাগরিককে হত্যা করার ঘটনা কি প্রমাণ করে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা সিরিয়া-ইরাক ছেড়ে তাদের কর্মকাণ্ড সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রসারিত করেছে? অরল্যান্ডোর হত্যাকাণ্ডের পর এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা হত্যাকাণ্ডের জায়গায় ফুল দিয়ে নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। কিন্তু যে প্রশ্নের জবাব এখনো পাওয়া যায়নি তা হচ্ছে, এই হত্যাকাণ্ডটি আইএসের কাজ কিনা? সাধারণ হিসেবে এবং মার্কিন মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, এটা আইএসের কাজ। এটা বলার পেছনে যুক্তিও আছে। প্রথমত, হামলাকারী ওমর মতিন আফগান-আমেরিকান নাগরিক। তিনি হত্যাকাণ্ড শুরু করার আগে জরুরি টেলিফোন বার্তায় (৯১১) নিজেকে আইএসের প্রতি তার আনুগত্যের কথা জানিয়েছিলেন। দ্বিতীয়ত, রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে আইএসের জনৈক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন রমজানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানো হবে। এখন সেই হামলাটি হলো। তবে এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা যায় তা হচ্ছে, এই হামলা ও হত্যাকাণ্ড এককভাবে ওমর মতিনের উদ্যোগেই পরিকল্পিত ও বাস্তবায়িত হয়েছে। ফলে এই হত্যাকাণ্ডটি আইএসের কাজ খুব সহজেই এটা ভাবা যায়। কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়। ওমর মতিনকে যারা চেনেন ও জানেন তারা টিভিতে বলেছেন মতিন উগ্র ধর্মীয় বিশ্বাসী ছিলেন না। তার ভেতরে কখনো জিহাদি মনোভাব কেউ কখনো দেখেনি। তিনি প্রচণ্ড সমকামীবিরোধী ছিলেন। তার বাবার বক্তব্যে এটি ফুটে উঠেছে। কিন্তু আবার এমন তথ্যও পাওয়া গেছে তিনি ওই সমকামী ক্লাবটিতে (পালস) অনিয়মিত যেতেন। তিনি মদ পান করতেন। তার সাবেক স্ত্রী কিংবা বর্তমান স্ত্রী পর্দা করতেন না। এতে আইএস জঙ্গিদের নেচারের সঙ্গে তাকে মেলানো যায় না। তিনি নিয়মিত মসজিদেও যেতেন না। দাঁড়িও রাখতেন না, যা আইএস জঙ্গিদের জন্য খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। তিনি বদরাগী ছিলেন। বৌ পেটাতেন। এক ধরনের হতাশা তার ভেতরে কাজ করছিল। এই হতাশা কিংবা মানসিক রোগ থেকেই কি তিনি এই হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন? হত্যাকাণ্ডের গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়ার জন্য কি তিনি আইএসের নাম ব্যবহার করেছিলেন? এগুলো সবই স্পেসিক্যুলেশন। ধারণা মাত্র। নিশ্চয়ই এফবিআইয়ের তদন্তে বিষয়টি বেরিয়ে আসবে। এখানে তথ্য ধামাচাপা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে, এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একটি বড় ধরনের ঘটনা। অরল্যান্ডোর হত্যাকাণ্ডের পেছনে মতিনের যে উদ্দেশ্যই কাজ করে থাকুক না কেন, ওখানে নতুন করে একটি মুসলমানবিদ্বেষী জনমত গড়ে উঠছে। ওবামা এই ঘটনাকে সন্ত্রাসীবাদী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করলেও তিনি তার বক্তৃতায় ‘রেডিকেল ইসলামের’ কথা কেন বলেননি, এটা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্প ওবামার সমালোচনা করেছেন। ওবামা নিজে এবং ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন নিজেও এই ঘটনায় মুসলমান সাম্প্রদায়িক অভিযুক্ত করেননি। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটল এমন এক সময় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র ৪ মাস। নভেম্বরে জঙ্গিরা কি এখন যুক্তরাষ্ট্রমুখী?সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এটা যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে, এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থিতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে। তারপরও দু’জন প্রার্থীর কিছু নির্বাচনী প্রচারণা বাকি রয়েছে। ট্রাম্প এসব প্রচারণায় তার আগের বক্তব্যের ব্যাপারে আরো সোচ্চার হচ্ছেন। অর্থাৎ আমেরিকাতে মুসলমানদের ঢুকতে না দেয়া এবং এই দেশে মুসলমান হিসেবে যারা অভিবাসী হয়েছিলেন তাদের বের করে দেয়া। ফলে যারা ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ এ বিশ্বাস করেন তারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মার্কিন নির্বাচনের একটা যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। প্রায় প্রতিটি জনমতে যখন হিলারি ক্লিনটনের সম্ভাব্য বিজয়ের কথা বলা হচ্ছে, তখন ৯/১১-এর মতো একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনমত ট্রাম্পের পক্ষে নেয়ার এটি কোনো ষড়যন্ত্র কিনা! যদিও ৯/১১-এর পরিস্থিতির সঙ্গে অরল্যান্ডোর এই হত্যাকাণ্ডকে এক সঙ্গে মেলানো যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অতীতে কখনো এক সঙ্গে একই ঘটনায় একদিনে এত মানুষকে হত্যা করা হয়নি। অরল্যান্ডোর এই হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাশাপাশি সময়ে প্যারিসে একটি ছোট্ট সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় একজন পুলিশ অফিসার ও তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে এবং আইএস এই হত্যাকাণ্ডের দায়-দায়িত্ব স্বীকার করেছে। আইএস সাধারণত ব্যক্তিকে টার্গেট করে না। কিন্তু এবার করল। আইএস ব্যাপক হত্যাকাণ্ড এক সঙ্গে সংঘটিত করে। অতীতে প্যারিস এবং ব্রাসেলসে তারা তাই করেছিল। আমি এই প্রথম দেখলাম আইএস ব্যক্তিকে টার্গেট করেছে এবং তাদের স্বীকারোক্তিও আছে। ফলে মুসলিমবিদ্বেষীরা প্যারিস আর অরল্যান্ডোর ঘটনাকে এক করে দেখতে চাইবে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাবকে উসকে দেয়া। এটা একটা সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন এখন। কেননা হিলারি বিজয়ী হলে মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাব চাপা পড়ে যাবে। একটি ‘মহল’ চাচ্ছে ট্রাম্পকে নির্বাচনে বিজয়ী করা। গেল সপ্তাহে অন্তত তিনটি জনমত জরিপে হিলারি ক্লিনটনকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। ফক্স নিউজ জরিপে হিলারি এগিয়ে আছেন ৩ পয়েন্টের ব্যবধানে। রয়টার্সের জরিপে হিলারি এগিয়ে আছেন ৮ পয়েন্টের ব্যবধানে। আর কুইনিপিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে বলা হয়েছে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে থাকার কথা। ফলে ট্রাম্প শিবিরে একটি আতঙ্ক আছে। তারা যে একটি সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করবেন না, তা বলা যাবে না। ওমর মতিন কি তাহলে কোন ‘শক্তি’ দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন? তার দ্বিতীয় স্ত্রী বিষয়টি জানতেন। যখন মতিন AR-15 রাইফেল কিনতে গিয়েছিলেন, তখন তার স্ত্রীও তার সঙ্গে ছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেন না কেন? মতিন যে নিরাপত্তা সংস্থায় (GYS) কাজ করতেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির হয়ে কাজ করে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে কাজ করা এক ব্যক্তি, থাকে এফবিআই (FBI) দু’ দুবার ‘ক্লিয়ার’ করেছে তার পক্ষে একা কী করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো সম্ভব? বাস্তবতা হচ্ছে ওই ঘটনায় পুলিশ তাকে হত্যা করে। ফলে পুরো ঘটনা কোনোদিনও জানা যাবে না। ৯/১১ নিয়ে যে এক ধরনের ধোঁয়াশা আছে, অরল্যান্ডোর ঘটনা নিয়েও এক ধরনের ধোঁয়াশা থেকে যাবে। মানুষ প্রকৃত সত্য জানতে পারবে না। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা কতটুকু সফল হতে পারবে, সেটাই প্রশ্ন এখন। অরল্যান্ডোর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এখন যে প্রশ্নটি জড়িয়ে আছে, তা হচ্ছে অস্ত্র কেনার ব্যাপারে কোনো কড়াকড়ি ব্যবস্থা আরোপ করা উচিত কিনা? কেননা যে কেউ এ ধরনের অস্ত্র কিনতে পারে, যদি তার কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড না থাকে। দামও যে খুব বেশি, তাও নয়। এক তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ৫০ লাখ অজ-১৫ রাইফেল সাধারণ মানুষের কাছে আছে। এসব রাইফেল কি নিজেদের রক্ষার কাজেই সব সময় ব্যয় হয়? নিশ্চয়ই না। এসব অস্ত্র মানুষ হত্যায় ব্যবহƒত হয়, যেমনটি ব্যবহার করেছেন মতিন অরল্যান্ডোতে। অস্ত্রবাজদের হাতে বছরে মারা যায় প্রায় ১৩ হাজার নিরীহ মানুষ। অরল্যান্ডোর হত্যাকাণ্ডের পর নতুন করে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি উঠে এসেছে। ওবামা নিজে এটি চান। হিলারি ক্লিনটন নিজেও বলেছেন, তিনিও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চান। কংগ্রেসেও বিষয়টি উঠেছে। কিন্তু অস্ত্র ব্যবসায়ীদের লবি এত শক্তিশালী যে, তারা কংগ্রেসম্যানদের নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন চালু হবে কিংবা অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, এই বিশ্বাস রাখতে পারছি না। অরল্যান্ডোর হত্যাকাণ্ড একটি দুঃখজনক ঘটনা। কোনো সভ্য দেশে এভাবে এত মানুষকে হত্যা করা হয় না। দুঃখজনক হলেও সত্য, সারাবিশ্বে আইএসের উত্থান যখন মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একটি ঘৃণার মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে, তখন একজন মুসলমান ওমর মতিন কর্তৃক এত মানুষ হত্যা ও নিজেকে আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করা, আবার নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানবিরোধী একটা শক্ত মনোভাবের জš§ দেবে। ৯/১১-এর ঘটনাবলির পর মুসলমানরা যখন ধীরে ধীরে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করতে পেরেছে, ঠিক তখনই ঘটল অরল্যান্ডোর ঘটনা। সামনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। নির্বাচনে নির্বাচকমণ্ডলীকে যে এই ‘সেন্টিমেন্ট’ প্রভাবিত করবে, এটাই স্বাভাবিক। তারপরও কথা থেকে যায় ‘মুসলমানবিরোধী’ এই মনোভাবকে পুঁজি করে ট্রাম্প যদি নির্বাচনে বিজয়ী হন (২) তাহলে একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হবে একটি দুঃখজনক ঘটনা। এতে বহিঃবিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র ইমেজ সংকটের মুখোমুখি হবে। যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়বে। আর নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের সুচনা হবে। সুতরাং অরল্যান্ডোর ঘটনাবলি দ্রুত মানুষ ভুলে যাবে, এটা মনে করার কারণ নেই। তবে সেই সঙ্গে এটাও লক্ষ্য রাখার বিষয় যে, অরল্যান্ডোর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই কি শেষ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কি এ ধরনের হামলা আরো হতে পারে? আরো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কি যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ব্যবস্থাকে একটি প্রশ্নের মধ্যে ঠেলে দেবে? কিংবা মুসলমানদের জীবন কি আরো অনিশ্চিত হয়ে উঠবে যুক্তরাষ্ট্রে? সম্প্রতি সিরিয়াতে আইএসের অবস্থান দুর্বল হয়েছে। সিরিয়া যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার সামরিক অংশগ্রহণের কারণে আইএসের অবস্থান দুর্বল হয়েছে। আইএস যেসব এলাকা দখল করে নিয়েছিল সেখান থেকে তারা নিজেদের প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। যুদ্ধের মাঠে আসাদ বাহিনীর অবস্থান এখন অনেক ভালো। ফলে আইএস বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য অরল্যান্ডো কিংবা প্যারিস হামলা সংঘটিত করতে পারে এবং সে কারণেই তারা ব্যক্তিকে ব্যবহার করে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে পারে। আমার ধারণা, আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের হামলা আরো হতে পারে। ফলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি থাকবে এদিকে, কম দৃষ্টি থাকবে সিরিয়ার দিকে। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে লাভ হবে কাদের? এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুসলমানরা। তাদের ওপর নজরদারি বাড়বে। তাদের ভিন্ন চোখে দেখা হবে। চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রেও তারা বৈষম্যের শিকার হবেন। যদিও এসব ঘটনার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই বক্তব্য এখানে মানুষ গ্রহণ করে নিয়েছে বলে মনে হয় না। ফলে এখানে মুসলিমবিদ্বেষ বাড়বে বলেই মনে হয়। এরই মাঝে যদি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যান তাহলে তা মুসলমান সমাজের জন্য হবে আরো খারাপ খবর।
 ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
 Daily Manobkontho
 20.06.2016

0 comments:

Post a Comment