রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

একটি জনমত জরিপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য প্রসঙ্গে

সবচেয়ে বড় মার্কেট রিসার্চ সংগঠন ইপসস মোরি ইউরোপের ৯টি দেশে পরিচালিত একটি সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে গত ৪ আগস্ট (দি ইকোনমিস্ট ৬ আগস্ট, ২০১৬)। জনমত জরিপে দেখা গেছে গত ২৩ জুন ব্রিটেনে গণভোটের সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রিটেনকে এখনো কষ্ট দিচ্ছে! অর্থাৎ ইইউভুক্ত ধনী দেশগুলোর জনগণ এখনো মনে করে ব্রিটেনের চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কোনো ভালো খবর নয়। ইউরোপের ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত দেশগুলোতেই এই জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা যায় ওই ৯টি দেশের শতকরা ৫৫ ভাগ মানুষ মনে করে ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত (ব্রেক্সিট) ব্রিটেনের জন্য একটি খারাপ সিদ্ধান্ত। ৫৮ ভাগ মানুষ মনে করে পুরো ইইউর জন্যও এটি খারাপ। ব্রিটেনের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছে রাশিয়া। সুইডেনের ৬৮ ভাগ মানুষ মনে করে ইইউর জন্য সিদ্ধান্তটি ভালো ছিল না। সুইডেনের মানুষ মনে করে ব্রেক্সিটের ফলে এ অঞ্চলের ব্যাপারে রাশিয়ার হুমকি আরো বাড়বে এবং রাশিয়া এ থেকে ফায়দা নেবে। অন্যদিকে ফ্রান্সের ৬৪ ভাগ মানুষ মনে করে ব্রেক্সিটের ফলে অর্থনৈতিকভাবে ইইউ আরো দুর্বল হবে। এখন ব্রিটেনের ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত কি হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। জনমত জরিপে তা প্রতিফলিত হয়েছে। জনমত জরিপে দেখা গেছে ২৮ ভাগ মানুষ মনে করে ইইউ ব্রিটেনের ব্যাপারে কঠোর হবে। আর ২৬ ভাগ মানুষ মনে করে ইইউ ব্রিটেনের ব্যাপারে নরম হবে। বলা ভালো ইউরোপের ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত স্পেন, বেলজিয়াম, জার্মানি, সুইডেন, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরিতে এই জনমত জরিপ পরিচালনা করা হয়।
এই জনমত জরিপের মধ্যে দিয়ে ইউরোপের মানুষগুলোর মধ্যকার শঙ্কা ও উদ্যোগ প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৩ জুন ব্রিটেনে যখন গণভোট অনুষ্ঠিত হয়, তখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর এই আগস্ট মাসে আমি এখইইউরোপে। ব্রিটেনের ইইউ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে যেমনি হতাশা দেখেছি, এখন ঠিক দুই মাস পর জার্মানি এসেও মানুষের মাঝে এই হতাশা দেখলাম। এর মধ্যে দিয়ে ইউরোপীয় ঐক্য বড় ফাটলের সৃষ্টি হলো এবং যা আরো সম্প্রসারিত হতে পারে, এমন আভাসও পেলাম আমি এখানে এসে। অর্থাৎ এক ধরনের অনিশ্চয়তা এখনো আছে। তাহলে এখন কি হবে? অনেকগুলো সম্ভাবনার এখন জš§ হয়েছে এবং কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে পরিবর্তন এসেছে। ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করেছেন এবং টেরেসা সে দায়িত্ব নিয়েছেন। এটাই গণতান্ত্রিক সৌন্দর্য। ক্যামেরনের নীতি মানুষ গ্রহণ করেনি। এখন কবজারভেটিভ পার্টিতে শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যের জন্য নয়ানীতি গ্রহণ করতে হবে। নয়া নেতা নির্বাচিত হয়েছেন টেরেসা মে। একটি জনমত জরিপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য প্রসঙ্গেঅর্থাৎ ব্রেক্সিটের ঘটনায় ব্রিটেন একজন নয়া প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে। লেবার পার্টির নেতৃত্বেও পরিবর্তন আসতে পারে। কেননা বর্তমান লেবার নেতৃত্ব ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ছিলেন। ফলে লেবার নেতৃত্বকেও এর দায় বইতে হবে। ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত খোদ স্কটল্যান্ডে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডে গণভোট হয়েছিল স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে। গণভোটে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল স্বাধীন স্কটল্যান্ডের পক্ষে ও বিপক্ষে। শতকরা মাত্র ৪৫ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছিল স্বাধীনতার পক্ষে, বাকি ৫৫ ভাগ ভোট দিয়েছিল ব্রিটেনের পক্ষে থাকার জন্য। ফরে সেবার স্কটল্যান্ড স্বাধীন হয়নি। এখন ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় স্কটল্যান্ড ইইউতে ব্রিটেনের জায়গাটি নিতে চায়। স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টুরগিওন বলেছেন তিনি পুনরায় স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট চান। এই গণভোট এবার স্কটল্যান্ডের ভাগ্য খুলে দিতে পারে। স্কটল্যান্ড ব্রিটেন বা যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে যেতে পারে এবং বেরিয়ে গিয়ে ইইউতে যোগ দিতে পারে। ব্রিটেনের এই গণভোট সমগ্র ইউরোপে একটি জাতীয়তাবাদী চেতনা আবারো মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। দক্ষিণপন্থিদের হাত এতে করে শক্তিশালী হতে পারে। ফ্রান্স ও গ্রিক, এমনকি ইতালি হচ্ছে পরবর্তী রাষ্ট্র, যারা ব্রিটেনের পথ অনুসরণ করতে পারে। ইতোমধ্যে ফ্রান্সের কট্টর দক্ষিণপন্থি নেতা মেরিন লি পেন ও তার দল ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টি সেখানে গণভোটের ডাক দিয়েছে। তার দলও ফ্রান্সকে ইইউ থেকে বের করে নিয়ে আসতে চায়। যদিও এটা সত্য ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন পার্টি কনজারভেটিভ পার্টি নিজেরা এই গণভোটের আয়োজন করেছিল। কিন্তু ফ্রান্সের ক্ষমতাসীনরা এই গণভোটের পক্ষে নয়। এই গণভোট জার্মানির দক্ষিণপন্থিদের আরো উৎসাহিত করতে পারে। এমনিতেই জার্মানিতে বিপুল সংখ্যক সিরীয় শরণার্থীর উপস্থিত নিয়ে জার্মানি সমাজে বিভক্তি আছে। তথাকথিত শরণার্থীদের মাঝে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বেশি ও আইএসের জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে এই অভিযোগ তুলে ইতোমধ্যে শরণার্থী শিবিরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এখন ব্রেক্সিটের ঘটনা জার্মানির দক্ষিণপন্থিদের আরো উৎসাহিত জোগাবে। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনে দক্ষিণপন্থিরা ভালো করেছে। এখন দক্ষিণপন্থিরা জার্মানিতে ইইউ ছাড়ার ডাক দিতে পারে। ব্রেক্সিটের ঘটনা এখইইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বকে বাধ্য করবে বড় সংস্কার আনতে। অনেক রাষ্ট্র এখন (পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক ও সুইডেন) নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অর্থনীতির সুরক্ষার জন্য আলাদা আইন করার উদ্যোগ নেবে। ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা অর্থনৈতিকভাবে ইইউকে একটি ঝুঁকির মাঝে ঠেলে দেবে। ব্রিটেনের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। জেপি মরগ্যান মতো বেশ কিছু বড় বড় ব্যাংক ইতোমধ্যেই ব্রিটেনে তাদের কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে। এতে করে সেখানে বিনিয়োগ হ্রাস পাবে। অন্যত্র চলে যাবে ব্যবসা। ক্ষতি হবে স্থানীয় অর্থনীতির। অন্যদিকে ইইউর অবাধ চলাচল ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগে পূর্ব ইউরোপ থেকে (পোল্যান্ড, চেক ইত্যাদি) যারা লন্ডনে অভিবাসী হয়েছিলেন তারা থাকবেন এখন বড় অনিশ্চয়তার মুখে। চাকরি চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে। ব্রিটেনের ইইউ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাংলাদেশে টাকার দাম পাউন্ডের সঙ্গে বিনিময়ে হারে দুর্বল হয়ে যাবে। অর্থাৎ টাকার দাম কমে যাবে। বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যে বাধ্যগ্রস্ত হবে। প্রচুর বাংলাদেশি উদ্যোক্তা লন্ডনে আছেন। তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশে ব্রিটেনের বিনিয়োগ ও সহযোগিতা কমে যাবে। আর এমজি (তৈরি পোশাক) সেক্টরে রফতানি কমে যাবে। ব্রেক্সিটের ঘটনা আদৌ ব্রিটেনকে বিশ্ব আসরে একটি ‘শক্তি’ হিসেবে পরিণত করতে পারবে না। এটা সত্য ব্রিটেনের ভোটাররা ইইউ থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিজেদের আলাদা অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার পক্ষে রায় দিয়েছিল। কিন্তু তাতে করে তারা খুব লাভবান হবেন কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন এখন। বরং ইইউতে থেকে ব্রিটেন বড় ভূমিকা পালন করে আসছিল। এখন তাতে ছন্দপতন ঘটল। অনেক প্রশ্ন এখন থাকবে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে। কেমন হবে আগামী দিনের ব্রিটেন? ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে থাকবে, সেটাও একটা প্রশ্ন। এখন ব্রিটেনকে ইইউভুক্ত প্রতিটি দেশের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত চুক্তি করতে হবে। যে সব ইইউ নাগরিক ব্রিটেনে কাজ করে, তাদের ব্যাপারেও একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। এমন কি যে সব ব্রিটেনের নাগরিক ইইউভুক্ত দেশে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করেন কিংবা ইইউর সদর দফতরে নিয়োজিত তাদের ব্যাপারেও একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সব মিলিয়ে বেক্সিটের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে একটি বড় ধরনের ঘটনা। ব্রিটেনের কেউ কেউ ২৩ জুনকে বলছেন ‘স্বাধীনতার দিন।’ কিন্তু আগামী দিনগুলোই বলবে এই ‘স্বাধীনতা’ ব্রিটেনকে কতটুকু শক্তিশালী করতে পারবে। নিঃসন্দেহে এই ঘটনা বড় বড় অর্থনৈতিক জোটের জন্য একটি খারাপ সংবাদ। শুভ সংবাদ কট্টরপন্থি জাতীয়তাবাদের জন্য। ইউরোপে এই কট্টরপন্থি জাতীয়তাবাদ বিশ্ব যুদ্ধের জš§ দিয়েছিল। এ ইতিহাস অনেকে জানেন। সুতরাং ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনাই শেষ কথা নয়। একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন। খোদ যুক্তরাজ্যেই এর প্রতিক্রিয়া পড়েছে। উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের পথ অনুসরণ করে যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইইউতে থাকতে চায়। লন্ডনের নব নির্বাচিত মেয়র সাদিক খানের প্রতি হাজার হাজার মানুষ আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে যেতে। শুধু তাই নয় ১০ লাখ আবেদন জমা পড়েছিল পুনরায় যুক্তরাজ্যে আরেকটি গণভোট আয়োজন করার তবে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ। এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা বিরাজ করছে যুক্তরাজ্যের সর্বত্র। এর ঢেউ এসে পড়েছে এখানে এই যুক্তরাষ্ট্রে। প্রচণ্ড মুসলমান ও অভিবাসনবিরোধী ডোনাল্ড ট্রাম্প খুব খুশি এই গণভোটের ফলাফলে। তিনি ব্রিটেনবাসীকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন ইতোমধ্যে। মুসলমানমুক্ত, অভিবাসনমুক্ত এবং সর্বোপরি ইইউমুক্ত ব্রিটেনকে তিনি দেখতে চান। এরই মাঝে ইইউর দুই বড় শক্তি জার্মানি ও ফ্রান্স মাঠে নেমেছে। জার্মান চ্যান্সেলর মার্কেলের উদ্যোগে গত জুলাই মাসে বার্লিনে ইইউর শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হয়েছে। তিনি ব্রিটেনকে ধীরে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে এই ধীরে চলার অর্থ কি? গণভোটের রায় তো প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে অস্বীকার করতে পারবেন না। এ নিয়ে তার দলের একটা অংশ ব্রেক্সিটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। কয়েকজন মন্ত্রী ও লন্ডনের সাবেক মেয়র জনসন ছিলেন এই শিবিরের। এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে এক, যুক্তরাজ্য চলে গেলে ইইউর আর্থিক কাঠামোয় তাতে কতটুকু প্রভাব পড়বে? দুই, যুক্তরাজ্য কি তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে? এর জবাব এই মুহূর্তে দেয়া কঠিন। যুক্তরাজ্য বিশ্বের বড় অর্থনীতিগুলোর একটি। জি-৭ এর সদস্য এবং নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যও যুক্তরাজ্য। দুর্বল যুক্তরাজ্যের কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না বিশ্ব আসরে। যুক্তরাজ্যের জিডিপির পরিমাণ ২ দশমিক ৬৭৯ ট্রিলিয়ন ডলার (ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে পিপিপি). আর সাধারণ হিসেবে এর পরিমাণ ২ দশমিক ৮৪৯ ট্রিলিয়ন ডলার। যা বিশ্বের ৫ম। অন্যদিকে মাথা পিছু আয় সাধারণ হিসেবে ৪৩৭৭১ ডলার, যা বিশ্বের ১৩তম, আর পিপিপিতে এই হিসাব ৪১১৫৯ ডলার। বড় অর্থনীতি হওয়ায় ইইউতে তাদের চাঁদার পরিমাণও বেশি। এক পরিসংখ্যান বলছে ২০১৫ সালে ইইউ ফান্ডে যুক্তরাজ্যের দেয়া চাঁদার পরিমাণ ছিল ১৩ বিলিয়ন পাউন্ড। যদিও যুক্তরাজ্য আবার ইইউ থেকে ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান পেয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে এই অনুদান দেয়া হয়েছে। ব্রেক্সিট বাদীরা এটাকেই ব্যবহার করেছিলেন। কট্টরপন্থি নেতা ফারাজ এক টুইট বার্তায় অভিযোগ করেছিলেন ইইউর সঙ্গে সংযুক্তির কারণে প্রতিদিন যুক্তরাজ্যের খরচ হয় ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ড। যদিও এটা কিভাবে ব্যয় হয়, তার হিসাব তিনি দেননি। ব্রেক্সিটবাদীদের (যারা ইইউ ছাড়তে চেয়েছিল) অভিযোগ ছিল বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেও, ইইউ থেকে সেভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা পায়নি ব্রিটেন। সুতরাং ইইউর ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা প্রশ্ন থাকলোই। ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে জানিয়ে দিয়েছেন গণভোটের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই বেড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে। তবে লন্ডনের মিডিয়া আমাদের জানাচ্ছে টেরেসা মে হয়তো আরো এক বছর সময় নিতে পারেন। তিনি ইইউর সঙ্গে দ্রুত আলাপ-আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে আমরা সত্যিকার অর্থে এখন জানি না কেমন হবে আগামী দিনের ইউরোপ। ব্রিটেন বাদে যে ইউরোপ, তা রাশিয়ার চাপ কতটুকু সহ্য করত পারবে সেটাও একটা প্রশ্ন। সুতরাং জনমত জরিপে এক অনিশ্চিত ইউরোপের যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। ফ্রাঙ্কফুর্ট, জার্মানি। Daily Manob Kontho 02.09,2016

0 comments:

Post a Comment