রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

রোহিঙ্গারা কি ফিলিস্তিনিদের মতো ভাগ্যবরণ করতে যাচ্ছে


বাংলাদেশ মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। এ ব্যাপারে হয়তো সবাই বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকাকে সমর্থন করবে। যেভাবে নারী, বৃদ্ধ ও ছোট ছোট শিশু শুধু একটু আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে এসেছে, তাদের করুণ কাহিনী মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, তাতে কোনো বিবেকবান মানুষ চুপ করে থাকতে পারে না ফিলিস্তিনিদের উদ্বাস্তু হওয়ার কাহিনী অনেক পুরনো। ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি এলাকায় বাধ্যতামূলকভাবে একটি কৃত্রিম ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে সৃষ্টি করে যে সংকটের জন্ম দিয়েছিল, আজ এত বছর পরও সেই সংকটের কোনো সমাধান হয়নি। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৪ মে, আর আরব লিগ একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কাগজ-কলমে প্রতিষ্ঠা করে ১৯৪৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর। কাগজ-কলমে কথাটা বললাম এ কারণে যে, গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাংকের নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, তা শুধু কাগজে-কলমেই আছে। বিশ্ব আসরে এ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পূর্ণ স্বীকৃতি নেই। তবে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বহির্বিশ্বে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের সম্মান পান বৈকি! কিন্তু যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিজ মাতৃভূমি থেকে উৎখাত হয়ে বছরের পর বছর লেবাননসহ অন্যান্য দেশে উদ্বাস্তুর জীবনযাপন করছেন। আজ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদেরও কি সেই উদ্বাস্তুর জীবনযাপন করতে বাধ্য করা হচ্ছে? নিজ বাসভূমি থেকে তারা উৎখাত হয়েছেন। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ২৫ আগস্ট যে সংকটের শুরু, তার রেশ ধরে এরই মধ্যে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এর আগেও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছে। সবমিলিয়ে বর্তমান সংখ্যা বাদ দিলেও প্রায় সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজার এলাকায় বসবাস করছে অবৈধভাবে। এ নিয়ে বিগত দিনগুলোয় মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হলেও রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার কোনো আগ্রহ দেখায়নি। এমনকি মিয়ানমার সরকারের মূল ব্যক্তি অং সান সু চির নির্বাচনে বিজয়ও সেখানে তার দল এনএলডির সরকার গঠনের পর অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলেন যে, এ সরকার রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সহানুভূতিশীল হবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে সু চি প্রমাণ করলেন, তিনি মূলত সেনাবাহিনীর স্বার্থেই কাজ করছেন। অর্থাৎ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আর কট্টরপন্থী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মিয়ানমারকে একটি বৌদ্ধ ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, সু চি মূলত সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অং সান সু চির সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে দেখা হলেও তাতে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সু চি কোনো ইতিবাচক মনোভাব দেখাননি। সু চি নিজেও বারবার বলে আসছেন, রোহিঙ্গারা বাঙালি মুসলমান! এরা বাংলাদেশের নাগরিক! বাংলাদেশ থেকেই তারা সেখানে গেছেন এবং বসবাস করছেন।

অথচ ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা। রোহিঙ্গারা সেখানে বসবাস করে আসছে শত বছর ধরে। একসময় রোহিঙ্গাদের বর্তমান আবাসভূমি আরাকান রাজ্য ছিল, স্বাধীন রাজ্য। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোডপায়া এটি দখল করে বার্মার অধীন একটি করদ রাজ্যে পরিণত করেন। আরাকান রাজ্যের রাজা বৌদ্ধ হলেও তিনি মুসলমান উপাধি গ্রহণ করতেন। তার মুদ্রায় ফারসি ভাষায় লেখা থাকত কালেমা। আরাকান রাজদরবারে কাজ করতেন অনেক বাঙালি মুসলমান। বাংলার সঙ্গে আরাকানের ছিল গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক। ধারণা করা হয়, রোহিঙ্গা নামটি এসেছে আরাকানের রাজধানীর নাম স্রোহং থেকে। কালের পরিক্রমায় স্রোহং থেকে রোয়াং, সেখান থেকে রোয়াইঙ্গিয়া এবং অতঃপর রোহিঙ্গা। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে আরাকানকে ডাকা হতো রোসাং নামে। ১৪০৬ সালে আরাকানের রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নরমিখলা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বাংলার তৎকালীন রাজধানী গৌড়ে পলায়ন করেন। গৌড়ের তৎকালীন শাসক জালালুদ্দিন শাহ নরমিখলার সাহায্যে ৩০ হাজার সৈন্য পাঠিয়ে বর্মি রাজাকে উৎখাতে সহায়তা করেন। নরমিখলা মোহাম্মদ সোলায়মান শাহ নাম নিয়ে আরাকানের সিংহাসনে বসেন। মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল রোসাং রাজদরবার। মহাকবি আলাওল রোসাং রাজদরবারে রাজ কবি ছিলেন। তিনি লিখেছিলেন পদ্মাবতী। এছাড়া সতী ময়না, ও মোর চন্দ্রানী, সয়ফুল মুল্ক, জঙ্গনামা প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ রচিত হয়েছিল রোসাং রাজদরবারের আনুকূল্যে। ইতিহাস বলে, ভাই আওরঙ্গজেবের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরাজিত হয়ে মোগল যুবরাজ শাহ সুজা ১৬৬০ সালে সড়কপথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হয়ে আরাকানে পলায়ন করেন। তৎকালীন রোসাং রাজা চন্দ্র সুধর্মা বিশ্বাসঘাতকতা করে শাহ সুজা এবং তার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। এরপর আরাকানে যে দীর্ঘমেয়াদি অরাজকতা সৃষ্টি হয়, তার অবসান ঘটে বার্মার হাতে আরাকানের স্বাধীনতা হরণের মধ্য দিয়ে। সুতরাং ঐতিহাসিকভাবেই আরাকানের সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের একটা সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, আরাকানের মুসলমানরা, যারা রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত, তারা বাংলাদেশী। মিয়ানমারের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মিয়ানমারের পার্লামেন্টে অতীতে মুসলমান রোহিঙ্গারা আরাকান থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাদের নামধামও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। তারা যদি মিয়ানমারের নাগরিক না হয়ে থাকেন, তাহলে তারা মিয়ানমার পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন কীভাবে? আসলে মিয়ানমার সরকার একটা কৌশল অবলম্বন করছে, যার মাধ্যমে তারা আরাকানকে মুসলমানশূন্য করতে চায়। এ কারণেই ১৯৬২ সালে তারা সেখানে একটি তথাকথিত নাগরিকত্ব আইন চালু করেছিল। যার মাধ্যমে তারা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে আসছিল। এই প্রক্রিয়া, অর্থাৎ মিয়ানমারকে মুসলমানশূন্য করা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায়ই বর্তমান সংকটের জন্ম। সুতরাং মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবেÑ আমরা যদি এটা চিন্তা করে থাকি, আমরা এটা ভুল করেছি। তারা কোনোদিনই রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে না। সুতরাং একটা শঙ্কা থেকেই গেল, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ কী? এদের একটা অংশ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে মিশে গেছে। বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হয়েছে কেউ কেউ। বাংলাদেশী পাসপোর্ট গ্রহণ করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন কেউ কেউ। আবার একটা অংশ রয়ে গেছে শরণার্থী শিবিরে। যদিও এটা সত্য, শরণার্থী ক্যাম্পে যারা আছেন, তাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। এরা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর কর্তৃক নিবন্ধিত। কিন্তু একটা বড় অংশই নিবন্ধিত নয়।

একটা জিনিস সূক্ষ্মভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, রোহিঙ্গা সংকটে বিশ্ব সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসে গেছেন। তুরস্কের ফার্স্টলেডি এসেছেন। তারা সবাই সহানুভূতিশীল। তারা রোহিঙ্গাদের সাহায্যের কথা বলছেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমে ফেরত নেয়ার ব্যাপারে তাদের কারও কোনো কর্মসূচি নেই। এমনকি কোনো পক্ষ থেকেই কেউ মিয়ানমার সরকারের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের কথাও বলছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের ভূমিকাও এখানে লক্ষণীয়। চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে নির্লিপ্ত। মিয়ানমারে তাদের জাতীয় স্বার্থ আছে। আরাকান উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রচুর জ্বালানি সম্পদ (তেল ও গ্যাস) আবিষ্কৃত হয়েছে। চীন এখানে বিনিয়োগ করছে। সাবেক সেনা শাসক খান শ-এর নামে আরাকান গভীর সমুদ্রে একটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে, যা ২০০৪ সালে আবিষ্কৃত হয়। ২০১৩ সালে চীন এখানে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে এ গ্যাস চীনের ইউনান রাজ্যের কুনমিংয়ে নিচ্ছে চীন। উপরন্তু আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত কাইয়াকুক পিউইয়ে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে চীন। এ ধরনের একটি সমুদ্রবন্দর কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় নির্মাণ করতে চেয়েছিল চীন। কিন্তু ভারতের আপত্তির কারণে বাংলাদেশ রাজি হয়নি। এ সমুদ্রবন্দরটি চীনের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সড়কপথে এ গভীর সমুদ্রবন্দর চীনের কুনমিংয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এতে ইউনান প্রদেশের পণ্য আমদানি-রফতানিতে অর্ধেক সময় কম লাগবে। ফলে পণ্যের মূল্যও কম হবে। সুতরাং চীন রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াবে না। এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে চীন তাতে ভেটো দেবে। ভারতেরও স্বার্থ রয়েছে। আরাকানে ভারত সড়ক নির্মাণ করছে। ভারতের দুইটি রাজ্যের সঙ্গে আরাকানের সীমান্ত রয়েছে। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের অভ্যন্তরে হামলা করে আশ্রয় নেয় আরাকানের গভীর জঙ্গলে। এক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আরাকানে ওইসব বিচ্ছিন্নতাবাদীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে অনুমতি দিয়েছিল। সুতরাং ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইবে। ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছিলেন। মোদি-অং সান সু চি বৈঠকে রোহিঙ্গা নিয়ে কোনো কথা হয়নি। যৌথ ইশতেহারে আরাকানে সহিংস হামলার নিন্দা করা হয়েছে। এর অর্থ পরিষ্কার, মোদি সরকার রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে মিয়ামনমারের নিরাপত্তা তথা মিয়ানমারের অখ-তার ওপরই গুরুত্ব দিয়েছে বেশি। এখানেই ভারতের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নটি এসে যায়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আরাকান সালভেযান আর্মির সশস্ত্র বিদ্রোহীরা আরাকানে বেশ কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ চালিয়ে ১২ জন পুলিশকে হত্যা করার পরপরই সেনাবাহিনী সেখানে গণহত্যা চালায় এবং রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। ফলে শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ তাদের নিজ বাসভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

বাংলাদেশ মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। এ ব্যাপারে হয়তো সবাই বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকাকে সমর্থন করবে। যেভাবে নারী, বৃদ্ধ ও ছোট ছোট শিশু শুধু একটু আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে এসেছে, তাদের করুণ কাহিনী মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, তাতে কোনো বিবেকবান মানুষ চুপ করে থাকতে পারে না। কিন্তু সদ্য আশ্রয় নেয়া ১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গাসহ মোট প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গার ভবিষ্যৎ কী? তাদের ক্যাম্পে রেখে তিনবেলা খাবার জোগাড় করে তাদের জীবনধারণ করা হয়তো সম্ভব। কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎ? ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা আজও তাদের রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পায়নি। আজও অনেক পরিবার অন্য দেশে ক্যাম্পে জীবনযাপন করছেন। তাদের কয়েক জেনারেশন ক্যাম্পেই কেটেছে। ইসরাইলের কারণে তারা নিজ ভূমিতে ফিরতে পারেনি। আমার আশঙ্কা রোহিঙ্গাদেরও এই শরণার্থী জীবনযাপন করতে হতে পারে! মিয়ানমার তাদের ফেরত নেবে না, এটা বিবেচনায় নিয়েই আমাদের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে হবে। ইসরাইলের অত্যাচার আর নিপীড়নের কারণেই ফিলিস্তিনিদের ভেতর সশস্ত্র গ্রুপের জন্ম হয়েছিল। হামাস আজও ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চলেছে। রোহিঙ্গাদের মাঝে একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের জন্ম হয়েছে। বাইরে থেকে এদের জন্য অস্ত্র ও অর্থ আসছে। আল কায়দা কিংবা আইএস এই রোহিঙ্গা ইস্যুকে ব্যবহার করে এ অঞ্চলে তাদের তৎপরতা বাড়াতে পারে। ফলে এ অঞ্চল ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের নিরাপত্তাও ঝুঁকির মুখে থাকতে পারে। সুতরাং শীর্ষ পর্যায়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন জরুরি, যারা রোহিঙ্গা প্রশ্নে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে। মনে রাখতে হবে, মানবিকতার নাম করে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আমরা আমাদের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিতে পারি না। 

আলোকিত বাংলাদেশ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭


0 comments:

Post a Comment