রোহিঙ্গা সংকট চতুর্থ সপ্তাহে
গড়িয়েছে। এটা এখন ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে যে এই সংকটকে শুধু একটি জাতিগত উচ্ছেদ
অভিযানই নয়, বরং এর সঙ্গে এ অঞ্চলের ভূ-রাজনীতি ও করপোরেট জগতের একটি স্বার্থও
জড়িত। এ অঞ্চলে, অর্থাৎ বঙ্গোপসাগরঘেঁষা আরাকান স্টেটের
ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। এবং আঞ্চলিক তথা বৃহৎ শক্তির স্বার্থ রয়েছে এ অঞ্চলে।
চীন ও ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে। আর একই সঙ্গে রয়েছে
ব্যবসায়িক স্বার্থ। আর তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গারা। এ অঞ্চলে রয়েছে
প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ। কাঠ, কৃষি, সুপেয় পানির পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর খনিজ সম্পদ, যা সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে। আর এসব প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে আকৃষ্ট
হয়েছে বহুজাতিক কম্পানিগুলো।
যাঁরা
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে ধারণা রাখেন তাঁরা জানেন সেনাবাহিনী
প্রত্যক্ষভাবে ও পরোক্ষভাবে মিয়ানমারের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে।
অনেক সিনিয়র জেনারেলের স্ত্রীরা দামি পাথর ব্যবসার সঙ্গে
সরাসরি জড়িত। এসব প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে দামি
পাথর আহরণ, কাঠ সংগ্রহ করা, খনিজ
সম্পদ আহরণ করা—এগুলো
নিয়ন্ত্রণ করে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডারদের হাতেই এ ব্যবসা
পরিচালনার ভার অর্পিত। সুতরাং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা (চীন ও জাপানি বিনিয়োগকারী)
সরাসরি এসব আঞ্চলিক কমান্ডারকে হাতে রেখে, তাদের ব্যবসায়িক
পার্টনার বানিয়ে এ অঞ্চলে পুঁজি বিনিয়োগ করেছে। ২০১২ সালে মিয়ানমারে একটি ভূমি আইন
পাস হয়েছে। এই ভূমি আইনের কারণেই সরকার ‘প্রাকৃতিক সম্পদ’ আহরণের
নামে ভূমি অধিগ্রহণ করছে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ না করেই। করপোরেট ব্যবসায়ীদের
স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। কেননা জমি অধিগ্রহণ না করলে এসব প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ
করা যাবে না। আর এভাবেই পরিকল্পিতভাবে আরাকানের রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমি থেকে
উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে
তারা আর কোনো দিন নিজ বাসভূমে ফিরতে না পারে।
বলা
হচ্ছে, বঙ্গোপসাগরঘেঁষা আরাকান ও বাংলাদেশের কক্সবাজার অঞ্চলে সমুদ্রের গভীরে
প্রায় ২০০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রয়েছে। ২০০৪ সালে আরাকান গভীর সমুদ্রে গ্যাস
আবিষ্কৃত হয়। ২০১৩ সালে চীন এখানে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন করে এই গ্যাস চীনের ইউনান
প্রদেশের কুনমিংয়ে নিচ্ছে। উপরন্তু আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত কাইয়াকুক পিউইয়ে
একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে চীন। এ ধরনের একটি সমুদ্রবন্দর কক্সবাজারের
সোনাদিয়ায় নির্মাণ করতে চেয়েছিল চীন। কিন্তু ভারতের আপত্তির কারণে বাংলাদেশ রাজি
হয়নি। সমুদ্রবন্দরটি চীনের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সড়কপথে এই গভীর সমুদ্রবন্দরটি
চীনের কুনমিংয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এতে ইউনান প্রদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে
অর্ধেক সময় কম লাগবে। ফলে পণ্যের মূল্যও কম হবে। সুতরাং চীন রোহিঙ্গা প্রশ্নে
বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াবে না। এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের
বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে চীন তাতে ভেটো দেবে। ভারতেরও স্বার্থ
রয়েছে। আরাকানে ভারত সড়ক নির্মাণ করছে। ভারতের দুটি রাজ্যের সঙ্গে আরাকানের
সীমান্ত রয়েছে। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ভারতের অভ্যন্তরে হামলা করে আশ্রয় নেয়
আরাকানের গভীর জঙ্গলে। এ ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আরাকানে ওই
সব বিচ্ছিন্নতাবাদীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে অনুমতি দিয়েছিল। সুতরাং
ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রেরও এ অঞ্চলের
ব্যাপারে যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে। আরাকানলাগোয়া গভীর সমুদ্রে তেল ও গ্যাসের সন্ধান
পাওয়া গেছে। মার্কিন কম্পানিগুলো সেখানে বিনিয়োগ করতে চায়। উপরন্তু চীনের বিরুদ্ধে
একটি সম্ভাব্য অ্যালায়েন্স গড়ে তুলতে হলে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারকেও প্রয়োজন
মার্কিন স্ট্র্যাটেজিস্টদের। বঙ্গোপসাগরে একটি ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন
মার্কিন স্ট্র্যাটেজিস্টদের দীর্ঘদিনের। এ ক্ষেত্রে মুখে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা
বললেও কার্যত যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রশ্নে তেমন কোনো কঠোর অবস্থানে
যাবে না। ভূ-রাজনীতির কারণে বাংলাদেশকে তাই একাই এ সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে। এর
ফলে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে, তা আশা করতে পারি না।
ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অতি সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করে গেছেন। তাঁর ওই সফরের
সময় রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল। রোহিঙ্গা মুসলমানদের
হত্যা, নারীদের ধর্ষণ, উপরন্তু জাতিসংঘের মতে প্রায়
তিন লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে আশ্রয় কিংবা আশ্রয়ের সম্ভাবনা আন্তর্জাতিক
সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলেও এ গণহত্যার ব্যাপারে মোদি-অং সান সু চির
আলোচনায় কিংবা যৌথ ইশতেহারে কোনো কথা বলা হয়নি। তাঁরা আরাকানের নিরাপত্তা
ইস্যুটিকে প্রধান করেছেন এবং বলেছেন, মিয়ানমারের
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইস্যুতে তাঁরা যৌথভাবে কাজ করবেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর বালিতে ‘ওয়ার্ল্ড পার্লামেন্টারি ফোরাম অন সাসটেইনেবল
ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক একটি
আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশ নিয়েছিলেন ভারতের লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। ওই
সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু ওই ‘সহিংসতার ঘটনা যথার্থ নয়’ বলে ঘোষণাপত্র থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে ভারত। এ দুটি ঘটনা থেকে
প্রমাণিত হয় যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে নয়, বরং
মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। এখানে ভূ-রাজনীতিটাই আসল। যুক্তরাষ্ট্রের
অবস্থানও তেমনই। যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে মিয়ানমারে। মিয়ানমার এখন
একরকম ‘উন্মুক্ত’ হয়ে যাওয়ার কারণে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা এখন দলে
দলে মিয়ানমারে ভিড় করছে। মার্কিন বিনিয়োগ সেখানে বাড়ছে।
স্ট্র্যাটেজিক্যালি
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ওই অঞ্চলের গুরুত্ব অনেক বেশি। মিয়ানমারের তথাকথিত ‘গণতান্ত্রিক সরকারকে’ আস্থায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বার্থ আদায় করে নিতে চায়। তাদের
স্ট্র্যাটেজি পরিষ্কার—চীনের বিরুদ্ধে
মিয়ানমারকে ব্যবহার করা। এ অঞ্চলে বিদ্রোহীদের উসকে দিয়ে চীনে গ্যাস তথা তেল
সরবরাহের পাইপলাইন বন্ধ করে দেওয়া। এর ফলে চীনের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই
সঙ্গে বৃহত্তর বঙ্গোপসাগরে যুক্তরাষ্ট্র তার মেরিন উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। এই
মেরিন উপস্থিতি প্রয়োজনে চীনা গ্যাস ও তেল সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে
পারবে। চীনের প্রচুর জ্বালানি শক্তির প্রয়োজন। চাহিদাও বেশি। ওই জ্বালানি সরবরাহ
নিশ্চিত করতেই চীন এ অঞ্চলের সমুদ্রবন্দরগুলোকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে, যাকে চীন
বলছে ‘ঝঃত্রহম ড়ভ চবধত্ষং’ বা ‘মুক্তার মালা’ নীতি। এই নেটওয়ার্ক যদি ভেঙে ফেলা যায়, তাহলে চীনের জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেবে। এমনকি চীন যে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ নামে এক মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে তা-ও বাস্তবায়িত হবে না। এ ক্ষেত্রে
যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে মিল আছে ভারতের। ভারত এ মহাপরিকল্পনায় যুক্ত
হয়নি। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ হচ্ছে মিয়ানমারকে তাদের একটি পরিকল্পনায়
যুক্ত করা।
মিয়ানমারের
সঙ্গে চীনের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ফলে মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্ব কখনোই চীনবিরোধী
কোনো অ্যালায়েন্সে যোগ দেবে না। তাই সংগত কারণেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুটি
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্ব পাবে কম। তবে এখানে আরো একটা সম্ভাবনার কথা একেবারে
ফেলে দেওয়া যায় না। আর তা হচ্ছে আরাকান মুসলিম নিধনকে সামনে রেখে এ অঞ্চলে
আল-কায়েদা ও আইএসের জঙ্গি সংগঠনের উত্থান ও তাদের সামরিক তত্পরতা! আরাকান
স্যালভেশন আর্মির খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের সশস্ত্র
তত্পরতা ও তাদের নেতাদের বক্তব্য প্রচারিত হচ্ছে। আইএস এভাবেই সিরিয়া ও ইরাকে
তাদের তত্পরতা বৃদ্ধি করে বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিল। এখন তাদের সেই ‘খিলাফতের’ দিন শেষ।
সিরিয়ার রাকা থেকে আইএস এখন পালাচ্ছে। ভুলে গেলে চলবে না, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ায়
আইএস তথা আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলো তত্পর। ফিলিপাইনের সলু দ্বীপপুঞ্জের
একটি এলাকা নিয়ে তারা সেখানে তাদের ‘প্রশাসন’ প্রতিষ্ঠা করেছে। সেনাবাহিনী সেখানে দীর্ঘদিন ধরে
অপারেশন পরিচালনা করছে। ফলে জঙ্গি সংগঠনগুলোর তত্পরতা এখন সিরিয়া-ইরাক থেকে হ্রাস
পেয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কেন্দ্রীভূত হয়েছে। সুতরাং জঙ্গি সংগঠনগুলোর কাছে আরাকান
এখন একটি মোক্ষম এলাকা। বঙ্গোপসাগরবেষ্টিত আরাকানে জঙ্গি তত্পরতা বেড়ে যাওয়ার জন্য
উত্তম একটি জায়গা। ভয়টা হচ্ছে আইএস যদি আরাকানে ঘাঁটি গাড়তে পারে(?) তাতে আক্রান্ত হবে বাংলাদেশও। বৃহত্তর কক্সবাজার অঞ্চলে জঙ্গি তত্পরতা
ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই গেল।
রোহিঙ্গা
সমস্যার একটি ধর্মীয় দিক আছে, এটা সত্য। মিয়ানমারে কট্টরপন্থী বৌদ্ধদের প্রভাব
বাড়ছে। তারা মিয়ানমারকে একটি বৌদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তারা মুসলমানদের
উত্খাত করে আরাকানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়াতে চায়, এটা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও সত্য, মিয়ানমারে একদিকে বহুজাতিক কম্পানির প্রভাব বাড়ছে, অন্যদিকে বৃহৎ শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের আর্থিক সংশ্লিষ্টতা বাড়ছে।
আরাকানের গভীর সমুদ্রে গ্যাস ও তেলপ্রাপ্তি ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের পরিস্থিতিকে আরো
জটিল করবে। চীন একদিকে তার তেল ও গ্যাস সরবরাহ (থান শ গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাইপযোগে
ইউনানের কুনমিং) যেমন নিশ্চিত করতে চাইবে, অন্যদিকে
যুক্তরাষ্ট্র চাইবে এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে। ফলে আরাকানের পরিস্থিতি যে
ভবিষ্যতে আরো জটিল হবে, তা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।
ফলে এই ভূ-রাজনীতি আর করপোরেট স্বার্থ রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ নিয়ে যেতে
পারে।
রোহিঙ্গা
সংকট বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো। এ জন্য বাংলাদেশ কোনোভাবেই দায়ী নয়।
বাংলাদেশের ‘নমনীয় কূটনীতি’ও লক্ষ করার মতো। রোহিঙ্গা সমস্যা যখন বাড়ছে তখন
খাদ্যমন্ত্রী মিয়ানমার গেছেন। বাংলাদেশ সরকার কোনো কড়া বিবৃতিও দেয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও
সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশ সম্ভবত একটি ‘লো প্রফাইল’ কূটনীতি
গ্রহণ করছে। সম্ভবত বাংলাদেশ চায় না রোহিঙ্গা প্রশ্নে কড়া অবস্থান নিয়ে মিয়ানমারের
সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হোক। মিয়ানমারে আমাদের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে। বিমসটেক কিংবা বিসিআইএম
করিডরে দেশ দুটি একসঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশ তাই অর্থনৈতিক স্বার্থকেই বেশি
গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশ প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে মানবিকতা
প্রদর্শন করেছে, যা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু এর
নেতিবাচক দিকটিও বিবেচনায় নিতে হবে। এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার উপস্থিতি, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর তত্পরতা আরাকানসহ বাংলাদেশ-মিয়ানমার
সীমান্তবর্তী একাধিক জেলাকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। আইএস সিরিয়া ও ইরাকের একটা
অংশ নিয়ে তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট’ প্রতিষ্ঠা করেছিল। মার্কিন (এবং ইসরায়েলি
কানেকশনে) গোপন দলিলে একটি তথাকথিত ‘রোহিঙ্গা ল্যান্ড’ প্রতিষ্ঠার (?) খবরও আমি
পড়েছি। ভবিষ্যতে কী হবে বলা মুশকিল। তবে বাংলাদেশ যে বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়ল,
তা অস্বীকার করা যাবে না।
0 comments:
Post a Comment