রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ইসির সংলাপ কি আদৌ কোনো ফল বয়ে আনবে

সিইসি জানেন কীভাবে এ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। তার আন্তরিকতাই হলো আসল। শুধু ‘সংলাপ’ করে ইসি যদি সংবাদপত্রের শিরোনাম হতে চায়, তাহলে ইসি ভুল করবে। সংলাপ করে আস্থা অর্জন করা যাবে না। আস্থা অর্জন করতে হলে চাই শক্তিশালী একটি ভূমিকা



একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে ‘সংলাপ’ শুরু করেছে। এ সংলাপ শেষ হবে অক্টোবরে। এরপর নভেম্বর মাসে তারা একটি সুপারিশমালা তৈরি করবে এবং তা চূড়ান্ত করা হবে ডিসেম্বরে। ৩১ জুলাই ইসি সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপ করে এ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল এবং এরই মাঝে দুই দফায় গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গেও তারা মতবিনিময় শেষ করেছেন। চতুর্থ দফায় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়েছে; চলবে অক্টোবর পর্যন্ত। নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪২। প্রশ্ন হচ্ছেÑ এসব সংলাপ কি আদৌ কোনো ফল বয়ে আনবে? সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট নামে একটি ‘দলের’ সঙ্গে ইসি সংলাপ করেছে ২৪ অক্টোবর। এ দলটিকে কে চেনে? সংসদীয় রাজনীতিতে এদের ভূমিকা কী? ‘মুক্তিজোট’ এর মতো দলের সঙ্গে সংলাপ করে কি ‘সব দলের অংশগ্রহণে’ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে? ইসি হয়তো দেখতে পারবে ‘অনেকগুলো দলের সঙ্গে তারা সংলাপ করেছে, সেসব দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং ‘সব দলের অংশগ্রহণে’ একটি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে! কিন্তু মানুষ কি তা গ্রহণ করে নেবে? ‘মুক্তিজোট’ এর মতো আরও অনেক দল আছে নিবন্ধিত, যার নেতা বর্তমান সরকারের আমলে মন্ত্রী হয়েছিলেন; কিন্তু জীবনে কোনো নির্বাচনে ৫০০ ভোটের বেশি পাননি। চাঁদার টাকায় যিনি চলতেন, নির্বাচন না করে জনগণের ম্যান্ডেট না নিয়েই তিনি মন্ত্রী হয়েছিলেন। আজীবন যিনি আওয়ামী লীগবিরোধী রাজনীতি করে সংবাদপত্রে ‘স্থান’ পেয়েছন, তিনি ১৪ দলের শরিক হিসেবে মন্ত্রী হয়েছিলেন। এসব ছোট দলের সুবিধা একটাইÑ জোটে থাকতে চায়। নেতা এমপি হতে চান। ১৪ দল কেন বলি, ২০ দলের কথা চিন্তা করুন। বিএনপির স্থায়ী পরিষদের অনেক সদস্যই ২০ দলের সবগুলোর নাম একসঙ্গে বলতে পারবেন না! তবে চমক দেখিয়েছে এরশাদের জাতীয় পার্টি। তিনি এখন ৫৮ দলের (?) নেতা। এক দল, এক ব্যক্তিও আছেন তার সঙ্গে। তিনি আবার এটা নিয়ে গর্ব করেন। প্রায় প্রতিদিনই এখন তিনি সরকারবিরোধী কথাবার্তা বলছেন। তা আবার পত্রিকায় ছাপাও হচ্ছে। তিনি এসব কথা বলছেন যে সরকারের বিরুদ্ধে, সে সরকারের একজন ‘বেতনভুক্ত’ বিশেষ ‘দূত’ তিনি। তিনি ভালো করতেন, যদি সরকারের ‘দূত’ এর পদ, স্টাফ, গাড়ি, বিশেষ প্রটোকল ছেড়ে দিতেন। আমাদের দুর্ভাগ্য, তার কথা শুনতে হয়। সংবাদপত্রে তার সংবাদ পাঠ করতে হয়। ২৪ আগস্ট তিনি বললেন, তার দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। কোথায় পেলেন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার? কোনো দল তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেনি। বলেছে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের কথা। 




সংবাদপত্রগুলো যখন সরকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির ‘দ্বন্দ্ব’কে নিয়ে নিত্যদিন নানা স্টোরি করছে, তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার বক্তব্যের জন্য আবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হলেন। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে সংলাপের পর তিনি কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। এগুলো অনেকটা এ রকমÑ ১. ইসি সব দলকে ভোটে আনতে কোনো মধ্যস্থতা করবে না; এটা তাদের কাজ নয়। ২. কারও চাওয়া বা না চাওয়ার ওপর সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি নির্ভর করে না। ৩. তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। ৪. সরকার যে নির্বাচন পদ্ধতি ‘সেট’ করে দেয়, সে নিয়মেই তিনি নির্বাচন করবেন। ৫. বর্তমানে শতকরা একশভাগ অনুকূল ও আস্থাশীল পরিবেশ রয়েছে এবং কেউ তার কাছে কোনো দাবি-দাওয়া নিয়ে যায়নি ইত্যাদি। সুধী সমাজ এবং সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রায় সবাই যখন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের পক্ষে তাদের মতামত দিয়েছিলেন, তখন একই সঙ্গে একটি বক্তব্য সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। বক্তব্যটি দিয়েছেন বাসসের প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যিনি প্রধানন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব। সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টিকে তিনি এক ধরনের ‘মতলব’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সংবাদপত্রে তার বক্তব্যটি এভাবেই এসেছে। এ তথাকথিত ‘মতলববাজের’ বক্তব্যকে আমরা কীভাবে ব্যাখ্যা করব? এ দেশের অনেক সিনিয়র নাগরিক, গণ্যমান্য ব্যক্তি, অনেক সিনিয়র সাংবাদিক, যাদের কেউ কেউ আবার সরকার সমর্থকও বটে, তারা সবাই সংলাপ ও সেনা মোতায়েনের পক্ষে কথা বলেছেন। আমি নিজে সংলাপে অংশ নিয়ে সেনা মোতায়েনের পক্ষে কথা বলেছি। সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের প্রায় সবাই সেনা মোতায়েনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন। এরা সবাই কি তাহলে ‘মতলববাজ’ বা ‘কুমতলবে’ কাজ করছেন! গণমাধ্যম ব্যক্তিরা যখন এ ধরনের কথাবার্তা বলেন, তখন বিভ্রান্তি ছড়ায় বৈকি! আবার সিইসি যখন নানা প্রশ্ন তোলেন, তখনও বিভ্রান্তি বাড়ায়। সিইসি মধ্যস্থতা করবেন না, এটা ঠিক আছে; কিন্তু বড় দলগুলোকে যদি তিনি আস্থায় নিতে না পারেন, তাহলে এ সংলাপ কি অর্থহীন হয়ে যাবে না? সংলাপে ডেকে ‘ফটোসেশন’ করে আর দুপুরে লাঞ্চ খাইয়ে কি ‘অংশীদারমূলক’ নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে? ‘কারও চাওয়া বা না চাওয়ার ওপর সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নির্ভর করে না’Ñ এ ধরনের কথাবার্তা তো রাজনীতিবিদরা বলেন; সিইসি কেন বলবেন? তিনি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেনÑ এটা তাকে বুঝতে হবে। আমরা সবাই সংলাপে বলেছি সিইসি’কে কম কথা বলার জন্য। যা বলার তা বলবেন ইসির সচিব। রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ছে। নতুন নতুন ইস্যু তৈরি হচ্ছে। সামনের দিনগুলোয় আরও ইস্যু তৈরি হবে। উত্তেজনা আরও বাড়বে। ইসি এমন কোনো কর্মকা- করবে না, যাতে বিভ্রান্তি আরও বাড়ে এবং মূলধারার বড় দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। আমরা সবাই চাই একটি ভালো নির্বাচন হোক; অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব এ কর্তব্য অনেক বেশি। নির্বাচনে ‘সিল মারা সংস্কৃতি’, ‘ভোট কেন্দ্র দখলের সংস্কৃতি’, কিংবা ‘বিরোধী দলের প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না দেয়া’Ñ এই যে প্রবণতা বিগত দশম সংসদ নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন কিংবা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা দেখেছি, এ প্রবণতা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তরায়। এক্ষেত্রে ইসির করণীয় আছে। ইসি এক্ষেত্রে বেশ কতকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। যেমনÑ ১. স্থায়ীভাবে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি একটি ‘পর্যবেক্ষক টিম’ গঠন করতে পারে, যাদের কাজ হবে নির্বাচন কেন্দ্রগুলো মনিটরিং করা এবং সরাসরি কেন্দ্রে রিপোর্ট করা। ২. মিডিয়ার মাধ্যমে যেখান থেকেই জাল ভোট, ভোট কেন্দ্র দখলের খবর আসবে, সেখানে ওই কেন্দ্র নয়, বরং পুরো নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা। ৩. মনোনয়নপত্র একই সঙ্গে স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ে গ্রহণ করা। এতে প্রার্থীর পক্ষে একাধিক জায়গায় মানোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেয়ার খবর এলে ওই এলাকার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করতে হবে। ৪. গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নির্বাচনী কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। ৫. সংসদ নির্বাচনে ভোট গণনায় যদি প্রার্থীরা সমান সংখ্যক ভোট পান, তাহলে লটারির পরিবর্তে সেখানে ফের নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কোনো প্রার্থী যদি শতকরা ৫০ ভাগের নিচে ভোট পেয়ে বিজয়ী হন, তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা যাবে না। সেখানেও ফের নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশে এ ধরনের নিয়ম আছে। ৬. সংসদ সদস্যের যোগ্যতার প্রশ্নে ন্যূনতম যোগ্যতা যুগোপযোগী হওয়া উচিত। দেশে উচ্চশিক্ষার হার বেড়েছে। যারা দেশের জন্য আইন প্রণয়ন করবেন, তারা যদি ‘শিক্ষিত’ না হন, তাহলে সঠিক ও যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করবেন কীভাবে? এতে সংসদ সদস্যরা বেশি মাত্রায় আমলানির্ভর হয়ে যাবেন। আমলারা আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটাবেন। ৭. বর্তমান আইনে সুবিধাবাদী ও ধান্দাবাজ ঊর্ধ্বতন আমলা, সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা অবসরের তিন বছর পর নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। এটা একটা দুর্বল আইন। এটা পরিবর্তন করে ন্যূনতম ৫ বছর করা প্রয়োজন। অর্থাৎ একজন আমলা ৫৯ বছর বয়সে অবসরে যাবেন। এবং ৬৫ বছর বয়সে তিনি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে শর্ত থাকবে, স্থানীয় পর্যায়ে অর্থাৎ ওই সংসদীয় এলাকায় দল তাকে মনোনয়ন দেবে। এটা না হলে দেখা যাবে, সুযোগসন্ধানী আমলারা সচিবালয়ে থাকাকালে মন্ত্রণালয়ের প্রভাব খাটিয়ে তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা-ে অংশ নিচ্ছেন। এতে পরোক্ষভাবে তিনি সরকারকে ব্যবহার করছেন। ৫ বছরের একটি গ্যাপ থাকলে এ কাজটি করতে তিনি অপারগ হবেন। সংলাপে এসব প্রশ্নই উঠেছে। 




এখন সময় এসেছে নির্বাচন কমিশনকে এটা প্রমাণ করতে হবে যে, তারা সত্যি সত্যিই ‘স্বাধীন’। বেশ ক’জন সাবেক নির্বাচন কমিশনার, একাধিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক এটা বলার চেষ্টা করেছেন যে, নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকার অর্থেই তাদের সমতা প্রদর্শন করতে হবে। না হলে যে ‘বিতর্ক’ নিয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশন তার যাত্রা শুরু করেছিল, সে ‘বিতর্ক’ আরও বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী ২৬ জুলাই ফরাসি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। আমাদের সংবিধানের ১১৮(৪) ধারায়ও বলা আছে স্পষ্ট করে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনে স্বাধীন’ এবং সংবিধানের ১২৬-এ বলা আছে, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।’ এটাই হচ্ছে আসল কথা। নির্বাচনের ৩ মাস আগে সব প্রশাসন চলে যায় নির্বাচন কমিশনের হাতে। অর্থাৎ ডিসি, এসপি, ওসিরা থাকেন নির্বাচন কমিশনের আওতায়। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে তা কী বলে? জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ কর্মকর্তা কিংবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা থাকেন জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তাদের নিয়ন্ত্রণ করে মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন নয়। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করে, আর জেলা প্রশাসকরা ‘নিয়ন্ত্রিত’ হন মন্ত্রণালয় থেকে। এতে প্রায় ক্ষেত্রেই সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রতিফলিত হয়। 




আমরা চাই সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনটা হোক। মুক্তিজোটের মতো দলের (?) সঙ্গে সংলাপ করে এটা নিশ্চিত করা যাবে না। আস্থা অর্জন করতে হবে বিএনপির মতো বড় দলের। এজন্য সিইসি’কে কৌশলী হতে হবে। বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা এড়াতে হবে। মিডিয়ার কাছে যত কম যাবেন, ততই সিইসির জন্য মঙ্গল। অভিযোগ উঠেছেÑ এ সংলাপ ‘আইওয়াশ’! এর পেছনে সত্যতা কতটুকু আছে, তা হয়তো আগামীতে জানা যাবে। কিন্তু এটি যাতে ‘আইওয়াশে’ পরিণত না হয়, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব সিইসি তথা অন্য কমিশনারদের। তারা অভিজ্ঞ। তারা ভালো বোঝেন। শুধু ‘কারও দিকে তাকিয়ে নয়’, বরং সংবিধান প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তারা কাজ করে যাবেনÑ এ প্রত্যাশা আমাদের সবার। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়েছে। এ সংলাপ থেকে খুব বেশিকিছু পাওয়ার আছে বলে আমার মনে হয় না। নির্বাচনে ‘সব দলের অংশগ্রহণ’টাই হলো আসল। এর জন্য সংলাপের প্রয়োজন নেই! সিইসি জানেন কীভাবে এ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। তার আন্তরিকতাই হলো আসল। শুধু ‘সংলাপ’ করে ইসি যদি সংবাদপত্রের শিরোনাম হতে চায়, তাহলে ইসি ভুল করবে। সংলাপ করে আস্থা অর্জন করা যাবে না। আস্থা অর্জন করতে হলে চাই শক্তিশালী একটি ভূমিকা। না হলে এ ‘সংলাপ’ নির্বাচন কমিশন তথা সিইসির ভাবমূর্তি নষ্ট করবে মাত্র।
দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭


0 comments:

Post a Comment