রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

রোহিঙ্গা সমস্যা কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে

রোহিঙ্গা সমস্যা কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে? গত ২৫ আগস্ট এই সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে এখন অবধি পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এটা বলাই যায় যে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে! টিভি প্রতিবেদন থেকে আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে টেকনাফসহ সীমান্তবর্তী শহরগুলো এক একটি রোহিঙ্গা নগরীতে পরিণত হয়েছে। এরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। আমাদের নীতিনির্ধারকরা রোহিঙ্গা সংকটের গভীরতা নিয়ে কতটুকু কী ভেবেছেন, আমি বলতে পারব না। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এই রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটি স্থায়ী সংকটে পরিণত হলো। ইতোমধ্যে তিন লাখের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করবে বলে ধারণা করছি। আরাকান রোহিঙ্গা মুসলমানদের সংখ্যা ১১ লাখ। এর প্রায় অর্ধেকই এখন বাংলাদেশে প্রবেশ করবে বলে আমার আশঙ্কা। বাংলাদেশ মানবিক দিকটি বিবেচনায় নিয়ে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এটা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান আদৌ কোনো ভূমিকা পালন করবে না।
আঞ্চলিক তথা বৃহৎ শক্তিগুলো রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে উদাসীন। ভারতের ভূমিকা মিয়ানমার সরকারের পক্ষে। চীন এ ক্ষেত্রে উদাসীন। তারা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না, যাতে করে মিয়ানমারে তাদের যে স্বার্থ তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিকে মিয়ানমারের পুনর্বাসনবিষয়ক মন্ত্রী ইন মিয়াট বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে, সব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে গেছে, তাদের সবাইকে ফেরত নেওয়া হবে না। যারা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারবেন, শুধু তাদেরই ফেরত নেওয়া হবে। ওই নাগরিকত্ব আইনই সেখানে সংকট তৈরি করেছিল। ১৯৮২ সালে প্রণীত আইন অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি। ওই আইন অনুযায়ী রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাঙালি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, শত বছর ধরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সেখানে কোনো নাগরিক অধিকার নেই। তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতেন পারে না। এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে পারেন না। অনেকটা খেটো জীবন যাপন করতে হয় তাদের। ধারণা করা হয়েছিল, ২০১৫ সালে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক শাসন চালু হলে এবং অং সান সূ চি সরকার প্রধানের মূল দায়িত্ব পালন করলে, এ পরিস্থিতির অবসান ঘটবে এবং রোহিঙ্গারা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। কিন্তু দেখা গেল অং সান সূ চির আমলেই রোহিঙ্গারা বেশি নির্যাতিত হয়েছে। তাদের নাগরিক অধিকার না থাকলেও ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা। রোহিঙ্গারা যেখানে বসবাস করে আসছেÑ শত বছর ধরে। একসময় রোহিঙ্গাদের বর্তমান আবাসভূমি আরাকান রাজ্য ছিল স্বাধীন রাজ্য। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা কেডপায়া এটি দখল করে বার্মার অধীন একটি করদ রাজ্যে পরিণত করেন। আরাকান রজ্যের রাজা বৌদ্ধ হলেও তিনি মুসলমান উপাধি গ্রহণ করেন। তার মুদ্রায় ফার্সি ভাষায় লেখা থাকত কালেমা। আরাকান রাজদরবারে কাজ করতেন অনেক বাঙালি মুসলমান। বাংলার সঙ্গে আরাকানের ছিল গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক। ধারণা করা হয়, রোহিঙ্গা নামটি এসেছে আরাকানের রাজধানীর নাম ম্রোহং থেকে। কালের পরিক্রমায় ম্রোহং থেকে বোয়াং সেখান থেকে বোয়াইঙ্গিয়া এবং অতঃপর রোহিঙ্গা। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে আরাকানকে ডাকা হতো রোসাং নামে। ১৪০৬ সালে আরাকানের রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নরসিমলা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বাংলার তৎকালীন রাজধানী গৌড়ে পলায়ন করেন। গৌড়ের তৎকালীন শাসক জালালুদ্দিন শাহ নরমিসলার সাহায্যে ৩০ হাজার সৈন্য পাঠিয়ে বর্মি রাজাকে উৎখাতে সহায়তা করেন। নরমিসলা মোহাম্মদ সোলায়মান শাহ নাম নিয়ে আরাকানের সিংহাসনে বসেন। মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল রোসাং রাজদরবার। মহাকবি আলওল রোসাং রাজদরবারে রাজকবি ছিলেন। তিনি লিখেছিলেন পদ্মাবতী। এ ছাড়া সতী ময়না, ও লোর চন্দ্রানী, সয়ফুল মুল্ক, জঙ্গনামা প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ রচিত হয়েছিল রোসাং রাজদরবারের অনুকূল্যে। ইতিহাস বলে ভাই আওরঙ্গজেবের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরাজিত হয়ে মোগল যুবরাজ শাহ সুজা ১৬৬০ সালে সড়কপথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হয়ে আরাকানে পলায়ন করেন। তৎকালীন রোসাং রাজা চন্দ্র সুধর্মা বিশ্বাসঘাতকতা করে শাহ সুজা এবং তার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। এর পর আরাকানে যে দীর্ঘমেয়াদি অরাজকতা সৃষ্টি হয়, তার অবসান ঘটে বার্মার হাতে আরাকানের স্বাধীনতা হরণের মধ্য দিয়ে। সুতরাং ঐতিহাসিকভাবেই আরাকানের সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের একটা সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, আরাকানের মুসলমানরা, যারা রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত, তারা বাংলাদেশি। মিয়ানমারের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মিয়ানমারের পার্লামেন্টে অতীতে মুসলমান রোহিঙ্গারা আরাকান থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাদের নামধামও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। তারা যদি মিয়ানমারের নাগরিক না হয়ে থাকেন, তাহলে তারা মিয়ানমার পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন কীভাবে? আসলে মিয়ানমার সরকার একটা কৌশল অবলম্বন করছে, যার মাধ্যমে তারা আরাকানকে মুসলমানশূন্য করতে চায়। এ কারণেই ১৯৬২ সালে তারা সেখানে একটি তথাকথিত নাগরিকত্ব আইন চালু করেছিল। যার মাধ্যমে তারা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে আসছিল। এই প্রক্রিয়া অর্থাৎ মিয়ানমারকে মুসলমান শূন্য করা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায়ই বর্তমান সংকটের জন্ম। সুতরাং মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবেÑ আমরা যদি এটা চিন্তা করে থাকি, আমরা এটা ভুল করেছি। তারা কোনো দিনই রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে না। সুতরাং একটা শঙ্কা থেকেই গেল বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ কী? এদের একটা অংশ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে মিশে গেছে। বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হয়েছে কেউ কেউ। বাংলাদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন কেউ কেউ। আবার একটা অংশ রয়ে গেছে শরণার্থী শিবিরে। যদিও এটা সত্য, শরণার্থী ক্যাম্পে যারা আছেন, তাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। এরা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর কর্তৃক নিবন্ধিত। কিন্তু একটা বড় অংশই নিবন্ধিত নয়। এ সংকট আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ খুব ঘনবসতির দেশ। একটি ছোট্ট দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষ বসবাস করে। আমরা নতুন করে বিদেশি অর্থাৎ মিয়ানমারের নাগরিকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয় দিতে পারি না। এ ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্ট নীতিমালা দরকার। বিদেশি মেহমানরা বাংলাদেশে এসে আমাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করলেও আমাদের কোনো সিনিয়র মন্ত্রীকে বিদেশে তৎপর হতে দেখিনি। বিদেশি মেহমানরা সবাই আমাদের সাহায্যের কথা বলছেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে তাদের কারো কোনো কর্মসূচি নেই। এমনকি কোনো পক্ষ থেকেই কেউ মিয়ানমার সরকারের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের কথাও বলছেন না। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের ভূমিকাও এখানে লক্ষণীয়। চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে নির্লিপ্ত। তাদের কোনো শক্ত অবস্থানও আমরা দেখছি না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রশ্নে ব্রিফিং করেছেন। কিন্তু এতদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তিন লাখ রোহিঙ্গা ঢুকে গেছে। এখন ওদের কী হবে? অতীতে যারা এসেছিল, তারা এখনো কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে। মিয়ানমার সরকার এদের ফিরিয়ে নেয়নি। ফলে যারা ইতোমধ্যে এসে গেছে, তারা আদৌ মিয়ানমারে ফিরতে পারবে কিনা, এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এদের অন্য দেশে পুনর্বাসন করবে, এটাও আমার মনে হয় না। তারা এখন স্থায়ী শরণার্থীতে পরিণত হতে যাচ্ছে। বিশ্ব ইতিহাসে এ ধরনের শরণার্থীদের কাহিনি আমরা জানি।

ফিলিস্তিনিদের উদ্বাস্তু হওয়ার কাহিনি অনেক পুরনো। ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি এলাকায় বাধ্যতামূলকভাবে একটি কৃত্রিম ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলকে সৃষ্টি করে যে সংকটের জন্ম দিয়েছিল, আজ এত বছর পরও সেই সংকটের কোনো সমাধান হয়নি। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৪ মে, আর আরব লিগ একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কাগজে-কলমে প্রতিষ্ঠা করে ১৯৪৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর। কাগজ-কলমে কথাটা বললাম এ কারণে যে, গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাংকের নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, তা শুধু কাগজ-কলমেই আছে। বিশ্ব আসরে এই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পূর্ণ স্বীকৃতি নেই। তবে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বহির্বিশ্বে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের সম্মান পান বৈকি! কিন্তু যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিজ মাতৃভূমি থেকে উৎখাত হয়ে বছরের পর বছর লেবাননসহ অন্যান্য দেশে উদ্বাস্তুর জীবনযাপন করছে। আজ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদেরও কী সেই উদ্বাস্তুর জীবনযাপন করতে বাধ্য করা হচ্ছে? নিজ বাসভূম থেকে তারা উৎখাত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট যে সংকটের শুরু, তবে রেশ ধরে ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ৩ লাখ ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এর আগেও রোহিঙ্গারা বালাদেশে এসেছে। সব মিলিয়ে বর্তমান সংখ্যা বাদ দিলেও প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজার এলাকায় বসবাস করছে অবৈধভাবে। এ নিয়ে বিগত দিনগুলোয় মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হলেও, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়নি। বাংলাদেশকে এখন তথাকথিত মানবিকতার নামে এসব রোহিঙ্গার আশ্রয় দিতে হবে। ইতোমধ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বায়েমেট্রিকস পদ্ধতিতে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করা শুরু হয়েছে। এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। আমাদের নিরাপত্তার জন্য এটি করা প্রয়োজন ছিল। কেননা রোহিঙ্গা জঙ্গিরা শরণার্থীদের সঙ্গে বাংলাদেশের ভেতর ঢুকে গেছে বলে আমার ধারণা। আন্তর্জাতিক জিহাদি গোষ্ঠী এ থেকে সুবিধা নিতে চাইবে। সিরিয়া-ইরাক থেকে জঙ্গি কার্যক্রম এখন যদি আরাকান অঞ্চলে সম্প্রসারিত হয়, আমি অবাক হব না। এতে করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিস্মিত হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। সাম্প্রতিক সময়গুলোয় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জঙ্গি কার্যক্রম আমরা প্রত্যক্ষ করছি। নব্য জেএমবি নামে জঙ্গিরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও তা এখন নিয়ন্ত্রিত। এখন দেখার বিষয়, রোহিঙ্গাদের মাঝে জঙ্গি রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করেছে কিনা? রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো উচিত। রোহিঙ্গাদের সাহায্যের নামে বিদেশি সাহায্য এখন আসবে। বিশেষ করে আরব দেশগুলো থেকে এখন সাহায্য আসবে। এই সাহায্যের নামে কোনো জঙ্গি তৎপরতার পৃষ্ঠপোষকতা করা হয় কিনা, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। যে কোনো বিদেশি সাহায্যের সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্টতা থাকা প্রয়োজন। আরও একটা কথা। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের। এখন বোধকরি আর অপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সেনাবাহিনীকে দিয়ে দ্রুত ঠৈঙ্গারচরে বসতি স্থাপনার কাজ শেষ করা প্রয়োজন। সেখানে অবকাঠামো তৈরির পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য কর্মসংস্থানও করতে হবে। যাতে করে তারা নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আমাদের অবস্থানকে বদলে দিয়েছে। আমরা মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু মিয়ানমার সরকার যাতে তাদের সব নাগরিককে ফিরিয়ে নেয়, আমাদের সেই চেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে। অতিরিক্ত রোহিঙ্গা নাগরিকদের চাপে, আমাদের অর্থনীতি, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা যাতে বিপর্যয়ের মধ্যে না পড়ে, সেটাই হবে আমাদের অগ্রাধিকার।

দৈনিক আমাদের সময় ১৪.০৯.২০১৭

0 comments:

Post a Comment