রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে কিছু কথা

জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। গত ২১ অক্টোবর হোটেল র‌্যাডিসনে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা এই ঐক্যের ডাক দেন। একটি যৌথ ইশতেহারও প্রকাশ করা হয়েছে। যৌথ ইশতেহারে যেসব কথা বলা হয়েছে তা নতুন নয়। এদেশের সুশীল সমাজ বেশ কিছুদিন যাবতই এ ধরনের কথা বলে আসছে, কিন্তু তাদের এই ‘ঐক্যের ডাক’-এ বেশকিছু অসঙ্গতি রয়েছে। প্রথমত, এই ‘ঐক্যের ডাক’ কাদেরকে নিয়ে? অধ্যাপক চৌধুরী কিংবা ড. হোসেন ঐক্যের ডাক দিলেই কি ‘ঐক্য’ প্রতিষ্ঠিত হবে? দ্বিতীয়ত, দুটি বড় দল বা দল দুটির নেতৃত্বে গঠিত জোটকে বাদ দিয়ে কী ‘জাতীয় ঐক্যে’ প্রতিষ্ঠা করা আদৌ সম্ভব? তৃতীয়ত, অধ্যাপক চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে অতীতে আ.স.ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডি ও কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা দলের একসঙ্গে একটি ‘তৃতীয় ধারা’ সূচনা করার কথা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু দেখা গেল র‌্যাডিসনের অনুষ্ঠানে রব ও কাদের সিদ্দিকী দু’জনই অনুপস্থিত। নিজেদের মধ্যে যদি আদৌ ঐক্য প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে বৃহত্তর ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে কীভাবে? এই মুহূর্তে আলোচনার বিষয় মূলত দুটি-একটি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে সব দলের মতামতের ভিত্তিতে একটি ‘ফর্মুলা’ উদ্ভাবন। দ্বিতীয়টি, দুটি বড় জোটের বাইরে একটি তৃতীয় জোট বা ধারার সূচনা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে অধ্যাপক চৌধুরী ও ড. হোসেনের অবস্থান এক। তারা দু’জনই এবং তাদের দলও নির্বাচনের নিরপেক্ষতার স্বার্থে একটি তত্ত্বাবধায়ক ও নির্দলীয় সরকার চায়। কেননা ক্ষমতাসীন সরকারকে রেখে যে নির্বাচন, সেই নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই বা আগামীতেও থাকবে না। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে দলীয় কর্তৃত্ব এত বেশি যে, কেউই চান না ক্ষমতা ছেড়ে দিতে। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই বটে, কিন্তু ভিন্ন নামে হলেও এ ধরনের একটি ব্যবস্থা থাকা উচিত, যা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে। অন্যদিকে এরা দু’জন তৃতীয় ধারার কথা বলছেন বটে, কিন্তু রাজনীতিগতভাবে এদের মধ্যে পার্থক্য আছে। কামাল হোসেন বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার লোক। অন্যদিকে অধ্যাপক চৌধুরী বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করেন এবং ইসলাম ধর্মের চেতনাকে লালন করেন। এ ক্ষেত্রে এদের মধ্যে সহাবস্থান কীভাবে সম্ভব? বাংলাদেশের রাজনীতিতে ১/১১-এর (১১ জানুয়ারি ২০০৭) ঘটনার পর আমরা তৃতীয় শক্তির কথা শুনেছিলাম। সেই তৃতীয় শক্তি বিকশিত হয়নি। আজ ঠিক ৫ বছর পর আবার তৃতীয় শক্তির কথা উঠেছে। গত ৭ জুন নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে এই তৃতীয় শক্তি গড়ার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুটি বড় দল-আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় ধারা সৃষ্টির প্রয়াস অনেকদিন ধরেই নেয়া হচ্ছে, কিন্তু সমাজে আদৌ তা কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। এক সময় জাতীয় পার্টি বা বাম ধারার দলগুলোকে তৃতীয় ধারার অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করা হতো, কিন্তু জাতীয় পার্টি সেই অর্থে গ্রহণযোগ্য একটি তৃতীয় শক্তি না হয়ে উত্তরবঙ্গকেন্দ্রিক একটি আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। আর বাম দলগুলোর আদৌ কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। এখন মাহমুদুর রহমান মান্নার উদ্যোগে গড়ে ওঠা নাগরিক ঐক্য আদৌ একটি তৃতীয় ধারার সূচনা করবে, এ বিশ্বাস রাখতে পারছি না কিংবা হুদা একটি তৃতীয় ধারার জন্ম দেবেন, এটাও মনে হয় না। এটা স্বীকার করতেই হবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি অবিসাংবাদিত শক্তি। আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যমণ্ডিত দল। এদের রয়েছে দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। যে কারণে ১৯৭৫ সালের বিয়োগান্তক ঘটনার পরও দলটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে দু’দু’বার সরকারও গঠন করেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে বিএনপি একটি ধারা তৈরি করেছে। বিএনপি আওয়ামী লীগের বিকল্প শক্তি। এই বিকল্প শক্তি বাংলাদেশে একটি নির্দলীয় রাজনীতির সূচনা করেছে। পরিসংখ্যান বলে সংসদীয় রাজনীতিতে এই দল দুটির অবস্থান অত্যন্ত শক্তিশালী। প্রথম সংসদ থেকে শুরু করে সর্বশেষ নবম সংসদ পর্যন্ত সংসদীয় রাজনীতির যে ধারা তাতে দেখা যায়, যেখানে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, সেখানে বিএনপির অবস্থান বিরোধী শিবিরে। শক্তিশালী তৃতীয় কোনো পক্ষ বিকশিত হয়নি। স্বতন্ত্ররা প্রথম সংসদে (৪টি আসন), মুসলিম লীগ-আইডিএল দ্বিতীয় সংসদে (২০ আসন), জাতীয় পার্টি (৫ম, ৭ম, ৮ম, ৯ম) তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও জাতীয় পার্টি বরাবরই সরকারের অংশীদার। ফলে তৃতীয় শক্তি বিকশিত হতে পারেনি। এখন বাংলাদেশে একটি তৃতীয় শক্তির প্রয়োজনীয়তার কথাও আকার-ইঙ্গিতে বলছেন দাতারা। দুর্নীতির প্রশ্নটি এখন সামনে চলে এসেছে। বলা হচ্ছে, এই তথাকথিত তৃতীয় শক্তি দুর্নীতিমুক্ত থাকবে। এই দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির কথা বলছে নাগরিক ঐক্য। পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক তথা দাতা গোষ্ঠীর একটা বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিশ্বব্যাংক সরাসরি দুর্নীতির প্রশ্ন তুলেছে। এই দুর্নীতির ইস্যুটি বিশ্বব্যাংক তথা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি শব্দ। এটা ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় বিশ্বে সরকার পরিবর্তন করায়। পাকিস্তানে তারা ইমরান খানকে সামনে নিয়ে এসেছে। মিসরে ‘আরব বসন্ত’ এ দুর্নীতির বিষয়টি ছিল মুখ্য। এখন মিসরে পরিবর্তন এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র উন্নয়নশীল বিশ্বে গণতন্ত্র বিনির্মাণে তরুণ সমাজ, সুশীল সমাজকে ‘প্রমোট’ করে। পাঠক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করুন। হিলারি ক্লিনটন তৃতীয় বা চতুর্থ রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে দেখা না করলেও তরুণ সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন এবং রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ায় তরুণদের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন। এখন যারা নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে সংগঠিত হয়েছেন, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় তেমন একটা নেই। তারা মূলত সুশীল সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। সঙ্গত কারণেই যে আশঙ্কাটা থেকে যায়, তা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র যে সুশীল সমাজকে ‘প্রমোট’ করছে তারাই কী নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছে? অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী কিংবা ড. কামাল হোসেনেরও তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই।  কথিত তৃতীয় শক্তি নিয়ে দুটি বড় দল আবার পরস্পর পরস্পরকে অভিযুক্ত করেছে। গত ২২ জুন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি তৃতীয় শক্তির উত্থান চাইছে। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর একদিন আগে বলেছেন, বিএনপি কোনো তৃতীয় শক্তিকে সমর্থন করে না। তবে নাগরিক ঐক্য যদি একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, তাহলে তারা দল হিসেবে এটাকে সমর্থন করবে। মান্না আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও তিনি মূল ধারার আওয়ামী লীগের নন। এক সময় জাসদ ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে যান, কিন্তু নেত্রীর কাছাকাছি যেতে পারেননি। সংস্কারবাদী হিসেবে তার একটা পরিচিতি আছে। এই পরিচয়ের কারণে এবং বিভিন্ন টকশোতে স্পষ্ট বক্তব্য রাখার কারণে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন না বলে অনেকের ধারণা। এ কারণেই তিনি নাগরিক ঐক্যের জন্ম দিয়েছেন-এমন কথা আছে। এর কিছুদিন পর হুদা দিলেন আরেকটি দলের জন্ম। নাগরিক ঐক্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো তৃতীয় ধারা সূচনা করতে পারবে না। তাদের কোনো সুস্পষ্ট দিকদর্শনও নেই। এরা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন। সুশীল সমাজকে দিয়ে রাজনীতি হয় না, অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি সম্ভব নয়। সুশীল সমাজের সঙ্গে আরো যারা আছেন তারা যদি রাজনীতিতে অবদান রাখতে চান, সেটা নিঃসন্দেহে একটা ভালো দিক। রাজনীতি করতে হলে তাদের মূল ধারার রাজনীতিতে আসতে হবে। মূল ধারার বাইরে গিয়ে কেউ অতীতে কোনো সুবিধা করতে পারেননি। ড. ইউনূস কিংবা ড. কামাল হোসেনের মতো ব্যক্তিত্ব এখন শুধু সংবাদপত্রের পাতাতেই আছেন। অধ্যাপক ইউনূস চেষ্টা করেছিলেন, পারেননি। রাজনীতি একটা ভিন্ন বিষয়। রাজনীতিবিদরা ভুল করতে পারেন। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যেতে পারেন-এটা সত্য, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে জনগণের সঙ্গে এরাই থাকেন। সাধারণ একজন মানুষ যখন কোনো সমস্যায় পড়েন, তখন তিনি ছুটে যান স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে। তারাই তাদের আশ্রয়স্থল। ড. ইউনূস সাধারণ মানুষকে নিয়ে এখন ‘সামাজিক ব্যবসার’ কথা বলেন। কিন্তু তিনি কী আদৌ সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে কোনো দিন দাঁড়িয়েছেন? একজন কামাল হোসেনের কাছে কী সাধারণ মানুষ যেতে পারে? ড. কামাল হোসেনের যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু তার সীমাবদ্ধতা তাকে জাতীয় নেতায় পরিণত করতে পারেনি। আজ একজন মান্নার মধ্যে হতাশা কাজ করে। তার নিজের নির্বাচনী এলাকা কোনটি, এটা নিয়েও সমস্যা আছে। বগুড়াতে তিনি নির্বাচন করেছিলেন, কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি আর তার নির্বাচনী এলাকায় যাননি। একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে তিনি পরিচিতি পেয়েছেন। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আর বুদ্ধিজীবী এক কথা নয়। মান্না আজ যে কথাগুলো বলছেন, সেই কথাগুলো তিনি দলীয় ফোরামে বললে ভালো করতেন। এটাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। ‘তৃতীয় শক্তি’ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আদৌ কোনো অবদান রাখতে পারবে না। তবে এটা ঠিক, বর্তমানে রাজনীতি যেভাবে চলছে, সে ধারায় রাজনীতি চললে একুশ শতকে আমরা বাংলাদেশকে যোগ্য স্থানে নিয়ে যেতে পারব না। দুটি বড় দলের মধ্যে সুস্পষ্ট দিকদর্শন নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা আমরা বলছি বটে, কিন্তু সেই অর্থে কোনো উদ্যোগ আমরা নিচ্ছি না। নতুন নেতৃত্বও তৈরি হচ্ছে না। দুটি বড় দলের নেতৃত্বের গাড়িতে যারা আছেন, তারা আগামী ৫-৬ বছর পর অবসরে যাবেন। তখন দলটি থাকবে বটে, কিন্তু নয়া নেতৃত্ব তো তৈরি হচ্ছে না। নয়া নেতৃত্ব তৈরি করার কোনো উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে না। ২০৫০ সালকে সামনে রেখে একটি রূপকল্প প্রণয়ন করা উচিত। আমাদের জনসংখ্যা, খাদ্য, অর্থনীতি, নিরাপত্তা, জলবায়ু, সুপেয় পানি, জ্বালানি, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে দুটি বড় দলেরই বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা উচিত। এদের এসব বিষয়ে ‘সেল’ থাকা উচিত। গবেষণা সেল থাকা প্রয়োজন। ওই গবেষণা সেল দলের নীতিনির্ধারণ করবে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে। দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় এটাই নিয়ম। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া আর জনসমর্থন হারিয়ে অন্য দলের জন্য পথ করে দেয়া। এর কোনো বিকল্প নেই। আজ যারা তৃতীয় ধারার কথা বলছেন, এরা ভালো করতেন যদি স্ব-স্ব দলে থেকে দলকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে পারতেন, তারা তা করেননি। একজন আমলা, একজন শিক্ষাবিদ কিংবা একজন আইনজীবী বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন ডেকে আনতে পারবেন না। তৃতীয় শক্তি বা জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হলেও এ কথাগুলো গত ৪০ বছরই কোনো না কোনোভাবে শুনে আসছি, কিন্তু জাতীয় ঐক্য কী হয়েছে? এরা ভালো ভালো কথা বলেন, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু তাদের জনসমর্থন কতটুকু? হোটেল র‌্যাডিসনে বসে জাতীয় ঐক্য করা যায় না। মানুষকে সংগঠিত করতে হলে গ্রামে যেতে হবে। ঢাকা শহর আর টকশো দিয়ে বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশে যে শত শত গ্রাম, সেই গ্রামের সঙ্গে তাদের কারোরই যোগাযোগ নেই। তাই র‌্যাডিসনে বসে যে ঐক্যের ডাক তারা দিলেন তা শেষ পর্যন্ত কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।
Daily MANOBKONTHO
04.11.12

0 comments:

Post a Comment