রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি


গত ২১ অক্টোবর তৃতীয় দফা ‘প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে’ বারাক ওবামা বিজয়ী হলেও আগামী ৬ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও জনমত জরিপ ওবামার পক্ষে। নির্বাচনের প্রায় ১২ দিন আগে নিউইর্য়ক টাইমস, কিউনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়, সিবিএস, গ্যালপ কিংবা ব্ল-মবার্গ জরিপে দেখা গেছে, নির্বাচনে ওবামা বিজয়ী হবেন। আবার ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসির জনমত জরিপে দেখা গেছে, ১ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে রমনি বিজয়ী হবেন। তবে নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, এ নির্বাচনে ‘সুইং স্টেট বা ব্যাটল গ্রাউন্ড স্টেটগুলো’ (কোন দলেরই সংখ্যাধিক্যহীন) একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এগুলোর ওপরই নির্ভর করবে একজন প্রার্থীর জয়-পরাজয়। এসব রাজ্যের মধ্যে রয়েছে ওহাইও, ভার্জিনিয়া, ফ্লোরিডা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, কলোরাডো, নর্থ ক্যারোলিনা, নেভাদা, আইওয়া ও উইসকনসিন। এসব রাজ্যের কোনটা ওবামার পক্ষে, কোনটা আবার রমনিকে সমর্থন করছে। তাই শেষ হাসিটি কে হাসবেন তা বলা যাচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে। আমেরিকার অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা ৫০, আর নির্বাচকমণ্ডলীর সংখ্যা ৫৩৮। একজন প্রার্থীকে নির্বাচিত হতে হলে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে। সাধারণ সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের সদস্যসংখ্যার ভিত্তিতে এই নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হয়। যেমন ক্যালিফোর্নিয়ার নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটের সংখ্যা ৫৪ অথবা নিউইয়র্কের ৩৩। ছোট ছোট রাজ্য, যেমন মেইন (৪টি), সাউথ ডাকোটা (৪টি) কিংবা ওয়াওমিংয়ে (৩টি) নির্বাচকমণ্ডলীর সংখ্যা কম। কোন প্রার্থী কোন রাজ্যে বিজয়ী হলে সে রাজ্যে যে কয়টি নির্বাচকমণ্ডলীর ভোট রয়েছে, তার পুরোটা তিনি পেয়েছেন বলে গণ্য করা হয়। এ ক্ষেত্রে যে প্রার্থী হেরে যান, তিনি নির্বাচকমণ্ডলীর কোন ভোট পান না। অর্থাৎ জনসাধারণের ভোটে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সরাসরি নির্বাচিত হন না, নির্বাচিত হন নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে। তবে জনসাধারণ ভোট দেয়। এটাই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। এখানে আরও একটা কথা বলা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ‘তৃতীয় পার্টি’র তেমন কোন অস্তিত্ব নেই। নামকাওয়াস্তে দু’-একটি দল (গ্রিন, কন্সটিটিউশন পার্টি) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী দিলেও তারা প্রচারণার দৌড়ে এগোতে পারেন না। প্রচারণায় একজন প্রার্থীকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়, যা ছোট ছোট দলের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। নির্বাচন দুটি বড় দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই দুই দলের প্রার্থীরা জনসাধারণ তথা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন। এটা বৈধ। প্রার্থীদের প্রচুর ভ্রমণ করতে হয়। প্রয়োজন হয় প্রচুর অর্থের। আগে প্রেসিডেন্ট বাছাই পদ্ধতি ছিল জটিল। প্রতিনিধি পরিষদে স্থানীয় অঙ্গ রাজ্যগুলোর প্রার্থীদের মধ্য থেকেই প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা ছিল। এর পর পার্টি ‘ককাসে’ প্রার্থী নির্বাচনের ব্যবস্থা হয়। আর ‘ককাস’ বা বাছাই ব্যবস্থায় চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রার্থী মনোনীত হয়ে প্রার্থীরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৮৯-১৭৯৭)। তার কোন দল ছিল না। তিনি ফেডারেলিস্টদের ব্যানারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্মরণ করিয়ে দেই, প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কোন বেতন গ্রহণ করেননি। বলা হয়ে থাকে, যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন (১৮০১-১৮০৯) ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। আর সেই দলটি থেকেই এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বারাক ওবামা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। যদিও ওই সময় দলটির নাম ছিল ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিকান। ১৮২৫ সাল পর্যন্ত এই দলটি থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। কুইন্সি অ্যাডামস (ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট) ক্ষমতায় ছিলেন ১৮২৯ সাল পর্যন্ত। তারপর শুধু ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নাম ধারণ করে এন্ড্র- জনসন ও মার্টিন ভ্যান বুরেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন (১৮৪১)। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে উইগ পার্টির আÍপ্রকাশ ঘটে। ১৮৫৩ সাল পর্যন্ত উইগ পার্টির প্রার্থীরা প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। এরপর দলটির কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। আব্রাহাম লিংকন (১৮৬১-১৮৬৫) ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রথম প্রেসিডেন্ট। এর পর থেকেই এই দুই পার্টি রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। সাধারণত একজন প্রেসিডেন্ট চার বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি মাত্র দুই টার্ম ক্ষমতায় থাকতে পারেন। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট ১২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত। ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের এই ৩২তম প্রেসিডেন্টের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্ষমতাসীন থেকেও দ্বিতীয় টার্মের জন্য সেই প্রেসিডেন্ট বিজয়ী হতে পারেননি। সমসাময়িককালে জেরাল্ড ফোর্ড (৩৮তম প্রেসিডেন্ট, রিপাবলিকান, ১৯৭৪-১৯৭৭), জিমি কার্টার (৩৯তম, ডেমোক্র্যাট, ১৯৭৭-১৯৮১) ও সিনিয়র জর্জ বুশের (৪১তম, রিপাবলিকান, ১৯৮৯-১৯৯৩) নাম উল্লেখ করা যায়। এখন দেখা যাক, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার দ্বিতীয় টার্ম শুরু করতে পারেন কিনা। তার দ্বিতীয় টার্ম শুরু হবে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি।
প্রতিটি নির্বাচনেই দেখা গেছে কতগুলো ইস্যু প্রাধান্য পায়। ওই ইস্যুগুলোর ব্যাপারে প্রার্থীদের অবস্থান দেখে ভোটাররা ভোট দেয়। অর্থনৈতিক অচলাবস্থা, বিশাল বেকারত্ব, রেকর্ড অতিক্রম করা ঋণ (১৬ ট্রিলিয়ন ডলার) ও সরকারের অনধিকার চর্চায় অচলপ্রায় ব্যক্তিমালিকানাধীন বাণিজ্যিক খাত, সে সঙ্গে কিছু বৈদেশিক ইস্যু (ইরান, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও লিবিয়া) নির্বাচনে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলছে। এসব ইস্যুতে দুই প্রার্থীর অবস্থান কিন্তু এক নয়। ওবামার বিরুদ্ধে রিপাবলিকান শিবিরের বড় অভিযোগ, তিনি গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতা দিতে পারেননি। বেকারত্ব কমাতে পারেননি। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে। এটা সত্য, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির কোন উন্নতি হয়নি গত চার বছরে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন গরিব। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ৪৯ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, সে সঙ্গে আরও ৫১ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যসীমার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে ধনী-গরিবের একটা বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীর মাত্র ১ শতাংশ রাষ্ট্রের সম্পদের ২৫ ভাগ নিয়ে যায়। এরা আবার সম্পদের ৪০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে। এই এক ভাগ মানুষের বার্ষিক আয় ২ কোটি ৭৩ লাখ ৪২ হাজার ২১২ ডলারের উপরে। কিন্তু বেকার মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে দেখা যায়, একটি কাজের জন্য ন্যূনতম চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আরও খারাপ খবর হচ্ছে, ৪৭ দশমিক ৮ ভাগ পরিবার সরকারি খাদ্য সাহায্য বা ফুড স্টাম্পের ওপর নির্ভরশীল। এসব পরিবার কর্মজীবী। কিন্তু এদের আয় যথেষ্ট নয়। প্রেসিডেন্ট ওবামা যেখানে প্রতিটি নাগরিকের চাকরি নিশ্চিত করতে পারেননি, সেখানে স্বাস্থ্যসেবায় কাটছাঁট করেছেন, স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায়ে যথেষ্ট শিক্ষক দিতে পারেননি। সেখানে কোটি কোটি ডলার খরচ করেছেন ‘তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’র পেছনে। ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হয়েছিল সব মিলিয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের ওপর (যুদ্ধ খরচ ৮০৬ বিলিয়ন, সৈনিকদের চিকিৎসা ও অন্যান্য খরচ ৪২২ থেকে ৭১৭ বিলিয়ন)। আর আফগান যুদ্ধের খরচ ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের অংককেও ছাড়িয়ে গেছে। শুধু সেনা প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে ব্যয় হয়েছিল ৬ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে জনসংখ্যার ৯ দশমিক ১ ভাগ বেকার, সেখানে যুদ্ধের পেছনে এত বিপুল ব্যয় নিয়ে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে।
পররাষ্ট্রনীতিতে ওবামা সফল, তাও বলা যাবে না। ২০০৯ সালে কায়রো ভাষণে তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ‘নতুন এক সম্পর্ক’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, জঙ্গিবাদ উৎখাত করতে গিয়ে কোথাও কোথাও জঙ্গিবাদের জš§ হয়েছে। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেনে আÍঘাতী বোমাবাজির জš§ হয়েছে। সাদ্দাম উৎখাতের পর সেখানে ইসলামী কট্টরপন্থীরা শক্তিশালী হয়েছে। সিরিয়াতে আসাদকে উৎখাত করতে গিয়ে দেখা গেল, অস্ত্র চলে গেছে জঙ্গিদের হাতে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ‘আরব বসন্ত’ তিউনিসিয়া, ইয়েমেন, মিসরে পরিবর্তন ডেকে আনলেও সেখানে কী ধরনের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ‘পারমাণবিক সমস্যা’র কোন সমাধান তিনি বের করতে পারেননি। তবে প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন, ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।
রিপাবলিকান প্রার্থী মিট রমনির সমর্থনও যে বেশি তা বলা যাবে না। তার অর্থনৈতিক তথা বৈদেশিক নীতি মানুষকে টানতে পারেনি। বরং গর্ভপাতের বিরোধিতা করা, অভিবাসীদের ব্যাপারে কঠোর হওয়া এবং সমকামীদের বিয়ের বিরোধিতা করায় তিনি হিস্পানিক ও অভিবাসী আমেরিকানদের ভোট পাবেন না। তবে রমনি তার চরম দক্ষিণপন্থী অবস্থান থেকে অনেক সরে এসেছেন। ওবামার বৈদেশিক নীতির সমালোচনা করলেও তিনি নিজে কোন সুস্পষ্ট নীতি উপাস্থাপন করতে পারেননি। বরং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে অতিঘনিষ্ঠতা আরব বিশ্বে তার অবস্থানকে অনেক দুর্বল করেছে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, অষঃবৎ ঘবঃ নামে একটি ভিন্নধর্মী অনলাইন ম্যাগাজিন ১৫টি পয়েন্ট চিহ্নিত করেছে, যেখানে ওবামা ও রমনির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই (২৬ অক্টোবর)। এ সবের মাঝে রয়েছে মৃত্যুদণ্ড রদ অ্যাক্ট, ৫ হাজার ১১৩টি পারমাণবিক ওয়ারহেডের ভবিষ্যৎ, গুয়ানতানামো বে’র বন্দিশিবিরের ভবিষ্যৎ এবং ওই বন্দিশিবিরে নির্যাতনকারীদের বিচার, বাড়ি ব্যবসায় ধসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার, পাকিস্তান, ইয়েমেন, সোমালিয়ায় ড্রোন বিমান আক্রমণের ভবিষ্যৎ, ন্যূনতম বেতন ১০ ডলারে উন্নীত করা (প্রতি ঘণ্টায় বর্তমানে ৭.২৫ ডলার), ইরানে সাম্ভাব্য বিমান আক্রমণের ব্যাপারে অসম্মতি, নির্বাচনী প্রচারণায় যে বিপুল অর্থ দাতাদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয় (চাঁদা) তা প্রত্যাখান করা, জলবায়ু পরিবর্তন তথা উষ্ণতা হ্রাসে একটি কমিটমেন্ট, সবার জন্য চাকরির নিশ্চয়তা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লির ভবিষ্যৎ, লাদেনকে কেন ধরে এনে কোর্টে বিচার করা হল না ইত্যাদি। এসব বিষয় সাধারণের মাঝে আলোচিত হলেও কোন একটি ইস্যুতেও ওবামা ও রমনির কোন ‘কমিটমেন্ট’ নেই। উভয়েই বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছেন। অথচ একজন সম্ভাব্য প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে মানুষ এসব বিষয়ে শুনতে চায়। তিনটি বিতর্কের একটিতেও তারা এ ব্যাপারে কোন কথা বলেননি।
ওবামা ২০০৮ সালের নির্বাচনে কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক তথা অভিবাসী আমেরিকানদের ভোট পেয়েছিলেন। এবারও পাবেন। মহিলাদের ভোটও এবার পাবেন। অন্যদিকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে রমনি ধনিক শ্রেণীর ভোট পাবেন। সব মিলিয়ে বারাক ওবামার পাল্লা ভারী বলে ধারণা করা হলেও ‘সুইং স্টেট’গুলোর ভূমিকার কারণে ফলাফল শেষ মুহূর্তে পাল্টে যেতে পারে। গত ২৫ অক্টোবর ওবামা আগাম ভোট দিয়েছেন তার নিজ শহর ইলিনয়ের শিকাগো শহরে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। তবে শেষ হাসিটা কে হাসেন, তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত।
Daily JUGANTOR
02.10.12

0 comments:

Post a Comment