রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গণতন্ত্রচর্চা

আজ যদি সরকারি ও বিরোধী দলের মানসিকতায় কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে কোনো জট খুলবে না। বান কি মুনের টেলিফোনেও কোনো ফল আসবে না। এতে বিদেশের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি আরো নষ্ট হবে। আজ সরকারেরও বুঝতে হবে ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতা ধরে রাখার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। আমরা এক কঠিন সময় পার করছি। সংকট নিরসনে আমাদের রাজনীতিবিদরা যদি ব্যর্থ হন, তা জাতিকে অনেক পিছিয়ে দেবে। আমরা শুধু প্রত্যাশা করতে পারি, আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের দুই নেত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ এ মুহূর্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রধান আলোচিত বিষয় হলেও এর মধ্য দিয়ে যে বিষয়টি প্রমাণিত হলো তা হচ্ছে, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হচ্ছেন। তাদের এই ব্যর্থতার ফলে জাতিসংঘের মহাসচিবকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে! জাতিসংঘের মতো একটি বিশ্ব সংস্থা আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করবে কিংবা তাদের নির্দেশমতো আমাদের রাজনীতিবিদরা কাজ করবেন— এটা সুস্থ গণতন্ত্রচর্চার পথে একটি অন্তরায়। এটি কখনো কাম্য হতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, একটি ন্যূনতম ইস্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা এক হতে পারছেন না। যদিও তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করার কথা বলেন, তৃতীয় শক্তির ক্ষমতা গ্রহণের বিরুদ্ধে কথা বলেন; কিন্তু গণতন্ত্রের মূল যে কথা— পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখা, এটি তারা নিশ্চিত করতে পারছেন না। স্বাধীনতার ৪২ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক সমাজ আমরা আজো বিনির্মাণ করতে পারিনি। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমাদের রাজনৈতিক নেতারা। তারপর অনেক সময় পার হয়েছে। কিন্তু সেই সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং গণতন্ত্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার, সংসদীয় সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছি। আমরা একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করেও ‘শোষিতের গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো উদ্যোগই সফলতা পায়নি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে দেশে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি হলেও মাত্র ১৭ বছরের মধ্যে সংবিধানে সংশোধনী এনে তা বাতিল করা হয়। এক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর একটা বড় অংশ এর পক্ষে থাকলেও আওয়ামী লীগ এককভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে সংবিধানে সংশোধনী আনে। যদিও এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের একটি সিদ্ধান্ত ছিল। ২০১২ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনকালীন একটি দলনিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এক্ষেত্রে সরকারি ও বিরোধী দলের মধ্যে কোনো সমঝোতা হচ্ছে না। ফলে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। আর এ সংকটকে কেন্দ্র করেই বান কি মুন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেত্রীকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু এতে একটা সমাধান বের হবে বলে মনে হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বেন না। তিনি এমন কথাও বলছেন যে, নির্বাচন পর্যন্ত সরকার কার্যকর থাকবে। তার এ বক্তব্য বির্তকের মাত্রা বাড়িয়েছে। কেননা এর আগে ২৫ অক্টোবর সংসদ ভেঙে দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, তা ছিল যৌক্তিক। নির্বাচন পর্যন্ত সংসদ কার্যকর থাকলে নানা জটিলতা সৃষ্টি হবে। ওই সময় পর্যন্ত যারা সংসদ সদস্য হিসেবে বহাল থাকবেন, তারা নির্বাচনে প্রভাব খাটাবেন। বিশেষ করে যারা সরকারি দলের সংসদ সদস্য হিসেবে থাকবেন, তারা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটাবেন। তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, তাতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে অস্বীকার করা কোনোমতেই সম্ভব হয়ে উঠবে না। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তখন স্থানীয় সংসদ সদস্যের ‘চাপ’ অস্বীকার করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আমরা এর আগে একাধিকবার উল্লেখ করেছিলাম, বর্তমান রাজনৈতিক কাঠামোয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন নানা কারণে সরকারের ওপর নির্ভরশীল। স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়োগ দেয় সরকার। তাদের ওপর নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্তৃত্ব বা প্রভাব নেই। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে কোনো নির্দেশও দিতে পারেন না। আর স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রের জনপ্রশাসন। এরই মধ্যে এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে যে, শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেকে যাবেন। ফলে ওই সময় তার নেতৃত্বাধীন যে সরকার থাকবে, সে সরকারের অধীনে যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থাকবে, তারাই নিয়ন্ত্রণ করবে জেলা-উপজেলা পরিষদের প্রশাসন। এক্ষেত্রে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা যাবে না। এরই মধ্যে প্রশাসনে ব্যাপকভাবে রাজনীতি ঢুকে গেছে। সরকার সমর্থক জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রমোশন দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে যারা সরকারের ঠিক ‘বন্ধু নন’— এমন কর্মকর্তাদের ওএসডি অথবা ছাঁটাই করা হয়েছে। তাই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কাঠামোকে এভাবে রেখে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা আশা করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী নিজে ও একাধিক মন্ত্রী প্রায়ই একটি কথা বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, এভাবেই বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। তারা প্রায়ই ভারতের দৃষ্টান্ত দেন। এখানে একটা শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। ভারতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী তিন মাসের জন্য থাকেন বটে, কিন্তু তার কোনো ক্ষমতা থাকে না। এই তিন মাস মূল ক্ষমতা থাকে নির্বাচন কমিশনের হাতে। আর ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কিংবা কমিশনাররা নিরপেক্ষতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা আমাদের কমিশনাররা পারেননি অতীতে। বরং দেখা গেছে, তারা অনেকটা সরকারি কর্মচারীদের মতো আচরণ করে গেছেন। অতীতে এমনো দেখা গেছে, ভারতের নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীন কোনো কোনো মন্ত্রীকে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন কি অতীতে কখনো এমন ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পেরেছে? বরং দেখা গেছে, তারা সরকারের সিদ্ধান্তের এক চুল বাইরেও যেতে পারেননি। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন আরপিওতে কিছু কিছু পরিবর্তন আনার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে রাজনৈতিক মহলে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে যদি ভারতের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তুলনা করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে। সংসদে বিল আনতে হবে। কমিশনের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে হবে। নিজস্ব ক্যাডার তৈরি করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা যদি সাংবিধানিকভাবে শক্তিশালী করা হয়, যদি জেলা পর্যায়ের জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা জেলা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাব খাটাতে না পারেন, তাহলেই সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা যায়। কিন্তু বর্তমান কাঠামোয় তা সম্ভব নয়। তাই ভারত তথা অন্যান্য দেশের দৃষ্টান্ত দেয়া অর্থহীন। বর্তমান সরকারের হাতে সুযোগ ছিল। যখন সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হলো এবং সংসদে পাস করা হলো, তখন সরকার নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিতে পারত। সরকার তা করেনি। এটা সত্য, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছে। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা যদি পুরোপুরি অনুসরণ করা হতো, তাহলে কোনো বির্তক উঠত না। কিন্তু সরকার তা করেনি। আগামী দুটো সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আওতায় আয়োজন করারও সুপারিশ ছিল উচ্চ আদালতের। সরকার সেদিকেও যায়নি। সরকার সংবিধান সংশোধনী আনার জন্য যে কমিশন গঠন করেছিল, তারা নীতিগতভাবে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন— এমন একটি সংবাদ পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। কিন্তু সরকারপ্রধানের ইচ্ছার কারণে তা বাদ দিতে হয়েছিল। এমনকি সংবিধানে সংশোধনী আনার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি। প্রধান বিরোধী দলের কোনো মতামত আমলে নেয়া হয়নি। ফলে সংবিধানে যে পরিবর্তন-পরিবর্ধন, তা একতরফাভাবে হয়েছে। ঐকমত্যভাবে সংবিধানে সংশোধনী আনা হলে আজকের পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না। এখন ক্ষমতাসীন দল ও প্রধানমন্ত্রীকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান রেখে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। নির্বাচনের মতো একটি বিষয়ে যদি জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে সেই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই এবং তাতে সংকট বাড়বেই।

আমাদের দুর্ভাগ্য একটাই— নির্বাচন এলেই দাতাগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা তত্পর হয়ে ওঠেন। অতীতেও হয়েছেন। বিএনপির জমানায় তথাকথিত ‘টুয়েস ডে ক্লাবের’ তত্পরতার খবর আমাদের অনেকেরই জানা আছে। তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করত।

এখন দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এদের তত্পরতা আবার শুরু হয়েছে। নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এ দেশের জনগণ। এক্ষেত্রে বাইরের হস্তক্ষেপ বা পরামর্শ কাম্য হতে পারে না। কিন্তু হচ্ছে। আর আমাদের রাজনীতিবিদরাই তার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছেন। আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে যদি ঐকমত্য হতে পারতাম, তাহলে দাতারা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারতেন না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, সরকার সেই আশঙ্কা দূর করতে পারেনি। এক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা এখানেই— বিরোধী দলগুলোকে তারা আশ্বস্ত করতে পারেনি দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন, তা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করা সম্ভব। অনেক কারণে দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সরকারের দমননীতি কিংবা বিরোধী দলের সঙ্গে সরকারের আচরণ, সরকারের আরেক টার্ম ক্ষমতায় থাকার আগ্রহ, সরকারপ্রধানের বারবার তৃতীয় শক্তির ব্যাপারে প্রশ্ন রাখা ইত্যাদি কারণে সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছা নিয়ে একটি বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এটা সরকারের ব্যর্থতা। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার বিরোধী দলকে আশ্বস্ত কিংবা নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। সমস্যাটা তৈরি হয়েছে এখানেই। আস্থার বড় অভাব। এই আস্থার অভাব যে আজই তৈরি হয়েছে, তা নয়। ইতিহাস বলে, বিরোধী দলের টানা হরতালের মুখে স্যার বিবিয়ানও বাংলাদেশে এসেছিলেন মধ্যস্থতা করার জন্য। সেটা ১৯৯৬ সালের কথা। তিনিও সফল হননি। যদিও এরপর অনেক নির্বাচন হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। আর প্রতিটি নির্বাচনই বহির্বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ওইসব নির্বাচনে বিরোধী দল ক্ষমতা পেয়েছে, আবার অন্য নির্বাচনে ক্ষমতা ছেড়েও দিয়েছে। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি। আজ এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচনে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বর্তমান সরকার বিজয়ী হয়েছিল।

সুতরাং আজ যদি সরকারি ও বিরোধী দলের মানসিকতায় কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে কোনো জট খুলবে না। বান কি মুনের টেলিফোনেও কোনো ফল আসবে না। এতে বিদেশের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি আরো নষ্ট হবে। আজ সরকারেরও বুঝতে হবে ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতা ধরে রাখার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। আমরা এক কঠিন সময় পার করছি। সংকট নিরসনে আমাদের রাজনীতিবিদরা যদি ব্যর্থ হন, তা জাতিকে অনেক পিছিয়ে দেবে। আমরা শুধু প্রত্যাশা করতে পারি আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে।
হাইল্যান্ড ভিলেজ, ডালাস, ২৬ আগস্ট, ২০১৩
অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
দৈনিক বণিক বার্তা, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৩।

0 comments:

Post a Comment