মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির বিপুল পরাজয়ের পর
যে প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, ডেমোক্রেটদের এ পরাজয়
মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো ইঙ্গিত বহন করে কিনা? অর্থাৎ সোজাসাপটা যে
কথাটা মার্কিন টিভিতে বারবার আলোচিত হচ্ছে তা হল, ওবামা তার
পররাষ্ট্রনীতিতে আদৌ কোনো পরিবর্তন আনবেন কিনা? মার্কিন রাজনীতিতে
প্রেসিডেন্টের ভূমিকা সর্বাধিক হলেও প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই
তার পররাষ্ট্র তথা দেশরক্ষা নীতি পরিচালনা করতে হয়। একা প্রেসিডেন্ট
সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বটে, কিন্তু কংগ্রেস তা আটকে দিতেও পারে। তাই
প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের সমর্থন চাইতে হয়। সামনে অনেক ইস্যু- দেখতে হবে
ওবামা এসব ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেন।মধ্যপ্রাচ্যের আইএস জঙ্গিদের
উত্থান ও ইরাক-সিরিয়ার কিছু অংশ নিয়ে নতুন একটি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র
সুন্নিস্তান-এর জন্মের সম্ভাবনা প্রেসিডেন্ট ওবামার জন্য এক নম্বর ইস্যু।
প্রেসিডেন্ট সেখানে, বিশেষ করে ইরাকে আরও ১৫শ আমেরিকান সৈন্য পাঠানোর
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইরাকে আরও আছে ১৪শ সৈন্য। এরা যুদ্ধে অংশ নেবে না বটে;
কিন্তু বলা হচ্ছে ইরাকি সেনাবাহিনী ও কুর্দি বাহিনীকে এরা প্রশিক্ষণ দেবে।
আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও কিছু সৈন্য
সেখানে থেকে যাবে। এই সৈন্য মোতায়েনের জন্য প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের কাছে ৫
দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার অর্থ চেয়েছেন। প্রশ্ন এখানেই- কংগ্রেস এই অর্থ অনুমোদন
করবে কি-না?দ্বিতীয়ত, ওয়ালস্ট্রিট জার্নালে একটি খবর বেরিয়েছে যে,
ওবামা অত্যন্ত গোপনে গেল মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী
খামিনিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। ওই চিঠিতে ওবামা সম্ভাব্য একটি পারমাণবিক
চুক্তির বিনিময়ে (ইরান-যুক্তরাষ্ট্র) ইরাক-সিরিয়ায় ইসলামিক জঙ্গিদের ঠেকাতে
ইরানের সহযোগিতা চেয়েছেন। এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, ইরান
পারমাণবিক বোমা বানাচ্ছে, এই অভিযোগ ওবামা প্রশাসনের দীর্ঘদিনের। এমনকি
একাধিকবার এমন কথাও বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো সময় ইরানের
পারমাণবিক চুল্লিগুলোতে বোমা হামলা করতে পারে। দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের সঙ্গে
ছয়-জাতি আলোচনা চলে আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও চীন এই ছয় জাতি আলোচনায়
শরিক হলেও কোনো ফলাফল তাতে পাওয়া যায়নি। এমনকি ওবামার ইরানি ধর্মীয় নেতাকে
চিঠি দেয়া ও সাহায্য চাওয়ার অর্থ হচ্ছে পরিষ্কার- ইরান এই অঞ্চলে একটি
ফ্যাক্টর। ইরানকে বাদ দিয়ে কোনো সমঝোতা সম্ভব নয়। ফলে মার্কিন নীতিতে
পরিবর্তন আসছে। সুতরাং এই পরিবর্তন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের
সহাবস্থানের বিষয়টিকে কনজারভেটিভরা কীভাবে দেখাবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন।
রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস ইরানকে কতটুকু ছাড় দেবে, এ নিয়ে আলোচনার শেষ
নেই।কট্টরপন্থী সিনেটর ম্যাকেইন এখন সিনেটের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত
কমিটির চেয়ারম্যান। এ বছরের শেষ নাগাদ National Defense Authorization Act
পাস হবে কি-না, তাতে বড় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছরের প্রতিরক্ষা
বাজেট পাস হওয়ার কথা। এটা ৫২১ বিলিয়নে (৪৯৬ বিলিয়ন থেকে) উন্নীত করার
প্রস্তাব করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এটা পাস না হলে আটকে যাবে সমস্ত
সামরিক কার্যক্রম। ওবামা Overseas Contingency Fund-এর জন্য (বিদেশে সৈন্য
মোতায়েন বাবদ খরচ) ৭৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের ফান্ডের প্রস্তাব করেছেন।
কিন্তু সিনেট অনুমোদন করেছে ৫৯ মিলিয়ন ডলার। দূরপাল্লার বিমান (এ-১০), যা
আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে, তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে
বিমানবাহিনী। এটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রতিরক্ষা
বাজেট পাস হতে হবে। প্রতিরক্ষা বাজেটের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতি এখন
ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাজেট পাস না হলে আইএস জঙ্গি দমনে অব্যাহত সামরিক
অভিযানে ভাটা পড়বে। রিপাবলিকানরা তা কি চাইবে? একটি স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র
গঠনের সম্ভাবনাও বাড়ছে। এটা নিয়েও প্রশ্ন থাকবে।মার্কিন
পররাষ্ট্রনীতির একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক।
কংগ্রেস নির্বাচনে তার সমর্থকদের পরাজয়ের পর প্রথম সফর হিসেবে ওবামা চীনে
যান। সেখানে তিনি এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (আপেক) যোগ দেন। এরপর
যান মিয়ানমারে ইস্ট এশিয়া সামিটে যোগ দিতে। মিয়ানমারে এটা তার দ্বিতীয়
সফর। দ্বিতীয়বার নির্বাচনের পরপরই (২০১২) তিনি মিয়ানমার সফর করেছিলেন। এবার
যান অস্ট্রেলিয়ায় জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক
আগামীতে কোনদিকে গড়ায়, এ ব্যাপারে বিশ্লেষকদের আগ্রহ এখন অনেক বেশি। চীন
এখন বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি। অভিযোগ আছে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে ধীরে
ধীরে ঘিরে ফেলার এক মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সামরিক ও
অর্থনৈতিকভাবে চীনকে দুর্বল করাই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য। অর্থনৈতিক
ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র উদ্যোগ নিচ্ছে ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ফ্রি
ট্রেড এগ্রিমেন্ট বা টিপিপিএফটি করার। প্রস্তাবিত এই চুক্তিতে চীনকে রাখা
হয়নি। অথচ এশিয়ার তথা প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি চীন। ২০০৯
সালে প্রথম টিপিপিএফটির কথা জানা যায়। এখন এই চুক্তির আওতায় আছে ১১টি দেশ-
অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, চিলি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, কানাডা,
পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করার
প্রক্রিয়া চলছে। ২০১২ সালে এই অঞ্চলের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৫
ট্রিলিয়ন ডলার। আর সেবাখাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২৪২ বিলিয়ন ডলার। বিশ্ব
জিডিপির ৪০ ভাগ এ অঞ্চলের। আর বিশ্ব বাণিজ্যের ২৬ ভাগ পরিচালিত হয় এ
অঞ্চলে। তবে চীনকে বাদ দিয়ে এই চুক্তি নানা প্রশ্নের জন্ম দেবে। আগামী বছর
এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগ নিয়ে
প্রশ্ন থাকবেই। রিপাবলিকানরা চাইবে অতি দ্রুত এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হোক।
তবে এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, চীন ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের দুটি বড়
অর্থনীতির একটি জোট গঠিত হল। দক্ষিণ কোরিয়া অনেক আগেই মধ্যম সারির
অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার
মোট রফতানির ২৬ দশমিক ০৫ ভাগ রফতানি হয়েছে চীনে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে
রফতানি হয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ০৯ ভাগ। বলা হচ্ছে ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার
রফতানি (এই অঞ্চলে) বাড়বে ৩০০ বিলিয়ন ডলারে, যা মোট রফতানির ৩৯ দশমিক ৫
ভাগ। ২০১২ সালে এর পরিমাণ ছিল ২১৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। এখন প্রশ্ন থাকবে
টিপিপিএফটি চালু হলে চীন-দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্কের ওপর তা কতটুকু প্রভাব
ফেলবে? একই সঙ্গে চীন, রাশিয়া, ভারত ও ব্রাজিলকে নিয়ে ব্রিকস ব্যাংক গড়ে
তুলেছে, যা কিনা বিশ্বব্যাংকের কর্তৃত্ব ও প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করতে যাচ্ছে।
চীন ইতিমধ্যে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক গঠন করেছে।
বাংলাদেশের মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশ এই ব্যাংকের ব্যাপারে ইতিমধ্যে আগ্রহ
প্রকাশ করেছে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে চীনের এই ভূমিকা যুক্তরাষ্ট্র আগামীতে
খুব ভালো চোখে দেখবে বলে মনে হয় না। তবে যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই ভূমিকাকে
অস্বীকার করতে পারবে না। কেননা যুক্তরাষ্ট্রে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। চীন
যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাস ও তেল আহরণ ক্ষেত্রে, রিয়েল স্টেট ব্যবসা, কৃষিতে
প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হলে এই বিনিয়োগে তা
প্রভাব ফেলবে। অনেকেরই জানার কথা যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ
নিয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের
পক্ষে চীনকে অস্বীকার করা সহজ নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র চায় চীন অর্থনৈতিক
ক্ষেত্রে, মুদ্রা বিনিময় ক্ষেত্রে আরও উদার হোক। যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছুদিন
ধরেই চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি করতে চাচ্ছে। কিন্তু আলোচনা
খুব একটা এগিয়ে যায়নি। পরিবেশ, বিশেষ করে বায়ুমণ্ডলে কার্বন নির্গমন
ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকার তীব্র সমালোচক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।বৈশ্বিক
উষ্ণতা হ্রাসের জন্য একটি চুক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা বারবার উল্লেখ করা
হচ্ছে। কপ সম্মেলনে বারবার এ কথাগুলো বলা হয়। এক্ষেত্রে বড় অর্থনীতির
দেশগুলোর দিকে (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র) আঙুল নির্দেশ করা হলে,
যুক্তরাষ্ট্র বারবার চীনের কথা বলছে। কেননা ইতিমধ্যে চীন বায়ুমণ্ডলে অন্যতম
কার্বন নির্গমনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। চীনের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে গৌণ। তেমন
কোনো উদ্যোগ চীন নেয়নি। ফলে এ প্রশ্নে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিমত
আছে।সামরিক ক্ষেত্রেও পারস্পরিক অবিশ্বাস আছে। চীন রাশিয়াকে সঙ্গে নিয়ে
সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন নামে একটি সংস্থা গড়ে তুলেছে। মধ্য এশিয়ায়
তথা জ্বালানি সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করছে এই
সংস্থাটি। শুধু তাই নয়, পূর্ব চীন সাগরে চীন একটি এয়ার ডিফেন্স
আইডেনটিফিকেশন জোন গড়ে তুলেছে। অর্থাৎ বিতর্কিত ও তেলসম্পদ সমৃদ্ধ এই
অঞ্চলে চীন অন্য কারও কর্তৃত্ব স্বীকার করে না। এটা পরোক্ষভাবে
যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে আঘাত করার শামিল। এ অঞ্চলে চীনের ভূমিকাকে অনেক
পর্যবেক্ষক চীনা মনরো ডকট্রিন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের
বিখ্যাত মনরো ডকট্রিনের সময় যা ছিল ইউরোপীয় শক্তি (অর্থাৎ মার্কিন এলাকায়
কোনো ইউরোপীয় শক্তির জড়িত থাকাকে চ্যালেঞ্জ করা), এক্ষেত্রে চীনা এলাকায়
কোনো বিদেশী শক্তির (জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র) জড়িত থাকার বিষয়টি চীনাদের
অপছন্দ। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার এই সম্পর্ককে অনেকে থুসিডিডেজ ফাঁদ
(Thucydides Trap) হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন। প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসবিদ
থুসিডিডেজের নামে এই মতবাদের নামকরণ। এই মতবাদের মূল বিষয়টি হচ্ছে একটি
উঠতি শক্তির সঙ্গে একটি স্বীকৃত শক্তির দ্বন্দ্ব। চীন উঠতি শক্তি ও
যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃত শক্তি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই দুই শক্তির মধ্যকার
সম্পর্ক প্রভাব বিস্তার করার প্রতিযোগিতাকে লুসিডিডেজ ফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত
করা হয়েছে।
ওবামার চীন সফরের সময় তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু আলোচনা খুব ফলপ্রসূ হয়েছে, এটা বলা যাবে না। এমনকি ওবামার হংকংয়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলন প্রসঙ্গে মন্তব্যও চীনা নেতারা খুব ভালোভাবে নেবেন না। সুতরাং রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস যে চীনের ব্যাপারে আরও কড়া নীতি গ্রহণ করবে, এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং ওবামার জন্য আগামী দুবছর খুব একটা ভালো সময় কাটবে না।রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন আছে। ইউক্রেনের ব্যাপারে রাশিয়ার আগ্রাসী নীতির প্রশ্নে অনেক কংগ্রেস নেতার আপত্তি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পুতিন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মানসিকতা নিয়ে রাশিয়াকে পরিচালনা করছেন। রিপাবলিকানরা এতে অখুশি এবং রাশিয়ার ওপর আরও কড়াকড়ি ব্যবস্থা আরোপের পক্ষপাতী। ইতিমধ্যে বেশ কিছু অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। এখন অবধি ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেয়নি। এখন পর্যন্ত রাশিয়া এর প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু একবার যদি ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেয়, তাহলে ন্যাটোর সনদের ৫নং ধারা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে পাশে এসে দাঁড়াবে ইউক্রেনের। ফলে রাশিয়ার সঙ্গে সীমিত যুদ্ধের সম্ভাবনা অনিবার্য।মিডটার্ম নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ওবামার অনেক সিদ্ধান্ত বিশেষ করে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সিদ্ধান্ত সিনেট সমর্থন করেছে। এখন সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদ কোনোটারই নিয়ন্ত্রণ তার সমর্থক অর্থাৎ ডেমোক্রেটদের হাতে নেই। ফলে আগামী দুবছর ওবামার জন্য হবে অত্যন্ত কঠিন এক সময়। এক্ষেত্রে ওবামা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার প্রশাসনিক ক্ষমতা কিংবা তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন বটে, কিন্তু তাতে করে কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী একটি দ্বন্দ্বে তিনি জড়িয়ে যাবেন। ফলে প্রশাসনের গতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য অর্জিত হবে না। আবার রিপাবলিকানদের কট্টর মনোভাব (মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের সূচনা) বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের একটি নেতিবাচক ইমেজের জন্ম দেবে। তাই পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনায় একটি কমপ্রোমাইজ দরকার। কংগ্রেসকে যেমনি প্রেসিডেন্টের ওপর আস্থা রাখতে হবে, ঠিক তেমনি প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেস নেতাদের আস্থায় নিতে হবে। দেখা যাক, আগামী দুবছর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে কী পরিবর্তন আসে। ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র Daily JUGANTOR 14.11.14
ওবামার চীন সফরের সময় তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু আলোচনা খুব ফলপ্রসূ হয়েছে, এটা বলা যাবে না। এমনকি ওবামার হংকংয়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলন প্রসঙ্গে মন্তব্যও চীনা নেতারা খুব ভালোভাবে নেবেন না। সুতরাং রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস যে চীনের ব্যাপারে আরও কড়া নীতি গ্রহণ করবে, এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং ওবামার জন্য আগামী দুবছর খুব একটা ভালো সময় কাটবে না।রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন আছে। ইউক্রেনের ব্যাপারে রাশিয়ার আগ্রাসী নীতির প্রশ্নে অনেক কংগ্রেস নেতার আপত্তি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পুতিন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মানসিকতা নিয়ে রাশিয়াকে পরিচালনা করছেন। রিপাবলিকানরা এতে অখুশি এবং রাশিয়ার ওপর আরও কড়াকড়ি ব্যবস্থা আরোপের পক্ষপাতী। ইতিমধ্যে বেশ কিছু অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। এখন অবধি ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেয়নি। এখন পর্যন্ত রাশিয়া এর প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু একবার যদি ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেয়, তাহলে ন্যাটোর সনদের ৫নং ধারা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে পাশে এসে দাঁড়াবে ইউক্রেনের। ফলে রাশিয়ার সঙ্গে সীমিত যুদ্ধের সম্ভাবনা অনিবার্য।মিডটার্ম নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ওবামার অনেক সিদ্ধান্ত বিশেষ করে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সিদ্ধান্ত সিনেট সমর্থন করেছে। এখন সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদ কোনোটারই নিয়ন্ত্রণ তার সমর্থক অর্থাৎ ডেমোক্রেটদের হাতে নেই। ফলে আগামী দুবছর ওবামার জন্য হবে অত্যন্ত কঠিন এক সময়। এক্ষেত্রে ওবামা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার প্রশাসনিক ক্ষমতা কিংবা তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন বটে, কিন্তু তাতে করে কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী একটি দ্বন্দ্বে তিনি জড়িয়ে যাবেন। ফলে প্রশাসনের গতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য অর্জিত হবে না। আবার রিপাবলিকানদের কট্টর মনোভাব (মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের সূচনা) বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের একটি নেতিবাচক ইমেজের জন্ম দেবে। তাই পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনায় একটি কমপ্রোমাইজ দরকার। কংগ্রেসকে যেমনি প্রেসিডেন্টের ওপর আস্থা রাখতে হবে, ঠিক তেমনি প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেস নেতাদের আস্থায় নিতে হবে। দেখা যাক, আগামী দুবছর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে কী পরিবর্তন আসে। ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র Daily JUGANTOR 14.11.14
0 comments:
Post a Comment