মধ্যপ্রাচ্যে
ইসলামিক জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী আইএস বা ইসলামিক স্টেটের উত্থান এবং সিরিয়ার
দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা তাদের দখলে থাকার মধ্য দিয়ে একটি নতুন সম্ভাবনার জন্ম
হয়েছে যে, খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র। এরই মধ্যে
যুক্তরাষ্ট্র আইএসের বিরুদ্ধে বিমান যুদ্ধ শুরু করছে, যাকে কিনা অভিহিত করা
যায়, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের 'চতুর্থ যুদ্ধ' হিসেবে। কোবানিতে দীর্ঘ
এক মাস পরও ইসলামিক জঙ্গিরা শহরটি দখল করতে পারেনি। সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে
শহরটি অবস্থিত। ইসলামিক জঙ্গিরা গত এক মাস ধরে এ শহরটি দখল করার চেষ্টা
করছে। কিন্তু পারেনি। এ যুদ্ধে তুরস্কের কুর্দিরা সিরিয়ার কুর্দিদের পাশে
এসে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও
তাদের পরাস্ত করা সম্ভব হয়নি।
ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের উৎখাত,
পরবর্তীকালে সেখানে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনে ব্যর্থতা ইরাকে সুনি্ন
নেতৃত্বাধীন ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে। এদের তৎপরতা
পার্শ্ববর্তী সিরিয়ায়ও সম্প্রসারিত হয়েছে। ফলে ইসলামিক স্টেটের নেতৃত্বে
সেখানে একটি 'জিহাদি রাষ্ট্র' গঠনের সম্ভাবনা বাড়ছে। পরিস্থিতি যা, তাতে
মনে হচ্ছে, আগামীতে সিরিয়া রাষ্ট্রটি তিন ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে। ইরাকও
ভাগ হয়ে যেতে পারে তিন ভাগে। লিবিয়া তার আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারে। দুই
ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে দেশটি। ইয়েমেন ঐতিহাসিকভাবেই দুই ভাগে বিভক্ত ছিল।
এখন দেশটি আবারও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে। আর সৌদি আরব ভাগ হয়ে যেতে
পারে পাঁচ ভাগে। এর মূল কারণ হচ্ছে, গোত্র বা গোষ্ঠীগতভাবে (সিরিয়া),
ধর্মীয়ভাবে (ইরাক), আঞ্চলিকভাবে (লিবিয়া), পারিবারিকভাবে (সৌদি আরব)
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখন পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এতে করে একদিকে সংঘাত
বাড়ছে, অন্যদিকে ধর্মীয় চেতনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ক্ষমতাসীনদের মাঝে
দ্বন্দ্বও প্রকট। বলা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পাঁচটি রাষ্ট্র
(সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়া, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আগামীতে ১৪টি রাষ্ট্রে পরিণত
হতে পারে। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, আইএসের উত্থান সমগ্র দেশটিকে বদলে
দিয়েছে। ২০১৩ সালে প্রথম সংগঠনটির নাম শোনা যায়। তখন নাম ছিল ইসলামিক স্টেট
অব ইরাক অ্যান্ড লেভেন্ট। লেভেন্ট এ অঞ্চলের ঐতিহাসিক নাম। মূলত দলটি ১৯৯৯
সালে জাসতে আল তওহিদ ওয়াল জিহাদ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে সংগঠিত
হয়েছিল। পরে 'আল কায়দা ইন ইরাক' নাম ধারণ করে। এ সংগঠনটি মূলত সুনি্ননির্ভর
ও ইরাকের সুনি্নপ্রধান এলাকায় তাদের প্রভাব বেশি। ২০০৬ সালে ইরাকে সুনি্ন
প্রভাবাধীন মুজাহিদিন শূরা কাউন্সিলে সংগঠনটি যোগ দেয়। ২০১৩ সালে সারা
বিশ্ব প্রথমবারের মতো আবু বকর বোগদাদির নাম জানতে পারে। তবে ২৯ জুন (২০১৪)
বোগদাদি একটি খেলাফতের ডাক দিলে সংগঠনটি ব্যাপক পরিচিতি পায়। তখন সংগঠনটি
নতুন নাম ধারণ করে আইএস বা ইসলামিক স্টেট। আল কায়দার সঙ্গে সংগঠনটির
সম্পর্ক কী, এটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। বলা হচ্ছে, ২০১৪ সালের জুন থেকে আল
কায়দা আইএসের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। কেন সম্পর্ক ছিন্ন করেছে- এটা
নিয়েও বিভ্রান্তি আছে। কেউ বলার চেষ্টা করছেন, আইএসের নৃশংসতা এর বড় কারণ।
কেউ বলছেন, জিহাদি নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে- এজন্যই বিরোধের জন্ম হয়েছে।
এদের রাজনীতি মূলত জিহাদি, সালাফি ও ওয়াহাবি মতবাদ দ্বারা পরিচালিত হয়। আল
কায়দা জিহাদি ও ওয়াহাবি মতবাদ অনুসরণ করলেও খেলাফতের কথা বলেনি কখনও। আইএস
খেলাফতের কথা বলেছে। আর বোগদাদি নিজেকে খলিফা বা আমিরুল মোমেনিন হিসেবে
ঘোষণা করেছেন, যা আল কায়দা নেতা লাদেন বা জাওয়াহিরি নিজেদের ঘোষণা করেননি।
তবে এটা বলতেই হবে, আইএসের নৃশংসতা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। একাধিক
মার্কিন সংবাদকর্মীর গলা কেটে হত্যা করে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়ে একটি
ভয়ের আবহ তৈরি করেছে আইএস। অতি সম্প্রতি কোবানিতে যুদ্ধরত এক কুর্দি
তরুণী-যোদ্ধার গলা কেটে জনৈক আইএস যোদ্ধার উল্লসিত ছবিও ইন্টারনেটে প্রকাশ
পেয়েছে। আল কায়দা তার শত্রুদের হত্যা করত বটে, কিন্তু এভাবে গলা কেটে হত্যা
করত না। তবে আইএসের উসকানি অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রথম প্রশ্ন, কোন
শক্তি আইএসকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে? যতদূর জানা যায়, আইএসের
যোদ্ধারা প্রতি মাসে বেতন পান। অর্থের পরিমাণটা নেহায়েত কম নয়। প্রশ্ন
হচ্ছে, এ অর্থ কোত্থেকে আসছে? শুধু দখলকৃত অঞ্চলের (তিকরিত, মসুল) তেল
বিক্রি করে এ অর্থ জোগান দেয়া কি সম্ভব? অস্ত্রই বা আসছে কোত্থেকে? কারা
অস্ত্রের জোগান দিচ্ছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, আইএসের যোদ্ধারা এরই মধ্যে দক্ষ
একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছে। এদের কারা প্রশিক্ষণ দিল? তৃতীয়
প্রশ্ন, কে এ আবু বকর বোগদাদি? কারা তাকে সামনে নিয়ে এলো? বিশ্বব্যাপী আল
কায়দা স্বীকৃত। এখন বিকল্প আরেকটি ফোর্স তৈরি করে কোন 'শক্তি' চাচ্ছে তাদের
স্বার্থ হাসিল করতে? যদি মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বজায় থাকে, তাহলে তা
তো মার্কিন অর্থনীতির চাঙা ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করবে। কারণ মার্কিন
অর্থনীতি তো 'যুদ্ধ অর্থনীতি'। যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে মার্কিন অর্থনীতি চাঙা
হয়। অস্ত্র বিক্রি বাড়ে। ব্যবসা বৃদ্ধি পায় যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে। ইরাক এর বড়
প্রমাণ। এ ধরনের হাজারটা প্রশ্ন এখন উঠেছে এবং রাজনৈতিক পন্ডিতরা এসব
প্রশ্নের সমাধান খোঁজার চেষ্টা করবেন।
পরিস্থিতি এখন যেদিকেই
গড়াক না কেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরেকটি আফগানিস্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছে
সিরিয়ায়। এ মুহূর্তে এটা স্পষ্ট নয়, যুক্তরাষ্ট্র শুধু বিমান হামলা চালিয়েই
তাদের কর্মতৎপরতা সীমাবদ্ধ রাখবে, নাকি একইসঙ্গে স্থল বাহিনীও পাঠাবে,
যেটা তারা পাঠিয়েছিল আফগানিস্তানে। একটা মিত্র বাহিনী এরই মধ্যে গঠন করে
ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত ২২টি রাষ্ট্র এ বাহিনীতে যোগ দিয়েছে।
কোনো কোনো রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিমান হামলায় যোগও দিচ্ছে। এখন
অবধি যুক্তরাষ্ট্র সেখানে মেরিন সেনা পাঠায়নি। স্থানীয় উপসাগরীয়
রাষ্ট্রগুলো চাচ্ছে, শুধু বিমান হামলা নয়, বরং মেরিন সেনাও সেখানে পাঠানো
হোক। এখানে বলা ভালো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল ইসলামিক জঙ্গিদের
বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশও যোগ দিক। বাংলাদেশ এ প্রস্তাবে তার সম্মতি
জানায়নি। যদিও এ অঞ্চলে জঙ্গি রাজনীতি বিস্তারের ঝুঁকি রয়েছে। আল কায়দা
নেতা জাওয়াহিরি গেল মাসে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভারত, বাংলাদেশ ও
মিয়ানমারে আল কায়দার শাখা প্রতিষ্ঠা করার কথা ঘোষণা করেছেন। এমনই এক
পরিস্থিতিতে যেখানে ওই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সেখানে
বাংলাদেশ আইএসের বিরুদ্ধে কোনো অ্যালায়েন্সে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানাল।
এখানে বাংলাদেশের এ নীতি অনেকটা ভারতীয় নীতিরই অনুসরণ মাত্র। সম্প্রতি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াশিংটন সফর করে গেছেন। ওবামা-মোদি
আলোচনায় ওবামাও মোদিকে এ অ্যালায়েন্সে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
মোদির সম্মতি ওবামা পাননি। এখন বাংলাদেশও আপত্তি করল। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। তাতেও বিষয়টি
আলোচিত হয়েছে।
আইএসের জঙ্গি উত্থানকে ঠেকাতে মার্কিন অবস্থানকে
নানাভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। অনেকটা আফগানিস্তান স্ট্র্যাটেজির মতো।
আফগানিস্তানে মার্কিন বিমান হামলা দিয়ে ২০০১ সালের অক্টোবরে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধে নিজেদের জড়িত করেছিল। কিন্তু তালেবানদের পরাজিত
করতে পারেনি। বরং 'বাধ্য' হয়ে ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখান থেকে
সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এখন সিরিয়ার ক্ষেত্রে এমনটি হতে যাচ্ছে কিনা-
সেটাই দেখার বিষয়। ১৯৯১ সালে কুয়েতকে ইরাকমুক্ত, ২০০৩ সালে সাদ্দামকে
উৎখাত, ২০১১ সালে লিবিয়ায় গাদ্দাফি উৎখাতের পর ২০১৪ সালে আইএসের বিরুদ্ধে
'যুদ্ধে' নামলেন ওবামা, যাকে বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের 'চতুর্থ যুদ্ধ'।
এখন
ওবামা আরও একটি ভুল করতে যাচ্ছেন। তিনি লিবিয়ার মতোই সিরিয়ায় ইসলামিক
জঙ্গিদের ওপর বোমা হামলার নির্দেশ দিয়ে উপসাগরীয় অঞ্চলে 'চতুর্থ যুদ্ধ'
শুরু করেছেন। ইরাক যুদ্ধের সময় বুশ ছিলেন ক্ষমতায়। ওবামার মতো তিনিও
সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। কেননা, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের আর্টিকেল-১,
সেকশন-৮-এ বলা আছে, যুদ্ধ ঘোষণা কিংবা শুরু করার অধিকার কংগ্রেসের,
প্রেসিডেন্টের কোনো অধিকার নেই। প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ শুরু করতে পারেন না;
কিন্তু ওবামা লিবিয়ার ব্যাপারেও সংবিধান লঙ্ঘন করেছিলেন। আর এখন সিরিয়ার
ব্যাপারেও করলেন। তবে সিরিয়া ইরাক বা লিবিয়ার মতো নয়। ইসলামিক স্টেটের
যোদ্ধাদের পরাজিত করা তত সহজ হবে না। সিআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৩০
হাজার যোদ্ধা রয়েছে ইসলামিক স্টেট বাহিনীর। মূলত ইরাকের সুন্নিদের নিয়ে এ
বাহিনী গঠিত হয়েছে। বলা হচ্ছে, বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে আরও প্রায় ১৫ হাজার
সেনা এ বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। এরা এরই মধ্যে একটি দক্ষ বাহিনীতে পরিণত
হয়েছে। সাদ্দামের সেনাবাহিনীর অনেক জেনারেল এ বাহিনীর সঙ্গে জড়িত। আরও
সুনির্দিষ্ট করে বললে বলা যায়, আইএস যেসব এলাকা 'স্বাধীন' করেছে, সেখানে
নিজস্ব প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। একটি সরকারও আছে। আছে মন্ত্রিপরিষদ।
ধর্মীয় পুলিশ বাহিনীও রয়েছে সৌদি আরবের মতো। তাদের কাজ হচ্ছে আজানের সময়
সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা ও ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী জনসাধারণ
পরিচালিত হচ্ছে কিনা, তা দেখা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। যতদূর জানা যায়, আবু
বকর বোগদাদির দুজন ডেপুটি রয়েছেন- একজন ইরাকের জন্য। অপরজন সিরিয়ার জন্য।
বেশকিছু তেলক্ষেত্র (ইরাকের) এখন এদের দখলে। এ তেল বিক্রির অর্থ এখন তাদের
আয়ের অন্যতম উৎস। প্রতিদিন তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ২৫ হাজার ব্যারেল
তেল উত্তোলিত হয়। কালোবাজারে এর মূল্য দেড় থেকে ২ মিলিয়ন ডলার। প্রতিদিন এ
অর্থ জমা হচ্ছে ইসলামিক স্টেটের ফান্ডে।
আফগানিস্তানের মতোই
যুক্তরাষ্ট্রের এ 'চতুর্থ যুদ্ধ' দীর্ঘায়িত হবে। এ যুদ্ধ অনেক সম্ভাবনার
জন্ম দিয়েছে। আগামীতে প্রতিটি রাষ্ট্রেই এ যুদ্ধের প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে
এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। একটি বিশাল এলাকা ইসলামিক জঙ্গিদের দখলে থাকায়
ইরাক ও সিরিয়ার বর্তমান সীমানা আর থাকছে না। সিরিয়ার মধ্যভাগ আর ইরাকের
মধ্যভাগ নিয়ে গঠিত হতে পারে সুনি্ন প্রভাবাধীন 'সুনি্নস্তান' নামে নতুন
একটি রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্রটি একটি 'জিহাদি' রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেতে
পারে। আইএস জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এ রাষ্ট্রটি। এরা কট্টর ইসলামিক
ভাবধারায় পরিচালিত হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা
পশ্চিমা বিশ্ব কী চোখে এ সম্ভাব্য রাষ্ট্রটিকে দেখবে?
আমি অনেক
মার্কিন ডকুমেন্ট ঘেঁটে দেখেছি। কোনো কোনো পর্যবেক্ষকের লেখাও পড়েছি। তারা
সবাই সম্ভাব্য একটি 'নয়া মধ্যপ্রাচ্যের' কথা বলছেন। কন্ডোলিসা রাইসের
(২০০৬) একটি মন্তব্যও আছে এ ব্যাপারে। উৎসাহী পাঠকরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট
ঘেঁটে দেখতে পারেন। এতে করে আমার মনে একটা ধারণা জন্মেছে, যদি সিরিয়া ও
ইরাকে 'যুদ্ধ' দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং আইএস যদি তাদের 'অবস্থান' ধরে রাখতে
পারে, তাহলে 'শক্তির প্রশ্নে' যুদ্ধাবস্থার অবসানের প্রশ্নে এক পর্যায়ে
'স্ট্যাটাসকো' মেনে নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ যে যেখানে আছে, সে
সেখানে থাকবে। সিরীয় বাহিনী তার অবস্থানে থাকবে। স্বাধীন একটি
কুর্দিস্তানের জন্ম হবে। শিয়ারা ইরাকে আলাদা হয়ে যাবে। আর সুনি্ন রাষ্ট্রের
জন্ম হবে ইরাক আর সিরিয়ায়। এসবই আগাম কথা। তবে পরিস্থিতিই আমাদের বলে দেয়,
এ ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে। কোবানির 'দীর্ঘ যুদ্ধ' এ কথাই আমাদের স্মরণ করিয়ে
দিল।
ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র
Daily Alokito Bangladesh
09.11.14
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment