রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

যে যুদ্ধের শেষ নেই

শেষ পর্যন্ত আসল কথাটি বলে ফেলেছেন জেনারেল অস্টিন। জেনারেল অস্টিন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান। এই সেন্ট্রাল কমান্ডের আওতায় এখন যুক্তরাষ্ট্র ইরাক-সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ পরিচালনা করছে। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী শহর কোবানির ওপর ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের অব্যাহত চাপ ও সম্ভাব্য কোবানির পতনের পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল অস্টিন প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন। কৃষ্ণাঙ্গ এই জেনারেল, যিনি এর আগে ইরাকে মার্কিন বাহিনীর প্রধান ছিলেন বলেছেন, আইএসের জঙ্গিদের পরাজিত করা সহজ হবে না এবং যে যুদ্ধ আইএসের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছে তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
একজন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন জেনারেল যখন এ ধরনের কথা বলেন, তখন মধ্যপ্রাচ্যে যে ‘নয়াযুদ্ধের’ সূচনা হয়েছে, তা বড় ধরনের একটি প্রশ্নের মুখে সবাইকে ফেলে দেয় বৈকি। প্রায় পাঁচ সপ্তাহ যাবৎ কোবানি অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় ইসলামি জঙ্গিদের হাতে কোবানির পতন ঘটতে পারে। কুর্দিরা এখানে বসবাস করে। তারাই যুদ্ধ করছে আইএসের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্র তথা ২০ মিত্র রাষ্ট্র এখন এই যুদ্ধে শরিক হয়েছে। অব্যাহত মার্কিনি যুদ্ধবিমানের বোমাবর্ষণের কারণে আইএসের অগ্রযাত্রা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে বটে, কিন্তু কোম্পানির ঘটনাবলি এখন সারা বিশ্বের আলোচনার অন্যতম একটি বিষয়। যুদ্ধরত কুর্দিদের সাহায্যের জন্য মার্কিন বিমান থেকে কুর্দিদের কাছে অস্ত্র ফেলা হলেও মার্কিন ইলেকট্রনিক মিডিয়া আমাদের জানাচ্ছে, পাঠানো অস্ত্রশস্ত্রের একটা বড় অংশ চলে গেছে ইসলামিক জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে মার্কিন ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে বাগদাদের ৯ মাইলের মধ্যে ঢুকে গেছে আইএসের জঙ্গিরা। ইরাকের বেশ কয়েকটি শহরের পতন ঘটেছে এদের হাতে। ইরাকের বেশ কয়েকটি তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণভার এখন আইএসের জঙ্গিদের হাতে।
কোবানি রক্ষা নিয়েও একটা বড় ‘রাজনীতি’ হচ্ছে এবং এই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আঞ্চলিক রাজনীতি, বিশেষ করে পুরো অঞ্চলে তুরস্কের প্রভাব ও প্রতিপত্তির ব্যাপারে অনেকেই আতঙ্কিত।
ইতোমধ্যে কোবানি শহর রক্ষার জন্য গঠিত হয়েছে কুর্দিস্তান ডিফেন্স ফোর্স। এর মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে সিরিয়ার কুর্দিস্তানের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টি। অনেকেই ধারণা করে থাকেন ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টির সঙ্গে তুরস্কের কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকের সম্পর্ক রয়েছে। পর্যবেক্ষকরা অনেকে বলার চেষ্টা করেন, পিকেকের একটি সম্প্রসারিত অংশই হচ্ছে সিরিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টি। এদের সঙ্গে আবার ইরাকি কুর্দিদের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। কুর্দিরা মূলত এ অঞ্চলের চারটি দেশেই বসবাস করে। তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক ও ইরান। প্রতিটি দেশেই কুর্দিদের নিজস্ব সংগঠন রয়েছে। ইরাকে কুর্দিরা আবার বিশেষ সুবিধা ভোগ করে। কোবানির ঘটনাবলি কুর্দি রাজনীতিকে সামনে নিয়ে এসেছে। সিরিয়ায় কুর্দিরা যখন কোবানি শহরে অবরুদ্ধ হয়ে রইল, তখন তুরস্কের একটা ভূমিকা বড় হয়ে দেখা দিল। দীর্ঘদিন তুরস্ক এই সংকটে নিজেকে জড়িত করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। এখানে একটা জটিল ‘রাজনীতি’ কাজ করছে। ইরাকি কুর্দিদের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ভালো। ইরাকি কুর্দিরা চায় না সিরিয়ার কুর্দিরা স্বায়ত্তশাসন ভোগ করুক। উত্তর ইরাকের কুর্দি ‘পেশমারগা’ (প্যারামিলিটারি ফোর্স) বাহিনী কোবানির যুদ্ধে সিরীয় কুর্দিদের পাশে থাকার ঘোষণা দিলেও সিরিয়ার কুর্দি নেতারা তাতে আপত্তি জানিয়েছেন। তাত্ত্বিকভাবে পেশমারগা কুর্দিস্তান ডিফেন্স ফোর্সের বিরোধী। ফলে এক জটিল সমীকরণ তৈরি হয়েছে। কোবানি যুদ্ধে তুরস্কের সমর্থন, তার সীমান্ত ইরাকি কুর্দিদের ব্যবহার করতে দেওয়ার বিষয়টি পিকেকে দেখছে ভিন্ন দৃষ্টিতে। তারা মনে করে, এতে করে সিরিয়ার কুর্দিরা আরও শক্তিশালী হবে এবং পিকেকের ভূমিকা হ্রাস পাবে। এই জটিল সমীকরণের মধ্য দিয়ে কোবানিতে মার্কিন বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। তবে এর পরিণতি কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে জেনারেল অস্টিন যে মন্তব্য করেছেন, তা হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
গেল বছর (২০১৩) আইএসের নাম প্রথম শোনা যায়। তখন এর নাম ছিল ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট (আইএসআইএল)। ইতিহাসে সিরিয়া, জর্ডান, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, লেবানন, ইরাক, সাইপ্রাস ও দক্ষিণ তুরস্ক নিয়ে যে বিশাল এলাকা তা লেভান্ট নামে পরিচিত। জঙ্গিরা এই নামটি তখন ধারণ করে। তবে ১৯৯৯ সালে এটি ‘জামাত আল তাওহিদ ওয়াল জিহাদ’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে মূলত সংগঠিত হয়েছিল। পরে ‘আল কায়েদা ইন ইরাক’ নাম ধারণ করে। এই সংগঠনটি মূলত সুন্নিনির্ভর ও ইরাকের সুন্নিপ্রধান এলাকায় এদের প্রভাব বেশি। ২০০৬ সালে ইরাকে সুন্নি প্রভাবাধীন মুজাহিদিন শূরা কাউন্সিলে সংগঠনটি যোগ দেয়। ২০১৩ সালে সারা বিশ্ব প্রথমবারের মতো আবু বকর বুগদাদির নাম জানতে পারে। তবে ২৯ জুন (২০১৪) বুগদাদি একটি খেলাফতের ডাক দিলে সংগঠনটি ব্যাপক পরিচিতি পায়। তখন সংগঠনটি নতুন নাম ধারণ করে আইএস বা ইসলামিক স্টেট। আল কায়েদার সঙ্গে সংগঠনটির সম্পর্ক কী, এটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। বলা হচ্ছে ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে আল কায়েদা আইএসের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। কোন সম্পর্ক ছিন্ন করেছেÑ এটা নিয়েও বিভ্রান্তি আছে। কেউ বলার চেষ্টা করছেন, আইএসের নৃশংসতা এর বড় কারণ। কেউ বলছেন, জিহাদি নেতৃত্ব কার হাতে থাকবেÑ এ জন্যই বিরোধের জন্ম হয়েছে। এদের রাজনীতি মূলত জিহাদি, সালাফি ও ওয়াহাবি মতবাদ দ্বারা পরিচালিত হয়। আল কায়েদা জিহাদি ও ওয়াহাবি মতবাদ অনুসরণ করলেও খেলাফতের কথা বলেনি কখনো। আইএস খেলাফতের কথা বলেছে। আর বুগদাদি নিজেকে খলিফা বা আমিরুল মুমেনিন ধ্বংসের ঘোষণা করেছেন, যা আল কায়েদার নেতা লাদেন বা জাওয়াহিরি নিজেকে ঘোষণা করেননি। তবে এটা বলতেই হবে, আইএসের নৃশংসতা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। একাধিক মার্কিন সংবাদকর্মীর গলা কেটে হত্যা করে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়ে একটি ভয়ের আবহ তৈরি করেছে আইএস। অতি সম্প্রতি কোবানিতে যুদ্ধরত এক কুর্দি তরুণী যোদ্ধার গলা কেটে জনৈক আইএস যোদ্ধার উল্লসিত ছবিও ইন্টারনেটে প্রকাশ পেয়েছে। আল কায়েদা তার শত্রুদের হত্যা করত বটে। কিন্তু এভাবে গলা কেটে হত্যা করত না। তবে আইএসের উত্থান অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এক. কোন শক্তি আইএসকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে? যতদূর জানা যায়, আইএসের যোদ্ধারা প্রতি মাসে বেতন পান। অর্থের পরিমাণটা নেহাত কম নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এই অর্থ কোত্থেকে এসেছে? শুধু দখলকৃত অঞ্চলের (তিকরিত, মসুল) তেল বিক্রি করে এই অর্থ জোগান দেওয়া কি সম্ভব? অস্ত্রই বা আসছে কোত্থেকে? কারা অস্ত্রের জোগান দিচ্ছে? দুই. আইএসের যোদ্ধারা ইতোমধ্যে দক্ষ একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছে। এদের কারা প্রশিক্ষণ দিল? তিন. কে এই আবু বকর বুগদাদি? কারা তাকে সামনে নিয়ে এল? বিশ্বব্যাপী আল কায়েদা ধিকৃত। তখন বিকল্প আকেরটি ফোর্স তৈরি করে কোনো শক্তি কী চাচ্ছে তাদের স্বার্থ হাসিল করতে? যদি মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বজায় থাকে, তাহলে তা তো মার্কিন অর্থনীতির চাঙ্গাভাব বজায় রাখতে সাহায্য করবে। কারণ মার্কিন অর্থনীতি তো ‘যুদ্ধ অর্থনীতি’। যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে মার্কিন অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। অস্ত্র বিক্রি বাড়ে। ব্যবসা বৃদ্ধি পায় যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে। ইরাক এর বড় প্রমাণ। এ ধরনের হাজারটা প্রশ্ন এখন উঠেছে। রাজনৈতিক প-িতরা এখন প্রশ্নের সমাধান খোঁজার চেষ্টা করবেন।
তবে নিঃসন্দেহে কোবানির যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যের দৃশ্যপট পাল্টে দিতে পারে। এক. কুর্দিদের স্বায়ত্তশাসন তথা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রশ্নটি এখন সামনে এল। চারটি দেশেই কুর্দিদের বসবাস। কুর্দিদের এলাকায় রয়েছে জ্বালানিসম্পদ তেল। ইরান কুর্দিদের তেল পরিশোধন করে, অন্যদিকে ইরান থেকে গ্যাস কেনে কুর্দিরা। ইরাকি কুর্দিরা এক ধরনের স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে। তাদের নিজস্ব পতাকা, পার্লামেন্ট ও সেনাবাহিনী আছে। ১৯২৩ সাল থেকেই কুর্দিরা তাদের স্বাধীনতার জন্য ‘যুদ্ধ’ করে আসছে। ইরাকি কুর্দিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো। ইসরায়েলের সঙ্গেও কুর্দি নেতাদের সম্পর্ক ভালো। বর্তমান সংকট এ অঞ্চলে একটি কুর্দিরাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দিল। এই রাষ্ট্রটি অনেকটা তাইওয়ান মডেলে গড়ে উঠতে পারে। দুই. কোবানির যুদ্ধ ও আইএসের উত্থান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের ক্ষমতাকে আরও পাকাপোক্ত করল। এক সময় মনে হয়েছিল আসাদের দিন শেষ। এখন দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা, যাদের মাঝে আরব রাষ্ট্রগুলোও আছে, তারা চাচ্ছে আসাদ থাকুক। মার্কিনি ছত্রচ্ছায়ায় আসাদবিরোধী যে ফ্রন্টের জন্ম হয়েছিল এবং যারা আসাদকে উৎখাতের জন্য রীতিমতো ‘যুদ্ধ’ শুরু করে দিয়েছেন, এখন তারা আর আসাদবিরোধী যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন না। তাদের টার্গেট এখন ইসলামিক স্টেট। ফলে সুবিধা পাচ্ছেন আসাদ। তিন. ইসরায়েলও এখন পরোক্ষভাবে সমর্থন করছে আসাদকে। এক সময় গোলান মালভূমি নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার যুদ্ধ পর্যন্ত হয়েছে। স্ট্র্যাটেজিকালি এর গুরুত্ব অনেক। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন ইসরায়েলের মনোভাব নমনীয়। চার. ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যে অবনতি ঘটেছিল, আইএসের উত্থানে ইরানকে নিয়ে এখন আর তেমন উদ্বেগ নেই মার্কিন প্রশাসনের। এক সময় ইরানের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, যেখানে ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করছে, এমন অভিযোগ ছিল, মার্কিন তথা ইসরায়েলি বিমান হামলার একটা আশক্সক্ষা তৈরি হয়েছিল। এখন সেই প্রশ্ন ‘অতীত’। যুক্তরাষ্ট্রের এখন প্রয়োজন ইরানকে। আইএসের উত্থান এ অঞ্চলে ইরানের ভূমিকা ও অবস্থানকে শক্তিশালী করল। পাঁচ. ইরাক এখন ভেঙে যাওয়ার মুখে। কুর্দিরা স্বাধীন হয়ে গেলে আর সুন্নি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একটি ‘জিহাদি রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠিত হলে, শিয়ারা একটি ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে ইরাকের অস্তিত্ব বহন করবে। ছয়. ইরাক ভেঙে গেলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ‘পরাজয়’।
কোবানি নিয়ে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে গেলে এখনো সেখানে মার্কিন স্থলবাহিনী বা মেরিন সেনা পাঠানো হয়নি। এই যুদ্ধে শুধু মার্কিন বিমান ব্যবহৃত হচ্ছে। আর তাতে ব্যয় হচ্ছে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু আইএসের অগ্রযাত্রা বা তাদের ধ্বংস করা যাচ্ছে না। এই ‘যুদ্ধ’ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য।
 অস্টিন, যুক্তরাষ্ট্র
Daily Amader Somoy
11.11.14

0 comments:

Post a Comment