রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

আফগান যুদ্ধের এক দশক

আফগান যুদ্ধের এক দশক পার হয়ে যাওয়ার পর যে প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, এ যুদ্ধের শেষ কোথায়। ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণ করে দেশটি দখল করে নিয়েছিল। সেই থেকে আজও সেখানে যুদ্ধ চলছে। তবে অতি সম্প্রতি এই অঞ্চলে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে, যা আগামী দিনের আফগান রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন এক. আত্মঘাতী বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে আফগান পিস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বুরহানউদ্দীন রব্বানি। অভিযোগ করা হয়েছে, এই হত্যার সঙ্গে হাক্কানি নেটওয়ার্ক জড়িত, যাদের পরিচালনা করে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। এই হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তালেবানদের সঙ্গে সব ধরনের আলাপ-আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছে কারজাই সরকার। দুই. কারজাই সম্প্রতি ভারত সফর করেছেন। তার ওই সফরে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি নিরাপত্তা ও সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় ভারত আফগান নিরাপত্তারক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেবে। আফগানিস্তানে ভারতীয় সেনাবাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনাও এখন বাড়ছে। তিন. লাদেনকে পাকিস্তানে আশ্রয় ও পরবর্তী সময়ে হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সহযোগিতা করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি। সম্পর্কের এই অবনতি এ অঞ্চলের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে।
বিশ্বব্যাপী 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' এর অংশ হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধ পরিচালনা করছে। এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যে ব্যয় হয়েছে (৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। কারও কারও মতে, ৬ ট্রিলিয়ন ডলার), তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে ব্যয় হয়েছিল তার চেয়েও বেশি। কিন্তু যুদ্ধের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্র তার পক্ষে আনতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে জনসমর্থন পায়নি। একসময় আফগানরা তালেবান শাসনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। আজ সেই তালেবানদের পেছনেই জনসমর্থন বাড়ছে। প্রায় দশ হাজার আফগান নাগরিক এই যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর হতাহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। সঙ্গত কারণেই প্রেসিডেন্ট ওবামার ওপর এক ধরনের চাপ আছে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়ার। ২০১৪ সালকে তিনি টার্গেট করেছেন সেনা প্রত্যাহারের। কিন্তু পরিপূর্ণ সেনা প্রত্যাহার আদৌ হবে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই গেল। কেননা যুক্তরাষ্ট্র কখনও চাইবে না আফগানিস্তানে আবার তালেবানরা ফিরে আসুক। তালেবানদের ফিরে আসার অর্থ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত করা। মধ্য এশিয়া তথা ভারত মহাসাগরভুক্ত অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে। এই স্বার্থকে যুক্তরাষ্ট্র জলাঞ্জলি দিতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' এর যে সূচনা করেছে, তা নিয়ে গবেষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের হিসাবে খরচের পরিমাণ ৩ দর্শমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। পেন্টাগনের হিসাব মতে, প্রতি মাসে আফগানিস্তান ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার (যার মাঝে ৩ ভাগের ২ ভাগ খরচ হয় আফগানিস্তানে)। প্রশিক্ষণ, অস্ত্রশস্ত্র ও ড্রোন বিমান হামলা চালাতে এই খরচ হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রকে মহাশূন্যে একটি শাটল মহাকাশযান পাঠাতে খরচ হয়েছিল ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। পেন্টাগন ইরাক ও আফগানিস্তানে গত ৪০ মাসে খরচ করেছে ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার, যা কি না বয়োজ্যেষ্ঠদের স্বাস্থ্য বীমা খাতে যুক্তরাষ্ট্র খরচ করেছে গত ১০ বছরে। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু সেনাদের ব্যবহৃত গাড়ির জ্বালানি তেল (আফগানিস্তান) বাবদ (অক্টোবর ২০১০ থেকে মে ২০১১) যুক্তরাষ্ট্র খরচ করেছে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। যদি যুদ্ধক্ষেত্রে তেল সরবরাহ ও জনশক্তির খরচ হিসাব করা হত, তাহলে প্রতি গ্যালন তেলের মূল্য গিয়ে দাঁড়াত ১০০ ডলারে। প্রতি বছর সেখানে, অর্থাৎ আফগানিস্তানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বজায় রাখতে (শুধু সেনাদের জন্য), যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হয় বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার। ২০০৯ সালে আফগানিস্তানে প্রতি মার্কিন সেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খরচ ছিল ৫০৭০০০ ডলার (বছরে)। ২০১০ সালে এটা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৬৬৭০০০ ডলারে। আর ২০১১ সালে এই খরচ গিয়ে দাঁড়াবে ৬৯৪০০০ ডলারে। এটা কংগ্রেসনাল রিপোর্ট। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরাকে ২০০৭ সালে প্রতি মার্কিন সেনার জন্য বছরে খরচ ছিল ৫১০০০০ ডলার, আর ২০১১ সালে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮০২০০০ ডলারে। ২০১১ সালে কংগ্রেস আফগানিস্তানে যুদ্ধের খরচের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে ১১৩ বিলিয়ন ডলার। ইরাকের জন্য বরাদ্দ ৪৬ বিলিয়ন (২০১২ সালের জন্য বরাদ্দ কিছুটা কমেছে ১০৭ বিলিয়ন ও ১১ বিলিয়ন ডলার)। বলা ভালো ইরাক থেকে 'ক্যামবেট ট্রুপস', অর্থাৎ যুদ্ধরত সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার সৈন্য রয়ে গেছে, যারা শুধু প্রশিক্ষণ কাজে নিয়োজিত। অন্যদিকে ওবামা ঘোষণা করেছেন ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। (ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য দেখুন গপপষধঃপযু ঘবংিঢ়ধঢ়বৎ এর প্রতিবেদন ১৫ আগস্ট, ২০১১)।
যুক্তরাষ্ট্র 'যুদ্ধ' চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে বিপুল অর্থ ব্যায় করছে, তা দিয়ে সামাজিক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারত। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছে (১১৩ বিলিয়ন, ২০১১-১২), সেই পরিমাণ অর্থ দিয়ে (ক) ৫৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন শিশুর (নিম্ন আয়ের পরিবারের) স্বাস্থ্যসেবা, (খ) ২৩ মিলিয়ন নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, (গ) ২০২ মিলিয়ন ছাত্রের বৃত্তি, (ঘ) ১৪ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা, (ঙ) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৪ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা সম্ভব। সেই সঙ্গে প্রাথমিক স্কুলে ১ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন স্কুল শিক্ষক, ১ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন পুলিশ অফিসার ও ৬৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন অর্থ দিয়ে সোলার প্যানেল বসানো সম্ভব।
প্রশ্ন এসে যায় আর কতদিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পেছনে এত বিপুল অর্থ ব্যয় করবে? ওবামা শান্তিবাদী নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচিত করেছিলেন। নোবেল শান্তি পুরস্কারও পেয়েছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, তিনি যুদ্ধ বন্ধের ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু দেখা গেল, যে শক্তি সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ পরিচালনা করেছিল, তারাই ওবামাকে পরিচালনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্পোরেট হাউস, সমরাস্ত্র উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত শক্তি প্রেসিডেন্ট ওবামাকে পরিচালনা করছে। ওবামা ওদের ওপর নির্ভরশীলও। অধ্যাপক মিসেল চসুডোভস্কি (গরপযবষ ঈযড়ংঁফড়াংশু) তার একাধিক প্রবন্ধে দেখিয়েছেন কীভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই উপকৃত হয়েছে ও তার নিজ স্বার্থ আদায় করে নিয়েছে। আল কায়দা তথা ওসামা বিন লাদেনকে যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করেছিল ১৯৭৯ সালে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন ছিল ওসামা বিন লাদেনকে। আজ সেই প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র তথাকথিত 'যুদ্ধ' শুরু করলেও, অধ্যাপক পিটার ডেল স্কট দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে, যেখানে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বেশি, সেখানে আল-কায়েদাকে ব্যবহার করেছিল 
(দেখুন, Lyb, Prof. Peter Dale Scott, US-Al-Qaeda&_s Alliance; Bosnia, Kosovo & Now Libya-Washington &_s on goning collusion with Terrorist, alobal research, 29.7.11)| । আর অধ্যাপক চসুডোভস্কি তো সরাসরিই মন্তব্য করেছেন, Zyalleged jihadi plotters were the product of us state terrorism। দশ বছর আগে নাইন-ইলেভেনের ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ওই ঘটনা নিয়ে প্রচুর প্রবন্ধ ও গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে, যার প্রায় সবগুলোই একতরফাভাবে লিখিত। প্রবন্ধগুলোতে মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাসবাদী কর্মকা- পরিচালনার জন্য অভিযোগ আনা হয়েছে। তবুও এর মাঝেও দু'একজন বিশ্লেষককে দেখা গেছে যারা ওই ঘটনার জন্য মার্কিনি আগ্রাসী শক্তিকে দোষ চাপিয়েছেন। নোয়াস চমস্কি এদের মাঝে অন্যতম। চমস্কির বাইরে যারা বিভিন্ন জার্নালে অধ্যাপক স্টেফেন জুনেস (Prof. Stephen Zunes, University of Sanfrancisco ), অধ্যাপক ম্যারি এলেন ও কনেল (Prof. Marry Ellen O&_ Connell, Notre Dame ), অধ্যাপক মিসেল হাস (Prof. Michael Haas) , অধ্যাপক রর্বাট ফারলের (Prof. robert Farley) লেখা পাঠ করেছেন, তারা দেখেছেন এরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রকে একটি আগ্রাসী শক্তি হিসেবে দেখেছেন। এরা বলার চেষ্টা করেছেন একটি 'বিশেষ উদ্দেশ্য'কে সামনে রেখেই 'নাইন-ইলেভেন'কে সংগঠিত করা হয়েছিল। অধ্যাপক হাস ২০০৯ সালে লিখিত তার গ্রন্থে (George W. Bush : War Criminal?) সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশকে 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' শুরু করার জন্য যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন এবং বিচার দাবি করেছিলেন। তিনি ৫টি কারণ উল্লেখ করেছিলেন, যার কারণে বুশকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করা যায়। ইতিমধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট রব্বানির হত্যাকা-ের পর কারজাই তলেবানদের সঙ্গে আলোচনা বাতিল ঘোষণা করেছেন। রব্বানির মৃত্যুর সঙ্গে হাক্কানি নেটওয়ার্ক জড়িত, এই অভিযোগ আফগান সরকারের পক্ষ থেকে করা হলেও, হাক্কানি নেটওয়ার্ক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাহলে কারা হত্যা করল রব্বানিকে? রব্বানি ছিলেন শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত 'শান্তি কমিটির' চেয়ারম্যান। তার মৃত্যুতে শান্তি প্রক্রিয়া এখন বিলম্বিত হবে। রব্বানির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া হিসেবে কারজাই তালেবানদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা বাতিল করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা এক ভুল 'সিগনাল' পেঁৗছে দিতে পারে। তালেবানদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা এবং সমঝোতা ছাড়া আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তালেবানদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকা- তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কাবুলে তালেবানরা কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।
এ ধরনের একটি সমঝোতা নিয়ে প্রাথমিক পর্যায় আলোচনা হয়েছিল। এখন কারজাইয়ের নয়া উদ্যোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে। আফগান-ভারত নিরাপত্তা চুক্তি পাকিস্তানের জন্য তেমন কোনো ভালো সংবাদ নয়। পাকিস্তান এমনিতেই নানা সমস্যায় জর্জরিত। সন্ত্রাসবাদ আজ পাকিস্তানের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। বেলুচিস্তানে রয়েছে বিচ্ছিনতাবাদী আন্দোলন। উপরন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এমনি এক পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কোনো কোনো মহল থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হলেও, বাস্তবতা হচ্ছে আফগানিস্তানে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে। শুধু তালেবানদের সঙ্গে একটি সমঝোতাই আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তবে আফগানিস্তান ভারতের সঙ্গে যে নিরাপত্তা ও সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তাতে পাকিস্তানের খুশি হওয়ার কথা নয়। এই চুক্তিকে পাকিস্তান কোনো ভালো চোখে দেখবে না। এতে করে নতুন করে এ অঞ্চলে এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধের জন্ম হতে পারে। পাকিস্তান ও ভারত পরোক্ষভাবে আফগান যুদ্ধে নিজেদের জড়িয়ে ফেলতে পারে। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এই চুক্তি আদৌ কোনো ভূমিকা পালন করবে না। 
ড. তারেক শামসুর রেহমান
অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য,
tsrahmanbd@yahoo.com 

0 comments:

Post a Comment