রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

শাহবাগ আন্দোলনের শেষ কোথায়?


একটা প্রশ্ন এখন বিভিন্ন মহলে প্রকাশ্যেই আলোচিত হচ্ছে। তা হল শাহবাগ গণঅভ্যুত্থানের শেষ কোথায়? নতুন নতুন কর্মসূচি আসছে। তবে মূল দাবি থেকে তরুণরা ফিরে আসেনি। তাদের দাবি এখন দুটি বিষয়ে আবদ্ধ হয়ে গেছে। এক. যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি। দুই. জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা। গত ২২ ফেব্র“য়ারি জামায়াত সমর্থিত ইসলামপন্থী দলগুলোর দেশজুড়ে তাণ্ডবের পর শাহবাগ চত্বরের তরুণরা মিরপুরেও গণসমাবেশ করেছে। তারা ঘোষণা করেছে, তাদের অবস্থান কর্মসূচি আগের মতোই চলবে। অন্যদিকে ইসলামপন্থীরা কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে হরতাল পালন করল ২৪ ফেব্র“য়ারি। এটা তো ঠিক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জনসংখ্যার একটা বড় অংশের মাঝে এক ধরনের ‘ঐক্য’ হয়েছে। এ কথাটা যেমন অস্বীকার করা যাবে না, ঠিক তেমনি এটাও সত্য, এ আন্দোলন থেকে সবচেয়ে বেশি ফায়দা নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
শেয়ারবাজার, হলমার্ক, ডেসটিনি, পদ্মা সেতু দুর্নীতি কিংবা ছাত্রলীগের দৌরাÍ্যে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় যখন বড় ধরনের ধস নেমেছিল এবং বিএনপির নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধী দল যখন দেশব্যাপী একটা ‘জোয়ার’ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল, ঠিক তখনই শাহবাগ ‘অক্যুপাই মুভমেন্ট’ দৃশ্যপট বদলে দিল। সারাবিশ্বে তরুণরাই ‘বিদ্রোহ’ করে। নিউইয়র্কে জুকোট্টি পার্কে ‘অক্যুপাই ওয়ালস্ট্রিট’ আন্দোলন শুরু করেছিল তরুণরা। তিউনেশিয়ায় ‘জেসমিন বিপ্লবে’র শুরুটা হয়েছিল কোন নির্দিষ্ট দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই। মিসরে কায়রোর তাহরির স্কয়ারের জমায়েতে ইসলামিক ব্রাদারহুডের অংশগ্রহণ ছিল, কিন্তু তারা নেতৃত্বে ছিল না। এমনকি গ্রিস, স্পেন কিংবা ব্রিটেনে যে ‘অক্যুপাই মুভমেন্টে’র ঢেউ লেগেছিল, সেখানে তরুণরাই আন্দোলনকে সংগঠিত করেছিল।

বাংলাদেশও ঠিক এমনটি ঘটেছে তা বলা যাবে না। ব্লগাররা এ আন্দোলনকে সংগঠিত করেছে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু নেতৃত্ব চলে গেছে বামপন্থী দলগুলোর ছাত্রসংগঠনের হাতে। সিপিবি, জাসদ, বাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টির ছাত্রসংগঠনের নেতা ও কর্মীরাই ছিলেন সংগঠক ও উদ্যোক্তা। এমনকি ‘অক্যুপাই শাহবাগে’র মুখপাত্র হিসেবে যিনি পরিচিত, তার ফেসবুক আইডিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী যে ‘অক্যুপাই মুভমেন্ট’ তার সঙ্গে এর পার্থক্য হল, ওইসব আন্দোলন প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বৈরাচারী সরকার ও পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হলেও শাহবাগ ‘অক্যুপাই মুভমেন্ট’ সরকারের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়নি। বরং বলা যেতে পারে, সরকারের নীরব সমর্থন ছিল এ আন্দোলনের ব্যাপারে। এ আন্দোলনের উদ্দেশ্য একটাইÑ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিচার ও সেই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা। এই বিচার প্রক্রিয়া চলছে এবং দু’জনকে শাস্তিও দেয়া হয়েছে। এদের একজন কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে ব্লগাররা।

কিন্তু এরপর কী? বিএনপির ভূমিকাই বা কী হবে এখন? প্রথমত, ফাঁসির দাবিই কি সব সমস্যার সমাধান হবে? জনতার আন্দোলনে আইন দ্রুত সংশোধিত হয়েছে। সংশোধিত আইনে ৬০ দিনের মধ্যে আপিল বিভাগে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। আপিল বিভাগের বিজ্ঞ বিচারপতিরা কাদের মোল্লার কেসটি এখন দেখবেন। তাদের রায়ের ওপর আমরা কেউই কথা বলতে পারি না। কাদের মোল্লার যে অপরাধ, তাতে ফাঁসির সিদ্ধান্তই হয়তো সঠিক হতো। কিন্তু ১৫ ফেব্র“য়ারি প্রকাশিত (আমার দেশ) একটি আবেদনে (পরিবারের পক্ষ থেকে) যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা কি সঠিক? নিশ্চয়ই ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা উত্থাপিত প্রশ্নগুলো বিবেচনায় নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক নয়। তবে যেভাবে ছোট ছোট শিশু স্কুল ত্যাগ করে শাহবাগে এসে শুধু ‘ফাঁসির দাবি’ করছে, তা শিশুদের মনে একটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে। মনোবিজ্ঞানীরা এটা ভালো বলতে পারবেন। আমাদের রাজনীতিকরা যা পারেননি, তা আমাদের তরুণ প্রজš§ করেছে। কিন্তু বিচারাধীন একটি বিষয়ে, একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যখন জনমত সংগঠিত করা হয়, তা কি উচ্চ আদালতকে অবজ্ঞা করার শামিল নয়? আমাদের বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবীদের কেউ কেউ এ কথা বলছেন বটে, কিন্তু সরকারের ব্যাখ্যা এ ব্যাপারে নেই। আমি আইনের ছাত্র নই। সাধারণ অর্থে যা বুঝি তা হচ্ছে, উচ্চ আদালতের রায়কে অস্বীকার করা যায় না। একটি রায় হয়েছে। আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায়টি নিষ্পত্তি করবেন। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালত প্রভাবিত হয়, এমন কোন কর্মকাণ্ড করা আমাদের উচিত নয়। তরুণ প্রজšে§র আন্দোলনের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ আছে। আমি চাইব আইনি প্রক্রিয়ায় এর সমাধান হোক। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে। যে রায়টি হয়েছে, সেখানে আদালতের পর্যবেক্ষণেও মানবতাবিরোধী অপরাধে দলটির সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়েছে। এখন কোন্ প্রক্রিয়ায় দলটি নিষিদ্ধ করা হবে? আইনমন্ত্রী বলেছেন, হাইকোর্টে থাকা রিট নিষ্পত্তির পর জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে রায় অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে সরকার। এর অর্থ, বিষয়টি সরকারের ভাবনায় আছে। সিইসি ইতিমধ্যে একটি মন্তব্যও করেছেন। তিনি বলেছেন, দলটির অর্থাৎ জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ-উদ্দেশ্য সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মন্তব্যটি খুবই স্পষ্ট। তাহলে যে কেউ প্রশ্ন করতেই পারেন, দলটির আদর্শ ও উদ্দেশ্য যদি সাংঘর্ষিক হয়েই থাকে, তাহলে দলটিকে নিবন্ধন দেয়া হল কীভাবে? বিগত নির্বাচন কমিশনে যারা ছিলেন, তারা সবাই জীবিত ও সক্রিয়। তারা কোন বিবেচনায় দলটিকে নিবন্ধন দিলেন? জামায়াতকে নিবন্ধন দিয়ে তারা কি তাহলে ভুল করেননি? এই ভুল আমরা এখন সংশোধন করব কীভাবে? জামায়াতের একটা ‘কালো ইতিহাস’ আছে। কিন্তু এই প্রজšে§র জামায়াত বা শিবির কর্মীরা সেই ইতিহাস কতটুকু জানে, আমি বলতে পারব না। তবে সত্যি সত্যিই যদি জামায়াতের কর্মকাণ্ড আমাদের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে হোক জামায়াত নিষিদ্ধ! আমরা তাতে স্বস্তি পাই।

কিন্তু ইতিহাস বড় নির্মম। অতীতে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ, জাসদ তথা বামমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। একসঙ্গে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি এখনও ফেসবুকে আছে। এর যুক্তি যাই দেয়া হোক না কেন, সেদিন আমাদের রাজনীতিকদের মাঝে জামায়াতের মানবতাবিরোধী অপরাধ বড় হয়ে দেখা দেয়নি। আমি ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী ব্যারনেস সৈয়দা ওয়ারসির সঙ্গে একমতÑ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে যুক্তরাজ্য। যেহেতু বাংলাদেশের তরুণ প্রজš§ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে, সেহেতু বিষয়টি সরকার জনমত যাচাই করে দেখতে পারে। এতে করে কি সমাধান হবে? আজ যদি জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাদের শত শত কর্মীকে তো নিষিদ্ধ করা যাবে না? এরা তখন কোথায় যাবে? তারা তখন বাধ্য হবে আরেকটি দল করতে। অনেকেরই মনে থাকার কথা, স্বাধীনতার বেশ কিছুদিন পর জামায়াত প্রথমবারের মতো ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির ব্যানারে আÍপ্রকাশ করেছিল। ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুসলিম লীগের সঙ্গে ঐক্য করে তারা নির্বাচনও করেছিল। পরবর্তী সময়ে তারা জামায়াতে ইসলামী নাম ধারণ করে।

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ‘ঐক্য’ নিয়ে নানা কথা হয়। কিন্তু এই জামায়াতই ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ‘মিত্র’ ভেবে একসঙ্গে নির্বাচন করেছিল। ওই নির্বাচনে জামায়াত পেয়েছিল ১০টি আসন, আর আওয়ামী লীগ ৭৬টি। বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনেও জামায়াত বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করেনি। ওই নির্বাচনে জামায়াত ২২২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছিল ১৮টিতে। তবে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য হয়েছিল নির্বাচনের পর। ইতিহাসের ছাত্ররা জানেন, তুরস্কে ইসলামপন্থী হিসেবে পরিচিত ইসলামিক ওয়েলফেয়ার পার্টিকে সেনা নেতৃত্ব নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। অথচ দলটির নেতা নেকমেতিন এরবাকানের নেতৃত্বে এবং ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে পরিচিত ট্র- পাথ পার্টির (সাবেক প্রধানমন্ত্রী তানসু সিলারের নেতৃত্বে) সমন্বয়ে নব্বইয়ের শেষের দিকে একটি সরকার গঠিত হয়েছিল। সেনাবাহিনীর চাপে ১৯৯৭ সালের জুনে এরবাকান পদত্যাগ করেন। পরবর্তী সময়ে দলটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। অতঃপর সংগঠনের কর্মীরা সেখানে জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির ব্যানারে সংগঠিত হয়। দলটি এখনসহ পরপর তিনবার (২০০২, ২০০৭, ২০১১) জনগণের ভোটে ক্ষমতায়।

আরও একটি কথা। ইসলামপন্থী আর ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা যে একসঙ্গে কাজ করতে পারেন, সরকার গঠন করতে পারেন, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক রাজনীতি তার বড় প্রমাণ। শুধু তুরস্কের কথা কেন বলি, তিউনিশিয়ায় ‘জেসমিন বিপ্লবে’র পর ২০১১ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল, তাতে বিজয়ী হয়েছিল ইসলামপন্থী দল হিসেবে পরিচিত এš§াহদা পার্টি। জয়নুল আবেদিন বিন আলীর দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসনামলে এ দলটি সেখানে নিষিদ্ধ ছিল। দলটির নেতা ঘান্নুচি দীর্ঘদিন লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর এš§াহদা ধর্মনিরপেক্ষবাদী দল কংগ্রেস ফর দ্য রিপাবলিক ও এত্তাকাতুল পার্টির সঙ্গে কোয়ালিশন সরকার গঠন করেছিল। একই ঘটনা আমরা দেখেছি মরক্কোতে। সেখানে ২০১২ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল, তাতে ইসলামপন্থী দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি বিজয়ী হয়েছিল। কিন্তু তারা ধর্মনিরপেক্ষ তথা সমাজতন্ত্রীদের সঙ্গে একটি জোট সরকার গঠন করেছে। সুতরাং দল নিষিদ্ধ করা কোন সমাধান নয়। বাংলাদেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও তারা অন্য ব্যানারে আবির্ভূত হবে।

এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু হারিয়ে গেছে। আন্দোলনকারী তথা সুশীল সমাজ এই ইস্যু নিয়ে এখন আর কথা বলে না। মানুষের কেন্দ্রবিন্দু এখন শাহবাগ। বিএনপি এই আন্দোলনকে আবার চাঙ্গা করতে পারবে কি-না কিংবা জনগণকে আবার এ ইস্যুতে একত্রিত করতে পারবে কিনা, তা এক কঠিন প্রশ্ন এখন। যদিও বিএনপি নেতারা বলছেন, ১৮ মার্চের কাউন্সিলের পর তারা আন্দোলনে নামবেন। কিন্তু বিষয়টি যত সহজভাবে বলা হচ্ছে, তত সহজ নয়। শাহবাগ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের লাভ হয়েছে অনেক। এক. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু হারিয়ে গেছে। দুর্নীতির বিষয়গুলো, বিশেষ করে পদ্মা সেতুর বিষয়টি এখন চাপা পড়ে গেছে। দুই. জামায়াতকে চাপের মুখে রেখে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে সক্ষম হয়েছে। তিন. জামায়াতের নেতৃত্বে একটি বিকল্প ‘ইসলামী জোট’ গঠন, যাতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা(?) থাকবে। এটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। চার. তরুণ প্রজš§কে বিএনপির কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সরকার সমর্থ হয়েছে। পাঁচ. তরুণ প্রজš§ আন্দোলন সংগঠিত করলেও এই আন্দোলনের অন্যতম ‘বেনিফিশিয়ারি’ আওয়ামী লীগ। শাহবাগ আন্দোলন অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না। মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। দুটি বড় চিকিৎসা কেন্দ্রে (বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেম) চিকিৎসা নিতে যাওয়া শত শত নাগরিক পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়।

ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ড নিয়েও তৈরি হয়েছে ধূম্রজাল, যার প্রভাব পড়েছে আন্দোলনের ওপরও। এ আন্দোলনে সরকারের সম্পৃক্ততা নিয়ে নানা ধরনের ‘গুজবে’র জš§ হবে। সরকার বামমনা ছাত্র সংগঠনগুলোকে দিয়ে এই আন্দোলন সংগঠিত ও পরিচালিত করছেÑ এই ‘অভিযোগ’ আরও শক্তিশালী হবে। এখন ব্লগারদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কীভাবে এ আন্দোলনের সমাপ্তি টানবেন। তবে বলতেই হবে, বিএনপিকে নিষ্ক্রিয় করা, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ‘দূরত্ব’ সৃষ্টি করা সরকারের বড় সাফল্য। গত শুক্রবারের ঘটনাবলি রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। এই রাজনীতি বাংলাদেশকে আগামী দিনে কোথায় নিয়ে যাবে বলা মুশকিল।

Daily Jugantor

27.2.`13

0 comments:

Post a Comment