বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের ইমেজ সঙ্কটের মুখে পড়েছে। বড় ধরনের অর্থনৈতিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই খবর বেরিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র তথা সরকারপ্রধানদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের ওপর নজরদারি করেছে। এই তালিকায় রয়েছে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ কিংবা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের নামও। পুরো ইউরোপ আজ এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। গেল মাসে প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে কংগ্রেসের দ্বন্দ্বের ফলশ্রুতিতে টানা ১৬ দিন অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছিল। সরকার বেতন দিতে পারছিল না। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তিগুলো। চীন যুক্তরাষ্ট্রে তার বিনিয়োগকৃত অর্থের নিশ্চয়তা চেয়েছিল। এর রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে এলো আড়িপাতের ঘটনা। এসব ঘটনায় বড় ধরনের ইমেজ সঙ্কটের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাহ্যত গত বেশ কিছুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা প্রশংসা কুড়ানোর চেয়ে নিন্দাই কুড়িয়েছে বেশি।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি দেশটির জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। ৯/১১-এর ঘটনার পর থেকে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের যে অবনতি ঘটেছিল, সেই সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তেমন উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট ওবামা তার ঐতিহাসিক কায়রো ভাষণে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা বলেছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, তার শাসনামলেই মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ ইরাক আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর ওবামা নির্দেশ দিয়েছিলেন লিবিয়া আক্রমণের। দুঃখজনক হলেও সত্য, ইরাক আর লিবিয়া আজ সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। যে আল কায়দাকে উৎখাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণ পর্যন্ত করেছিল, আজ সেই আল কায়দার উত্থান ঘটেছে লিবিয়া, ইরাক আর সিরিয়ায়। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া আক্রমণ করেনি সত্য; কিন্তু সিরিয়া ধ্বংস হয়ে গেছে। আর এর পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে পশ্চিমা শক্তি। সিরিয়ার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের অনুকূলে গেলেই ইরানের ওপর ‘চাপ’ বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র। মুসলিম বিশ্বের পাশাপাশি ইউরোপের সঙ্গেও সম্পর্কের কিছুটা চিড় ধরল এখন। বাহ্যত ‘টুইন-টাওয়ার’ হামলার তিন সপ্তাহ পর ৭ অক্টোবর (২০০১) আফগানিস্তান ইঙ্গ-মার্কিন বিমান হামলা চালিয়ে মুসলিম বিদ্বেষী যে ‘ইমেজ’ যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করেছিল, তা আজও ভাঙতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা। যুক্তরাষ্ট্র নতুন এক ‘রাজনীতি’ সেদিন শুরু করেছিল। তাদের ভাষায় তারা এর নামকরণ করেছিল ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’ একের পর এক আক্রান্ত হলো মুসলিম দেশগুলো। ২০০৩ সালের মার্চÑ আক্রান্ত হলো ইরাক। অভিযোগ ইরাকের কাছে ডগউ বা মানবজাতি ধ্বংসকারী সব মারণাস্ত্র রয়েছে। ৪৩ দিনব্যাপী অনবরত বোমাবর্ষণে পতন ঘটল বাগদাদের। কী করুণ ইতিহাস। কাবুল দখল করার পরও যেমনি আফগানিস্তানে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, ঠিক তেমনি বাগদাদেও পাওয়া গেল না ডগউ বা মারণাস্ত্র। ২০০৪ সালের ৮ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট জুমা নিজে তা স্বীকারও করলেন। আফগানিস্তানে হামলা করে যেমনি মোল্লা ওমরের নেতৃত্বাধীন তালেবান সরকারকে উৎখাত করা হলো, ঠিক তেমনি বাগদাদে উৎখাত হলেন সাদ্দাম হোসেন। কিন্তু ‘যুদ্ধ’-এর পরিণতিতে, জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুযায়ী ইরাকে মারা গিয়েছিলেন ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। আর যুদ্ধের জন্য খরচ হয়েছিল কত? যুক্তরাষ্ট্র বছরে খরচ করেছিল ৬ বিলিয়ন ডলার আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্য। আর এর বাইরে আফগানিস্তানে যুদ্ধের জন্য ব্যয় করেছে ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার (১ হাজার বিলিয়নে ১ ট্রিলিয়ন)। আর ইরাক যুদ্ধে তাদের খরচ হয়েছিল ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার। আর এই অর্থের জোগান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের করদাতারা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের জোগান দিতে গিয়ে সামাজিক খাতে ব্যয়-বরাদ্দ গেলবার (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশু, ফুড স্ট্যাম্প ইত্যাদি) কমেছে। কিন্তু তারপরও ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ থেমে থাকেনি। ২০১১ সালে আক্রান্ত হলো লিবিয়া। ইঙ্গ-মার্কিন বিমান হামলা চালানো হলো ত্রিপলিতে। এক সময় পতন ঘটল গাদ্দাফির। এখানে অবশ্য ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো স্থলপথে সেনাবাহিনী পাঠায়নি যুক্তরাষ্ট্র। গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’। সেই ‘অপরাধ’ জাতিসংঘ কর্তৃক প্রমাণ করার আগেই বাগদাদের মতো বোমাহামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল ত্রিপলিকে। সাদ্দামের মতো গাদ্দাফিকেও হত্যা করা হয়েছিল। আর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ক্ষেত্রেও তেমনটি হবে আগামীতে। গৃহযুদ্ধ সিরিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। সিরিয়া আক্রমণের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন দেয়নি। তবে এই হামলা আগামীতে হতে পারে। আর বাশারের পরিণতি যে গাদ্দাফি আর সাদ্দাম হোসেনের মতো হবে, সেটাও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বাশারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগেÑ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষ হত্যাÑ এর সত্যতা জাতিসংঘ মিশন খুঁজে পাবে কিনা সন্দেহ। তবে বাস্তবতা এটাই, যুক্তরাষ্ট্র নিজ জনগোষ্ঠীর মতামত তথা বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করেই সিরিয়া আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও এই সিদ্ধান্তটি আর কার্যকরী করেননি ওবামা।
৯/১১-এর ঘটনার ১২ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর যে প্রশ্নটি এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে তা হচ্ছে, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর শেষ কোথায়? সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ ওই ‘যুদ্ধ’ শুরু করলেও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ওবামা বাহ্যত এই ‘যুদ্ধ’ অব্যাহত রেখেছেন। আর এই যুদ্ধের পুরোটাই পরিচালিত হচ্ছে মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে। একটি ‘মুসলিম বিদ্বেষী’ মনোভাবের যে জন্ম হয়েছিল তা কমেছে, এটা মনে করারও কোনো কারণ নেই। ২০০৯ সালের কায়রো ভাষণে বারাক ওবামা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ‘নতুন এক সম্পর্ক’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, বাস্তব ক্ষেত্রে তিনি মুসলমান দেশগুলোর বিরুদ্ধেই এক ধরনের ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন। নিঃসন্দেহে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকা- সমর্থনযোগ্য নয়। ৯/১১-এর ঘটনা শুধু নিন্দনীয়ই নয়, বরং অপরাধযোগ্য। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার করা উচিত ছিল। সাদ্দাম হোসেন, গাদ্দাফি কিংবা বাসারের এই আদালতেই বিচার হতে পারত; কিন্তু তা হয়নি। জাতিসংঘের চার্টারে কোনো দেশ অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যদি কোনো দেশ মানবতাবিরোধী অপরাধ (যেমন অভিযোগ উঠেছে আসাদের বিরুদ্ধে) করে, তাহলে আন্তর্জাতিক আদালত ও আন্তর্জাতিক আইনে তার বিচার হতে পারে। যেমনটি হয়েছিল পানামার শাসক জেনারেল নরিয়েগার ক্ষেত্রে। কিংবা সার্ব যুদ্ধাপরাধীদের। লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট টেইলারেরও বিচার হয়েছিল এ আদালতে। এখন হতে যাচ্ছে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তার। যুক্তরাষ্ট্র এই আইন সবার ক্ষেত্রে একইভাবে প্রযোজ্য করল না। মুসলমান দেশগুলোর ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। তার কায়রো ভাষণে মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, তা এখন মৃত। বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীর আস্থা তিনি অর্জন করতে পারেননি। প্রশ্ন করা যেতে পারেÑ ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ পরিচালনা করে লাভ কার হলো? ক্ষতি কার হলো? সব যুদ্ধেরই একটা বড় অংশের খরচ জোগাতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। এতে করে সেখানকার সামাজিক খাতে ব্যয়-বরাদ্দ কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বেকার মানুষের সংখ্যা এখন ৭ ভাগের উপরে। ২০ মিলিয়ন মানুষের চাকরি নেই। ৪৯ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী জানে না পরের বেলার খাদ্য কোত্থেকে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের ঋণের পরিমাণ এখন ৭০ ট্রিলিয়ন (সান্টিয়াগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস হেমিলটনের মতে), আগে তা ধারণা করা হতো ১৬.৯ ট্রিলিয়ন ডলার। আর ছাত্রদের (গ্রাজুয়েশন করার ঋণ) ঋণ নেয়ার পরিমাণ গত ১০ বছরে বেড়েছে ৪ গুণ। যুদ্ধের পেছনে এত খরচ না হলে, তা সামাজিক খাতে ব্যয় করা যেত। দ্বিতীয়ত, বলা হচ্ছে ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধেই এই যুদ্ধ। বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আরব বিশ্বে সরকার উৎখাত আন্দোলনে (ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া) আল কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো তৎপর। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে হলেও সত্য, এদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেমন সিরিয়ার জাবহাত উল বুসরা, ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া, আহরার আল শাম, লিওয়া আল তাওহিদ সিরিয়া কিংবা লিবিয়ায় আল জামআ আল মুকাতিলা বি লিবিয়া ও লিবিয়ার ইসলামিক ফাইটিং গ্রুপÑ এরা সবাই অস্ত্র ও আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছে তুরস্ক তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। মনে থাকার কথা, এক সময় সোভিয়েত সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের তৈরি করেছিল। তৃতীয়ত, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ পরিচালনা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘ড্রোন’ বিমান হামলা পরিচালনা করছে পাকিস্তান ও ইয়েমেনের মতো দেশে। এতে করে এসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী একটা জনমত তৈরি হয়েছে। পিউ রিসার্সের মতে, পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীর শতকরা ৭৫ ভাগ যুক্তরাষ্ট্রকে শত্রু মনে করে। অব্যাহত ড্রোন হামলার কারণে পাকিস্তানে ‘লস্কর-ই-তৈয়্যেবা’র মতো জঙ্গি সংগঠনের জন্ম হয়েছে। লিবিয়ায় এসব জঙ্গি সংগঠনের হাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্রাণ হারিয়েছেন। ইরাকে এরা আত্মঘাতী বোমা সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। আর সিরিয়ায় বিদ্রোহী বাহিনী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো শহরের একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে জাবহাত উল বুসরা ফ্রন্ট। অর্থাৎ মুসলিম বিশ্বে আল কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর তৎপরতা বেড়েছে, কমেনি। চতুর্থত, এই ‘যুদ্ধ’ পরিচালনা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার খর্ব করছে। যেমন উল্লেখ করা যেতে পারে, ‘ফরেন ইনটেলিজেন্স সারভাইলেন্স অ্যাক্ট, ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন অ্যাক্ট’ ইত্যাদি। শত শত ই-মেইল, ফ্যাক্স, ফোনালাপ এখন সরকারি নজরদারিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসা কঠিন। সর্বশেষ আড়িপাতার ঘটনা এরই ফলশ্রুতি।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে গিয়ে কোটি কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্র খরচ করছে; কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকা- কমেছে, বাস্তবতা তা বলে না। এতে করে একদিকে অবশ্য খুশি হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাক ও লিবিয়া পুনর্গঠনের নামে মার্কিন কোম্পানিগুলো এখন এসব দেশে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে। অতিরিক্ত তেল উত্তোলন করে পুনর্গঠনের বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। তেলের দামও আর কমেনি। ব্যারেলপ্রতি এখন মূল্য ১১২ ডলার, যুদ্ধের আগে এক সময় যা ছিল ৬০ ডলারের কাছাকাছি।
তাই মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তনটা জরুরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি তার আগ্রাসী নীতি পরিত্যাগ না করে, যদি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর ওপর নজরদারি না কমায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র অচিরেই বন্ধুহীন হয়ে যাবে। এরই মধ্যে সিরিয়া সঙ্কটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। গেল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অব্যবস্থা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতাকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি খুব ভালো নয়। সর্বশেষ আড়িপাতার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র আরও বদনাম কুড়াল। যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থেই তাই পরিবর্তনটা প্রয়োজন।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি দেশটির জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। ৯/১১-এর ঘটনার পর থেকে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের যে অবনতি ঘটেছিল, সেই সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তেমন উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট ওবামা তার ঐতিহাসিক কায়রো ভাষণে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা বলেছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, তার শাসনামলেই মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ ইরাক আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর ওবামা নির্দেশ দিয়েছিলেন লিবিয়া আক্রমণের। দুঃখজনক হলেও সত্য, ইরাক আর লিবিয়া আজ সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। যে আল কায়দাকে উৎখাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণ পর্যন্ত করেছিল, আজ সেই আল কায়দার উত্থান ঘটেছে লিবিয়া, ইরাক আর সিরিয়ায়। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া আক্রমণ করেনি সত্য; কিন্তু সিরিয়া ধ্বংস হয়ে গেছে। আর এর পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে পশ্চিমা শক্তি। সিরিয়ার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের অনুকূলে গেলেই ইরানের ওপর ‘চাপ’ বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র। মুসলিম বিশ্বের পাশাপাশি ইউরোপের সঙ্গেও সম্পর্কের কিছুটা চিড় ধরল এখন। বাহ্যত ‘টুইন-টাওয়ার’ হামলার তিন সপ্তাহ পর ৭ অক্টোবর (২০০১) আফগানিস্তান ইঙ্গ-মার্কিন বিমান হামলা চালিয়ে মুসলিম বিদ্বেষী যে ‘ইমেজ’ যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করেছিল, তা আজও ভাঙতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা। যুক্তরাষ্ট্র নতুন এক ‘রাজনীতি’ সেদিন শুরু করেছিল। তাদের ভাষায় তারা এর নামকরণ করেছিল ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’ একের পর এক আক্রান্ত হলো মুসলিম দেশগুলো। ২০০৩ সালের মার্চÑ আক্রান্ত হলো ইরাক। অভিযোগ ইরাকের কাছে ডগউ বা মানবজাতি ধ্বংসকারী সব মারণাস্ত্র রয়েছে। ৪৩ দিনব্যাপী অনবরত বোমাবর্ষণে পতন ঘটল বাগদাদের। কী করুণ ইতিহাস। কাবুল দখল করার পরও যেমনি আফগানিস্তানে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, ঠিক তেমনি বাগদাদেও পাওয়া গেল না ডগউ বা মারণাস্ত্র। ২০০৪ সালের ৮ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট জুমা নিজে তা স্বীকারও করলেন। আফগানিস্তানে হামলা করে যেমনি মোল্লা ওমরের নেতৃত্বাধীন তালেবান সরকারকে উৎখাত করা হলো, ঠিক তেমনি বাগদাদে উৎখাত হলেন সাদ্দাম হোসেন। কিন্তু ‘যুদ্ধ’-এর পরিণতিতে, জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুযায়ী ইরাকে মারা গিয়েছিলেন ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। আর যুদ্ধের জন্য খরচ হয়েছিল কত? যুক্তরাষ্ট্র বছরে খরচ করেছিল ৬ বিলিয়ন ডলার আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্য। আর এর বাইরে আফগানিস্তানে যুদ্ধের জন্য ব্যয় করেছে ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার (১ হাজার বিলিয়নে ১ ট্রিলিয়ন)। আর ইরাক যুদ্ধে তাদের খরচ হয়েছিল ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার। আর এই অর্থের জোগান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের করদাতারা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের জোগান দিতে গিয়ে সামাজিক খাতে ব্যয়-বরাদ্দ গেলবার (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশু, ফুড স্ট্যাম্প ইত্যাদি) কমেছে। কিন্তু তারপরও ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ থেমে থাকেনি। ২০১১ সালে আক্রান্ত হলো লিবিয়া। ইঙ্গ-মার্কিন বিমান হামলা চালানো হলো ত্রিপলিতে। এক সময় পতন ঘটল গাদ্দাফির। এখানে অবশ্য ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো স্থলপথে সেনাবাহিনী পাঠায়নি যুক্তরাষ্ট্র। গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’। সেই ‘অপরাধ’ জাতিসংঘ কর্তৃক প্রমাণ করার আগেই বাগদাদের মতো বোমাহামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল ত্রিপলিকে। সাদ্দামের মতো গাদ্দাফিকেও হত্যা করা হয়েছিল। আর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ক্ষেত্রেও তেমনটি হবে আগামীতে। গৃহযুদ্ধ সিরিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। সিরিয়া আক্রমণের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন দেয়নি। তবে এই হামলা আগামীতে হতে পারে। আর বাশারের পরিণতি যে গাদ্দাফি আর সাদ্দাম হোসেনের মতো হবে, সেটাও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বাশারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগেÑ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষ হত্যাÑ এর সত্যতা জাতিসংঘ মিশন খুঁজে পাবে কিনা সন্দেহ। তবে বাস্তবতা এটাই, যুক্তরাষ্ট্র নিজ জনগোষ্ঠীর মতামত তথা বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করেই সিরিয়া আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও এই সিদ্ধান্তটি আর কার্যকরী করেননি ওবামা।
৯/১১-এর ঘটনার ১২ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর যে প্রশ্নটি এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে তা হচ্ছে, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর শেষ কোথায়? সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ ওই ‘যুদ্ধ’ শুরু করলেও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ওবামা বাহ্যত এই ‘যুদ্ধ’ অব্যাহত রেখেছেন। আর এই যুদ্ধের পুরোটাই পরিচালিত হচ্ছে মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে। একটি ‘মুসলিম বিদ্বেষী’ মনোভাবের যে জন্ম হয়েছিল তা কমেছে, এটা মনে করারও কোনো কারণ নেই। ২০০৯ সালের কায়রো ভাষণে বারাক ওবামা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে ‘নতুন এক সম্পর্ক’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, বাস্তব ক্ষেত্রে তিনি মুসলমান দেশগুলোর বিরুদ্ধেই এক ধরনের ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন। নিঃসন্দেহে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকা- সমর্থনযোগ্য নয়। ৯/১১-এর ঘটনা শুধু নিন্দনীয়ই নয়, বরং অপরাধযোগ্য। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার করা উচিত ছিল। সাদ্দাম হোসেন, গাদ্দাফি কিংবা বাসারের এই আদালতেই বিচার হতে পারত; কিন্তু তা হয়নি। জাতিসংঘের চার্টারে কোনো দেশ অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যদি কোনো দেশ মানবতাবিরোধী অপরাধ (যেমন অভিযোগ উঠেছে আসাদের বিরুদ্ধে) করে, তাহলে আন্তর্জাতিক আদালত ও আন্তর্জাতিক আইনে তার বিচার হতে পারে। যেমনটি হয়েছিল পানামার শাসক জেনারেল নরিয়েগার ক্ষেত্রে। কিংবা সার্ব যুদ্ধাপরাধীদের। লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট টেইলারেরও বিচার হয়েছিল এ আদালতে। এখন হতে যাচ্ছে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তার। যুক্তরাষ্ট্র এই আইন সবার ক্ষেত্রে একইভাবে প্রযোজ্য করল না। মুসলমান দেশগুলোর ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। তার কায়রো ভাষণে মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, তা এখন মৃত। বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীর আস্থা তিনি অর্জন করতে পারেননি। প্রশ্ন করা যেতে পারেÑ ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ পরিচালনা করে লাভ কার হলো? ক্ষতি কার হলো? সব যুদ্ধেরই একটা বড় অংশের খরচ জোগাতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। এতে করে সেখানকার সামাজিক খাতে ব্যয়-বরাদ্দ কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বেকার মানুষের সংখ্যা এখন ৭ ভাগের উপরে। ২০ মিলিয়ন মানুষের চাকরি নেই। ৪৯ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী জানে না পরের বেলার খাদ্য কোত্থেকে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের ঋণের পরিমাণ এখন ৭০ ট্রিলিয়ন (সান্টিয়াগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস হেমিলটনের মতে), আগে তা ধারণা করা হতো ১৬.৯ ট্রিলিয়ন ডলার। আর ছাত্রদের (গ্রাজুয়েশন করার ঋণ) ঋণ নেয়ার পরিমাণ গত ১০ বছরে বেড়েছে ৪ গুণ। যুদ্ধের পেছনে এত খরচ না হলে, তা সামাজিক খাতে ব্যয় করা যেত। দ্বিতীয়ত, বলা হচ্ছে ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধেই এই যুদ্ধ। বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আরব বিশ্বে সরকার উৎখাত আন্দোলনে (ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া) আল কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো তৎপর। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে হলেও সত্য, এদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেমন সিরিয়ার জাবহাত উল বুসরা, ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া, আহরার আল শাম, লিওয়া আল তাওহিদ সিরিয়া কিংবা লিবিয়ায় আল জামআ আল মুকাতিলা বি লিবিয়া ও লিবিয়ার ইসলামিক ফাইটিং গ্রুপÑ এরা সবাই অস্ত্র ও আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছে তুরস্ক তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। মনে থাকার কথা, এক সময় সোভিয়েত সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের তৈরি করেছিল। তৃতীয়ত, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ পরিচালনা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘ড্রোন’ বিমান হামলা পরিচালনা করছে পাকিস্তান ও ইয়েমেনের মতো দেশে। এতে করে এসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী একটা জনমত তৈরি হয়েছে। পিউ রিসার্সের মতে, পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীর শতকরা ৭৫ ভাগ যুক্তরাষ্ট্রকে শত্রু মনে করে। অব্যাহত ড্রোন হামলার কারণে পাকিস্তানে ‘লস্কর-ই-তৈয়্যেবা’র মতো জঙ্গি সংগঠনের জন্ম হয়েছে। লিবিয়ায় এসব জঙ্গি সংগঠনের হাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্রাণ হারিয়েছেন। ইরাকে এরা আত্মঘাতী বোমা সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। আর সিরিয়ায় বিদ্রোহী বাহিনী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো শহরের একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে জাবহাত উল বুসরা ফ্রন্ট। অর্থাৎ মুসলিম বিশ্বে আল কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর তৎপরতা বেড়েছে, কমেনি। চতুর্থত, এই ‘যুদ্ধ’ পরিচালনা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার খর্ব করছে। যেমন উল্লেখ করা যেতে পারে, ‘ফরেন ইনটেলিজেন্স সারভাইলেন্স অ্যাক্ট, ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন অ্যাক্ট’ ইত্যাদি। শত শত ই-মেইল, ফ্যাক্স, ফোনালাপ এখন সরকারি নজরদারিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসা কঠিন। সর্বশেষ আড়িপাতার ঘটনা এরই ফলশ্রুতি।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে গিয়ে কোটি কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্র খরচ করছে; কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকা- কমেছে, বাস্তবতা তা বলে না। এতে করে একদিকে অবশ্য খুশি হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাক ও লিবিয়া পুনর্গঠনের নামে মার্কিন কোম্পানিগুলো এখন এসব দেশে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে। অতিরিক্ত তেল উত্তোলন করে পুনর্গঠনের বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। তেলের দামও আর কমেনি। ব্যারেলপ্রতি এখন মূল্য ১১২ ডলার, যুদ্ধের আগে এক সময় যা ছিল ৬০ ডলারের কাছাকাছি।
তাই মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তনটা জরুরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি তার আগ্রাসী নীতি পরিত্যাগ না করে, যদি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর ওপর নজরদারি না কমায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র অচিরেই বন্ধুহীন হয়ে যাবে। এরই মধ্যে সিরিয়া সঙ্কটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। গেল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অব্যবস্থা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতাকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি খুব ভালো নয়। সর্বশেষ আড়িপাতার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র আরও বদনাম কুড়াল। যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থেই তাই পরিবর্তনটা প্রয়োজন।
১১ নভেম্বর, ২০১৩।
ৎড. তারেক শামসুর রেহমান
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
- See more at: http://www.alokitobangladesh.com/editorial/2013/11/11/33375#sthash.6aSIZiDs.o5IwUkds.dpuf
ৎড. তারেক শামসুর রেহমান
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
- See more at: http://www.alokitobangladesh.com/editorial/2013/11/11/33375#sthash.6aSIZiDs.o5IwUkds.dpuf
0 comments:
Post a Comment