রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বিদেশি মধ্যস্থতা কেন কোনো সমাধান বয়ে আনবে না

বাংলাদেশে এসেছিলেন নিশা দেশাই। জন্মগতভাবে তিনি ভারতীয় নন, মার্কিন নাগরিক। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একজন। তার দায়িত্ব দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়া। তিনি এ দায়িত্বটি নিয়েছেন অতিসম্প্রতি। সঙ্গত কারণেই তিনি বাংলাদেশে আসবেন। কেননা, বাংলাদেশের রাজনীতি, এর গতি-প্রকৃতি, এখানকার সরকার ও বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া তার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তাকে নিয়ে একশ্রেণীর মিডিয়ার অতি উৎসাহ আমি লক্ষ্য করেছি। আকার-ইঙ্গিতে বলা হচ্ছিল, তিনি বোধকরি এক ধরনের মধ্যস্থতা করার জন্য বাংলাদেশে এসেছেন! এ আশঙ্কা আরও বদ্ধমূল হয়েছে যখন ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণও আমাদের জানালেন, বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে।

বাংলাদেশ একটি সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু এ সঙ্কটে কী বিদেশিরা কোনো সমাধান দিয়ে যেতে পারবে? অতীত ইতিহাস, তা বলে না। স্যার নিনিয়ানের বাংলাদেশ সফরের পর থেকে একাধিকবার সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। আর একাধিকবার আমরা দেখেছি, বিদেশি দাতাগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে আসছেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করছেন। তারা উভয়পক্ষকে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা দৃষ্টিকটু এবং আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে বেমানান। আমাদের সঙ্কট মোকাবিলায় আমরা যদি ব্যর্থ হই, তাহলে আমরা এক সময় পরিপূর্ণভাবে বিদেশিদের ওপর নির্ভর হয়ে যাব। তখন দাতাগোষ্ঠীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের চলতে হবে। যে কোনো বিবেচনায় এটা কোনো ভালো খবর নয়। নিশা দেশাই এসেছিলেন। দেখা করলেন দুই নেত্রীর সঙ্গে। এমনকি সাতজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সঙ্গেও তিনি কথা বললেন। এরা কারা? জনগণের সঙ্গে এদের সম্পর্ক কতটুকু? এর আগে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসম্পর্কিত পররাষ্ট্রবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান স্টিভ শ্যাবট। স্মরণ থাকার কথা, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা বাংলাদেশের বিষয়ে আলোচনার জন্য নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন। নয়াদিল্লি থেকেই তিনি উড়ে গিয়েছিলেন ওয়াশিংটনে। এখন আবার ঢাকায়। তার ঢাকায় ফিরে আসার পর এলেন নিশা দেশাই।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিদেশিদের এ ‘হস্তক্ষেপ’ বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি যথেষ্ট নষ্ট করেছে। আমাদের যে ‘অর্জন’ সেই ‘অর্জন’ নষ্ট হতে চলেছে শুধু একটি সমঝোতার অভাবে। সরকারি দল এরই মধ্যে আগামী নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন তাদের মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করে দিয়েছে। কারা কারা প্রার্থী হতে চাচ্ছেন, তার একটি তালিকাও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। ভাবখানা এই, নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে একবার হলেও সংসদে যেতে চাই! সরকারি দল বাদে অন্য কোনো দলের কোনো তৎপরতা নেই। জাতীয় পার্টিও আছে মহাফ্যাসাদে। দল স্পষ্টতই দুই ভাগে বিভক্ত। তৃতীয় একটি ফ্রন্টের ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং কাজী জাফর আহমদ, এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী। টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক মঞ্চে বি. চৌধুরী আর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গেও বক্তৃতা করলেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। স্বয়ং কাদের সিদ্দিকীই বললেন, আগে মহাজোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসতে। সমস্যা এখানেই। এরশাদ সব কিছুই বোঝেন। দুই নৌকায় পা রাখতে চান তিনি। বারবার বলে আসছেন মহাজোট থেকে তিনি নির্বাচন করবেন না, আর বিএনপি না গেলে ওই নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতাও থাকবে না। কিন্তু এরশাদ বলে কথা! তিনি কথা রাখতে পারেন না। তিনি সকালে মহাজোট ছেড়ে বিকালে মহাজোট সরকারের সর্বদলীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছেন। তার দল সেখানে পাঁচজন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টার পদ পেয়েছে। মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়ে তিনি বিএনপিকেও আহ্বান জানিয়েছেন যোগ দিতে। এই হচ্ছে এরশাদ! যাকে নিয়ে কোন অনুমানই করা দুরূহ নয়, অসম্ভবও বটে।

এটা এখন স্পষ্ট বিদেশি দাতারা যাই বলুক, নিশা দেশাই ঢাকায় এসে যে কথাই বলে যান না কেন, একটি নির্বাচন হবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে। আর বিএনপি তথা ১৮ দল যত কথাই বলুক, তারা ওই নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। নির্বাচন হবে। ১৮ দল নির্বাচন বয়কট করবে। সরকারকে ‘সহযোগিতা’ করার জন্য দল বা লোকের অভাব হবে না।

আমরা ১৯৮৬ সালের পুনরাবৃত্তিই দেখতে পাব আরেকবার। কিন্তু তারপর কী? দেশ কী এভাবেই চলবে? রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমার কাছে এটা স্পষ্ট যে, যে কোনো ফর্মেই হোক একটি নির্বাচনকালীন সরকার হবে। তবে তা কোনো অবস্থাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে আলোচনা হবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর। ওই আলোচনায় বিএনপি যোগ দেবে এবং একটি নির্বাচনকালীন সরকারের আওতায় বাংলাদেশে একাদশতম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বর্তমান কাঠামোয়। প্রধানমন্ত্রী আবারও ‘নির্বাচিত’ হবেন। আর ওই সরকার ক্ষমতায় থাকবে ন্যূনতম দু’বছর। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আমাদের এক ধরনের স্থিতিশীলতা দিয়েছিল।

পঞ্চম, ৭ম, ৮ম এবং ৯ম সংসদ নির্বাচন বিতর্কমুক্ত ছিল এবং বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছিল। তখন আমরা আবার সেই পুরনো বৃত্তে ফিরে গেলাম। একপক্ষ কর্তৃক অপরপক্ষকে সহ্য না করার মানসিকতা, ব্যক্তি প্রতিহিংসা, ক্ষমতা ধরে রাখার নানা অপকৌশল, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সহিংসতার আশ্রয়, বাংলাদেশের রাজনীতির এই যে চিত্র, এ চিত্র বদলে দিতে না পারলে এ জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার। প্রায় ১৬ কোটি মানুষের এ দেশটির একটি সম্ভাবনা আছে। এখন এ দেশের রাজনীতিবিদদেরই এ সম্ভাবনাকে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই, শুভবুদ্ধির উদয় হবে। আমরা চাই, আমাদের রাজনীতিবিদরা আমাদের স্থিতিশীলতা উপহার দেবেন। এ জাতি তো বারবার তাদের দিকেই তাকিয়েছে। পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপনটা জরুরি। আর সেই সঙ্গে প্রয়োজন দোষারোপের রাজনীতি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়া। তাহলেই দেশে একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই সংস্কৃতি আমরা গড়ে তুলতে পারিনি। অথচ এরই মধ্যে আমরা ৪২ বছর পার করেছি। সময়টা তো একেবারে কম নয়। একটা জাতি তো এ সময় কম উন্নতি করে না। আমরা মালয়েশিয়া কিংবা সিঙ্গাপুরের দৃষ্টান্ত দিই। এ দুটি দেশের গণতন্ত্র চর্চা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কিন্তু একটা প্রশ্নে কারও কোনো দ্বিমত নেইÑ আর তা হচ্ছে এ দুই দেশের জাতীয় নেতারা দেশ দুটিকে শুধু এক ধরনের স্থিতিশীলতাই উপহার দেননি, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি মডেল হিসেবে দেশ দুটিকে দাঁড় করিয়েছেন।

ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। এক সময় সিঙ্গাপুর ছিল জেলেপাড়া। মাছ শিকার ছিল তাদের পেশা। আর আজ সেই সিঙ্গাপুর কোথায়? আর মালয়েশিয়া? ২০-২৫ বছর আগেও মালয়েশিয়াকে কেউ চিনতো না। আর এখন মালয়েশিয়া উঠতি অর্থনৈতিক শক্তি। সিঙ্গাপুর আর মালয়েশিয়ার এই যে অবদানÑ এটা সম্ভব হয়েছে সে দেশের নেতাদের দূরদর্শিতা, দুর্নীতিমুক্ত একটি সমাজ, সুশাসন নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে। লি কুয়ান ইউ কিংবা মাহাথির মোহাম্মদ যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সেখানে বিনির্মাণ করেছিলেন, সেখানে রাজনীতির চেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন বেশি। সিঙ্গাপুরের নিজস্ব কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নেই। অথচ শুধু ব্যবসা করে, অন্যের সম্পদ ব্যবহার করে, প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটিয়ে ও ব্যবহার করে সিঙ্গাপুর আজ একটি উঠতি অর্থনৈতিক শক্তি। সিঙ্গাপুরকে বলা হয় ‘ভার্চুয়াল স্টেট’। শুধু আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করে সিঙ্গাপুর আজ বিশ্বে এক অনন্য স্থান স্থাপন করেছে। সিঙ্গাপুরের রাজনীতিবিদরা শিক্ষিত। স্কুল থেকেই বাচ্চাদের আধুনিক তথা প্রযুক্তিগত শিক্ষার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপতি যে বেতন পান, আমেরিকার রাষ্ট্রপতির চেয়ে তা পাঁচগুণ বেশি। সিঙ্গাপুর এটা সম্ভব করেছে। সেখানে দুর্নীতি এক রকম নেই বললেই চলে। আর মালয়েশিয়ার দৃষ্টান্তও এর থেকে পার্থক্য নয়। সুশাসন সেখানে নিশ্চিত হয়েছে। রাজনীতির চেয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তাদের কাছে অন্যতম অগ্রাধিকার। কিন্তু বাংলাদেশে ঘটেছে উল্টোটি। দুর্নীতি আজ রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এমন কোনো সেক্টর নেই, যেখানে দুর্নীতি ‘খুঁজে’ পাওয়া যাবে না। আর দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেয়ার প্রবণতা আজ খুব বেশি। খুব বেশি স্পষ্ট। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি, হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ গ্রুপের দুর্নীতি, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, ছাত্রলীগের তা-বÑ এসব ‘ঘটনা’ সরকারের বড় অর্জনের পথে প্রধান অন্তরায়। পদ্মা সেতু নিয়ে যা ঘটল, তার ব্যাখ্যা প্রধানমন্ত্রী যেভাবেই দিন না কেন, বিদেশে এ ঘটনায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যথেষ্ট নষ্ট হয়েছে। পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি, এ ধরনের বক্তব্য কী সত্যের অপলাপ নয়? যদি আদৌ ‘কিছু’ না হয়ে থাকে, তাহলে বিশ্বব্যাংক কেন এত কঠোর হলো, কেন তদন্ত করল, কেনই বা কানাডাতে মামলা হলো? আমরা তা অস্বীকার করতেই পারি। কিন্তু বাস্তবতা কিন্তু তা বলে না। প্রধানমন্ত্রী তার এক ভাষণে হলমার্ক-ডেসটিনির অনিয়মের কথা স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু মানুষ প্রত্যাশা করেÑ যারাই এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। একজন ব্যাংক উপমহাব্যবস্থাপকের পক্ষে হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া সম্ভব নয়। সুতরাং প্রভাবশালী যারাই নেপথ্যে থেকে এই ‘কাজটি’ করেছেন, তাদের শাস্তি হোক।

প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই ভারত তথা পশ্চিমা বিশ্বের গণতান্ত্রিক সমাজের কথা বলেন। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে কী এ ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অপরাধীরা পার পেয়ে যেতে পারে? ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন এক মন্ত্রীকে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় ফাইন দিতে হয়েছিল। জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর (প্রধানমন্ত্রী তিন-তিনবার) হেলমুট কোহল ঘুষ গ্রহণ করার অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ায় দলের কর্তৃত্ব হারিয়েছিলেন। আমরা বাংলাদেশে কী এ ধরনের ঘটনা চিন্তা করতে পারি। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, মাগুরা উপনির্বাচনের কথা বলেন। এটা মিথ্যা নয়। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে ভোলায় উপনির্বাচনে কী হয়েছিল, তার সাক্ষী সংবাদপত্রগুলো। আসলে ওই সংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করতে হবে। আইনের শাসন চালু করতে হবে। দোষী যিনিই হোন, তাকে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। একবার শাস্তি যদি নিশ্চিত করা যায়, আমার বিশ্বাস, দুর্নীতির প্রবণতা কমে যাবে। আর তাই আইনের শাসনটা জরুরি। ভারতে বিচার বিভাগ কম ক্ষমতাসম্পন্ন নয়। বিচার বিভাগের ওপর প্রশাসনের কোনো খবরদারি নেই। সিঙ্গাপুর আর মালয়েশিয়ার মতো দেশে আইনের শাসন আছে বিধায়, দুর্নীতি সেখানে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করতে পারেনি। তাই বিদেশিদের মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই। মনে রাখতে হবে, ভারত কিংবা যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সমস্যা সমাধানে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো ‘মডেল’ দিয়ে যেতে পারবে না। আমরা যদি পরস্পরের ওপর আস্থা স্থাপন করি, তাহলে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা কঠিন কিছু নয়। আমাদের মূল সমস্যা, এ মুহূর্তে নির্বাচনকালীন একটি সরকার। এখানে সংবিধান মূল বাধা নয়। মূল বাধা আন্তরিকতা। এই আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বড় দুটো দল বিশেষ করে সরকারি দলের। তাই নিশা দেশাই কিংবা মজিনার ওপর নির্ভর করা ঠিক নয়। নিজেদের মধ্যে বিশ্বাসের যে ঘাটতি, তা কমতে পারে সংলাপের মাধ্যমে। একজন নিশা দেশাই এসেছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। 

Daily ALOKITO BANGLADESH
25.11.13



0 comments:

Post a Comment