রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

আওয়ামী লীগ ইতিহাসে কীভাবে নাম লেখাবে?


মহাজোট সরকার তার শেষ সময় পার করছে এখন। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছিল। এক দলীয় সরকারের জন্ম দিয়ে সেই সরকার কম বিতর্কিত হয়নি। এরপর দীর্ঘসময় আওয়ামী লীগকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য। ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ফিরে পেয়েছিল, কিন্তু ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার ক্ষমতা হারিয়েছিল। এরপর ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার ক্ষমতা ফিরে পাওয়া। কিন্তু গেল ৫৮ মাসে মহাজোট সরকার নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনা নিয়েও নানা কথা আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল ঘোষণা (এক সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগ দীর্ঘ হরতাল পর্যন্ত করেছিল), বিরোধী দলের ওপর দমন-নিপীড়ন, বিরোধী দল নেত্রীকে নগ্নভাষায় আক্রমণ করা। একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনে সরকারের একক সিদ্ধান্ত কিংবা নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে সরকারের বড় উদাসীনতা, মহাজোট সরকারের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে কখনো মহাজোট সরকারের কোনো ব্যর্থতা স্বীকার করেন না। বরং উন্নয়নের কথা বলেন কিন্তু বাস্তবতাই বলে এই সরকারের বেশকিছু ব্যর্থতা রয়েছে। এই ব্যর্থতা যদি প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে স্বীকার করতেন, তাতে কোনো ক্ষতি ছিল না। বরং আমার বিবেচনায় তাতে সরকারের অবস্থান আরো শক্তিশালী হতো। বিদেশে প্রতিটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে আমরা এটা প্রত্যক্ষ করি। সেখানে সরকারের ব্যর্থতা চেপে রাখা যায় না। মিডিয়া, গণমাধ্যম সেখানে যথেষ্ট শক্তিশালী। তাই সরকারপ্রধান কোনো কিছু লুকাতে পারেন না। সবক্ষেত্রেই সরকারের ব্যর্থতা বেশি, এটা আমি বলব না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, সরকারের সাফল্য তো আছেই। পেঁয়াজ সঙ্কট আছে, তবে খাদ্য ঘাটতি নেই। সাধারণ মানুষ না খেয়ে থাকছে না। যে কারণে খাদ্য আমদানির সংশয়ে আমরা থাকছি না। যদিও খাদ্য উৎপাদনের মূল কৃতিত্ব আমাদের কৃষকদের। তাদের কীভাবে আরো উৎসাহিত করা যায়, এটা দেখার দায়িত্ব এখন সরকারের। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর কৃষকবান্ধব অনেক নীতি গ্রহণ করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্তও তার। এটা কৃষকদের উৎসাহিত করেছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীরা এখনো তৎপর। কৃষকরা উৎপাদিত পণ্যের প্রকৃত দাম পাচ্ছেন না_ এ ধরনের অভিযোগ আছে। এটি দেখার ও মনিটরিং করার দায়িত্ব সরকারের। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। এতে সরকারের কর্তৃত্ব নেই। এর কর্তৃত্ব প্রবাসী বাংলাদেশিদের। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি, হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ গ্রুপের দুর্নীতি, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি, ছাত্রীগের তা-ব এসব 'ঘটনা' সরকারের বড় অর্জনের পথে ছিল প্রধান অন্তরায়। পদ্মা সেতু নিয়ে যা ঘটল, তার ব্যাখ্যা প্রধানমন্ত্রী যেভাবেই দিন না কেন, বিদেশে এ ঘটনায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যথেষ্ট নষ্ট হয়েছে। পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি, এ ধরনের বক্তব্য কি সত্যের অপলাপ নয়? যদি আদৌ 'কিছু' না হয়ে থাকে, তাহলে বিশ্বব্যাংক কেন এত কঠোর হলো, কেন তদন্ত করল, কেনই বা কানাডাতে মামলা হলো? আমরা তা অস্বীকার করতেই পারি। কিন্তু বাস্তবতা তা বলে না।
প্রধানমন্ত্রী তার এক ভাষণে হলমার্ক ডেসটিনির অনিয়মের কথা স্বীকার করেছিলেন কিন্তু মানুষ প্রত্যাশা করে তারাই এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। একজন ব্যাংক উপ-মহাব্যবস্থাপকের পক্ষে হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া সম্ভব নয়। সুতরাং প্রভাবশালী যারাই নেপথ্যে থেকে এই 'কাজটি' করেছেন, তাদের শাস্তি হোক। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বিদেশের গণতান্ত্রিক সমাজের কথা বলেন। কিন্তু ইউরোপের কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে কি এ ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অপরাধীরা পার পেয়ে যেতে পারেন? ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন এক মন্ত্রীকে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় ফাইন দিতে হয়েছিল। জার্মানীর সাবেক চ্যান্সেলর (প্রধানমন্ত্রী, তিন তিনবার) হেলমুট কোহল ঘুষ গ্রহণ করার অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ায় দলের কর্তৃত্ব হারিয়েছিলেন। আমরা বাংলাদেশে কী এ ধরনের ঘটনা চিন্তা করতে পারি? প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, মাগুরা উপ-নির্বাচনের কথা বলেন। এটা মিথ্যা নয়। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে ভোলায় উপ-নির্বাচনে কী হয়েছিল, তার সাক্ষী সাংবাদপত্রগুলো। আসলে এই সংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হয়ে আশা প্রয়োজন, যা আমরা পারছি না। প্রধানমন্ত্রী অতীতে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সাথে দু'একজনের যোগসাজশের কথা উল্লেখ করেছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে ওই ব্যক্তিরা যদি সত্যি সত্যিই জড়িত থাকেন (?) তাহলে সরকার তাদের গ্রেপ্তার করছে না কেন? একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল। ওই রিপোর্টে যাদের অভিযুক্ত যারা হয়েছিল, তাদের কি আইনের আওতায় আনা হয়েছিল? আর যদি আইনের আওতায় আনা না হয়, তাহলে আমরা বিদেশের গণতন্ত্রের দৃষ্টান্ত দিতে পারব না। বিদেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবেই নির্বাচন হবে_ এটাই প্রত্যাশিত। প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা বলেননি। কিন্তু বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, তার সাথে কি আমরা বিদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির কোনো মিল খুঁজে পাব? আমাদের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো সংবিধানে এভাবে দেয়া হয়নি। এখানে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকাই মুখ্য। আমি জানি না, প্রধানমন্ত্রী এটা স্বীকার করবেন কি না যে বাংলাদেশ এক কঠিন সময় পার করছে। সমঝোতা যেখানে প্রয়োজন সেখানে সমঝোতা একটি কৃষ্ণ গহ্বরে পতিত হয়েছে। আর দশম নির্বাচনকে ঘিরে যদি কোনো সমঝোতা না হয়, তাহলে আমরা নিশ্চিতভাবেই আরেকটি '১৫ ফেব্রুয়ারি' প্রত্যক্ষ করব! সরকার এককভাবেই নির্বাচন করবে, যা সঙ্কটকে আরো গভীরতর করবে।
সংসদে কিংবা বিভিন্ন জনসভায় বিরোধী দল নেত্রী যে বক্তব্য রাখেন, সে ব্যাপারেও কিছু কথা বলা প্রয়োজন। বেগম জিয়া সংবিধানে নির্দলীয় সরকার বিধান সংযোজন করা, সংলাপ আহ্বান করা, ড. ইউনূসকে অসম্মানিত করা। জাতীয় নেতাদের সম্মান দেয়া, সাগর-রুনি হত্যাকা-, ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক, ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন। তিনি বলেছিলেন উচ্চ সুদের হার, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি, চাঁদাবাজি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বিনিয়োগ পরিস্থিতিকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। তিনি বিভিন্ন সময়ে হেফাজতে ইসলামের প্রসঙ্গও টেনেছেন। তুলনামূলক বিচারে বিভিন্ন সময়ে শেখ হাসিনা যতটা আক্রমণাত্মক থাকেন, বেগম জিয়া অতটা আক্রমণাত্মক নন। তবে ফোনালাপে বেগম জিয়া কিছুটা আক্রমণাত্মক ছিলেন। কিন্তু আমরা যারা আমজনতা, আমাদের কাছে সংসদ নেত্রীর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে কোনো সমাধান বা দিক নির্দেশনার পথ আমরা খুঁজে পাইনি। আগামীতে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যেসব সমস্যার সম্মুখীন আমরা হব, তার সমাধান কীভাবে হবে, তার কোনো দিক নির্দেশনা নেই। সরকার যে প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলেছে, বিরোধী দলের সাথে সমঝোতা ছাড়া সেই প্রবৃদ্ধি আজিত হবে না। অর্থমন্ত্রীর মুখের কথায় প্রবৃদ্ধির টার্গেট অর্জিত হবে না। এর জন্য দরকার বিনিয়োগকারীদের আস্থা, শিল্পোৎপাদন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। যার কোনো একটিও এই মুহূর্তে নেই।
বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়ে যাওয়ার ফলে আমাদের রপ্তানি খাত যে শুধু বাধাগ্রস্ত হবে, তা নয়। বরং বাংলাদেশ বড় ধরনের ভাবমূর্তির সঙ্কটে পড়েছে। এই ভাবমূর্তি কীভাবে আমরা ফিরিয়ে আনব, তার কোনো দিক নির্দেশনা নেই। শুধু শুধু বিএনপিকে দায়ী করে, দোষারোপের রাজনীতিটা আরো প্রলম্বিত হবে মাত্র, তাতে কাজের কাজ হবে না। সরকার অতীতে এক মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি করেছিল মাত্র। তাতে কতটুকু কাজ হয়েছে, আমি নিশ্চিত নই। এটা জাতীয় ইস্যু। প্রয়োজনে জাপাসহ বিএনপির প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। সরকারের 'একলা চল নীতি' এই সঙ্কট থেকে বাংলাদেশকে কতটুকু বের করে আনতে পারবে, সেটাই দেখার বিষয়। অতীতে ড. ইউনূসকে নিয়ে সরকারের নীতি নির্ধারকরা বারবার বিষোদ্গার করেছেন। এই বিষয়টি নিয়ে যত কম কথা বলা যায়, ততই সরকারের জন্য মঙ্গল ছিল। কিন্তু বারবার ইউনূস তথা গ্রামীণ ব্যাংক প্রসঙ্গ আসছে। আমরা ভুলে যাই সারা বিশ্বের মানুষ ড. ইউনূসকে চেনেন। তাকে দিয়ে বাংলাদেশের পরিচিতি। তিনি নিজ বাসভূমেই বারবার অসম্মানিত হয়েছেন। চলতি বছর ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা 'ইউএস কংগ্রেশনাল অ্যাওয়ার্ড' এ ভূষিত হয়েছেন। এটা আমাদের গর্বের। কিন্তু আমরা বিষয়টি ভুলে যাই। আমরা নিশ্চিত নই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনটা হবে কীভাবে? সরকারপ্রধান ভালো করেই জানেন তিনি যতই বিদেশের দৃষ্টান্ত দিন না কেন, একটি নির্দলীয় সরকার ছাড়া বিএনপি এবং সম্ভবত জাতীয় পার্টিকেও নির্বাচনে আনা সম্ভব হবে না! তাহলে তিনি যখন ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের সমালোচনা করেন। (যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন বয়কট করেছিল) তখন কি তিনি নিজেই আরেকটি '১৫ ফেব্রুয়ারির' মতো নির্বাচনের জন্ম দিতে যাচ্ছেন না? অনির্বাচিত কাউকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান করা যাবে না_ প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তিকে সমর্থন করেও একজন নির্বাচিত ব্যক্তিকে প্রধান করে একটি সরকার গঠন করা যায়। প্রয়োজন শুধু আন্তরিকতার। আমরা সামনে তাকাতে চাই। পেছনে নয়। কিন্তু শেখ হাসিনা এখনো আওয়ামী লীগের প্রধান। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেকে গেলে (অন্তর্বর্তীকালীন), নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে, তার গ্যারান্টি তিনি নিজেও দিতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর ওপর আজ নির্ভর করে সবকিছু। আস্থার জায়গাটা তিনি সৃষ্টি করতে পারেন।
বাংলাদেশ আজ এক কঠিন সময় পার করছে। আমাদের সব অর্জন আজ প্রশ্নের মুখে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশে যে একটি 'মডেল' সৃষ্টি করেছিল, সেই 'মডেল' এখন 'মৃত', সেখানে কোনো 'জীবন' নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন অতীত। অথচ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার জন্য শেখ হাসিনা আন্দোলন করেছিলেন এবং এই সরকারব্যবস্থাই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। আজ তা ইতিহাসে। যেখানে পাকিস্তান, নেপালের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর (মালদ্বীপেও এই দাবি উঠেছে) যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে, সেখানে আমরা তা বাতিল করে দিলাম।
এখন একটা নির্বাচনের দিকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি সর্বদলীয় সরকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ কিন্তু তাতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কোনো অংশগ্রহণ থাকছে না। সরকার বিএনপিকে বাদ দিয়েই এখন নির্বাচনে যাচ্ছে। এতে করে সঙ্কট আরো ঘনীভূত হবে। বারবার দু'দফায় ৬০ ঘণ্টা করে হরতাল পালিত হলো। এখন পালিত হচ্ছে ৮৪ ঘন্টার হরতাল। হরতালে সহিংসতা বেড়েছে, যা আমাদের জীবনকে ছুঁয়ে গেছে। এক্ষেত্রে পরিত্রাণ কীভাবে পাওয়া যায়, সেটা একটা বড় প্রশ্ন এখন।
যদি সত্যি সত্যিই সরকার এককভাবে নির্বাচনে যায়, তাহলে আগামীতে রাজনৈতিক পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে। প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকেই এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের ব্যর্থতা আমাদের 'রাজনীতির কৃষ্ণ গহ্বরে' নিমজ্জিত করতে পারে। এখন ফোনালাপের তিক্ততা, প্রধান বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের কারাগারে পাঠানো আর সংলাপের ব্যাপারে কোনো কার্যকর ভূমিকা না নেয়ার ফলে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আগামীতে কোন মাত্রায় উপনীত হয়, সেটাই দেখার বিষয়।
দৈনিক যায় যায় দিন, ১১ নভেম্বর ২০১৩।

ড. তারেক শামসুর রেহমান: অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ঃধৎধযসধহনফ@ুধযড়ড়.পড়স

0 comments:

Post a Comment