রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

এরপর কী?

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর এখন যে প্রশ্নটি সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে তা হচ্ছে, এরপর কী? নির্বাচন-পরবর্তী রাজনীতি কী হবে এখন? দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে যত ‘বিতর্ক’ই থাক না কেন, বাস্তবতা হচ্ছে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ছাড়া এর কোনো বিকল্প ছিল না। নির্বাচনের তারিখ পেছানোর একটা সুযোগ ছিল, কিংবা উচ্চ আদালতের কাছে একটি রেফারেন্স চেয়ে নির্বাচন অন্তত তিন মাস পিছিয়ে দেয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু এসব প্রশ্ন এখন অবান্তর। নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি- বাস্তবতা এটাই। সুতরাং প্রশ্নটা থাকবেই- এখন কী? একটা সরকার যখন সাংবিধানিকভাবে গঠিত হয়, এর মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর। এখন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ভোটের ফলাফলও আমরা পেয়ে গেছি। আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করেছেন, দশম সংসদ পাঁচ বছর টিকে থাকবে এবং ২০১৯ সালে ‘সমঝোতা’র ব্যাপারে কথা হবে। আওয়ামী লীগের অনেক নীতিনির্ধারককে বলতে শুনেছি, সংসদ যদি দীর্ঘদিন চলে তাহলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা আসতে বাধ্য। তাতে করে বিএনপি ভেঙে যাবে! এ ধরনের কথাবার্তা কোনো বাস্তববাদী বক্তব্য নয়। এখন নির্বাচন আয়োজন করে প্রধানমন্ত্রী নিঃসন্দেহে ‘বিজয়ী’ হয়েছেন। কিন্তু তার ‘পরাজয়’ ঘটবে যদি তিনি বাস্তববাদী নীতি অনুসরণ না করেন। আর বাস্তববাদী নীতি অনুসরণ করতে হলে তাকে বিএনপির সঙ্গে একটা সমঝোতায় যেতে হবে। এ সমঝোতার ধরন কী হবে, কিংবা সরকার কতটুকু ছাড় দেবে, তা এ মুহূর্তে হয়তো বলা যাবে না। কিন্তু তিনি দূরদর্শিতার পরিচয় দেবেন এবং জনপ্রিয়তা আরও বাড়াতে পারবেন- যদি থেমে যাওয়া সংলাপ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ তিনি দেন। মনে রাখতে হবে, শুধু দশম সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে পূর্ণ বিজয় নিশ্চিত করা যাবে না। দ্রুত একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে। কেননা এর সঙ্গে অনেক প্রশ্ন জড়িত। প্রথমত, বিদেশী পর্যবেক্ষকরা না আসায় বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। ‘সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে’র যে দাবি দাতারা করেছিল, তা নিশ্চিত করা যায়নি। এর জন্য কে দায়ী, সেই হিসাব না করে এখন যদি বিএনপির সঙ্গে একটা আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়, তাতে করে দাতাগোষ্ঠীর আস্থা অর্জন করা সম্ভব। আমাদের প্রয়োজনেই দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে এ আস্থার সম্পর্কটা থাকা দরকার। দ্বিতীয়ত, বিএনপির সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক গড়ে না তুললে তা ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। এরই মধ্যে অর্থনীতিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশের কাছাকাছি নেমে আসবে। মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে তৈরি পোশাক খাতে। এরই মধ্যে অনেক অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। ক্রেতারা কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামে চলে গেছে। শিপমেন্টে মালিকদের খরচ বেড়েছে। এক্ষেত্রে অর্ডার পাওয়া না গেলে অনেক কোম্পানি কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবে না। বন্ধ হয়ে যাবে কারখানা। ফলে একটা দীর্ঘমেয়াদি অসন্তোষ বিরাজ করবে এ সেক্টরে। আরও একটা খারাপ খবর হচ্ছে, তৈরি পোশাকের উদ্যোক্তারা শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে। এখন তারা যদি ঋণ পরিশোধ করতে না পারেন, তাহলে ব্যাংকগুলো বড় ধরনের বিপদের সম্মুখীন হবে। এ কারণেই সমঝোতাটা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে অনেক সেক্টরে বাংলাদেশের অর্জন চোখে লাগার মতো। ঈর্ষণীয়ও বটে। যেখানে নিুআয়ের দেশগুলোর মাথাপিছু গড় আয় ৫২৮ ডলার, সেখানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১০৪৪ ডলার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনার কৃতিত্বও বাংলাদেশের। এ হার মাত্র ১.৩ শতাংশ, যেখানে নিুআয়ের দেশগুলোর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.১ ভাগ। শিশু মৃত্যুর হারও আমরা কমিয়ে এনেছি (হাজারে ৩৫টি শিশু, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় এ হার ৫২)। আমাদের দেশের মেয়ে শিশুরা সবচেয়ে বেশি স্কুলে যায়। ২০১৫ সালে এমডিজির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছিল, তাতে প্রায় সব সেক্টরে (মোট ৮টি) বাংলাদেশের অর্জন ভালো লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছে। নারীর ক্ষমতায়নে অনেক দেশের চেয়ে আমাদের অবস্থা ভালো। সবচেয়ে বড় কথা, ১৯৯০ সালে যেখানে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করা মানুষের সংখ্যা ছিল শতকরা ৫৭ জন, এখন তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৩১.৫ জনে। এই যে সাফল্য, তা ধূলিসাৎ হয়ে যাবে, নষ্ট হয়ে যাবে- যদি আমরা দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে না পারি। আর এর পুরোটাই নির্ভর করছে একটি সমঝোতার ওপর। একটি সংলাপের ওপর। চতুর্থত, খালেদা জিয়া এবং এইচএম এরশাদের গৃহে অন্তরীণের ঘটনা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় স্থান পেয়েছে। এইচএম এরশাদ নিজে বলেছেন, তিনি ‘অসুস্থ’ নন এবং তাকে ‘গৃহবন্দি’ করা হয়েছে। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদদাতাকে। এর কি আদৌ কোনো প্রয়োজন ছিল? এ ঘটনা একটা খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসবেন, তারাও একই পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। উপরন্তু এ ঘটনা বিশ্ব মিডিয়ায় স্থান পেয়েছে। সরকারের ভাবমূর্তি এতে বাড়বে না। খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দিত্ব থেকে দ্রুত মুক্তি দেয়াই হবে মঙ্গলজনক। পঞ্চমত, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ একটা সুযোগ পেল কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই করার। কোনো কোনো ক্ষেত্রে (যেমন ঢাকা-৭, ঢাকা-১) নৌকা মার্কার প্রার্থীরা হেরে গেছেন। প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে নিজ দলের প্রার্থী যখন হেরে যায়, তখন দলের নীতিনির্ধারকদের বুঝতে হবে প্রার্থী বাছাইয়ে বড় গলদ রয়েছে। দল একটা সুযোগ পেল প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা দেখার। এখন একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী যাচাইয়ে সরকার সচেতন হতে পারে। পাবনায় এক মন্ত্রীপুত্রের কাহিনী থেকেও সরকার কিছু শিখতে পারে। প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতেও যদি ‘ভোট কারচুপি’ করতে হয়, তাহলে এর চেয়ে আর দুঃখজনক কিছু থাকতে পারে না। ষষ্ঠত, এ নির্বাচন সরকারপ্রধানকে একটি মেসেজ দিল বৃহত্তর ঐক্য করার। জাতি এখনও একটি সংকটের মধ্যে আছে। এক্ষেত্রে সংকট উত্তরণে জাতীয় সরকার হতে পারে একটি সমাধান। সংবিধান অনুসরণ করেও এই জাতীয় সরকার গঠন, অর্থাৎ ভিন্নমতাবলম্বীদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। এতে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে। সপ্তমত, আমাদের সংস্কৃতিতে সহিংসতা অতীতে কখনও ছিল না। পেট্রলবোমা আমরা অতীতে কখনোই দেখিনি, শুনিওনি। এখন দেখছি এ পেট্রলবোমা যত্রতত্র ব্যবহার হচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কত সাধারণ মানুষ যে মারা গেল, কত লোকের অঙ্গহানি হল, তার পূর্ণ হিসাব আমরা কেউই করি না। কত পরিবার যে চিরদিনের জন্য ‘পঙ্গু’ হয়ে গেল পরিবারের প্রধান ব্যক্তিকে হারিয়ে, তার দায়িত্ব কে নেবে? রাজনীতি তো জনগণের মঙ্গলের জন্য। কিন্তু এ রাজনীতি তো অমঙ্গল ডেকে আনছে। তাই সহিংসতা রোধে উদ্যোগ নেয়ার দায়িত্ব সরকারেরই বেশি। এখন নির্বাচন শেষ। সব বিরোধী দলকে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে দেয়া উচিত। বিরোধী দল যদি তাদের কর্মকাণ্ড চালাতে পারে, আমার ধারণা, তাতে সন্ত্রাস কমে যাবে। আরও একটা কথা। বিভিন্ন মহল থেকে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের(?) কথা বলা হয়। এর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল আছে বলে আমার কখনও মনে হয়নি। বাংলাদেশ কখনও আফগানিস্তান বা ইরাক হবে না। এখন এ জঙ্গিবাদের কথা বলে আমরা বাংলাদেশে মার্কিনিদের আসার পথ প্রশস্ত করছি কি-না, তা ভেবে দেখতে হবে। পাকিস্তান আর ইয়েমেনে মার্কিন ড্রোন বিমান হামলার ইতিহাস আমরা জানি। ভালো হোক, মন্দ হোক- নির্বাচনটা সম্পন্ন হয়েছে। কতদিন এ সংসদ থাকবে, সেটাও আমার কাছে বিবেচ্য নয়। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে সংলাপটা শুরু করা এবং একটা সমঝোতায় পৌঁছানো। পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই শুধু ৭ম ও ৮ম সংসদ বাদে (১৯৯৬ ও ২০০১) কোনো সংসদই ৫ বছরের টার্ম পূর্ণ করেনি। নবম সংসদের ৫ বছরের টার্ম পূর্ণ হবে চলতি ২৪ জানুয়ারি। প্রথম সংসদ (১৯৭৩) টিকে ছিল ৩০ মাস। দ্বিতীয় (১৯৭৯) ৩৫ মাস, তৃতীয় (১৯৮৬) ১৭ মাস, চতুর্থ (১৯৮৮) ৩১ মাস। ৫ম (১৯৯১) ৫৬ মাস, ৬ষ্ঠ (১৯৯৬, ফেব্র“য়ারি) ১২ দিন। সুতরাং দশম জাতীয় সংসদকে যে তার টার্ম পূর্ণ করতে হবে, এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অনেক কলংকের বোঝা মাথায় নিয়ে এ নির্বাচন সম্পন্ন হল। বিদেশী পর্যবেক্ষক না থাকলেও মিডিয়া অনেকটা পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে। এখানে কয়েকটি মন্তব্য উল্লেখ করলেই বোঝা যাবে সদ্য শেষ হওয়া দশম সংসদ নির্বাচন আসলেই কোনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। যেমন ইত্তেফাকের প্রতিবেদন- ‘অনেক আসনে পরাজিত প্রার্থীকে জিতিয়ে দিয়েছে প্রশাসন’, কালের কণ্ঠের মন্তব্য- ‘কূটনীতিকদের উদ্বেগ ও হতাশা আরও বেড়েছে’, মানবজমিনের প্রতিবেদন- ‘অনেক নির্বাচনী কর্মকর্তা মেতে ওঠেন টেবিল কাস্টিংয়ে’, ইংরেজি ডেইলি স্টারের মন্তব্য- ‘সময় এসেছে দুই নেত্রীর নিজেদের বিরত রাখার ও সম্মানজনক প্রস্থানের পথ খুঁজে নেয়ার’। কেন্দ্র দখলের খবর দিয়েছে নয়াদিগন্ত। আর যুগান্তর আমাদের জানিয়েছে অতিরিক্ত খরচের বিষয়টি। যেখানে ২০০৮ সালের (নবম সংসদ) নির্বাচনে খরচ হয়েছিল ১৬৫ কোটি, সেখানে এবার খরচ হয়েছে ২৯১ কোটি টাকা। সরকারি অর্থের এ অপচয়(?) নিয়ে এখন যে কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারে। নির্বাচনটা ছিল আমাদের। কিন্তু দেখা গেল মাথাব্যথা ভারতের। প্রথম থেকেই ভারত একটি পক্ষ অবলম্বন করেছিল। আর এখন বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা চালাবে ভারত (ইত্তেফাক)। আর সমর্থনটা বর্তমান সরকারের জন্য। এখন সমঝোতার কথা যখন এদেশের সুশীল সমাজ বলছে, ঠিক তখনই চোখ আটকে গেল একটি সংবাদে। লন্ডনে তারেক রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর কোনো সংলাপ নয়’। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্তব্য। তারেক রহমান বিএনপির দ্বিতীয় ব্যক্তি। বলা যেতে পারে, বিএনপির হাল তিনিই ধরবেন। এখন তার এ বক্তব্যকে দলের বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করলে কোনো ভুল হবে না কারও। তিনি যে যুক্তিতে এ মন্তব্যটি করেছেন, তা ফেলে দেয়ার নয়। আওয়ামী লীগের এককভাবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, সংলাপের ব্যাপারে অনীহা (প্রকারান্তরে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে নিরুৎসাহিত করা), কিংবা নির্বাচনে ‘ভোট কেন্দ্র দখল’, ‘জাল ভোট’ দেয়া এবং বিতর্কিত বিএনএফ নেতা আবুল কালাম আজাদকে ঢাকা-১৭ আসন থেকে ‘নির্বাচিত’ হওয়ার সুযোগ করে দেয়া (এ আসনে প্রার্থী ছিলেন এইচএম এরশাদ) ইত্যাদি ঘটনায় তারেক রহমান এ মন্তব্য করতেই পারেন। তবে আমার ধারণা, সত্যিকারভাবে সরকার যদি আন্তরিক হয়, তাহলে সমাধানের একটা ‘পথ’ বের হবেই। সেক্ষেত্রে তারেক রহমানও এটা সমর্থন করবেন। দশম সংসদ নির্বাচন এখন অতীত। কেউ না চাইলেও এ নির্বাচন হয়েছে এবং ১০৬ আসনে আওয়ামী লীগের বিজয় (সেই সঙ্গে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১২৭ জন) দলটিকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে না। যে নির্বাচনের আদৌ কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, সেই নির্বাচনে ‘জাল ভোট’ প্রদান কিংবা ‘ভোট কেন্দ্র দখল’ শুধু নির্বাচনকেই কলংকিত করেনি, বরং ঐতিহ্যমণ্ডিত এ দলটির ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দলটির নীতিনির্ধারকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য এখন তাই অনেক বেশি। সংলাপের ব্যাপারে উদ্যোগটা তাদেরই নিতে হবে। আমরা দেশে একটা সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা চাই। অসুস্থ রাজনীতি আমাদের সব অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। এখানে প্রয়োজন দূরদর্শিতার। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আমাদের জাতীয় নেতারা এ দূরদর্শিতার পরিচয় দেবেন, আমাদের প্রত্যাশা এটাই। ০৭ জানুয়ারি, ২০১৪ Dainik Jugantor

0 comments:

Post a Comment