এক কথায় ২০১৩ সালকে বলা যায় আস্থাহীনতা অবিশ্বাস আর সংকটের বছর।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুই রাজনৈতিক শক্তি একদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আর
অন্যদিকে বিএনপির মাঝে রাজনৈতিক বিবাদ ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব যখন তুঙ্গে ঠিক
তখনই তরুণ প্রজন্মের নেত্বেত্বে গড়ে ওঠা শাহবাগের গণজাগরন মঞ্চ একটা আশার
আলো সৃষ্টি করেছিল। চলতি শতাব্দীর প্রথম দশক ছিল সারা বিশ্বব্যাপী তরুণ
প্রজম্মের উত্থান। বিশেষকরে নিউইর্য়কে ২০১১ সালে যে অকুপাই মুভমেট এর জন্ম
হয়েছিল তা পরবর্তীতে ছড়িয়ে গিয়েছিল সারা বিশ্বে আটলান্টিকের এপার থেকে
ওপারে নিউইর্য়ক থেকে ইউরোপ সর্বত্র লন্ডন থেকে ফ্রাংকফুট পর্যন্ত। ঠিক
তেমনি ওই আন্দোলনের ঢেউ প্রশান্ত মহাসাগরের অপর পাড়ের দেশগুলোতে গিয়েও
আঘাত হেনেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ‘আরব বসন্ত’র জন্ম হয়েছিল।
আর ২০১৩ সালে বাংলাদেশে আমরা দেখেছি শাহবাগকে জ্বলে উঠতে। এখানেও আমরা
দেখেছি তরুণ প্রজন্ম উত্থান। প্রথম দিকে তরুণদেরই এই উত্থানকে একটি একটি
বিকল্প শক্তি হিসেবে চিন্তা করা হলেও বছরের শেষ দিকে এসে এই উত্থান তাদের
আবেদনকে আর ধরে রাখতে পারেনি। এখানেই এসে যায় কায়রোর তাহরীর স্কোয়ারের সাথে
শাহবাগ আন্দোলনের মিল। মিসরের কায়রোর তাহরীর স্কোয়ারের আন্দোলন সংগঠিত
করেছিল এপ্রিল ৬ ,যার নেতৃত্বে ছিল আসমা মাহফুজের মত তরুণ নেতৃত্ব। ফেসবুক,
টুইটার এর মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে তরুণ প্রজন্ম সেদিন
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছি। বাংলাদেশেরও এই তরুণ প্রজন্ম
মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলে ইতিহাসের খাতায় নাম
লিখিয়েছিল। তবে র্পাথক্য তো রয়েছেই। যেখানে নিউইয়র্কের অকুপাই মুভমেন্ট এর
মূল স্পিরিট ছিল ধনী গরিবের মাঝে সমতাবিধান আর পুঁজিবাদ ও কর্পোরেটবাদের
বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিবাদ, সেখানে শাহবাগ আন্দোলকারীদের কাছে এই বিষয়টি
প্রধান্য পায়নি। এমনকি আরব বসন্ত। যেখানে তরুণ সম্প্রদায়কে স্বৈরাচারের
বিরুদ্ধে একত্রিত করেছিল, সেখানে বাংলাদেশে এই আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে
পরিচালিত হয় নি। বরং তাদের আন্দোলন থেকে সরকার উপকৃত হয়েছে এবং এ থেকে
ফাঁয়দা উঠিয়েছে। তাদের আন্দোলনের এক মাত্র উদ্দশ্যে ছিল যুদ্ধাপরাধীদের
চুড়ান্ত বিচার (ফাঁসি)নিশ্চিতকরা। বাংলাদেশ দূর্নীতি,সমাজিক বৈষম্য, অসমতা,
দারিদ্রতা, আইনের শাসনের অভাব অনেক বেশি। তরুণ সমাজের কাছে প্রত্যাশা ছিল
এসবের বিরুদ্ধেও আন্দোলন গড়ে তুলবে। কিন্তু তাদের আন্দোলন শুধু মাত্র একটি
বিষয় কেন্দ্রীভূত হওয়ার এক পর্যায়ে এই আন্দোলন নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠে।
গেল বছর সারাটা সময় জুড়ে ছিল রাজনৈতিক অসহিংসতা আর সহিংসতা। বিরোধীদল
একের পর এক হরতাল, পরে লাগাতার অবরোধ দিয়ে রাজনীতিতে নতুন একটি মাত্রা এনে
দেয়। গেল বছরের একটা বড় সময় জুড়ে আমরা দেখেছি একের পর এক বিদেশী দূতদের
বাংলাদেশে আসা ও সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেয়া। তারানকো, নিশা দেশাই এর মত
বিদেশীরা চেষ্টা করেছেন সরকারও বিরোধী দলের মধ্যে একটা সমঝোতার উপনীত হতে।
দাতাগোষ্ঠী পুরোটা সময়েই একাধিকবার এটা স্পষ্ট করেছেন যে, তারা চান সকল
দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হোক। কিন্তু তা হয়নি। বিদেশীদের মাঝে তারানকো
আর সুজাতা সিং এর সফর নানা কারণে গুরুত্ব পেয়েছে বেশি। তারানকো জাতিসংঘের
মহাসচিবের বিশেষ দূত ও জাতিসংঘের কর্মকর্তা। আর সুজাতা সিং ভারতের
পররাষ্ট্র সচিব। তারানকোর উপস্থিতিতে সরকারও বিরোধী দল সংলাপে বসলেও তা কোন
ফল বয়ে আনতে পারেনি। এমনকি তারানকোর বাংলাদেশ ত্যাগ করার পর সংলাপ এর
ব্যাপারে সরকারি পক্ষের কোন আগ্রহ লক্ষ করা যায়নি। তারানকো বাংলাদেশ ছেড়ে
যাওয়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে উভয় পক্ষকে ‘ছাড়’ দেয়ার যে মানসিকতার কথা বলে
গিয়েছিলেন তার প্রতি কোন সম্মান দেখায়নি। তবে সুজাতা সিং এর বক্তব্য যেন
পত্র পত্রিকায় ছাপা হয়েছে বাংলাদেশে যথেষ্ট বির্তকের সৃষ্টি করেছিল। জাতীয়
পাটির প্রধান এইচএম এরশাদের সাথে দেখা করার পর তার যে অভিমত পাওয়া যায়
(নির্বাচনে জাতীয় পাটির অংশগ্রহন, আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় গেলে এখানে
জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটবে।) তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে হস্তক্ষেপেরে
সামিল বলে অনেকে অভিমত পোষন করেছেন। অনেকেরই অভিমত বন্ধু রাষ্ট্র হিসাবে
ভারত বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে কিংবা একটি রাজনৈতিক দলের
কর্মকান্ড নিয়ে মন্তব্য করতে পারে না এবং কোন উপদেশও দিতে পারে না। সেই একই
ধরনের অভিযোগ ওঠে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে, যখন পাকিস্থানের জাতীয় সংসদে
কাদের মোল্লার ফাঁসির ঘটনায় একটি নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়। এখানে পাকিস্তানের জাতীয়
সংসদের বলার কিছু নেই।
গেল বছর রাজনীতিতে দুটো বিষয় বেশি আলোচিত হয়। একটি সুষ্ঠুও নিরপেক্ষ
নির্বাচনের জন্য ও ত্বাবধায়ক সরকারে দাবি, দ্বিতীয়টি, যুদ্ধাপরাধীদের
বিচার। বিএনপি তথা ১৮ দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সারাটা বছর আন্দোলন
করেছ। তারা সংবিধান সংশোধনেরও দাবি করে। এই দাবির পক্ষে একটা সর্বজন
গ্রহণযোগ্যতাও লক্ষ করা যায়। বছরের শেষের দিকে বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সাথে
সংলাপও সরকারকে কিছুটা নমনীয় হতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে বিএনপি
প্রধানমন্ত্রীর বদলে ( যিনি সংবিধান সংশোধনীর ফলে অন্তবর্তীকালীন সরকার
প্রধানের দায়িত্ব পান) রাষ্ট্রপতি অথবা স্পিকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন
আয়োজন করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সরকার তাতে ইতিবাচক মনোভাব দেখায়নি, ফলে
সংকটের গভীরতা বৃদ্ধি পায়। এক পর্যায়ে বছরের শেষের দিকে বিএনপি নেত্রীকে
একটি চুড়ান্ত কর্মসূচি দিতে দেখা যায়। বেগম জিয়া গত ২৪ ডিসেম্বর এক সংবাদ
সম্মেলনে ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা অভিমুখে “ মার্চ ফর ডেমোক্রেসি ” এর আহ্বান
করেন। গণতন্ত্র রক্ষায় তিনি এই “ গণতন্ত্র অভিযাত্রার” ডাক দেন। এমনকি
স্থবির হয়ে যাওয়া সংলাপ শুরু করার আহ্বান জানান তিনি। এটা বাংলাদেশের চলমান
রাজনীতির জন্য নতুন একটি মাত্রা এনে দেয়।
সরকার তার টার্ম শেষ করলেও সরকারের জন্য এটা ছিল একটা বড় ব্যর্থতা যে,
তারা দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে পারেনি। এমনকি ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা
প্রতিদ্বদিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতির জন্য একটি
কলংকজনক ঘটনা। এই ঘটনা প্রমাণ করে ; ১. নির্বাচন কমিশন এই ভোটারবিহীন
নির্বাচন রোধ করতে পারেনি। বরং কমিশন সরকারের একটি অঙ্গ সংগঠনে পরিনত
হয়েছে। একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন যে সম্ভব
নয়, তা আবারো প্রমাণিত হল ২। একজন দলীয় প্রধান হিসেবে ক্ষমতাসীন
প্রধানমন্ত্রী যদি অর্ন্তবতীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেকে যান, তাহলে
তিনি বা তার দল নিবার্চন প্রক্রিয়ায় প্রভাব ঘটাবেন ৩। পঞ্চম সংসদে দ্বাদশ
সংবিধান সংশোধনী(সংসদীয় রাজনীতি) এনে আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রবর্তন
করেছিলাম। কিন্তু বিনা প্রতিদ্বদিতায় নির্বাচনের ঘটনা অতীতের সকল রেকর্ড
শুধু ভঙ্গই করলো না বরং গণতান্ত্রিক চর্চার পেছনে ছুরিকাঘাত করলো। ৪। জাতীয়
পার্টির ঘটনা (নির্বাচনে আছে, নিবার্চনে নেই। মন্ত্রী সভার আছে,
মন্ত্রীসভায় নেই, পার্টি প্রধানের অসুস্থতা ইত্যাদি) প্রমাণ করে
রাজনীতিবিদদের মাঝে সুবিধাবাদীতা চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। জাতীয় পার্টি
এখন অস্তিত্ব সংকটের মাঝে থাকবে।
দেশে সুশাসনের অভাব নানাভাবে অনুভূত হয়েছে গেল বছর। দেশের অভ্যন্তরে আইন শৃংঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচিত হয়েছে এবং একাধিকবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের খবর পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। শুধু তাই নয়। মানবাধিকার কর্মীও একজন সিনিয়র আইনজীবি আদিলুর রহমান খানের গ্রেফতার কিংবা ডাঃ মোহম্মদ ইউনুস ইস্যুতেও বহিঃ বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যথেষ্ট নষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের অরাজকতা, পোষাক কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতা, রানা প্লাজার হত্যাকান্ড ইত্যাদি ঘটনা বাংলাদেশ সম্পর্কে বহিঃ বিশ্বে একটি ভিন্ন ম্যাসেজ দিয়েছে।
দেশে সুশাসনের অভাব নানাভাবে অনুভূত হয়েছে গেল বছর। দেশের অভ্যন্তরে আইন শৃংঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচিত হয়েছে এবং একাধিকবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের খবর পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। শুধু তাই নয়। মানবাধিকার কর্মীও একজন সিনিয়র আইনজীবি আদিলুর রহমান খানের গ্রেফতার কিংবা ডাঃ মোহম্মদ ইউনুস ইস্যুতেও বহিঃ বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যথেষ্ট নষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের অরাজকতা, পোষাক কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতা, রানা প্লাজার হত্যাকান্ড ইত্যাদি ঘটনা বাংলাদেশ সম্পর্কে বহিঃ বিশ্বে একটি ভিন্ন ম্যাসেজ দিয়েছে।
২০১৩ সালটি ছিল রাজনৈতিক দলও নেতৃবৃন্দের জন্য একটি খারাপ বছর। সারাটা
বছর জামায়াতে ইসলামী একটা বির্তকের মাঝে থেকেছে। তাদের ছাত্র সংগঠন
ছাত্রশিবির সকল সহিংস ঘটনাবলীর জন্য বারবার অভিযুক্ত হয়েছে। তাদের এক শীর্ষ
নেতা কাদের মোল্লা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত এবং উচ্চ
আদালত কর্তৃক তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে উচ্চ আদালতের
অপর একটি পর্যবেক্ষণে স্বাধীনতা বিরোধী অবস্থানের কর্মকাণ্ডের জন্য
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে। ফলশ্রুতিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে
জামায়াত যদি তার অস্তিত্ব বজায়ও রাখে, তাহলেও নির্বাচনে জামায়াত অংশ নিতে
পারবে না। অন্যদিকে অপর একটি ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের উত্থান ছিল
অন্যতম আলোচিত একটি বিষয়। অতীতে বাংলাদেশের মানুষের এই সংগঠনটির সম্পর্কে
কোন ধারণা ছিল না। ৫মে শাপলা চত্বরে তাদের সমাবেশ ও ওই সমাবেশে পুলিশের
অভিযান এবং হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর গুজবরে পর সংগঠনটি ব্যাপক আলোচনার
আসে। তাদের উপস্থাপিত ১৩ দফা নিয়েও সারা বছর বির্তক চলে এবং নারীবাদী
সংগঠনগুলো এর সমালোচনা করে। মূলত বেসরকারি কওমী মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষক ও
ছাত্রদের নিয়েই এই সংগঠন। বছরের প্রায় শেষ দিকে তারা ঢাকায় জনসভা করতে
চাইলেও সরকার তাদের অনুমতি দেয়নি।
বছরের পুরোটা সময় বিএনপি আন্দোলনে থেকেছে। র্শীষ স্থানীয় অনেক নেতাই শেষ
দিন পর্যন্ত জেলে ছিলেন। নাটকীয়ভাবে অফিসের তালা ভেঙ্গে বিএনপির কোন কোন
নেতাকে (রিজভী আহম্মেদ) গ্রেফতার ঘটনাও ঘটেছে। বিএনপির অফিসের সম্মুখে
তাদের জনসভায় পুলিশের গুলিবর্ষণ, র্নিবাচিত এমপিদের লাঠি পেটা, পাঁচটি সিটি
কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের বিজয় সব মিলিয়ে জনমত বিএনপির
পক্ষে গেলেও আন্দোলনে বিএনপি তেমন সুবিধা করতে পারেনি। এতে কর্মী ও
শুভানুধ্যায়ীদের কাছে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের মাঝে ছিল। আর শেষের
দিকে জাতীয় পার্টির একটা অংশ বেরিয়ে যায়। তারা নতুন নামে জাতীয় পার্টি
হিসাবে আত্নপ্রকাশ করে। পার্টির ভেতরে এইচএম এরশাদের তেমন কোন কর্মকাণ্ডও
লক্ষ করা যায়নি। আর সরকারি দলের কর্মকাণ্ড দলটিকে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে
নিয়ে আসে। দলের ছাত্র সংগঠনের নানা অপকর্ম (টেন্ডারবাজী, বিশ্বজিৎ
হত্যাকাণ্ড) মূল দলটিকেও বির্তকিত করে। উপরন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে
কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ইসিতে দেয়া হলফনামা পত্র পত্রিকায়
প্রকাশিত হয়। এতে মন্ত্রী, সাংসদরা প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে
প্রতিয়মান হয়। এতে করে দল ও দলের নেতাদের সম্পর্কে জনমানসে একটি নেতিবাচক
ধারণার জন্ম হয়।
সারা বছর দু’টি বড় দল তথা জোটের মধ্যকার অন্তদ্বন্দ্ব বাংলাদেশের
গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করে। যেখানে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি আস্থা ও
বিশ্বাসের কথা বলে, বাংলাদেশে এটি পরিলক্ষিত হয়নি এবং শেষ অব্দি এককভাবে
নির্বাচনে যাবার সিন্ধান্ত সাংবিধানিকভাবে বৈধ হলেও, বৃহত্তর জনগোষ্টির
কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতার যে রাজনীতি আমরা ২০১৩
সালে প্রত্যক্ষ করেছি, তা চলতি ২০১৪ সালের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করবে। একটি
নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে যদি ঐক্যমত্যে পৌছানো না যায়, তাহলে সংকটের
গভীরতা আরও বাড়বে। তাই দশম জাতীয় সংসদের উপর দায়িত্বটি বর্তাবে
নির্বাচনকালীন সরকারের একটি কাঠামো উপস্থাপন করার। রাজনীতিবিদরা
দূরর্দশীতার পরিচয় না দিলে, এই সংকট থেকে বেড়িয়ে আসার কোন পথ নেই।
প্রকাশ তারিখ: ৩১/১২/২০১৩ ১২:১২:১৫ অপরাহ্ন
ATN Times
0 comments:
Post a Comment